পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুহরিম ব্যক্তির শিকার করা হতে বিরত থাকবে
২৭০৩-[৮] ’আবদুর রহমান ইবনু আবূ ’আম্মার (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু ’আব্দুল্লাহ আল আনসারী (রাঃ)-কে যবু’ (অর্থাৎ- ধারালো নখ ও হিংস্র দাঁতবিশিষ্ট হায়েনা, বেজি, কাঠবিড়ালী এবং মরু অঞ্চলের হিংস্র প্রাণী) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, এটা শিকারী প্রাণী কিনা? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তবে যবু’ কি খাওয়া যায়? তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (তিরমিযী, নাসায়ী ও শাফি’ঈ; ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ)[1]
وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِيِ عَمَّارٍ قَالَ: سَأَلت جابرَ بنَ عبدِ اللَّهِ عَنِ الضَّبُعِ أَصَيْدٌ هِيَ؟ فَقَالَ: نَعَمْ فَقُلْتُ: أَيُؤْكَلُ؟ فَقَالَ: نَعَمْ فَقُلْتُ: سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: نَعَمْ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَالشَّافِعِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حديثٌ حسنٌ صَحِيح
ব্যাখ্যা: (الضَّبُعُ) ‘‘হায়েনা (গোরখোদা)’’ (أَصَيْدٌ هِىَ) ‘‘তা কি শিকারী পশু’’। অর্থাৎ- মুহরিম তা হত্যা করলে কি ফিদিয়া দিতে হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তা হত্যা করলে ফিদিয়া দিতে হবে।
আবূ দাঊদ-এর বর্ণনায় আছে- (وَِيُجْعَلُ فِيْهِ كَبْشٌ إِذَا صَادَهُ الْمُحْرِمُ) ‘‘মুহরিম তা শিকার করলে তাকে ফিদিয়া হিসেবে একটি মেষ দিতে হবে।
হাদীসটি সুস্পষ্ট দলীল যে, হায়েনা হত্যাকারী মুহরিমকে ফিদিয়া দিতে হবে। এ বিষয়ে চার ইমামের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। তবে ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ ও আহমাদ-এর মতে তাকে একটি মেষ অথবা ছাগল দিতে হবে। পক্ষান্তরে ইমাম আবূ হানীফার মতে তার মূল্য দেয়া ওয়াজিব। হিদায়াতে উল্লেখ আছে যে, ইমাম আবূ হানীফা ও আবূ ইউসুফ-এর মতে যে অঞ্চলে শিকারী প্রাণী হত্যা করা হয় সে এলাকায় সেটার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।
অতএব দু’জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি সেটার মূল্য নির্ধারণ করবে। অতঃপর ইচ্ছা করলে সে ঐ মূল্য দ্বারা কোন পশু ক্রয় করবে যদি তা দ্বারা পশু ক্রয় করা যায় অথবা খাদ্য-দ্রব্য ক্রয় করে তা সাদাকা করবে অথবা তিনদিন সওম পালন করবে।
(أَيُؤْكَلُ) ‘‘তা কি খাওয়া যাবে?’’ তিরমিযী’র বর্ণনায় আছে- (قلت: آكلها؟) ‘‘আমি জিজ্ঞেস করলাম আমি কি তা খাবো?’’ (قال : نعم) ‘‘তিনি বললেনঃ হ্যাঁ’’।
অত্র হাদীসে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, হায়েনা খাওয়া হালাল। ইমাম শাফি‘ঈ ও ইমাম আহমাদ-এর অভিমত এটাই। ইমাম শাফি‘ঈ বলেনঃ লোকেরা তা খেতো এবং কোন প্রকার বাধা ব্যতীত সাফা-মারওয়ার মাঝে তা বেচাকেনা করত ‘আরবদের নিকট তা পছন্দনীয়।
পক্ষান্তরে ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম মালিক-এর মতে তা হারাম। তাদের দলীল সে হাদীস যাতে আছে যে, প্রত্যেক কর্তন দাঁতওয়ালা হিংস্র প্রাণী হারাম এবং খুযায়মাহ্ ইবনু জায বর্ণিত (২৭৩০ নং) হাদীস। ইমাম শাওকানী প্রতিপক্ষের দ্বিতীয় মতের প্রথম হাদীসের জওয়াবে বলেন যে, জাবির (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি খাস এবং তাদের উত্থাপিত (كل ذي ناب) হাদীসটি ‘আম্।
অতএব খাস হাদীসটি ‘আম্ হাদীসের উপর প্রাধান্য পাবে। তাদের দ্বিতীয় দলীল খুযায়মাহ্ ইবনু জায বর্ণিত হাদীসটি য‘ঈফ। কেননা তার একজন রাবী ‘আবদুল কারীম ইবনু আবিল মুখারিক্ব। যিনি সর্বসম্মতিক্রমে য‘ঈফ। অতএব উক্ত হাদীসটি দলীলযোগ্য নয়।