পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৭০-[৭] ’উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পাঁচ ওয়াক্ত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ), যা আল্লাহ তা’আলা (বান্দার জন্য) ফরয করেছেন। যে ব্যক্তি এ সালাতের জন্য ভালোভাবে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করবে, সঠিক সময়ে আদায় করবে এবং এর রুকূ’ ও খুশুকে পরিপূর্ণরূপে করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়া’দা রয়েছে যে, তিনি তাকে ক্ষমা করে দিবেন। আর যে তা না করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়া’দা নেই। ইচ্ছা করলে তিনি ক্ষমা করে দিতে পারেন আর ইচ্ছা করলে শাস্তিও দিতে পারেন। (আহমাদ ও আবূ দাঊদ)[1]
মালিক এবং নাসায়ী অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
اَلْفَصْلُ الثَّانِيْ
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خَمْسُ صَلَوَاتٍ افْتَرَضَهُنَّ اللَّهُ تَعَالَى مَنْ أَحْسَنَ وُضُوءَهُنَّ وَصَلَّاهُنَّ لوقتهن وَأتم ركوعهن خشوعهن كَانَ لَهُ عَلَى اللَّهِ عَهْدٌ أَنْ يَغْفِرَ لَهُ وَمَنْ لَمْ يَفْعَلْ فَلَيْسَ لَهُ عَلَى اللَّهِ عَهْدٌ إِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُ وَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ وَرَوَى مَالك وَالنَّسَائِيّ نَحوه
ব্যাখ্যা: এখানে সালাতকে জান্নাতে প্রবেশের শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তা হতে হবে নির্দিষ্ট সময়ে এবং তা উত্তমভাবে আদায়ের জন্য সচেষ্ট হতে হবে। সুফ্ইয়ান সাওরী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সালাতে একাগ্রতা পোষণ করলো না, তার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বাতিল হয়ে গেল।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৭১-[৮] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের ওপর ফরয করা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় কর, তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট করা মাসটির সিয়াম (রোযা) পালন কর, আদায় কর তোমাদের ধন-সম্পদের যাকাত এবং তোমাদের নেতৃবৃন্দের আনুগত্য কর। তাহলে তোমাদের রবের জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। (আহমাদ ও তিরমিযী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِيْ
وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَلُّوا خَمْسَكُمْ وَصُومُوا شَهْرَكُمْ وَأَدُّوا زَكَاةَ أَمْوَالِكُمْ وَأَطِيعُوا ذَا أَمْرِكُمْ تدْخلُوا جنَّة ربكُم» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: উপরোক্ত হাদীসটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হাজ্জের (হজ্জের/হজের) খুৎবায় পেশ করেছিলেন। এ হাদীস দ্বারা উদ্দেশ হলো তোমরা তোমাদের পূর্ণ প্রচেষ্টার মাধ্যমে জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা লাভ করো।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৭২-[৯] ’আমর ইবনু শু’আয়ব (রহঃ) তার পিতার মাধ্যমে, তিনি তার দাদা হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমার সন্তানদের বয়স সাত বছরে পৌঁছবে তখন তাদেরকে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের জন্য নির্দেশ দিবে। আর (সালাত আদায় করার জন্য) তাদের শাস্তি দিবে যখন তারা দশ বছরে পৌঁছবে এবং তাদের ঘুমানোর স্থান পৃথক করে দিবে। (আবূ দাঊদ)[1]
শারহুস্ সুন্নাহ-তে এভাবে রয়েছে।
اَلْفَصْلُ الثَّانِيْ
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مُرُوا أَوْلَادَكُمْ بِالصَّلَاةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرٍ سِنِين وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَكَذَا رَوَاهُ فِي شرح السّنة عَنهُ
ব্যাখ্যা: যেহেতু সাত বছর বয়সেই বাচ্চাদের ভালো-মন্দের পার্থক্যের জ্ঞান বিকশিত হয় সেহেতু এ বয়সেই ইসলামের বিধানাবলী প্রতিপালনের নিমিত্তে অভিভাবককে তার সন্তানের প্রতি দায়িত্ব সচেতন করা হয়েছে। তবে এখানে প্রহার করা দ্বারা হালকা প্রহার বুঝানো হয়েছে। বেদম প্রহার নয়। এর দ্বারা শুধুমাত্র ইসলামী বিধান প্রতিষ্ঠিত করতে শিক্ষা দেয়াই উদ্দেশ্য। সাত বছর বয়সে নির্দেশ প্রদান করতে হবে আর ১০ বছর বয়সে প্রয়োজনে প্রহার করতে হবে। সেই সাথে বিছানাও পৃথক করে দিতে হবে।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৭৩-[১০] কিন্তু মাসাবীহ-তে সাবরাহ্ ইবনু মা’বাদ (রহঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে।
اَلْفَصْلُ الثَّانِيْ
وَفِي المصابيح عَن سُبْرَة بن معبد
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৭৪-[১১] বুরায়দাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের ও তাদের (মুনাফিক্বদের) মধ্যে যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তা হলো সালাত। অতএব যে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পরিত্যাগ করবে, সে (প্রকাশ্যে) কুফরী করলো (অর্থাৎ- কাফির হয়ে যাবে)। (তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ্)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِيْ
وَعَنْ بُرَيْدَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْعَهْدُ الَّذِي بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ الصَّلَاةُ فَمَنْ تَرَكَهَا فَقَدْ كَفَرَ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ وَابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে সালাতকে মুসলিম ও কাফিরের মাঝে সুস্পষ্ট পার্থক্যকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইসলামে একমাত্র সালাতকেই সুস্পষ্ট পার্থক্য নিরূপণকারী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল-এর মতে, উপরোক্ত হাদীসের আলোকে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বর্জনকারী কাফির। তবে সর্বসম্মতমতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বর্জনকারী কাফির হলেও মুসলিম মিল্লাতের বাইরে নয়। আল্লাহই প্রকৃত সত্য অবগত।