পরিচ্ছেদঃ ৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতে সুতরাহ্ (সুতরা)
৭৮৬-[১৫] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে ঘুমাতাম। আর আমার দু’ পা থাকতো তাঁর ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে। তিনি যখন সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) দিতেন আমাকে টোকা দিতেন। আমি আমার পা দু’টি গুটিয়ে নিতাম। তারপর তিনি দাঁড়িয়ে গেলে আমি আমার দু’ পা লম্বা করে দিতাম। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, সে সময় ঘরে আলো থাকতো না। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
عَن عَائِشَة قَالَتْ: كُنْتُ أَنَامُ بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرِجْلَايَ فِي قِبْلَتِهِ فَإِذَا سَجَدَ غَمَزَنِي فَقَبَضْتُ رِجْلِيَ وَإِذَا قَامَ بَسَطْتُهُمَا قَالَتْ: وَالْبُيُوتُ يَوْمَئِذٍ لَيْسَ فِيهَا مَصَابِيحُ
ব্যাখ্যা: রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাজদায় যাওয়ার সময় ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে হাত দ্বারা নাড়া দিতেন যাতে তিনি সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করতে পারেন। কারণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রে যখন তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন তখন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) পা লম্বা করে শুয়ে থাকতেন, তিনি পা না সরালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করতে পারতেন না।
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর উক্তি, ‘‘ঘরে কোন বাতি ছিল না’’, অর্থাৎ- ঐ সময় ঘরে অন্ধকার বিরাজ করতো যার কারণে তিনি দেখতে পেতেন না, কখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাজদায় যাচ্ছেন। এ হাদীস দ্বারা প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ছোট-খাটো কাজ সালাত নষ্ট করে না। ঘুমন্ত ব্যক্তিকে সামনে রেখে সালাত আদায় করাও অপছন্দনীয় নয়।
পরিচ্ছেদঃ ৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতে সুতরাহ্ (সুতরা)
৭৮৭-[১৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারীর সামনে দিয়ে যাতায়াত কত বড় গুনাহ তা যদি তোমাদের কেউ জানতো, তাহলে সে (সালাত আদায়কারীর সামনে দিয়ে) যাতায়াতের চেয়ে এক শত বছর পর্যন্ত (এক জায়গায়) দাঁড়িয়ে থাকাকে বেশী উত্তম মনে করতো। (ইবনু মাজাহ্)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ يَعْلَمُ أَحَدُكُمْ مَا لَهُ فِي أَنْ يَمُرَّ بَيْنَ يَدَيْ أَخِيهِ مُعْتَرِضًا فِي الصَّلَاةِ كَانَ لَأَنْ يُقِيمَ مِائَةَ عَامٍ خَيْرٌ لَهُ مِنَ الْخُطْوَةِ الَّتِي خَطَا» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ
ব্যাখ্যা: এখানে যে কথাটি বুঝানো হয়েছে তা হলো মুসল্লীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করা বড় ধরনের অন্যায়।।
পরিচ্ছেদঃ ৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতে সুতরাহ্ (সুতরা)
৭৮৮-[১৭] কা’ব ইবনু আহবার (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যদি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারীর সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী জানতো তার এই অপরাধের শাস্তি কি, তাহলে সে নিজের জন্য ভূগর্ভে ধ্বসে যাওয়াকে সালাত আদায়কারীর সামনে দিয়ে যাবার চেয়েও উত্তম মনে করতো। অন্য এক বর্ণনায় ’উত্তম’-এর স্থানে ’বেশী সহজ’ শব্দ এসেছে। (মালিক)[1]
وَعَنْ كَعْبِ الْأَحْبَارِ قَالَ: لَوْ يَعْلَمُ الْمَارُّ بَيْنَ يَدَيِ الْمُصَلِّي مَاذَا عَلَيْهِ لَكَانَ أَنْ يُخْسَفَ بِهِ خَيْرًا مِنْ أَنْ يَمُرَّ بَيْنَ يَدَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ: أَهْوَنَ عَلَيْهِ. رَوَاهُ مَالِكٌ
ব্যাখ্যা: ‘‘ব্যক্তি যদি জানতো যে, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারীর সামনে দিয়ে যাতায়াত করা কত বড় অন্যায় তাহলে সে এ কাজ করার চেয়ে নিজে ধ্বসে যাওয়া উত্তম মনে করতো’’ কিংবা ‘‘ধ্বসে যাওয়া তার কাছে সহজ হতো’’ কারণ হল- ধ্বসে যাওয়াটা এ দুনিয়ার শাস্তি। আর এ দুনিয়ার যে কোন শাস্তি পরকালের শাস্তির চেয়ে সহজ। অপরদিকে পরকালের যে কোন শাস্তি এ দুনিয়ায় যে কোন শাস্তির চেয়ে কঠিন ও কষ্টকর।
পরিচ্ছেদঃ ৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতে সুতরাহ্ (সুতরা)
৭৮৯-[১৮] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন আড়াল ছাড়া (সুতরাহ্) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে, আর তার সম্মুখ দিয়ে গাধা, শূকর, ইয়াহূদী, মাজূসী ও স্ত্রীলোক অতিক্রম করে তাহলে তার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ভেঙ্গে যাবে। তবে যদি একটি কঙ্কর নিক্ষেপের পরিমাণ দূর দিয়ে যায় তাহলে কোন দোষ নেই। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ إِلَى غَيْرِ السُّتْرَةِ فَإِنَّهُ يَقْطَعُ صَلَاتَهُ الْحِمَارُ وَالْخِنْزِيرُ وَالْيَهُودِيُّ وَالْمَجُوسِيُّ وَالْمَرْأَةُ وَتُجْزِئُ عَنْهُ إِذَا مَرُّوا بَيْنَ يَدَيْهِ عَلَى قَذْفَةٍ بِحَجَرٍ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: পাথর নিক্ষেপ পরিমাণ দূরত্ব যথেষ্ট দূরত্ব। এ অবস্থায় সুতরাহ্ (সুতরা) ছাড়া মুসল্লীর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) যথেষ্ট হয়ে যাবে। ‘‘সালাত ভেঙ্গে যাবে’’ অর্থ হলো- সালাতের একাগ্রতা ও মনোনিবেশ নষ্ট করে দেবে। ‘আল্লামা ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেছেন, ন্যূনতম তিন গজ বা ছয় হাত কিংবা এর দূর দিয়ে অতিক্রম করলে কোন ক্ষতি হবে না; বস্তুত তিন গজের বাইরে দৃষ্টির সীমা ব্যাহত হয় না।