পরিচ্ছেদঃ ৫১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সাজদায়ে শুক্‌র

সালাতের বাইরে স্বতন্ত্র সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) তন্মধ্যে বালা-মুসীবাত দূরীভূত অর্জিত নি’আমাতের বিনিময়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) এ ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে। শাফি’ঈ ও আহমাদের নিকট সুন্নাহ এবং এটা মুহাম্মাদ-এর উক্তি আর এ ব্যাপারে অসংখ্য হাদীস ও আসার বিদ্যমান। আবূ হানীফাহ্ ও মালিক-এর নিকট সুন্নাহ না, বরং তা মাকরূহ আর তাদের মতে উল্লেখিত সিজদা্ দ্বারা সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) উদ্দেশ্য। প্রকৃতপক্ষে তাতে অংশ বিশেষ উল্লেখ করে গোটা বিষয়কে বুঝানো হয়েছে। এরূপ বহু ব্যবহার হয় যে অংশবিশেষকে নিয়ে গোটা বিষয়কে বুঝানো হয়। অথবা সিজদা্ শুকুর বিষয়টি রহিত হয়েছে। বা আল্লাহ তা’আলা অসংখ্য অগণিত নি’আমাতের মধ্যে যদি প্রতিটি নি’আমাতের জন্য সিজদা্ করা হয় তাহলে বান্দা তা কৃতজ্ঞতা প্রকাশে অপরাগ হবে। আর মুল্লা ’আলী ক্বারী বলেন, বড় কোন নি’আমাতের সুসংবাদের সময় এবং শারীরিক মুসীবাত দূরীভূতীর সময় কৃতজ্ঞতার সিজদা্ সুন্নাহ। সিনদী বলেন, এ বিষয়ে হাদীসসমূহের সুস্পষ্ট প্রমাণ যে, কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সিজদা্ শারী’আত সম্মত। আর ইমাম শাওকানী নায়লুল আওতারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সিজদা্ সংক্রান্ত হাদীসসমূহ উল্লেখের পর বলেন যে, এ সকল হাদীস প্রমাণ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সিজদা্ শারী’আত সম্মত।


১৪৯৪-[১] আবূ বকরাহ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন আনন্দের ব্যাপার সংঘটিত হলে অথবা কোন ব্যাপার তাঁকে খুশী করলে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশে সাজদায় নুয়ে পড়তেন। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী; তিনি [ইমাম তিরমিযী] বলেছেন, হাদীসটি হাসান গরীব)[1]

بَابٌ فِىْ سُجُوْدِ الشُّكْرِ

عَنْ أَبِي بَكْرَةَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا جَاءَهُ أَمْرٌ سُرُورًا أَوْ يُسَرُّ بِهِ خَرَّ سَاجِدًا شَاكِرًا لِلَّهِ تَعَالَى. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حسن غَرِيب

عن ابي بكرة قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا جاءه امر سرورا او يسر به خر ساجدا شاكرا لله تعالى. رواه ابو داود والترمذي وقال: هذا حديث حسن غريب

ব্যাখ্যা: হাদীস সুস্পষ্ট প্রমাণ করে যে, কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) শারী‘আত সম্মত। তিরমিযী বলেন, অধিকাংশ ‘উলামাদের এরই উপর ‘আমল। আর যারা এ সাজদাকে সালাতের উপর প্রয়োগ করেছেন। তা প্রকৃত উদ্দেশ্য হতে শুধু অনেক দূরেই নয় বরং বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য। এ ব্যাপারে কোন দলীল নেই। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সাজদায় কি পবিত্রতা শর্ত? কারও মতে শর্ত সালাতের উপর কিয়াস করে, আবার কারও মতে শর্ত না। আমীর ইয়ামানী বলেন, এটাই সঠিক। অধ্যায়ের হাদীসগুলোতে পবিত্রতার শর্ত প্রমাণ করে না। আর সেখানে তাকবীরও প্রমাণ করে না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৫১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সাজদায়ে শুক্‌র

১৪৯৫-[২] আবূ জা’ফার (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন একজন বেটে লোককে দেখে সাজদায় পড়ে গেলেন। (দারাকুত্বনী হাদীসটি মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আর শারহুস্ সুন্নায় মাসাবীহের ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে।)[1]

بَابٌ فِىْ سُجُوْدِ الشُّكْرِ

وَعَنْ أَبِي جَعْفَرٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى رَجُلًا مِنَ النُّغَاشِينَ فَخَرَّ ساجا. رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيُّ مُرْسَلًا وَفِي شَرْحِ السُّنَّةِ لَفْظُ المصابيح

وعن ابي جعفر: ان النبي صلى الله عليه وسلم راى رجلا من النغاشين فخر ساجا. رواه الدارقطني مرسلا وفي شرح السنة لفظ المصابيح

ব্যাখ্যা: نغاش বলতে খুব খাটো মানুষ যা অধিকাংশ পুরুষের ক্ষেত্রে হয়। নিহায়াহ্ গ্রন্থে বলা হয় চলাফেরায় দুর্বল আর অবয়বে ত্রুটিপূর্ণ। হাদীস প্রমাণ করে সুস্থতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) শারী‘আত সম্মত যখন সে কাউকে দেখবে খারাপ রোগ নিয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছে। মাজহার বলেন, যখন কেউ বিপদাপদ নিয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হয় এমন ব্যক্তিকে দেখলে আল্লাহ তাকে যে সুস্থ রেখেছেন এজন্য সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে। আর পাপাচারী ব্যক্তি দেখলেও এ সিজদা্ যেন প্রকাশ করে যাতে পাপাচারী ব্যক্তি সতর্ক হয় ও তাওবাহ্ করে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৫১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সাজদায়ে শুক্‌র

১৪৯৬-[৩] সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মক্কা হতে মদীনার উদ্দেশে পথযাত্রা শুরু করলাম। আমরা গায্ওয়াযা নামক স্থানের কাছে পৌঁছলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরোহী হতে নামলেন। দু’হাত উঠালেন। কিছু সময় পর্যন্ত আল্লাহর নিকট দু’আ করতে থাকলেন। তারপর সাজদায় গেলেন। দীর্ঘক্ষণ সাজদায় পড়ে থাকলেন। তারপর দাঁড়ালেন। কিছু সময় পর্যন্ত হাত উঠিয়ে থাকলেন। তারপর আবার সাজদায় গেলেন। দীর্ঘক্ষণ সাজদায় থাকলেন। তারপর সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হতে উঠে দু’হাত তুলে রাখলেন বেশ কিছুক্ষণ। তারপর আবার সাজদায় গেলেন। বললেন, আমি আমার রবের কাছে আরয করলাম। আমার উম্মাতের জন্য সুপারিশ করলাম। তিনি আমাকে আমার উম্মাতের তিনভাগের একভাগ দান করলেন। এজন্য আমি আমার রবের শুকর আদায় করার জন্য সাজদায় গেলাম। তারপর আমি আমার মাথা উঠালাম। আমার রবের কাছে আমার উম্মাতের জন্য আবার আবেদন জানালাম। এবার তিনি আমাকে আমার উম্মাতের আর এক অংশ দান করলেন। এজন্য আমি আমার রবের কৃতজ্ঞতা আদায় করার জন্য আবার সাজদায় চলে গেলাম। এরপর আবার আমি আমার মাথা উঠালাম। আমার রবের কাছে আমার উম্মাতের জন্য আবেদন জানালাম। এবার তিনি আমাকে আমার উম্মাতের শেষ তৃতীয়াংশ দান করলেন। এ কারণে এবার আমি আমার রবের শুকর আদায়ের জন্য তৃতীয়বার সাজদায় মনোনিবেশ করলাম। (আহমাদ, আবূ দাঊদ)[1]

بَابٌ فِىْ سُجُوْدِ الشُّكْرِ

وَعَن سعد بن أبي وَقاص قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نم مَكَّةَ نُرِيدُ الْمَدِينَةَ فَلَمَّا كُنَّا قَرِيبًا مِنْ عَزْوَزَاءَ نَزَلَ ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ فَدَعَا اللَّهَ سَاعَةً ثُمَّ خَرَّ سَاجِدًا فَمَكَثَ طَوِيلًا ثُمَّ قَامَ فَرَفَعَ يَدَيْهِ سَاعَةً ثُمَّ خَرَّ سَاجِدًا فَمَكَثَ طَوِيلًا ثُمَّ قَامَ فَرَفَعَ يَدَيْهِ سَاعَةً ثُمَّ خَرَّ سَاجِدًا قَالَ: «إِنِّي سَأَلْتُ رَبِّي وَشَفَعْتُ لِأُمَّتِي فَأَعْطَانِي ثُلُثَ أُمَّتِي فَخَرَرْتُ سَاجِدًا لِرَبِّي شُكْرًا ثُمَّ رَفَعْتُ رَأْسِي فَسَأَلْتُ رَبِّي لِأُمَّتِي فَأَعْطَانِي ثُلُثَ أُمَّتِي فَخَرَرْتُ سَاجِدًا لِرَبِّي شُكْرًا ثُمَّ رَفَعْتُ رَأْسِي فَسَأَلْتُ رَبِّي لِأُمَّتِي فَأَعْطَانِي الثُّلُثَ الْآخِرَ فَخَرَرْتُ سَاجِدًا لِرَبِّي شُكْرًا» . رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو دَاوُد

وعن سعد بن ابي وقاص قال: خرجنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم نم مكة نريد المدينة فلما كنا قريبا من عزوزاء نزل ثم رفع يديه فدعا الله ساعة ثم خر ساجدا فمكث طويلا ثم قام فرفع يديه ساعة ثم خر ساجدا فمكث طويلا ثم قام فرفع يديه ساعة ثم خر ساجدا قال: «اني سالت ربي وشفعت لامتي فاعطاني ثلث امتي فخررت ساجدا لربي شكرا ثم رفعت راسي فسالت ربي لامتي فاعطاني ثلث امتي فخررت ساجدا لربي شكرا ثم رفعت راسي فسالت ربي لامتي فاعطاني الثلث الاخر فخررت ساجدا لربي شكرا» . رواه احمد وابو داود

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে