পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - (সালাতের) সময়সমূহ

এ অধ্যায়ে সালাতের সময় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে সময় বলতে যে সময়কে আল্লাহ তা’আলা সালাত আদায়ের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেই সময়কেই বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ’’নিশ্চয়ই নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মু’মিনদের ওপর ফরয।’’ (সূরাহ্ আন্ নিসা ৪: ১০৩)

সালাতের সময় সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় ইঙ্গিত দিয়েছেন। আর জিবরীল (আঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সরাসরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সালাতের সময় সম্পর্কে অবহিত করেছেন।


৫৮১-[১] ’আবদুল্লাহ বিন ’আমর (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সূর্য ঢলে পড়ার সাথে যুহরের সালাতের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং মানুষের ছায়া যখন তার দৈর্ঘ্যের সমান হয়, তখন ’আসরের সালাতের ওয়াক্ত উপস্থিত হয়। ’আসরের সালাতের ওয়াক্ত যুহরের সালাতের পর থেকে যে পর্যন্ত সূর্য হলদে রং ধারণ না করে এবং সূর্যাস্তের পর থেকে পশ্চিমাকাশের লালিমা মিশে যাবার আগ পর্যন্ত মাগরিবের সালাতের ওয়াক্ত থাকে। আর ’ইশার সালাতের ওয়াক্ত মাগরিবের সালাতের পর থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত। ফজরের (ফজরের) সালাতের ওয়াক্ত ফাজর (ফজর) অর্থাৎ- সুবহে সাদিকের উদিত হবার পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত। অতঃপর সূর্যোদয় হতে শুরু করলে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হতে বিরত থাকবে। কেননা সূর্যোদয় হয় শায়ত্বনের (শয়তানের) দু’ শিং-এর মধ্য দিয়ে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْـمَوَاقِيْتِ

عَن عبد اللَّهِ ابْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَقْتُ الظُّهْرِ إِذَا زَالَتِ الشَّمْسُ وَكَانَ ظِلُّ الرَّجُلِ كَطُولِهِ مَا لَمْ يَحْضُرِ الْعَصْرُ وَوَقْتُ الْعَصْرِ مَا لَمْ تَصْفَرَّ الشَّمْسُ وَوَقْتُ صَلَاةِ الْمَغْرِبِ مَا لَمْ يَغِبِ الشَّفَقُ وَوَقْتُ صَلَاةِ الْعِشَاءِ إِلَى نِصْفِ اللَّيْلِ الْأَوْسَطِ وَوَقْتُ صَلَاةِ الصُّبْحِ مِنْ طُلُوعِ الْفَجْرِ مَا لَمْ تَطْلُعِ الشَّمْسُ فَإِذَا طَلَعَتِ الشَّمْسُ فَأَمْسِكْ عَنِ الصَّلَاة فَإِنَّهَا تطلع بَين قَرْني شَيْطَان» . رَوَاهُ مُسلم

عن عبد الله ابن عمرو قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «وقت الظهر اذا زالت الشمس وكان ظل الرجل كطوله ما لم يحضر العصر ووقت العصر ما لم تصفر الشمس ووقت صلاة المغرب ما لم يغب الشفق ووقت صلاة العشاء الى نصف الليل الاوسط ووقت صلاة الصبح من طلوع الفجر ما لم تطلع الشمس فاذا طلعت الشمس فامسك عن الصلاة فانها تطلع بين قرني شيطان» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: এ হাদীসের মধ্যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সময়গুলো পরিষ্কার ভাষা ও শব্দ দিয়ে উম্মাতকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

এভাবে যে, ঠিক দুপুর বেলায় যখন সূর্য নিরক্ষরেখার উপর পৌঁছে যাওয়ার পর পশ্চিম দিকে গড়তে আরম্ভ করে ঠিক তখন যুহরের ওয়াক্ত আরম্ভ হয়ে যায় এবং প্রতিটি বস্ত্তর ছায়া তার সমপরিমাণ হওয়া পর্যন্ত যুহরের সময় থাকে। ছায়া সমপরিমাণ হওয়ার পরপর যুহরের সময় সমাপ্ত হয়ে যায় এবং ‘আসরের সময় আরম্ভ হয়ে যায়। দু’ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) যেমন একই সময়ের মধ্যে একত্রিত হয় না তেমনি দু’ সালাতের মাঝখানে কিছু সময় ফাঁকাও থাকে না যে, এটা যুহরেরও নয় আবার ‘আসরের নয়। বরং এক সালাতের সময় শেষ হওয়ার সাথে সাথে দ্বিতীয় সালাতের সময় আরম্ভ হয়ে যায়।

‘আসরের সময় আরম্ভ প্রতিটি জিনিসের ছায়া তার সমপরিমাণ হওয়ার পর পরই এবং উজ্জ্বল সাদা চকচকে সূর্য লালে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত চালু থাকে। কিন্তু এটা হলো ‘আসরের উত্তম ও আল্লাহর পছন্দনীয় সময়।

কারণ অন্য হাদীসে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, সূর্য ডুবতে আরম্ভ হওয়ার পূর্বে যদি কোন ব্যক্তি ‘আসরের এক রাক্‘আতও পড়তে পারে তাহলে তার ‘আসর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ‘আসরের সময়েই আদায় হয়েছে বলে গণ্য করা হবে। এ হাদীস সহীহ মুসলিম সহ অন্যান্য কিতাবে রয়েছে।

ইমাম নাবাবী বলেন, ‘আসরের সময় সূর্য ডুবতে আরম্ভ হওয়া পর্যন্ত চালু থাকে এ কথায় সমস্ত মাযহাবের সকল ইমাম ও মুহাদ্দিস একমত। আর মাগরিবের সময় আরম্ভ হয় সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর পরই এবং তা চালু থাকে পশ্চিম গগণে সূর্যের লাল আভা বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত।

তারপর ‘ইশার সময় লাল আভা গায়েব হওয়ার পর থেকে অর্ধ রাত্রি পর্যন্ত। অবশ্য এটা পছন্দনীয় ও উত্তম সময়। কারণ অন্য হাদীসে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ফজরের (ফজরের) আযানের আগ পর্যন্ত ‘ইশা পড়ে নিতে পারলে তা সঠিক সময়ে আদায় হয়েছে বলে গণ্য হবে।

তারপর ফাজর (ফজর)-এর সময় আরম্ভ হয় সুবহে সাদিক উদিত হওয়ার সাথে সাথে এবং সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত যদি সূর্য উদিত হয়ে যায় তাহলে সালাত আদায় থেকে বিরত থাকবে। কেননা সূর্য উদিত হওয়ার সময় যে কোন সালাত আদায় করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ সে সময় ইবলীস সূর্যের দিকে মুখ করে দাঁড়ায় আর সূর্যের পূজারীগণ সূর্যের পূজা আরম্ভ করলে ইবলীস এ কথা ভেবে নেয় যে, এরা আমার পূজা করছে। এতে সে মনে মনে আনন্দিত হয়। মু’মিন ব্যক্তিকে মুশরিকদের সাদৃশ্য গ্রহণ করা থেকে নিষেধ করেছেন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - (সালাতের) সময়সমূহ

৫৮২-[২] বুরায়দাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক লোক রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট সালাতের ওয়াক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তিনি বললেন, আমাদের সাথে এ দু’ দিন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় কর। প্রথমদিন সূর্য ঢলে পড়লে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিলাল (রাঃ)-কে হুকুম দিলেন আযান দিতে। বিলাল (রাঃ)আযান দিলেন। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নির্দেশ দিলে বিলাল (রাঃ)যুহরের সালাতের ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দিলেন। অতঃপর (’আসরের সময়) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিলাল (রাঃ)-কে নির্দেশ দিলে তিনি ’আসরের সালাতের ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দিলেন। তখনও সূর্য বেশ উঁচুতে ও পরিষ্কার সাদা। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিলাল (রাঃ)-কে নির্দেশ দিলে তিনি মাগরিবের ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দিলেন। তখন সূর্য দেখা যাচ্ছে না। এরপর বিলাল (রাঃ)-কে নির্দেশ দিলে তিনি ’ইশার সালাতের ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দিলেন, যখন মাত্র লালিমা অদৃশ্য হলো। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিলাল (রাঃ)-কে নির্দেশ দিলে তিনি ফজরের (ফজরের) সালাতের ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দিলেন। তখন ঊষা (সুবহে সাদিক) দেখা দিয়েছে।

