২২৭৫

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ

২২৭৫-[১৫] উম্মু হাবীবাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বানী আদমের প্রতিটি কথাই (কাজই) তার জন্য অকল্যাণকর (ক্ষতিকারক), তবে যদি এসব কাজ মানুষকে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ এবং আল্লাহর যিকিরের উদ্দেশে হয়। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ; ইমাম আত্ তিরমিযী বলেন, হাদীসটি গরীব)[1]

وَعَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كُلُّ كَلَامِ ابْنِ آدَمَ عَلَيْهِ لَا لَهُ إِلَّا أَمْرٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ نَهْيٌ عَنْ مُنْكَرٍ أَوْ ذِكْرُ اللَّهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيث غَرِيب

وعن ام حبيبة قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «كل كلام ابن ادم عليه لا له الا امر بمعروف او نهي عن منكر او ذكر الله» . رواه الترمذي وابن ماجه وقال الترمذي: هذا حديث غريب

ব্যাখ্যা: (كُلُّ كَلَامِ ابْنِ آدَمَ) বানী আদামের প্রত্যেকটি কথা। এ শব্দেই বেশীরভাগ বর্ণনা এসেছে। অন্য বর্ণনায় كُلُّ তথা প্রত্যেকটি কথার উল্লেখ নেই। كُلُّ শব্দ সংযুক্ত হয়ে যেমন- মাসাবীহ, জামি‘উল উসূল, তারগীব ইত্যাদি তবে আত্ তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ্তে كُلُّ শব্দ ব্যতীত শুধু (كَلَامِ ابْنِ آدَمَ) আছে। এমনকি ‘আল্লামা ইবনুল কইয়্যিম (রহঃ)-এর (الوابل الصيب) ‘‘আল্ ওয়া-বিল আস্ সায়ব’’-এও এমন বর্ণনাই রয়েছে।

(عَلَيْهِ) তার অর্থ হলো কথার ক্ষতি তার ওপরই বর্তাবে তার কোন উপকারে আসবে না, তবে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ ব্যতীত।

(عَلَيْهِ) অর্থাৎ- বাক্যালাপের ক্ষতি তাকে বহন করতে হবে যদিও তা বৈধ কথাবার্তা হয়ে থাকে। সুতরাং কথার ফুলঝুরি ছড়াতে থাকলে এটা হয়তো তাকে এক সময় মাকরূহ বা হারামের দিকে ধাবিত করবে যা তার জন্য ‘আযাবের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। অথবা বেশী কথা বলা তাকে আল্লাহর জিকির থেকে অমনোযোগী করে দিবে যা সাওয়াব সংকীর্ণ করে দেয়ার একটি মাধ্যম। কেউ কেউ বলেছেন, (عَلَيْهِ)-এর অর্থ হলো তার বিরুদ্ধে লেখা হয়।

(أَوْ ذِكْرُ اللّٰهِ) ‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহঃ) হাদীসের এ অংশটির ব্যাখ্যায় বলেন, কেবলমাত্র যথোপযুক্ত কথা ব্যতীত অন্যায় কোন কথা বলা বৈধ নয় হাদীসের বাহ্যিক দিক থেকে এটিই বোধগম্য। কেউ কেউ বলেন, হাদীসে উল্লেখিত (لَا لَه) অংশটি পূর্বে উল্লেখিত (عَلَيْهِ)-এর ব্যাখ্যা আর এতে কোন সন্দেহ নেই যেগুলো কাজ মুবাহ (বৈধ) করা হয়েছে তা করা হারাম হবে না ঠিক তবে তার শেষ পরিণামে কোন উপকার নেই।

আবার কেউ কেউ বলেছেন, এর ব্যাখ্যা বা মূল ইবারাতটি হলো-

كل كلام ابن آدم حسرة عليه لا منفعة له فيه إلا المذكورات وأمثالها.

অর্থাৎ- বানী আদামের প্রতিটি বাক্যালাপ তার জন্য অপকার, কোনটিই তার কোন উপকারে আসবে না তবে যদি কথার মাধ্যমে সে সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজের নিষেধ, আল্লাহর জিকির ইত্যাদি করে থাকে তাহলে এগুলো তার উপকারে আসবে। এ হাদীসটি কুরআনে কারীমের নিম্নোক্ত আয়াতটির সাথে বেশ মিল রাখে। সেখানে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেনঃ

لَا خَيْرَ فِىْ كَثِيْرٍ مِنْ نَجْوَاهُمْ إِلَّا مَنْ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوْ مَعْرُوْفٍ أَوْ إِصْلَاحٍ بَيْنَ النَّاسِ

অর্থাৎ- ‘‘তাদের বেশী বেশী একান্ত কথাবার্তার মধ্যে কোনই কল্যাণ নেই তবে যারা সৎ সদাকার আদেশ করল, সৎ কাজের আদেশ অথবা মানুষের মধ্যে পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি বিষয়ে সংশোধনী আনার চেষ্টা করল তারা এর সুফল পাবে।’’ (সূরা আন্ নিসা ৪ : ১১৪)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৯: দু‘আ (كتاب الدعوات)