পরিচ্ছেদঃ ৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - স্বামীর সম্পদ থেকে স্ত্রীর সদাক্বাহ্ করা

১৯৫৩-[৭] আবুল লাহম (রাঃ)-এর আযাদ করা গোলাম ’উমায়র (রাঃ)বলেন, আমার মুনিব আমাকে মাংস (মাংস/মাংস/গোসত) টুকরা করার হুকুম দিলেন। এমন সময় একজন মিসকীন এলো। আমি তাকে ওখান থেকে কিছু মাংস (মাংস/মাংস/গোসত) খেতে দিলাম। আমার মুনিব এ কথা জানতে পারলেন। তিনি আমাকে মারলেন। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এলাম। এ ঘটনা তাঁর কাছে বললাম। তিনি আমার মুনিবকে ডেকে পাঠালেন। তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি ’উমায়রকে মেরেছ কেন? তিনি বললেন, সে আমার অনুমতি ছাড়া (মিসকীনকে) খাবার দিয়ে দেয়। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এর সাওয়াব তোমাদের দু’জনেরই হত।

অন্য বর্ণনায় আছে, ’উমায়র বলেছেন, আমি গোলাম। তাই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম আমার মুনিবের ধন-সম্পদ থেকে সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করতে পারব কিনা? তিনি বললেন, হ্যাঁ, পারবে। এর সাওয়াব তোমরা দু’জন অর্ধেক অর্ধেক করে পাবে। (মুসলিম)[1]

عَنْ عُمَيْرٍ مَوْلَى آبِي اللَّحْمِ قَالَ: أَمَرَنِي مَوْلَايَ أَنْ أُقَدِّدَ لَحْمًا فَجَاءَنِي مِسْكِينٌ فَأَطْعَمْتُهُ مِنْهُ فَعَلِمَ بِذَلِكَ مَوْلَايَ فَضَرَبَنِي فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ فَدَعَاهُ فَقَالَ: «لِمَ ضَرَبْتَهُ؟» فَقَالَ يُعْطِي طَعَامِي بِغَيْرِ أَنْ آمُرَهُ فَقَالَ: «الْأَجْرُ بَيْنَكُمَا» . وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: كُنْتُ مَمْلُوكًا فَسَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أأتصدق مِنْ مَالِ مَوَالِيَّ بِشَيْءٍ؟ قَالَ: «نَعَمْ وَالْأَجْرُ بَيْنَكُمَا نِصْفَانِ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

عن عمير مولى ابي اللحم قال: امرني مولاي ان اقدد لحما فجاءني مسكين فاطعمته منه فعلم بذلك مولاي فضربني فاتيت رسول الله صلى الله عليه وسلم فذكرت ذلك له فدعاه فقال: «لم ضربته؟» فقال يعطي طعامي بغير ان امره فقال: «الاجر بينكما» . وفي رواية قال: كنت مملوكا فسالت رسول الله صلى الله عليه وسلم: ااتصدق من مال موالي بشيء؟ قال: «نعم والاجر بينكما نصفان» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: فَقَالَ: الْأَجْرُ بَيْنَكُمَا অর্থাৎ তুমি যদি সন্তুষ্ট এবং উদার মনোভাব পোষণ করে থাকো তাহলে তোমার জন্য সাওয়াব রয়েছে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভাষ্য থেকে এটা উদ্দেশ্য নয় যে, তিনি গোলামকে তার মুনিবের সম্পত্তি থেকে মুনিবের বিনা অনুমতিতে যা ইচ্ছা দিয়ে দিবে এর অনুমতি প্রদান করেছেন। আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখানে গোলামের হাতকে মুক্তভাবে খরচ করার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন বিষয়টি এমন নয় বরং একটি কাজ যার সঠিকতা স্পষ্ট সেটা গোলামের পক্ষ থেকে তার বিপরীত ঘটে গেলে মালিক তাকে প্রহার বা এ জাতীয় কোন কাজ করা অপছন্দনীয়। সুতরাং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখানে মালিককে তার গোলামের প্রতি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি দিয়ে সাওয়াব লুফে নিতে উৎসাহিত করেছেন। ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, হাদীসটির অর্থ এমন হবে যে, ‘উমায়র তিনি কোন কিছুর মাধ্যমে সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করলেন আর ধারণা করলেন যে, তার মালিক এ ব্যাপারে সন্তুষ্ট থাকবেন তবে পরে দেখা গেল মালিক সন্তুষ্ট নন। সুতরাং এ সদাক্বাহ’র প্রেক্ষক্ষতে আনুগত্যের নিয়্যাত থাকার কারণে ‘উমায়র, আর সম্পদ অর্জনের কারণে মালিক সাওয়াব পাবেন।

ক্বাযী ‘আয়ায (রহঃ) বলেন, মালিক এবং গোলামের সাওয়াবের দৃষ্টিকোণ থেকে সমান হওয়াও সম্ভব। কেননা সাওয়াব হলো আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার অনুগ্রহ আর এ অনুগ্রহকে নিয়মের বেড়াজালে বাঁধা যায় না এবং তা ‘আমল অনুপাতেও হয় না। এটা শুধুমাত্র আল্লাহ তা‘আলা বিশেষ অনুগ্রহে তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat