পরিচ্ছেদঃ ৪৩/৪২. মূসা (আঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৩২. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বনী ইসরাঈলের লোকরা নগ্ন হয়ে একে অপরকে দেখা অবস্থায় গোসল করতো। কিন্তু মূসা (আঃ) একাকী গোসল করতেন। এতে বনী ইসরাঈলের লোকরা বলাবলি করছিল, আল্লাহর কসম, মুসা (আঃ) ’কোষবৃদ্ধি রোগের কারণেই আমাদের সাথে গোসল করেন না। একবার মূসা (আঃ) একটা পাথরের উপর কাপড় রেখে গোসল করছিলেন। পাথরটা তার কাপড় নিয়ে পালাতে লাগল। তখন মূসা (আঃ) ’পাথর! আমার কাপড় দাও” “পাথর! আমার কাপড় দাও” বলে পেছনে পেছনে ছুটলেন। এদিকে বনী ইসরাঈল মূসার দিকে তাকাল। তখন তারা বলল, আল্লাহর কসম মূসার কোন রোগ নেই। মূসা (আঃ) পাথর থেকে কাপড় নিয়ে পরলেন এবং পাথরটাকে পিটাতে লাগলেন।
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম, পাথরটিতে ছয় কিংবা সাতটা পিটুনীর দাগ পড়ে গেল।
من فضائل موسى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: كَانَتْ بَنُو إِسْرَائِيلَ يَغْتَسِلُونَ عُرَاةً، يَنْظُرُ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ وَكَانَ مُوسى يَغْتَسِلُ وَحْدَه فَقَالُوا: وَاللهِ مَا يَمْنَعُ مُوسى أَنْ يَغْتَسِلَ مَعَنَا إِلاَّ أَنَّهُ آدَرُ فَذَهَبَ مَرَّةً يَغْتَسِلُ، فَوَضَعَ ثَوْبَهُ عَلَى حَجَرٍ، فَفَرَّ الْحَجَرُ بِثَوْبِهِ، فَخَرَجَ مُوسى فِي إِثْرِهِ يَقُولُ: ثَوْبِي يَا حَجَرُ حَتَّى نَظَرَتْ بَنُو إِسْرَائِيلَ إِلَى مُوسى، فَقَالُوا: وَاللهِ مَا بِمُوسى مِنْ بأسٍ وَأَخَذَ ثَوْبَهُ، فَطَفِقَ بِالْحَجَرِ ضَرْبًا
فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: وَاللهِ إِنَّهُ لَنَدَبٌ بِالْحَجَرِ، سِتَّةٌ أَوْ سَبْعَةٌ، ضَرْبًا بِالحَجَرِ
পরিচ্ছেদঃ ৪৩/৪২. মূসা (আঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৩৩. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মালাকুল মাওতকে মূসা (আঃ)-এর নিকট পাঠানো হল। তিনি তাঁর নিকট আসলে, মূসা (আঃ) তাঁকে চপেটাঘাত করলেন। (যার ফলে তাঁর চোখ বেরিয়ে গেল।) তখন মালাকুল মাওত তাঁর প্রতিপালকের নিকট ফিরে গিয়ে বললেন, আমাকে এমন এক বান্দার কাছে পাঠিয়েছেন যে মরতে চায় না। তখন আল্লাহ্ তাঁর চোখ ফিরিয়ে দিয়ে হুকুম করলেন, আবার গিয়ে তাঁকে বল, তিনি একটি ষাঁড়ের পিঠে তাঁর হাত রাখবেন, তখন তাঁর হাত যতটুকু আবৃত করবে, তার সম্পূর্ণ অংশের প্রতিটি পশমের বিনিময়ে তাকে এক বছর বা দান করা হবে। মূসা (আঃ) এ শুনে বললেন, হে আমার রব। অতঃপর কী হবে? আল্লাহ বললেনঃ অতঃপর মৃত্যু। মূসা (আঃ) বললেন, তা হলে এখনই হোক। তখন তিনি একটি পাথর নিক্ষেপ করলে যতদূর যায় বাইতুল মাকদিসের ততটুকু নিকটবর্তী স্থানে তাঁকে পৌছে দেয়ার জন্য আল্লাহ্ তা’আলার কাছে নিবেদন করলেন। রাবী বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি সেখানে থাকলে অবশ্যই পথের পাশে লাল বালুর টিলার নিকটে তাঁর কবর আমাদের দেখিয়ে দিতাম।
من فضائل موسى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: أُرْسِلَ مَلَكُ الْمَوْتِ إِلَى مُوسى عَلَيهِ السَّلاَمُ فَلَمَّا جَاءَهُ صَكَّهُ فَرَجَعَ إِلَى رَبِّهِ، فَقَالَ: أَرْسَلْتَنِي إِلَى عَبْدٍ لا يُرِيدُ الْمَوْتَ فَرَدَّ اللهُ عَلَيْهِ عَيْنَهُ وَقَالَ: ارْجِعْ فَقُلْ لَهُ يَضَعُ يَدَهُ عَلَى مَتْنِ ثَوْرٍ فَلَهُ بِكُلِّ مَا غَطَّتْ بِهِ يَدُهُ، بِكُلِّ شَعْرَةٍ سَنَةٌ قَالَ: أَيْ رَبِّ ثُمَّ مَاذَا قَالَ: ثُمَّ الْمَوْتُ قَالَ: فَالآنَ فَسَأَلَ اللهَ أَنْ يُدْنِيَهُ مِنَ الأَرْضِ الْمُقَدَّسَةِ رَمْيَةً بِحَجَرٍ
قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَلَوْ كُنْتُ ثَمَّ لأَرَيْتُكُمْ قَبْرَهُ إِلَى جَانِبِ الطَّرِيقِ، عِنْدَ الْكَثِيبِ الأَحْمَرِ
পরিচ্ছেদঃ ৪৩/৪২. মূসা (আঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৩৪. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, দু’ ব্যক্তি একে অপরকে গালি দিয়েছিল। তাদের একজন ছিল মুসলিম, অন্যজন ইয়াহুদী। মুসলিম লোকটি বলল, তাঁর কসম, যিনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সমস্ত জগতের মধ্যে ফাযীলাত প্রদান করেছেন। আর ইয়াহুদী লোকটি বলল, সে সত্তার কসম, যিনি মূসা (আঃ)-কে সমস্ত জগতের মধ্যে ফাযীলাত দান করেছেন। এ সময় মুসলিম ব্যক্তি নিজের হাত উঠিয়ে ইয়াহুদীর মুখে চড় মারল। এতে ইয়াহুদী ব্যক্তিটি নবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে তার এবং মুসলিম ব্যক্তিটির মধ্যে যা ঘটেছিল, তা তাঁকে অবহিত করল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আমাকে মূসা (আঃ)-এর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিও না। কারণ কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ বেশ হয়ে পড়বে, তাদের সাথে আমিও বেশ হয়ে পড়ব। তারপর সকলের আগে আমার হুশ আসবে, তখন (দেখতে পাব) মূসা (আঃ) আরশের একপাশ ধরে রয়েছেন। আমি জানি না, তিনি বেহুঁশ হয়ে আমার আগে হুঁশে এসেছেন অথবা আল্লাহ তা’আলা যাদেরকে বেহুঁশ হওয়া হতে রেহাই দিয়েছেন, তিনি তাঁদের মধ্যে ছিলেন।
من فضائل موسى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: اسْتَبَّ رَجُلاَنِ، رَجُلٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ، وَرَجُلٌ مِنَ الْيَهُودِ قَالَ الْمُسْلِمُ: وَالَّذِي اصْطَفَى مُحَمَّدًا عَلَى الْعَالَمِينَ فَقَالَ الْيَهُودِيُّ: وَالَّذِي اصْطفَى مُوسى عَلَى الْعَالَمِينَ فَرَفَعَ الْمُسْلِمُ يَدَهُ، عِنْدَ ذلِكَ، فَلَطَمَ وَجْهَ الْيَهُودِيّ فَذَهَبَ الْيَهُودِيُّ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَخْبَرَه بِمَا كَانَ مِنْ أَمْرِهِ وَأَمْرِ الْمُسْلِمِ فَدَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُسْلِمَ، فَسَأَلَهُ عَنْ ذلِكَ، فَأَخْبَرَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ تُخَيِّرُونِي عَلَى مُوسى، فَإِنَّ النَّاسَ يَصْعَقُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، فَأَصْعَقُ مَعَهُمْ، فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ يُفِيقُ، فَإِذَا مُوسى بَاطِشٌ جَانِبَ الْعَرْشِ، فَلاَ أَدْرِي أَكَانَ فِيمَنْ صَعِقَ فَأَفَاقَ قَبْلِي، أَوْ كَانَ مِمَّنِ اسْتَثْنَى اللهُ
পরিচ্ছেদঃ ৪৩/৪২. মূসা (আঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৩৫. আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপবিষ্ট ছিলেন, এমন সময় এক ইয়াহুদী এসে বলল, হে আবুল কাসিম! আপনার এক সাহাবী আমার মুখে আঘাত করেছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কে? সে বলল, একজন আনসারী। তিনি বললেন, তাকে ডাক। তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি ওকে মেরেছ? সে বলল, আমি তাকে বাজারে শপথ করে বলতে শুনেছিঃ শপথ তাঁর, যিনি মূসা (আঃ)-কে সকল মানুষের উপর ফযীলত দিয়েছেন। আমি বললাম, হে খবীস! বল, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপরও কি? এতে আমার রাগ এসে গিয়েছিল, তাই আমি তার মুখের উপর আঘাত করি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা নবীদের একজনকে অপরজনের উপর ফযীলত দিও না। কারণ, কিয়ামতের দিন সকল মানুষ বেহুঁশ হয়ে পড়বে। তারপর জমিন ফাটবে এবং যারাই উঠবে, আমিই হব তাদের মধ্যে প্রথম। তখন দেখতে পাব মূসা (আঃ) আরশের একটি পায়া ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি জানি না, তিনিও বেহুঁশ লোকদের মধ্যে ছিলেন, না তাঁর পূর্বেকার (তুর পাহাড়ের) বেহুঁশীই তাঁর জন্য যথেষ্ট হয়েছে।
من فضائل موسى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
حديث أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رضي الله عنه، قَالَ: بَيْنَمَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ، جَاءَ يَهُودِيٌّ فَقَالَ: يَا أَبَا الْقَاسِمِ ضَرَبَ وَجْهِي رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِكَ فَقَالَ: مَنْ قَالَ: رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ قَالَ: ادْعُوهُ فَقَالَ: أَضَرَبْتَهُ قَالَ: سَمِعْتُهُ بِالسُّوقِ يَحْلِفُ، وَالَّذِي اصْطَفَى مُوسى عَلَى الْبَشَرِ قلْتُ: أَيْ خَبِيثُ عَلَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخَذَتْنِي غَضْبَةٌ ضَرَبْتُ وَجْهَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ تُخَيِّرُوا بَيْنَ الأَنْبِيَاءِ، فَإِنَّ النَّاسَ يَصْعَقُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، فَأَكُون أَوَّلَ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الأَرْضُ فَإِذَا أَنَا بِمُوسى آخِذٌ بِقَائِمَةٍ مِنْ قَوَائِمِ الْعَرْشِ، فَلاَ أَدْرِي أَكَانَ فِيمَنْ صَعِقَ أَمْ حُوسِبَ بِصَعْقَةِ الاولَى