যখন দ্বিতীয় দিন এলো তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিলাল (রাঃ)-কে নির্দেশ দিলেন, যুহরের সালাত ঠাণ্ডা পড়া পর্যন্ত দেরী করতে। বিলাল দেরী করলেন। রোদের তাপ ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত দেরী করলেন। তারপর ’আসরের সালাত আদায় করলেন। সূর্য তখন উঁচুতে অবস্থিত, কিন্তু সালাতে পূর্বের দিনের চেয়ে বেশী দেরী করলেন। মাগরিবের সালাত আদায় করলেন লালিমা অদৃশ্য হবার কিছুক্ষণ আগে। আর এ দিন ’ইশার সালাত আদায় করলেন রাতের এক তৃতীয়াংশ শেষ হবার পর। অতঃপর ফজরের (ফজরের) সালাত আদায় করলেন বেশ পরিষ্কার হওয়ার পর। সবশেষে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সালাতের ওয়াক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাকারী ব্যক্তি কোথায়? সে বলল, হে আল্লাহর রসূল! এই যে আমি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমাদের জন্য সালাত আদায় করার ওয়াক্ত হলো, তোমরা যা (দু’ সীমা) দেখলে তার মধ্যস্থলে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْـمَوَاقِيْتِ

وَعَن بُرَيْدَة قَالَ: أَنَّ رَجُلًا سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ وَقْتِ الصَّلَاةِ فَقَالَ لَهُ: «صَلِّ مَعَنَا هَذَيْنِ» يَعْنِي الْيَوْمَيْنِ فَلَمَّا زَالَتِ الشَّمْسُ أَمَرَ بِلَالًا فَأَذَّنَ ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ الظُّهْرَ ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ الْعَصْرَ وَالشَّمْسُ مُرْتَفِعَةٌ بَيْضَاءُ نَقِيَّةٌ ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ الْمَغْرِبَ حِينَ غَابَتِ الشَّمْسُ ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ الْعِشَاءَ حِينَ غَابَ الشَّفَقُ ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ الْفَجْرَ حِينَ طَلَعَ الْفَجْرُ فَلَمَّا أَنْ كَانَ الْيَوْمُ الثَّانِي أَمَرَهُ فَأَبْرَدَ بِالظُّهْرِ فَأَبْرَدَ بِهَا فَأَنْعَمَ أَنْ يُبْرِدَ بِهَا وَصَلَّى الْعَصْرَ وَالشَّمْسُ مُرْتَفِعَةٌ أَخَّرَهَا فَوْقَ الَّذِي كَانَ وَصَلَّى الْمَغْرِبَ قَبْلَ أَنْ يَغِيبَ الشَّفَقُ وَصَلَّى الْعِشَاءَ بَعْدَمَا ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ وَصَلَّى الْفَجْرَ فَأَسْفَرَ بِهَا ثُمَّ قَالَ أَيْنَ السَّائِلُ عَنْ وَقْتِ الصَّلَاةِ فَقَالَ الرَّجُلُ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ: «وَقْتُ صَلَاتكُمْ بَين مَا رَأَيْتُمْ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن بريدة قال: ان رجلا سال رسول الله صلى الله عليه وسلم عن وقت الصلاة فقال له: «صل معنا هذين» يعني اليومين فلما زالت الشمس امر بلالا فاذن ثم امره فاقام الظهر ثم امره فاقام العصر والشمس مرتفعة بيضاء نقية ثم امره فاقام المغرب حين غابت الشمس ثم امره فاقام العشاء حين غاب الشفق ثم امره فاقام الفجر حين طلع الفجر فلما ان كان اليوم الثاني امره فابرد بالظهر فابرد بها فانعم ان يبرد بها وصلى العصر والشمس مرتفعة اخرها فوق الذي كان وصلى المغرب قبل ان يغيب الشفق وصلى العشاء بعدما ذهب ثلث الليل وصلى الفجر فاسفر بها ثم قال اين الساىل عن وقت الصلاة فقال الرجل انا يا رسول الله قال: «وقت صلاتكم بين ما رايتم» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: এটা সালাতের সময় সংক্রান্ত ব্যাপারে দ্বিতীয় হাদীস একটি হাদীস অপর হাদীসের ব্যাখ্যা ও পরিপূরক। এ হাদীসে বলা হয়েছে একজন সাহাবী দূর হতে আগমন করে সালাতের সময় সম্পর্কে রসূলের নিকট আবেদন করলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দু’দিন আমাদের সাথে জামা‘আতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে সময়গুলো ঠিক মতো বুঝে নাও। মৌখিক শুনে ঠিক মতো বুঝে নিতে নাও পারো।

যা হোক প্রথম দিন সূর্য নিরক্ষরেখা থেকে পশ্চিম দিকে গড়ানোর সাথে সাথে বিলাল (রাঃ)-কে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  আদেশ দিলেন যুহরের জন্য আযান দিতে। আযান হলো, সুন্নাতের জন্য কিছুক্ষণ বিরতি দেয়ার পর ইক্বামাতের জন্য আদেশ দিলেন। যুহর আদায় করলেন। ‘আসরের সময় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন। কোন বস্ত্তর ছায়া তার সমপরিমাণ হওয়ার পর পরই আযানের জন্য আদেশ হলো। আযান হলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা তারপর ‘আসর আদায় করলেন। ‘আসরের সালাতের পর সূর্য ছিল উজ্জ্বল সাদা চকচকে তাতে লালিমার লেশ মাত্র দৃষ্টিগোচর হয়নি।

তারপর সূর্য অস্ত যাওয়ার পর পরই আযান, অতঃপর ইক্বামাত ও মাগরিব আদায় করলেন।

কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর যখন সূর্যের লাল আভা মুছে গেল তখন ‘ইশার জন্য আযান হলো, কিছুক্ষণ বিরতি দেয়ার পর ‘ইশা আদায় করলেন। নিদ্রা যাওয়ার পর সুবহে সাদিক হওয়ার সাথে সাথে ফাজরের (ফজরের) আযান দেয়া হলো। কিছুক্ষণ বিরতি দেয়ার পর গালাসের মধ্যে অর্থাৎ- ভোরের অন্ধকারের মধ্যে ফাজর (ফজর) আদায় করলেন।

দ্বিতীয় দিনের সকাল হলো তারপর দুপুর হলো তো রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলালকে আদেশ দিলেন, আজ বিলম্ব করো। দুপুরের গরম কম হোক। যুহরে শেষ সময়টি কাছাকাছি হোক। তাই হলো এ দিন যুহরকে তার শেষ সময়ে আদায় করলেন।

কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সূর্য সাদা উজ্জ্বল থাকা অবস্থায় যখন কোন জিনিসের ছায়া তার দ্বিগুণ হলো তখন আযান কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে পরে ইক্বামাত ও ‘আসর আদায় করলেন।

তারপর অপেক্ষা করলেন সূর্য অস্তমিত হলো কিন্তু এ দিন সাথে সাথে নয় বিলম্ব করতে বললেন। লাল আভা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পূর্বে মাগরিবের আযান ও ইক্বামাত তারপর সালাত এমনভাবে আদায় করলেন যে, মাগরিবের সালাত শেষের পর পরই সূর্যের লাল আভা গায়িব হয়ে গেল। অর্থাৎ- দ্বিতীয় দিন মাগরিব তার শেষ সময়ে পড়া হলো। মাগরিবের পর পরই আজ ‘ইশার সময় আরম্ভ হয়ে গেল কিন্তু আজ দ্বিতীয় দিন ‘ইশা বিলম্ব করলেন এবং রাত্রের এক-তৃতীয়াংশ পার করার পর ‘ইশার সালাত আদায় করলেন।

নিদ্রা যাওয়ার পর সুবহে সাদিক হলো, কিন্তু আজ গালাস তথা ভোরের অন্ধকারে নয় কিছুক্ষণ বিলম্ব করে যখন একটু আলো হলো তখন ফাজর (ফজর) আদায় করলেন।

অতঃপর উক্ত সাহাবী বললেন, প্রথম দিনের সালাতগুলো আরম্ভ এবং দ্বিতীয় দিনে সালাতগুলো শেষ এ দু’য়ের মধ্যবর্তী সময়টি তোমাদের সালাতের সময়। কিন্তু এখানে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, এটা হলো সালাতের উত্তম ও আল্লাহর নিকট পছন্দীয় সময়।

কারণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অন্যান্য বাণীর ও আ‘মালের মাধ্যমে জানা যায় যে, যুহর আরো একটু বিলম্ব করা যায় এবং ‘আসর সূর্য ডোবা পর্যন্ত এবং ‘ইশা সকল ইমাম ও মুহাদ্দিসগণের মতে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত আদায় করতে পারলে ‘ইশা তার সঠিক সময়ে পড়া হয়েছে বলে গণ্য করা হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে