পরিচ্ছেদঃ ৩২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাতের সালাতে যা পড়তেন

১২১৪-[৪] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রে ঘুম থেকে জেগে উঠলে বলতেন, ’’লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা সুবহা-নাকা, আল্ল-হুম্মা ওয়াবি হামদিকা আসতাগফিরুকা লিযাম্বি, ওয়া আস্আলুকা রহমতাকা, আল্ল-হুম্মা যিদনী ’ইলমা-, ওয়ালা- তুযিগ ক্বলবি বা’দা ইয হাদায়তানী, ওয়া হাবলী মিল্লাদুনকা রহমতান, ইন্নাকা আনতাল ওয়াহহা-ব।’’ (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اسْتَيْقَظَ مِنَ اللَّيْلِ قَالَ: «لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَسْتَغْفِرُكَ لِذَنْبِي وَأَسْأَلُكَ رَحْمَتَكَ اللَّهُمَّ زِدْنِي عِلْمًا وَلَا تُزِغْ قَلْبِي بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنِي وَهَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا استيقظ من الليل قال: «لا اله الا انت سبحانك اللهم وبحمدك استغفرك لذنبي واسالك رحمتك اللهم زدني علما ولا تزغ قلبي بعد اذ هديتني وهب لي من لدنك رحمة انك انت الوهاب» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: রাত্রিতে ঘুম থেকে জেগে পঠিতব্য এ দু‘আর মধ্যে ‘আল্ল-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা’ বাক্যটি মিশকাতের মূল গ্রন্থে নেই। মুবারকপূরী (রহঃ) বলেন, আমি আবূ দাঊদে খুঁজেও এটি পাইনি। অবশ্য আল্লামা জাযারী তার জামি‘উল উসূলে এটি উল্লেখ করেছেন। ‘আস্‌তগফিরুকা লিযাম্বী’ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ষমা প্রার্থনা উম্মাতকে শিক্ষাদনের জন্য অথবা তার রবের মহাত্ম ও বড়ত্ব প্রকাশের জন্য। তিনি আরো পড়েছেন, ‘হে আল্লাহ! আমাকে হিদায়াত দেয়ার পর আমার অন্তরকে বক্র করে দিও না।’ এর অর্থ হলোঃ আমার অন্তরকে হক থেকে বাতিলের দিকে ঝুকিয়ে দিও না। আল্লামা ত্বীবী বলেন, এর অর্থ হলোঃ আমাকে হিদায়াত দানের পর তুমি আমাকে তার উপরই প্রতিষ্ঠিত রাখ।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাতের সালাতে যা পড়তেন

১২১৫-[৫] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ যে মুসলিম রাত্রে পাক-পবিত্র অবস্থায় আল্লাহর যিকর করে ঘুমিয়ে যায়, তারপর রাত্রে জেগে উঠে আল্লাহর নিকট কল্যাণ কামনা করে, আল্লাহ তাকে (দুনিয়া ও আখিরাতে) অবশ্যই কল্যাণ দান করেন। (আহমাদ, আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَبِيتُ عَلَى ذِكْرٍ طَاهِرًا فَيَتَعَارَّ مِنَ اللَّيْل فَيسْأَل اللَّهُ خَيْرًا إِلَّا أَعْطَاهُ اللَّهُ إِيَّاهُ» . رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو دَاوُد

وعن معاذ بن جبل قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ما من مسلم يبيت على ذكر طاهرا فيتعار من الليل فيسال الله خيرا الا اعطاه الله اياه» . رواه احمد وابو داود

ব্যাখ্যা: এখানে রাতে ঘুম যাওয়ার কালকে বুঝানো হয়েছে। আর যিকর দ্বারা ঐ সকল যিকর আযকারকে বুঝানো হয়েছে যেগুলো শয়নকালে পাঠ করা মুস্‌তাহাব, আবার কুরআন তিলাওয়াত এবং সাধারণ যিকরও হতে পারে। আর এটা উযূ (ওযু/ওজু/অজু) অবস্থায় পাঠের কথা বলা হয়েছে। মাঝরাতে যদি কেউ জাগে তাহলে আল্লাহর কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করবে, চাই তা দুনিয়ার কল্যাণ হোক চাই আখিরাতের কল্যাণ। তবে একটি বর্ণনায় দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের কথা নাম ধরেই উল্লেখ আছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাতের সালাতে যা পড়তেন

১২১৬-[৬] শারীকুল হাওযানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে প্রশ্ন করেছি, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রে ঘুম থেকে সজাগ হওয়ার পর কোন জিনিস দিয়ে ’ইবাদাত আরম্ভ করতেন। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, তুমি আমাকে এমন বিষয় জিজ্ঞেস করেছ যা তোমার পূর্বে আমাকে কোন লোক জিজ্ঞেস করেনি। তিনি রাত্রে ঘুম থেকে জেগে উঠার পর প্রথম দশবার ’আল্ল-হু আকবার’ পাঠ করতেন। ’আলহামদু লিল্লা-হ’ বলতেন দশবার। ’’সুবহা-নাল্ল-হি ওয়া বিহামদিহী’’ পাঠ করতেন দশবার। ’’সুবহা-নাল মালিকিল কুদ্দূস’’ পাঠ করতেন দশবার। ’আস্‌তাগফিরুল্ল-হ’ পাঠ করতেন দশবার। ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ পাঠ করতেন দশবার। আর দশবার পড়তেন এ দু’আ, ’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিন যীক্বিদ্ দুন্ইয়া ওয়া যীক্বি ইয়াওমিল ক্বিয়া-মাহ্’’। এরপর তিনি (তাহাজ্জুদের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আরম্ভ করতেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ شَرِيقٍ الْهَوْزَنِيِّ قَالَ: دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَسَأَلْتُهَا: بِمَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَفْتَتِحُ إِذَا هَبَّ مِنَ اللَّيْلِ فَقَالَتْ: سَأَلْتَنِي عَنْ شَيْءٍ مَا سَأَلَنِي عَنْهُ أَحَدٌ قَبْلَكَ كَانَ إِذَا هَبَّ مِنَ اللَّيْلِ كَبَّرَ عَشْرًا وَحَمِدَ اللَّهَ عَشْرًا وَقَالَ: «سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ عَشْرًا» وَقَالَ: «سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْقُدُّوسِ» عشرا واستغفر عشرا وَهَلل عَشْرًا ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ ضِيقِ الدُّنْيَا وَضِيقِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ» عَشْرًا ثمَّ يفْتَتح الصَّلَاة. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن شريق الهوزني قال: دخلت على عاىشة فسالتها: بم كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يفتتح اذا هب من الليل فقالت: سالتني عن شيء ما سالني عنه احد قبلك كان اذا هب من الليل كبر عشرا وحمد الله عشرا وقال: «سبحان الله وبحمده عشرا» وقال: «سبحان الملك القدوس» عشرا واستغفر عشرا وهلل عشرا ثم قال: «اللهم اني اعوذ بك من ضيق الدنيا وضيق يوم القيامة» عشرا ثم يفتتح الصلاة. رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: রাতে ঘুম থেকে জেগে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশবার তাকবীর পড়তেন, দশবার আল্লাহর প্রশংসা করতেন, তা হলো এভাবে যে, দশবার আল্ল-হু আকবার পড়তেন এবং দশবার আলহাম্‌দুলিল্লা-হ পড়তেন। ‘সুবহা-নাল্ল-হিল মালিকিল কুদ্দূস’ এর অর্থ হলো তিনি (আল্লাহ) বিপদ মুসীবাত দুর্যোগ এবং সকল প্রকার ত্রুটি থেকে পুত পবিত্র, সুতরাং আমি তারই পবিত্রতা ঘোষণা করছি। এরপর আল্লাহর রসূলের ইস্তিগফার করাটা হলো নিজেকে মহান আল্লাহর কাছে ছোট করে পেশ করা এবং উম্মাতকে শিক্ষা দেয়া।

দুনিয়ার সংকীর্ণতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনার অর্থ হলো দুনিয়ার অপছন্দনীয় বস্ত্ত থেকে আশ্রয় চাওয়া, যা মানুষের বক্ষকে সংকীর্ণ করে দেয় এবং অন্তরকে বক্র করে দেয়। মুল্লা ‘আলী আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন, এটা দ্বারা দুনিয়ার কাঠিন্যতার কথা বলা হয়েছে। কেননা মানুষ যখন দুনিয়ার রোগ ব্যাধি, ধার-কর্জ-ঋণ ইত্যাদি কষ্টে আক্রান্ত হয় তখন দুনিয়া প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও তার জন্য যেন তা সত্যি সত্যি সংকীর্ণ হয়ে যায়। ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) সংকীর্ণতা বলতে তার বিভিন্ন অবস্থা ও বিভীষিকাময় ঘটনাসমূহ (যেমন পুলসিরাত, মীযান ইত্যাদি)।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে