পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ ও মুনাফিক্বীর নিদর্শন

৬১-[১৩] মু’আয (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দশটি বিষয়ে ওয়াসিয়্যাত বা উপদেশ দিয়েছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ (১) আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না, যদিও তোমাকে হত্যা করা হয় অথবা আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। (২) পিতা-মাতার অবাধ্য হবে না, যদি মাতা-পিতা তোমাকে তোমার পরিবার-পরিজন বা ধন সম্পদ ছেড়ে দেয়ার হুকুমও দেয়। (৩) ইচ্ছাকৃতভাবে কখনও কোন ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ছেড়ে দিও না। কারণ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ফারয্ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তা’আলা তার থেকে দায়িত্ব উঠিয়ে নেন। (৪) মদ পান হতে বিরত থাকবে। কেননা তা সকল অশ্লীলতার মূল। (৫) সাবধান! আল্লাহর নাফরমানী ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাক, কেননা নাফরমানী দ্বারা আল্লাহর ক্রোধ অবধারিত হয়ে যায়। (৬) জিহাদ হতে কখনো পালিয়ে যাবে না, যদিও সকল লোক মারা যায়। (৭) যখন মানুষের মধ্যে মহামারী ছড়িয়ে পড়ে আর তুমি সেখানেই রয়েছ, তখন সেখানে তুমি অবস্থান করবে (পলায়নপর হবে না)। (৮) শক্তি-সামর্থ্য অনুযায়ী নিজের পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করবে (কার্পণ্য করে তাদের কষ্ট দিবে না)। (৯) পরিবারের লোকেদেরকে আদাব-কায়দা শিক্ষার জন্য কক্ষনও শাসন হতে বিরত থাকবে না এবং (১০) আল্লাহ তা’আলা সম্পর্কে তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করতে থাকবে। (আহমাদ)[1]

باب الكبائر وعلامات النفاق - الفصل الثالث

عَنْ مُعَاذٍ قَالَ: أَوْصَانِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَشْرِ كَلِمَاتٍ قَالَ لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِ شَيْئًا وَإِنْ قُتِلْتَ وَحُرِّقْتُ وَلَا تَعُقَّنَّ وَالِدَيْكَ وَإِنْ أَمَرَاكَ أَنْ تَخْرُجَ مِنْ أَهْلِكَ وَمَالِكَ وَلَا تَتْرُكَنَّ صَلَاةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّدًا فَإِنَّ مَنْ تَرَكَ صَلَاةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللَّهِ وَلَا تَشْرَبَنَّ خَمْرًا فَإِنَّهُ رَأَسَ كُلِّ فَاحِشَةٍ وَإِيَّاكَ وَالْمَعْصِيَةَ فَإِنَّ بالمعصية حل سخط الله عز وَجل وَإِيَّاكَ وَالْفِرَارَ مِنَ الزَّحْفِ وَإِنْ هَلَكَ النَّاسُ وَإِذا أصَاب النَّاس موتان وَأَنت فيهم فَاثْبتْ وَأنْفق عَلَى عِيَالِكَ مِنْ طَوْلِكَ وَلَا تَرْفَعْ عَنْهُمْ عَصَاكَ أَدَبًا وَأَخِفْهُمْ فِي اللَّهِ. رَوَاهُ أَحْمَدُ

عن معاذ قال: اوصاني رسول الله صلى الله عليه وسلم بعشر كلمات قال لا تشرك بالله شيىا وان قتلت وحرقت ولا تعقن والديك وان امراك ان تخرج من اهلك ومالك ولا تتركن صلاة مكتوبة متعمدا فان من ترك صلاة مكتوبة متعمدا فقد برىت منه ذمة الله ولا تشربن خمرا فانه راس كل فاحشة واياك والمعصية فان بالمعصية حل سخط الله عز وجل واياك والفرار من الزحف وان هلك الناس واذا اصاب الناس موتان وانت فيهم فاثبت وانفق على عيالك من طولك ولا ترفع عنهم عصاك ادبا واخفهم في الله. رواه احمد

Chapter: Major Sins and the Signs of Hypocrisy - Section 3


Mu'adh said:
God’s messenger recommended ten things to me saying, “Do not associate anything with God, even if you are killed and burnt on that account; do not be disobedient to your parents, even if they command you to quit your family and your property; do not deliberately neglect to observe a prescribed prayer, for he who deliberately neglects to observe a prescribed prayer will have God’s protection removed from him; do not drink wine, for it is the beginning of every abomination; avoid acts of disobedience, for on their account God’s wrath descends; beware of running away from the line of battle, even if the people perish: when people are smitten by death when you are among them, stay where you are ; spend on your children out of your means; do not refrain from using the rod in training them; and cause them to fear God.”

Ahmad transmitted it.

ব্যাখ্যা: মু‘আয (রাঃ) বলেন, আমার বন্ধু আমাকে দশটি বিষয়ে আদেশ প্রদান করেছেন। তা’ নিম্নরূপঃ

(১) আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না তা অন্তর দিয়েই হোক অথবা যবানের দ্বারাই হোক। যদিও তোমাকে হত্যা করা হয় অথবা আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয় এরূপ পরিস্থিতিতেও শির্ক করা হতে বিরত থাকবে।

(২) তোমার মাতা-পিতার অবাধ্য হবে না। অর্থাৎ- বিরুদ্ধাচরণ করবে না যদিও তারা তোমাকে আদেশ দেয়ার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে। এমনকি স্ত্রী ত্বলাক্ব দিতে বলে কিংবা মাল দান করে দিতে বলে।

(৩) স্বেচ্ছায় সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পরিত্যাগ করবে না। এ থেকে বুঝা যায়, কেউ যদি ভুলে যাওয়ার কারণে অথবা বাধ্য হয়ে সালাত পরিত্যাগ করে তাহলে তাহলে ভিন্ন কথা।

(৪) মদপান করবে না। কেননা তা সকল অশ্লীল কাজের মূল। যেহেতু অশ্লীল কাজে বাধাদানকারী হলো ‘আকল। আর মদপান ‘আকল দূরীভূত করে। ফলে মানুষ যে কোন অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয়। আর এজন্যই মদকে সকল অপকর্মের মূল বলা হয়।

তোমার পরিবারের লোকেদের ওপর থেকে আদাবের লাঠি উঠিয়ে নিবে না।

আল্লাহর ব্যাপারে তাদেরকে ভয় দেখাবে। অর্থাৎ- আল্লাহর নির্দেশ লঙ্ঘনের ব্যাপারে তাদেরকে সতর্ক করবে।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ ও মুনাফিক্বীর নিদর্শন

৬২-[১৪] হুযায়ফাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিফাক্বের হুকুম রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগেই ছিল। বর্তমানে হয় তা কুফরী, না হয় ঈমান। (বুখারী)[1]

باب الكبائر وعلامات النفاق - الفصل الثالث

وَعَن حُذَيْفَة قَالَ: إِنَّمَا كَانَ النِّفَاق عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَّا الْيَوْمَ فَإِنَّمَا هُوَ الْكفْر بعد الايمان. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن حذيفة قال: انما كان النفاق على عهد النبي صلى الله عليه وسلم فاما اليوم فانما هو الكفر بعد الايمان. رواه البخاري

Chapter: Major Sins and the Signs of Hypocrisy - Section 3


Hudhaifa said, “Hypocrisy existed only in the time of God’s messenger, whereas to-day there are only unbelief and faith.”

Bukhari transmitted it.

ব্যাখ্যা: মুনাফিক্বীর হুকুম আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যামানাতেই ছিল। মু’মিন কর্তৃক মুনাফিক্বদের দোষ ঢেকে রাখতেন বলেই তাদের বিরুদ্ধবাদীরা তাদের মুসলিম বলে জানতো। ফলে বিরুদ্ধবাদীরা তাদের সাথে কঠোর আচরণ করা থেকে বিরত থাকতো। ফলে কাফিররা মুসলিমদের আধিক্যের কারণে তাদের সমীহ করত। এতে বিপরীতে কাফিরদের শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইনতিকালের পর সে অবস্থা এখন আর নেই। অর্থাৎ- যে মাসলাহাতের কারণে মুনাফিক্বদের দোষ গোপন রাখা হত তা বর্তমানে অনুপস্থিত। তাই আমরা যদি কারো কুফরী গোপন রেখে বাহ্যিকভাবে ইসলাম প্রকাশ করা সম্বন্ধে নিঃসন্দেহ হতে পারি তাহলে তার প্রতি আমরা কাফিরের বিধান প্রয়োগ করবো।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে