পরিচ্ছেদঃ ৩৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রমাযান মাসের ক্বিয়াম (তারাবীহ সালাত)
১২৯৮-[৪] আবূ যার গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে (রমাযান মাসের) সওম পালন করেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাসের অনেক দিন আমাদের সঙ্গে ক্বিয়াম (কিয়াম) করেননি (অর্থাৎ তারাবীহের সালাত আদায় করেননি)। যখন রমাযান মাসের সাতদিন অবশিষ্ট থাকল তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের সঙ্গে এক তৃতীয়াংশ রাত পর্যন্ত ক্বিয়াম (কিয়াম) করলেন অর্থাৎ তারাবীহের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করালেন।
যখন ছয় রাত বাকী থাকল (অর্থাৎ চব্বিশতম রাত এলো) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের সঙ্গে ক্বিয়াম (কিয়াম) করলেন না। আবার পাঁচ রাত অবশিষ্ট থাকতে অর্থাৎ পঁচিশতম রাতে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের সঙ্গে আধা রাত পর্যন্ত ক্বিয়াম (কিয়াম) করলেন। আমি আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আজ রাত যদি আরো অনেক সময় আমাদের সঙ্গে কিয়াম করতেন (তাহলে কতই না ভাল হত)। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যখন কোন লোক ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ইমামের সঙ্গে আদায় করে। সালাত শেষে ফিরে চলে যায়, তার জন্যে গোটা রাত্রের ’ইবাদাতের সাওয়াব লেখা হয়ে যায়।
এরপর যখন চার রাত বাকী থাকে অর্থাৎ ছাব্বিশতম রাত আসে তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের সঙ্গে ক্বিয়াম (কিয়াম) করতেন না। এমনকি আমরা তাঁর জন্যে অপেক্ষা করতে করতে এক তৃতীয়াংশ রাত বাকী থাকল। যখন তিনরাত বাকী থাকল অর্থাৎ সাতাশতম রাত আসলো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পরিবারের নিজের বিবিগণের সকলকে একত্র করলেন এবং আমাদের সঙ্গে ক্বিয়াম (কিয়াম) করালেন (অর্থাৎ গোটা রাত আমাদেরকে সালাত আদায় করালেন)। এমনকি আমাদের আশংকা হলো যে, আবার না ’ফালাহ’ ছুটে যায়।
বর্ণনাকারী বললেন, আমি প্রশ্ন করলাম ’ফালা-হ’ কি? ’আবূ যার’ বললেন। ’ফালা-হ’ হলো সাহরী খাওয়া। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের সঙ্গে মাসের বাকী দিনগুলো (অর্থাৎ আটাশ ও ঊনত্রিশতম দিন) ক্বিয়াম (কিয়াম) করেননি। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসায়ী; ইবনু মাজাহও এভাবে বর্ণনা নকল করেছেন। তিরমিযীও নিজের বর্ণনায় ’’এরপর আমাদেরসঙ্গে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাসের অবশিষ্ট দিনগুলোতে ক্বিয়াম (কিয়াম) করেননি’’ শব্দগুলো উল্লেখ করেনি।)[1]
عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: صُمْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَمَضَانَ فَلَمْ يَقُمْ بِنَا شَيْئًا مِنَ الشَّهْرِ حَتَّى بَقِيَ سَبْعٌ فَقَامَ بِنَا حَتَّى ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ فَلَمَّا كَانَتِ السَّادِسَةُ لَمْ يَقُمْ بِنَا فَلَمَّا كَانَتِ الْخَامِسَةُ قَامَ بِنَا حَتَّى ذهب شطر اللَّيْل فَقلت: يارسول الله لَو نفلتنا قيام هَذِه اللَّيْلَة. قَالَ فَقَالَ: «إِنَّ الرَّجُلَ إِذَا صَلَّى مَعَ الْإِمَامِ حَتَّى ينْصَرف حسب لَهُ قيام اللَّيْلَة» . قَالَ: فَلَمَّا كَانَت الرَّابِعَة لم يقم فَلَمَّا كَانَتِ الثَّالِثَةُ جَمَعَ أَهْلَهُ وَنِسَاءَهُ وَالنَّاسَ فَقَامَ بِنَا حَتَّى خَشِينَا أَنْ يَفُوتَنَا الْفَلَاحُ. قَالَ قُلْتُ: وَمَا الْفَلَاحُ؟ قَالَ: السَّحُورُ. ثُمَّ لَمْ يَقُمْ بِنَا بَقِيَّةَ الشَّهْرِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَرَوَى ابْنُ مَاجَهْ نَحْوَهُ إِلَّا أَنَّ التِّرْمِذِيَّ لَمْ يَذْكُرْ: ثُمَّ لَمْ يَقُمْ بِنَا بَقِيَّة الشَّهْر
ব্যাখ্যা: এখানে সতর্কবাণী হলো, মনে রাখতে হবে যে, আবূ যার (রাঃ)-এর হাদীসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রাতের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন তার রাক্‘আত সংখ্যা আলোচ্য হাদীসে বর্ণিত হয়নি। কিন্তু জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর হাদীসে তার বিবরণ বর্ণিত হয়েছে যে, জাবির (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে রমাযান মাসে আট রাক্‘আত সালাত আদায় করতেন এবং বিতর আদায় করেতেন। হাদীসটি ত্ববারানী (রহঃ) তার সগীর গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। ইবনু খুযায়মাহ্ ও ইবনু হিব্বান (রহঃ) তাদের নিজ নিজ সহীহ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) ফাতহুল বারীতে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হাদীসের ব্যাখ্যায় উল্লেখিত হাদীসটি উল্লেখ করেছেন এবং হাদীসটি তার নিকট সহীহ। জাবির (রাঃ)-এর হাদীসের স্বপক্ষে আবূ সালামাহ্ ইবনু ‘আবদুর রহমান-এর হাদীস রয়েছে যে,
أنه سأل عائشة: كيف كان صلاة رسول الله - ﷺ - في رمضان؟ فقالت: ما كان يزيد في رمضان ولا غيره على إحدى عشرة ركعة، يصلي أربعاً فلا تسأل عن حسنهن وطولهن، ثم يصلي أربعاً فلا تسأل عن حسنهن وطولهن، ثم يصلي ثلاثاً.
আবূ সালামাহ্ ইবনু ‘আবদুর রহমান (রাঃ)-এর জিজ্ঞাসার জবাবে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন যে, রমাযান কিংবা রমাযানের বাইরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগার রাক্‘আতের অতিরিক্ত সালাত আদায় করতেন না। প্রথমে চার রাক্‘আত আদায় করতেন এবং প্রশ্নাতীতভাবে তা সুন্দর দীর্ঘ করতেন, এরপর চার রাক্‘আত আদায় করতেন এবং প্রশ্নাতীতভাবে তা সুন্দর ও দীর্ঘ করতেন। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিন রাক্‘আত বিতর আদায় করতেন। হাদীসটি বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য ইমামগণ বর্ণনা করেছেন।
আলোচ্য হাদীসটি একটি পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য যে, নিশ্চয়ই রমাযানের তারাবীহ মাত্র আট রাক্‘আত, এর বেশী আদায় করা যাবে না। হাফিয আসক্বালানী (রহঃ) আল আরফু আশশাজ গ্রন্থের ২০১ পৃষ্ঠায় বলেছেন, এ বর্ণনাটি বুখারী মুসলিম (রহঃ)-এর রিওয়ায়াত এবং বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তারাবীহের সালাত ছিল আট রাক্‘আত। অন্যদিকে ইবনু আবী শায়বাহ্ তার মুসান্নাহ গ্রন্থে, ত্ববারানী (রহঃ) তার কাবীর ও আওসাত গ্রন্থে এবং বায়হাক্বীর ২য় খন্ডের ৪৯৬ পৃষ্ঠায় ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী রমাযান মাসে বিতর ছাড়াই ২০ রাক্‘আত সালাত আদায় করতেন। তবে হাদীসটি য‘ঈফ জিদ্দান বা নিতান্তই দুর্বল। এর দ্বারা দলীল গ্রহণ সঠিক নয়।
এ হাদীসের সানাদে আবী শায়বাহ্ ইব্রাহীম ইবনু ‘উসমান (রাঃ) মাতরূক রাবী, যায়লা‘ঈ নাসবুর্ রায়াহ-এর ২য় খন্ডের ১৫৩ পৃষ্ঠায় বলেছেন যে, সকলের ঐকমত্যে তিনি য‘ঈফ, এছাড়াও তা পূর্বে উল্লেখিত আবূ সালামাহ্ ইবনু ‘আবদুর রহমান (রহঃ)-এর বর্ণিত হাদীসের পরিপন্থী।
তারপরও সার্বিক পর্যালোচনায় প্রমাণিত হয় যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর (২০ রাক্‘আত সংক্রান্ত হাদীস) হানাফী, শাফি‘ঈ, মালিকীসহ অন্যান্য মাযহাব অবলম্বী সকল ‘উলামাগণের নিকট অত্যন্ত দুর্বল। এরপরও বর্তমানের হানাফীদের একাংশ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসের দ্বারা ফাতাওয়া দিয়ে থাকেন। (তাদের দাবী) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীস একাধিক সাহাবী (রাঃ)-গণের ‘আমল দ্বারা শক্তিশালী যা (পূর্বেল্লিখিত) জাবির (রাঃ)-এর হাদীসের চেয়েও অগ্রগণ্য যদিও তার মাঝে সানাদ গত দুর্বলতা রয়েছে, কারণ জমহূর সাহাবায়ে কিরামগণের ঐকমত্য রয়েছে যে, তারাবীহের সালাত ২০ রাক্‘আত।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর ২০ রাক্‘আত সংক্রান্ত হাদীসে জমহূর সাহাবী (রাঃ)-গণের ‘আমল রয়েছে মর্মে যে বর্তমান হানাফীদের দাবী তা সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীস দ্বারা সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যাত।
সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) বলেন, ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) উবাই ইবনু কা‘ব ও তামিম আদ্ দারী (রাঃ)-কে লোকেদের নিয়ে ১১ রাক্‘আত তারাবীহের সালাত আদায় করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও সা‘ঈদ ইবনু মানসূর তার সুনান গ্রন্থে সায়িব ইবনু ইয়াযীদ থেকে বর্ণনা করেন যে, আমরা ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর খিলাফাতকালে রাতের ক্বিয়ামে ১১ রাক্‘আত সালাত আদায় করতাম। আল্লামা সুয়ূতী (রহঃ) বলেনঃ এ আসারের সানাদ সহীহের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
অতএব নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত হয় যে, জামা‘আতের সাথে রমাযানের রাতের সালাত বিতরসহ এগার রাক্‘আত এবং এটাই সুন্নাত, ২০ রাক্‘আত নয়।
পরিচ্ছেদঃ ৩৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রমাযান মাসের ক্বিয়াম (তারাবীহ সালাত)
১২৯৯-[৫] উম্মুল মু’মিনীন ’আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি রাত্রে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বিছানায় খুঁজে না পেয়ে তাঁকে খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ জান্নাতুল বাকীতে দেখতে পেলাম। আমাকে দেখে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি কি আশংকা করেছিলে যে, আল্লাহ ও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার ওপর অবিচার করবে? আমি আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি মনে করেছিলাম আপনি আপনার কোন বিবির নিকট গিয়েছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (’আয়িশাহ্!) আল্লাহ তা’আলা শা’বান মাসের পনের তারিখের রাত্রে প্রথম আকাশে নেমে আসেন। বানূ কালব গোত্রের (বকরীর) দলের পশমের সংখ্যার চেয়েও বেশী পরিমাণ গুনাহ ক্ষমা করে দেন। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ; রযীন অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন ’’যাদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়েছে তাদের মধ্য থেকে’’। আর তিরমিযী বলেছেন, আমি ইমাম বুখারীকে এ হাদীসটি দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করতে শুনেছি)[1]
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: فَقَدْتُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً فَإِذَا هُوَ بِالْبَقِيعِ فَقَالَ أَكُنْتِ تَخَافِينَ أَنْ يَحِيفَ اللَّهُ عَلَيْكِ وَرَسُولُهُ؟ قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي ظَنَنْتُ أَنَّكَ أَتَيْتَ بَعْضَ نِسَائِكَ فَقَالَ: إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْزِلُ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَغْفِرُ لِأَكْثَرَ مِنْ عَدَدِ شَعْرِ غَنَمِ كَلْبٍ رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَزَادَ رَزِينٌ: «مِمَّنِ اسْتَحَقَّ النَّارَ» وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: سَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَعْنِي البُخَارِيّ يضعف هَذَا الحَدِيث
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে بَقِيعِ (বাক্বী‘) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো بقيع الغرقد (বাক্বী‘উল গারক্বাদ), গারক্বাদ এক প্রকার গাছের নাম। সুতরাং بقيع الغرقد এর অর্থ হলো গারক্বাদ গাছ বিশিষ্ট সুপরিসর স্থান। এটি মদীনার উপকণ্ঠের একটি স্থানের নাম এবং সেখানে মদীনাবাসীদের কবর রয়েছে। আর সেখানে গারক্বাদ গাছ থাকার কারণে তার নাম بقيع الغرقد (বাক্বী‘উল গারক্বাদ) রাখা হয়েছিল। (পরবর্তীতে তা জান্নাতুল বাক্বী নাম ধারণ করে।)
(فَيَغْفِرُ لِأَكْثَرَ مِنْ عَدَدِ شَعْرِ غَنَمِ كَلْبٍ) এখানে غَنَمِ كَلْبٍ এর كَلْبٍ বলতে বানী কালব গোত্রকে বুঝানো হয়েছে। আলোচ্য হাদীসে বানী কালবকে নির্দিষ্ট করার কারণ হলো সমস্ত আরবের মধ্য বানূ কালব গোত্রে উট বকরী প্রতিপালন বেশী হত।
পরিচ্ছেদঃ ৩৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রমাযান মাসের ক্বিয়াম (তারাবীহ সালাত)
১৩০০-[৬] যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ মানুষ তার ঘরে ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ব্যতীত যে সালাত আদায় করবে তা এ মসজিদে সালাত আদায়ের চেয়ে ভাল। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী)[1]
وَعَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَلَاةُ الْمَرْءِ فِي بَيْتِهِ أَفْضَلُ مِنْ صَلَاتِهِ فِي مَسْجِدِي هَذَا إِلَّا الْمَكْتُوبَة» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীস প্রমাণ করে যে, নফল সালাতগুলো বাড়ীতে আদায় করাই মুস্তাহাব। নফল সালাত মসজিদে আদায় করার চেয়ে বাড়ীতে আদায় করাই উত্তম, যদিও মাসজিদগুলোর মাঝে তুলনামূলক শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে, যেমন মাসজিদুল হারাম, মাসজিদুন্ নাবাবী ও মাসজিদুল আক্বসা (আকসা)। যদি কেউ মসজিদে মদীনায় নফল সালাত আদায় করে, তবে হাজার সালাতের সাওয়াব অর্জন করবে। আর যদি বাড়ীতে আদায় করে তখন হাজার সালাতের চেয়ে তা উত্তম হবে। অনুরূপভাবে মাসজিদুল হারাম ও মসজিদে আক্বসা (আকসা)। তবে এ অধ্যায়ে যে সকল হাদীসে নফল সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ‘আমভাবে আলোচিত হয়েছে তার মধ্য থেকে কতকগুলো নফল সালাত আলাদা উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলো জামা‘আতে আদায় করার ব্যাপারে শার‘ঈ বিধান রয়েছে, যেমন দু’ ঈদের সালাত, ইস্তিস্ক্বার সালাত, সালাতুল কুসূফ বা চন্দ্র-সূর্য গ্রহণের সালাত, তারাবীহের সালাত এবং যেগুলো মসজিদের সাথে খাস যেমন ভ্রমণ থেকে আগমনের সালাত, তাহ্ইয়্যাতুল মাসজিদ।
তবে ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ব্যতীত এবং তা পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পুরুষদের ওপর ফরয সালাতগুলো মসজিদে জামা‘আতবদ্ধভাবে আদায় করা ওয়াজিব। আর মহিলাদের জন্য তা বাড়ীতে পড়াই উত্তম, তা ফরয কিংবা নফল যাই হোক না কেন। তবে যদি তাদের জন্য মসজিদে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি থাকে তবে তা অবশ্যই বৈধ।