পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ
২২৬৯-[৯] আবূ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে বলে দিব না, তোমাদের কাজ-কর্মের মধ্যে কোন্ কাজটি তোমাদের মালিকের কাছে অধিক পবিত্র এবং তোমাদের মর্যাদা বৃদ্ধির ব্যাপারে অধিক কার্যকর। তাছাড়া তোমাদের জন্য সোনা-রূপা দান করার চেয়েও শ্রেষ্ঠ এবং এ কথার চেয়েও শ্রেষ্ঠ যে, তোমরা শত্রুর মুকাবিলা করবে, তাদের গলা কাটবে, আর তারা তোমাদের গলা কাটবে (যুদ্ধ করবে)। তাঁরা উত্তরে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি বলুন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তা হলো আল্লাহর জিকির বা স্মরণ করা। (মালিক, আহমদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ। কিন্তু ইমাম মালিক এ হাদীসটিকে মাওকূফ হাদীস অর্থাৎ- আবূ দারদা (রাঃ)-এর কথা বলে মনে করেন।)[1]
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَا أُنَبِّئُكُمْ بِخَيْرِ أَعْمَالِكُمْ وَأَزْكَاهَا عِنْدَ مَلِيكِكُمْ؟ وَأَرْفَعِهَا فِي دَرَجَاتِكُمْ؟ وَخَيْرٍ لَكُمْ مِنْ إِنْفَاقِ الذهبِ والوَرِقِ؟ وخيرٍ لكم مِنْ أَنْ تَلْقَوْا عَدُوَّكُمْ فَتَضْرِبُوا أَعْنَاقَهُمْ وَيَضْرِبُوا أَعْنَاقَكُمْ؟» قَالُوا: بَلَى قَالَ: «ذِكْرُ اللَّهِ» . رَوَاهُ مَالِكٌ وَأَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ إِلَّا أَنَّ مَالِكًا وَقفه على أبي الدَّرْدَاء
ব্যাখ্যা:( أَلَا أُنَبِّئُكُمْ) আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দিব না?
(فِىْ دَرَجَاتِكُمْ) অর্থাৎ- জান্নাতের মধ্যে সর্বাধিক মর্যাদার অধিকারীর ব্যাপারে।
(ذِكْرُ اللّٰهِ) অর্থাৎ- সেই উত্তম ‘আমলটি হলো ذِكْرُ اللّٰهِ তথা আল্লাহ স্মরণ করা। এখানে জিকির শব্দটি শর্তহীন রাখার প্রেক্ষিতে এ কথা বুঝায় যে, জিকির কম হোক বা বেশি হোক স্থায়ী হোক আর অস্থায়ী হোক সকল ক্ষেত্রেই কেবল জিকির হলেই হাদীসে বর্ণিত ফাযীলাত লাভে ধন্য হওয়া সম্ভব।
হাদীসটি থেকে এ কথাও বুঝা যায় জিকির হল সর্বাধিক উত্তম ‘আমল যা বান্দা করে থাকে তার রবকে সন্তুষ্ট করার জন্য। ‘আল্লামা সিনদী হানাফী (রহঃ) বলেন, আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্নভাবে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে সর্বোত্তম ‘আমল সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন মতামত দিয়েছেন। সুতরাং এর সুষ্ঠু সমাধানকল্পে ‘উলামায়ে কিরাম কয়েকটি কথা বলেছেন।
কেউ কেউ বলেছেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূলত প্রশ্নকারীর প্রতি খেয়াল করে উত্তর দিয়েছেন তাই যার ভিতরে যে ‘আমলের অভাব দেখেছেন তাকে সে ‘আমলের কথাই বলেছেন যে, এটাই সর্বোত্তম ‘আমল।
যাকে তিনি যা দেখেছেন যে, সে শক্তিমান সুঠাম দেহের ও বিরত্বের অধিকারী তাকে তিনি জিহাদের কথা বলেছেন যে, জিহাদই হলো সর্বোত্তম ‘আমল। আবার যাকে দেখেছেন সম্পদশালী তাকে বলেছেন, দান সদাকাহ্ বা যাকাতের কথা। যাকে দেখেছেন পিতা-মাতার অবাধ্য তাকে বলেছেন পিতা-মাতার সাথে সদাচরণই হলো সর্বোত্তম ‘আমল। আর যাকে দেখেছেন সে না শক্তিশালী না বিত্তবান তাই তাকে বলেছেন তোমার জন্য জিকিরই হলো সর্বোত্তম ‘ইবাদাত।
হাফেয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, আবূ দারদা (রাঃ) এর হাদীসে উল্লেখিত জিকির দ্বারা জিকিরে কামিল তথা পূর্ণাঙ্গ জিকিরই উদ্দেশ্য যাতে অন্তর ও মুখের সমন্বয় সাধন হয়।
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ
২২৭০-[১০] ’আবদুল্লাহ ইবনু বুসর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার এক বিদুঈন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, সর্বোত্তম ব্যক্তি কে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ সৌভাগ্যবান সে ব্যক্তি, যে দীর্ঘ হায়াত পেয়েছে এবং যার ’আমল নেক হয়েছে। সে ব্যক্তি আবার জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! কোন ’আমল সর্বোত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি যখন দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবে তখন তোমার মুখে আল্লাহর জিকিররত থাকবে। (তিরমিযী; আহমদ)[1]
وَعَن عبد الله بن يسر قَالَ: جَاءَ أَعْرَابِيٌّ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: أَيُّ النَّاسِ خَيْرٌ؟ فَقَالَ: «طُوبَى لِمَنْ طَالَ عُمْرُهُ وَحَسُنَ عَمَلُهُ» قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيُّ الْأَعْمَالِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: ( «ن تُفَارِقَ الدُّنْيَا وَلِسَانُكَ رَطْبٌ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ» رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: (وَحَسُنَ عَمَلُه) ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, সময় হচ্ছে ব্যবসায়ের মূলধনের মতো যে ব্যবসায়ের মূলধন যত বেশি হবে তার লাভ তত বেশি হবে। সে মূলধন নিয়ে যত বেশি পরিশ্রম করবে তার লাভও তত বেশি হবে। সুতরাং যে বেশি হায়াত পাবেন তার লাভ তত বেশি হবে। অনুরূপ বেশি হায়াত পেয়ে যত বেশি সৎ ‘আমল করবে তার নেকীও তত বেশি হবে। আর যদি মূলধন তথা সময় নষ্ট করে তাহলে সে স্পষ্ট ক্ষতির মধ্যে নিপতিত হবে।
হাফেয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, অত্র হাদীসে ভাল সৎকাজের প্রশংসা করা হয়েছে পাশাপাশি যারা এ ভাল কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকবে তাদের জন্য বিশ্বনাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু্‘আ করেছেন। তারা যেন দুনিয়ায় আখিরাত উভয় স্থানে ভাল থাকে। তবে অত্র হাদীসের বাহ্যিক অর্থ গ্রহণ করলে طوبى শব্দের অর্থ হবে خير তথা ভালো, কারণ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (طُوبٰى لِمَنْ طَالَ عُمْرُه وَحَسُنَ عَمَلُه) এ কথাটি বলেছেন প্রশ্নের উত্তরে। (أَيُّ النَّاسِ خَيْرٌ) দ্বারা জান্নাতের একটি গাছও উদ্দেশ্য হতে পারে, কারণ জান্নাতের একটি গাছ রয়েছে যার নাম طوبى (তূবা)।
একটি প্রশ্ন ও তার উত্তরঃ ইমাম আহমাদ ও তিরমিযী (রহঃ) অত্র হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তারা অত্র হাদীসের طوبى (তূবা) শব্দটি উল্লেখ করেননি, এর কারণ কি?
উত্তরঃ তারা হাদীসের বাহ্যিক দিকটি দৃষ্টিতে নিয়েছেন, কারণ হাদীসে প্রশ্নকারী প্রশ্ন করেছেন কে উত্তম? তার উত্তরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন উক্তি করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ
২২৭১-[১১] আনাস (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন জান্নাতের বাগানে যাবে, তখন তোমরা বাগানের ফল খাবে। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! জান্নাতের বাগান কি? তিনি বললেন, যিকিরের মাজলিস। (তিরমিযী)[1]
وَعَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا مَرَرْتُمْ بِرِيَاضِ الْجَنَّةِ فَارْتَعُوا» قَالُوا: وَمَا رِيَاضُ الْجِنّ؟ قَالَ: «حلق الذّكر» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: (إِذَا مَرَرْتُمْ بِرِيَاضِ الْجَنَّةِ) হাদীসে উল্লেখিত رياض (রিয়ায) শব্দটি رَوْضَةٌ শব্দের বহুবচন যার অর্থ হলো সবুজ শ্যামল উদ্ভিদে ভরপুর ভূমি।
ফারসী ভাষায় যাকে مرغزار (মার্গযার) বলা হয়। অর্থাৎ- এমন বাগান যা দুনিয়াতে বাগান কিন্তু পরকালে তা ব্যক্তির জন্য জান্নাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে অত্র হাদীসে رياض দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, (مجالس الذكر) তথা আল্লাহর যিকিরের স্থানসমূহ। সুতরাং (مجالس الذكر) তথা আল্লাহর যিকিরের স্থানসমূহকে (رِيَاضُ الْجِنَّةِ) তথা জান্নাতের বাগানের সাথে এজন্য সাদৃশ্য দেয়া হয়েছে যে, মানুষ আল্লাহর জিকির করলে তার শেষ পরিণাম (رِيَاضُ الْجِنَّةِ) তথা জান্নাতের বাগানই হবে।
এ জিকির করা তাকে জান্নাতের বাগানের প্রবেশে বিশেষ সহযোগিতা করবে।
(فَارْتَعُوا) শব্দটির অর্থ হলো তোমরা তৃপ্তিসহকারে পানাহার করো। এর দ্বারা ইশারার মাধ্যমে বুঝানো হয়েছে তোমরা যিকিরের মাজলিসে বসে পূর্ণ সাওয়াব হাসিল করো।
(حِلَقُ الذِّكْرِ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ‘ইলম অন্বেষণের স্থান যেখানে বসে বসে মানুষ দীনী ‘ইলম শিক্ষা করতে পারে।
‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, (حلق) হিলাক হচ্ছে মসজিদে একত্রিত হয়ে দীনী ‘ইলম শিক্ষা করা আর জিকির হচ্ছে সুবহা-নাল্ল-হ, আল হামদুলিল্লা-হ ইত্যাদি সুন্নাতী জিকিরগুলো। তবে বিষয়টিকে ব্যাপক অর্থে নেয়া বেশি ভাল।
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ
২২৭২-[১২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন জায়গায় বসেছে, আর সেখানে আল্লাহর জিকির করেনি, আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী সে বৈঠক তার জন্য ক্ষতির কারণ হয়েছে। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি বিছানায় শুয়েছে অথচ আল্লাহর জিকির করেনি, আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী তা তার জন্য ক্ষতির কারণ হবে। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ قَعَدَ مَقْعَدًا لَمْ يَذْكُرِ اللَّهَ فِيهِ كَانَتْ عَلَيْهِ مِنَ اللَّهِ تِرَةٌ وَمَنِ اضْطَجَعَ مَضْجَعًا لَا يذكر الله فِيهِ كَانَ عَلَيْهِ مِنَ اللَّهِ تِرَةٌ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
ব্যাখ্যা: (تِرَةٌ) শব্দটি تاء শব্দে যের এবং راء শব্দে সাকিন দিয়ে পড়তে হয় যার অর্থ হলো (حسرة) তথা পেরেশানী, এ শব্দের একটি অর্থ হলো কম করা, যেমন : আল্লাহ বলেন, لَنْ يَتِرَكُمْ أَعْمَالَكُم অর্থাৎ- ‘‘আল্লাহ তোমাদের ‘আমলে কোন অসম্পূর্ণতা করবেন না।’’ (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭ : ৩৫)
ইমাম জায্রী (রহঃ) বলেন, (أصل الترة، النقص) তথা تِرَةٌ শব্দের মূল অর্থ হলো অসম্পূর্ণতা তবে অত্র হাদীসে এর অর্থ হলো পরিণাম তবে এর অর্থ অন্য রিওয়ায়াতে حسرة তথা পেরেশানীও বর্ণিত হয়েছে।
অত্র হাদীসটিতে দু’টি স্থান উল্লেখ করে সব স্থানকে বুঝানো উদ্দেশ্য যেমনঃ সকাল-সন্ধ্যা বলতে সমস্ত সময়কে বুঝানো হয়। অর্থাৎ- যে ব্যক্তি যে কোন স্থানে যে কোন সময়ে উঠতে, বসতে, শুতে, ঘুমাতে কোন সময়ে জিকির করতে পারল না তার জন্য অপমান ও লাঞ্ছনা অপেক্ষা করছে সে প্রচুর সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবে।
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ
২২৭৩-[১৩] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন দল কোন মাজলিস হতে আল্লাহর জিকির না করে উঠলে নিশ্চয় তারা মরা গাধা (’র মাংস) খেয়ে উঠল। এ মাজলিস তাদের জন্য আক্ষেপের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। (আহমদ, আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ قَوْمٍ يَقُومُونَ مِنْ مَجْلِسٍ لَا يَذْكُرُونَ اللَّهَ فِيهِ إِلَّا قَامُوا عَنْ مِثْلِ جِيفَةِ حِمَارٍ وَكَانَ عَلَيْهِمْ حَسرَةً» . رَوَاهُ أحمدُ وَأَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন সম্প্রদায়ের লোকেরা একস্থানে বসে অনেক আলাপ-আলোচনা করল কিন্তু আল্লাহ তা‘আলার কোন আলোচনা যদি তাদের কথার ভিতর না থাকে তাহলে তারা যেন গাধার পঁচা নাড়ি-ভুড়ি থেকে উঠে দাঁড়ালো, অর্থাৎ- তারা এতক্ষণ যে স্থানে বসা ছিল সে স্থানকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ময়লা আবর্জনার দিক দিয়ে গাধার পঁচা নাড়ি-ভুড়ির সমতুল্য বলেছেন।
ইবনুল মালিক (রহঃ) বলেন, এত পশু থাকতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এখানে গাধার নাড়ি-ভুড়ির প্রসঙ্গ এজন্য টেনেছেন যে, গাধা হলো প্রাণীকূলের মধ্যে সর্বাধিক পঁচা সড়ার ও নোংরামীর দিক দিয়ে অগ্রগামী। তাই কোন মু’মিন বান্দার উচিত হবে না যে, সে এমন বৈঠকে বসবে যেখানে আল্লাহর জিকির করা হবে না এবং এটাও উচিত হবে না যে, সে বেঈমানদের সাথে উঠা-বসা করবে। এবং সে সেখান থেকে তেমনিভাবে কেটে পড়বে যেমনিভাবে সে গাধার পঁচা নাড়ি-ভুড়ি থেকে কেটে পড়ে।
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ
২২৭৪-[১৪] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন দল কোন মাজলিসে বসল অথচ আল্লাহ তা’আলাকে স্মরণ করল না এবং তাদের নবীর প্রতিও দরূদ সালাম পাঠাল না। নিশ্চয়ই তাদের জন্য এটা ক্ষতির কারণ হলো। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদেরকে শাস্তিও দিতে পারেন, আবার ইচ্ছা করলে ক্ষমাও করে দিতে পারেন। (তিরমিযী)[1]
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا لَمْ يَذْكُرُوا اللَّهَ فِيهِ وَلَمْ يُصَلُّوا عَلَى نَبِيِّهِمْ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِمْ تِرَةً فَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُمْ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُمْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
ব্যাখ্যা: (وَلَمْ يُصَلُّوا عَلٰى نَبِيِّهِمْ) এখানে ‘আম তথা কথাকে প্রথমে ব্যাপকভাবে বলে পরে খাস তথা নির্দিষ্টকরণের দিকে যাওয়া হয়েছে, অর্থাৎ- প্রথমে বলা হলো যেখানে আল্লাহর জিকির করা হয়নি, পরে আবার বলা হলো নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত আদায় করা হয়নি। অথবা জানি নাবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর সালাত আদায় করাও যিকিরের একটা অংশ বিশেষ। সুতরাং প্রথমে ব্যাপকভাবে বলে পরবর্তীতে খাস করার মাধ্যমে নাবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ পাঠের বিষয়টিকে বেশি গুরুত্বারোপ করা হলো।
(وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُمْ) আল্লাহ যদি চান তাহলে তিনি তাদেরকে মাফ করে দিবেন তবে এমন কাজ ধারাবাহিকভাবে করতে থাকলে বিষয়টি অন্যদিকে মোড় নিতে থাকে।
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ
২২৭৫-[১৫] উম্মু হাবীবাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বানী আদমের প্রতিটি কথাই (কাজই) তার জন্য অকল্যাণকর (ক্ষতিকারক), তবে যদি এসব কাজ মানুষকে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ এবং আল্লাহর যিকিরের উদ্দেশে হয়। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ; ইমাম আত্ তিরমিযী বলেন, হাদীসটি গরীব)[1]
وَعَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كُلُّ كَلَامِ ابْنِ آدَمَ عَلَيْهِ لَا لَهُ إِلَّا أَمْرٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ نَهْيٌ عَنْ مُنْكَرٍ أَوْ ذِكْرُ اللَّهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيث غَرِيب
ব্যাখ্যা: (كُلُّ كَلَامِ ابْنِ آدَمَ) বানী আদামের প্রত্যেকটি কথা। এ শব্দেই বেশীরভাগ বর্ণনা এসেছে। অন্য বর্ণনায় كُلُّ তথা প্রত্যেকটি কথার উল্লেখ নেই। كُلُّ শব্দ সংযুক্ত হয়ে যেমন- মাসাবীহ, জামি‘উল উসূল, তারগীব ইত্যাদি তবে আত্ তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ্তে كُلُّ শব্দ ব্যতীত শুধু (كَلَامِ ابْنِ آدَمَ) আছে। এমনকি ‘আল্লামা ইবনুল কইয়্যিম (রহঃ)-এর (الوابل الصيب) ‘‘আল্ ওয়া-বিল আস্ সায়ব’’-এও এমন বর্ণনাই রয়েছে।
(عَلَيْهِ) তার অর্থ হলো কথার ক্ষতি তার ওপরই বর্তাবে তার কোন উপকারে আসবে না, তবে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ ব্যতীত।
(عَلَيْهِ) অর্থাৎ- বাক্যালাপের ক্ষতি তাকে বহন করতে হবে যদিও তা বৈধ কথাবার্তা হয়ে থাকে। সুতরাং কথার ফুলঝুরি ছড়াতে থাকলে এটা হয়তো তাকে এক সময় মাকরূহ বা হারামের দিকে ধাবিত করবে যা তার জন্য ‘আযাবের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। অথবা বেশী কথা বলা তাকে আল্লাহর জিকির থেকে অমনোযোগী করে দিবে যা সাওয়াব সংকীর্ণ করে দেয়ার একটি মাধ্যম। কেউ কেউ বলেছেন, (عَلَيْهِ)-এর অর্থ হলো তার বিরুদ্ধে লেখা হয়।
(أَوْ ذِكْرُ اللّٰهِ) ‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহঃ) হাদীসের এ অংশটির ব্যাখ্যায় বলেন, কেবলমাত্র যথোপযুক্ত কথা ব্যতীত অন্যায় কোন কথা বলা বৈধ নয় হাদীসের বাহ্যিক দিক থেকে এটিই বোধগম্য। কেউ কেউ বলেন, হাদীসে উল্লেখিত (لَا لَه) অংশটি পূর্বে উল্লেখিত (عَلَيْهِ)-এর ব্যাখ্যা আর এতে কোন সন্দেহ নেই যেগুলো কাজ মুবাহ (বৈধ) করা হয়েছে তা করা হারাম হবে না ঠিক তবে তার শেষ পরিণামে কোন উপকার নেই।
আবার কেউ কেউ বলেছেন, এর ব্যাখ্যা বা মূল ইবারাতটি হলো-
كل كلام ابن آدم حسرة عليه لا منفعة له فيه إلا المذكورات وأمثالها.
অর্থাৎ- বানী আদামের প্রতিটি বাক্যালাপ তার জন্য অপকার, কোনটিই তার কোন উপকারে আসবে না তবে যদি কথার মাধ্যমে সে সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজের নিষেধ, আল্লাহর জিকির ইত্যাদি করে থাকে তাহলে এগুলো তার উপকারে আসবে। এ হাদীসটি কুরআনে কারীমের নিম্নোক্ত আয়াতটির সাথে বেশ মিল রাখে। সেখানে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেনঃ
لَا خَيْرَ فِىْ كَثِيْرٍ مِنْ نَجْوَاهُمْ إِلَّا مَنْ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوْ مَعْرُوْفٍ أَوْ إِصْلَاحٍ بَيْنَ النَّاسِ
অর্থাৎ- ‘‘তাদের বেশী বেশী একান্ত কথাবার্তার মধ্যে কোনই কল্যাণ নেই তবে যারা সৎ সদাকার আদেশ করল, সৎ কাজের আদেশ অথবা মানুষের মধ্যে পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি বিষয়ে সংশোধনী আনার চেষ্টা করল তারা এর সুফল পাবে।’’ (সূরা আন্ নিসা ৪ : ১১৪)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ
২২৭৬-[১৬] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর জিকির ছাড়া বেশি কথা বলো না। কেননা আল্লাহর জিকির ছাড়া অন্য কথা বেশি বলা হৃদয় কঠিন হয়ে যাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর শক্ত হৃদয়সম্পন্ন ব্যক্তিই হচ্ছে আল্লাহ তা’আলা হতে সবচেয়ে বেশি দূরে। (তিরমিযী)[1]
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تُكْثِرُوا الْكَلَامَ بِغَيْرِ ذِكْرِ اللَّهِ فَإِنَّ كَثْرَةَ الْكَلَامِ بِغَيْرِ ذِكْرِ اللَّهِ قَسْوَةٌ لِلْقَلْبِ وَإِنَّ أَبْعَدَ النَّاسِ مِنَ اللَّهِ الْقَلْبُ الْقَاسِي» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: (لَا تُكْثِرُوا) আল্লাহর জিকিরে বেশি কথা বলা লাগলে ভাল। তবে জিকিরুল্লাহ ব্যতীত অন্য প্রসঙ্গে অত্যধিক হারে কথা বলো না। কেননা, জিকিরুল্লাহ ব্যতীত বেশি কথা হলো অন্তরের কর্কশতার প্রমাণ।
ইমাম নাবাবী (রহঃ) ও ইমাম মুনযীরী বলেন, হাদীসটির মধ্যে একটু ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, অহেতুক কথা একটু বলা যেতে পারে যেহেতু রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, বেশি হারে অহেতুক কথা বলো না। তবে বিরত থাকা অবশ্যই ভাল।
(وَإِنَّ أَبْعَدَ النَّاسِ مِنَ اللّٰهِ الْقَلْبُ الْقَاسِي) এখানে কলব তথা অন্তর বলে মূলত অন্তরের অধিকারী তথা মানুষকে বুঝানো হয়েছে। ‘যেমন বলা হয়ে থাকে’ অংশবিশেষ উল্লেখ করে পুরোটাকে উদ্দেশ্য করা।
অথবা কলব মানেই ব্যক্তি নেয়া যেতে পারে।
যেমন বলা হয়ে থাকে (المرأ بأصغريه أي بقلبه ولسانه) তথা মানুষ হচ্ছে তার ছোট দু’টি বস্ত্তর সমন্বয় এক তার অন্তর দুই তার জিহবা।
মোট কথা হলো, অন্তর কঠিন হয়ে গেলে আমাদের জন্য তা অকল্যাণ ডেকে আনবে। যেমনঃ মহান আল্লাহ বলেন,
ثُمَّ قَسَتْ قُلُوبُكُمْ مِنْ بَعْدِ ذَلِكَ فَهِيَ كَالْحِجَارَةِ أَوْ أَشَدُّ قَسْوَةً
‘‘অনন্তর পরবর্তী তোমাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেল যেন তা পাথরের মতো তার চেয়ে বেশি কঠিন।’’ (সূরা আল বাকারাহ্ ২ : ৭৪)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ
২২৭৭-[১৭] সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখনوَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ অর্থাৎ- ’’আর যারা (অতি লোভের বশবর্তী হয়ে) সোনা-রূপা জমা করে’’- (সূরা আত্ তওবা্ ৯ : ৩৪) এ আয়াতটি নাযিল হলো, তখন আমরা কোন এক সফরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। এমন সময় জনৈক সাহাবী বললেন, এ কথা সোনা-রূপা সম্পর্কে নাযিল হলো। যদি আমরা জানতাম কোন্ সম্পদ উত্তম, তাহলে তবে জমা করে রাখতাম। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমাদের কারো শ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো আল্লাহর জিকিরকারী জিহবা, কৃতজ্ঞতা স্বীকারকারী অন্তর ও মু’মিনাহ্ স্ত্রী; যে তার (স্বামীর) ঈমানের (দীনের) ব্যাপারে সহযোগিতা করে। (আহমদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ)[1]
وَعَنْ ثَوْبَانَ قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ (وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَب وَالْفِضَّة)
كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ فَقَالَ بَعْضُ أَصْحَابِهِ: نَزَلَتْ فِي الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ لَوْ عَلِمْنَا أَيُّ الْمَالِ خَيْرٌ فَنَتَّخِذَهُ؟ فَقَالَ: «أَفْضَلُهُ لِسَانٌ ذَاكِرٌ وَقَلْبٌ شَاكِرٌ وَزَوْجَةٌ مُؤْمِنَةٌ تُعِينُهُ عَلَى إِيمَانِهِ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ
ব্যাখ্যা: (وَزَوْجَةٌ مُؤْمِنَةٌ تُعِينُه عَلَى ايمَانِه) ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, সহাবায়ে কিরাম এখানে বলেছেন যে, মাল-সম্পদের মধ্যে কোন ধরনের উপকার থাকলে আমরা তা গ্রহণ করতাম কিন্তু তাতে কোন লাভ বা উপকার নেই। সুতরাং তা আমরা গ্রহণ করিনি। মহান আল্লাহ বলেন,
يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُوْنَ
‘‘সেদিন কোন সম্পদ ও ছেলে সন্তান কোনই কাজে আসবে না।’’ (সূরা আশ্ শু‘আরা ২৬ : ৮৮)
হ্যাঁ যারা শির্ক ও বিদআত (বিদাত) মুক্ত অন্তর নিয়ে আল্লাহর সম্মুখে উপস্থিত হতে পারবে তারা এর মাধ্যমে উপকৃত হতে পারবে।
অত্র হাদীসে বলা হয়েছে যে, মু’মিনাহ্ স্ত্রী স্বামীর জন্য উপকারী হ্যাঁ। অবশ্যই উপকারী কারণ তিনি তার স্বামীকে সালাত সিয়াম যাকাতসহ বিভিন্ন শার‘ঈ কাজে সহায়তা করেন অপরদিকে যিনা-ব্যভিচার থেকে শুরু করে যাবতীয় অন্যায় কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখতে পারেন। তাই স্বামীর জন্য একজন উত্তম মু’মিনাহ্ স্ত্রী খুবই প্রয়োজন কেনই বা নয়, যেহেতু রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এ দুনিয়া সবই আল্লাহ তা‘আলা মানবমন্ডলীর জীবন ধারণের জন্য উপকারী হিসেবে দিয়েছেন আর গোটা পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক উপকারী বিষয় হচ্ছে স্বামীর জন্য একজন সৎ স্ত্রী। সুতরাং বিষয়টি গুরুত্বের দাবীদার।