পরিচ্ছেদঃ ৩২/২৬. ইসলামের দাওয়াত দিয়ে হিরাক্লিয়াসের নিকট নাবী (ﷺ)-এর পত্র।

১১৬২. ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ সুফইয়ান (রাঃ) (আমাকে সামনাসামনি হাদীস শুনিয়েছেন। আবু সুইয়ান বলেন, আমাদের আর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির মেয়াদকালে আমি ভ্রমণে বের হয়েছিলাম। আমি তখন সিরিয়ায় অবস্থান করছিলাম। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে হিরাক্লিয়াসের নিকট একখানা পত্র পৌছান হল। দাহইয়াতুল কালবী (রাঃ) চিঠিটা বুসরার শাসককে দিয়েছিলেন। এরপর তিনি হিরাক্লিয়াসের নিকট পৌছিয়ে দিলেন। পত্র পেয়ে হিরাক্লিয়াস বললেন, নবীর দাবীদার ব্যক্তির গোত্রের কেউ এখানে আছে কি? তারা বলল, হ্যাঁ আছে। কয়েকজন কুরাইশীসহ আমাকে ডাকা হলে আমরা হিরাক্লিয়াসের নিকট গেলাম এবং আমাদেরকে তাঁর সম্মুখে বসানো হল।

এরপর তিনি বললেন, নবীর দাবীদার ব্যক্তির আমাদের মধ্যে নিকটতম আত্মীয় কে? আবূ সুইয়ান বলেন, উত্তরে বললাম, আমিই। তারা আমাকে তার সম্মুখে এবং আমার সাথীদেরকে আমার পেছনে বসালেন। তারপর দোভাষীকে ডাকলেন এবং বললেন, এদেরকে জানিয়ে দাও যে, আমি নবীর দাবীদার ব্যক্তিটি সম্পর্কে (আবূ সুফইয়ানকে) কিছু জিজ্ঞেস করলে সে যদি আমার নিকট মিথ্যা বলে তোমরা তার মিথ্যা বলা সম্পর্কে ধরবে। আবূ সুইয়ান বলেন, যদি তাদের পক্ষ থেকে আমাকে মিথুক প্রমাণের আশঙ্কা না থাকত তাহলে আমি আমি মিথ্যা বলতামই।

এরপর দোভাষীকে বললেন, একে জিজ্ঞেস কর যে, তোমাদের মধ্যে এ ব্যক্তির বংশ মর্যাদা কেমন? আবূ সুফইয়ান বললেন, তিনি আমাদের মধ্যে অভিজাত বংশের অধিকারী। তিনি জিজ্ঞেস করলেন যে, তাঁর পূর্বপুরুষদের কেউ কি রাজা-বাদশাহ ছিলেন? আমি বললাম, না। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর বর্তমানের কথাবার্তার পূর্বে তোমরা তাঁকে কখনো মিথ্যাচারের অপবাদ দিয়েছ কি? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, সম্ভ্ৰান্ত ব্যক্তিরা তাঁর অনুসরণ করছে, না দুর্বলগণ? আমি বললাম, বরং দুর্বলগণ। তিনি বললেন, তাদের সংখ্যা বাড়ছে না কমছে। আমি বললাম, বরং বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বললেন, তাঁর ধর্মে প্রবিষ্ট হওয়ার পর তার প্রতি বিতৃষ্ণাবশতঃ কেউ কি ধর্ম ত্যাগ করে? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তোমরা তাঁর বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধ করেছ কি? বললাম, জ্বী হ্যা। তিনি বললেন, তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ফলাফল কী হয়েছে? আমি বললাম, আমাদের ও তাদের মধ্যে যুদ্ধের ফলাফল হলঃ একবার তিনি জয়ী হন, আর একবার আমরা জয়ী হই। তিনি বললেন, তিনি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেননি? বললাম, না। তবে বর্তমানে আমরা একটি সন্ধির মেয়াদে আছি। দেখি এতে তিনি কী করেন। আবু সুফইয়ান বলেন, আল্লাহর শপথ! এটি ব্যতীত অন্য কোন কথা ঢুকিয়ে দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। বললেন, তার পূর্বে এমন কথা কেউ বলেছে কি? বললাম, না।

তারপর তিনি তাঁর দোভাষীকে বললেন যে, একে জানিয়ে দাও যে, আমি তোমাকে তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তির বংশমর্যাদা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তারপর তুমি বলেছ যে, সে আমাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত। তদ্রুপ রাসূলগণ শ্ৰেষ্ঠ বংশেই জন্মলাভ করে থাকেন। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তাঁর পূর্বপুরুষের কেউ রাজা-বাদশাহ ছিলেন কিনা? তুমি বলেছ না। তাই আমি বলছি যে, যদি তাঁর পূর্বপুরুষদের কেউ রাজা-বাদশাহ থাকতেন তাহলে বলতাম, তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের রাজত্ব ফিরে পেতে চাচ্ছেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, দুর্বলগণ তাঁর অনুসারী, না সম্ৰান্তগণ? তুমি বলেছ, দুর্বলগণই। আমি বলছি যে, যুগে যুগে দুর্বলগণই রাসূলদের অনুসারী হয়ে থাকে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, এ দাবীর পূর্বে তোমরা কখনও তাকে মিথ্যাবাদিতার অপবাদ দিয়েছিলে কি? তুমি উত্তরে বলেছ যে, না। তাতে আমি বুঝেছি যে, যে ব্যক্তি প্ৰথমে মানুষদের সঙ্গে মিথ্যাচার ত্যাগ করেন, তারপর আল্লাহর সঙ্গে মিথ্যাচারিতা করবেন, তা হতে পারে না। আমি তোমাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তাঁর ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাঁর প্রতি বিরক্ত হয়ে কেউ ধর্ম ত্যাগ করে কিনা? তুমি বলেছ, ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি বলছি, ঈমান এভাবেই পূর্ণতা লাভ করে।

আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তোমরা তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছ কি? তুমি বলেছ যে, যুদ্ধ করেছ এবং তার ফলাফল হচ্ছে পানি তোলার বালতির মত। কখনো আমাদের বিরুদ্ধে তারা জয়লাভ করে আবার কখননা তাদের বিরুদ্ধে তোমরা জয়লাভ কর। এমনিভাবেই রাসূলদের পরীক্ষা করা হয়, তারপর চূড়ান্ত বিজয় তাদেরই হয়ে থাকে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন কিনা? তমি বলেছ, না। তদ্রুপ রাসলগণ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন না। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তার পূর্বে কেউ এ দাবী উত্থাপন করেছিল কিনা? তুমি বলেছ, না। আমি বলি যদি কেউ তার পূর্বে এ ধরনের দাবী করে থাকত তাহলে আমি মনে করতাম এ ব্যক্তি পূর্ববর্তী দাবীর অনুসরণ করছে।

আবু সুফইয়ান বলেন, তারপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তিনি আমাদের কী কাজের হুকুম দেন? আমি বললাম, সালাত কায়িম করতে, যাকাত প্রদান করতে, আত্মীয়তা রক্ষা করতে এবং পাপকাজ থেকে পবিত্র থাকার হুকুম দেন। হিরাক্লিয়াস বললেন, তার সম্পর্কে তোমার বক্তব্য যদি সঠিক হয়, তাহলে তিনি ঠিকই নবী, তিনি আবির্ভূত হবেন তা আমি জানতাম বটে তবে আমাদের মধ্যে আবির্ভূত হবেন তা মনে করিনি। যদি আমি তাঁর সান্নিধ্যে পৌছার সুযোগ পেতাম তাহলে আমি তাঁর সাক্ষাৎকে অগ্রাধিকার দিতাম। যদি আমি তাঁর নিকট অবস্থান করতাম তাহলে আমি তার পদযুগল ধুয়ে দিতাম। আমার পায়ের নিচের জমিন পর্যন্ত তাঁর রাজত্ব সীমা পৌছে যাবে।

আবূ সুফইয়ান বলেন, তারপর হিরাক্লিয়াস রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্ৰখানি আনতে বললেন। এরপর পাঠ করতে বললেন। তাতে লেখা ছিলঃ

দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে, আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে রোমের অধিপতি হিরাক্লিয়াসের প্রতি। হিদায়াতের অনুসারীর প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। এরপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি, ইসলাম গ্রহণ করুন, মুক্তি পাবেন। ইসলাম গ্রহণ করুন, আল্লাহ তা’আলা আপনাকে দ্বিগুণ প্রতিদান দেবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে থাকেন তাহলে সকল প্রজার পাপরাশিও আপনার উপর নিপতিত হবে। হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও আমাদের মধ্যে একই যে, আমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করব না, কোন কিছুতেই তাঁর সঙ্গে শরীক করব না। আর আমাদের একে অন্যকে আল্লাহ ব্যতীত প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করব না। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বল, তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা মুসলিম।

যখন তিনি পত্র পাঠ সমাপ্ত করলেন চতুর্দিকে উচ্চ রব উঠল এবং গুঞ্জন বৃদ্ধি পেল। তারপর তাঁর নির্দেশে আমাদের বাইরে নিয়ে আসা হল। আবূ সুইয়ান বলেন, আমরা বেরিয়ে আসার পর আমি আমার সাথীদের বললাম যে, আবু কাবশার সন্তানের তো বিস্তার ঘটেছে। রোমের রাষ্ট্রনায়ক পর্যন্ত তাঁকে ভয় পায়। তখন থেকে আমার মনে এ দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছিল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দীন অতি সত্ত্বর বিজয় লাভ করবে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা আমাকে ইসলামে দীক্ষিত করলেন।

كتاب النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إلى هرقل يدعوه إلى الإسلام

حديث أَبِي سُفْيَانَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو سُفْيَانَ، مِنْ فِيهِ إِلَى فِيَّ، قَالَ: انْطَلَقْتُ فِي الْمُدَّةِ الَّتِي كَانَتْ بَيْنِي وَبَيْنَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: فَبَيْنَا أَنَا بِالشَّامِ إِذْ جِيءَ بِكِتَابٍ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى هِرَقْلَ قَالَ: وَكَانَ دِحْيَةُ الْكَلْبِيُّ جَاءَ بِهِ، فَدَفَعَهُ إِلَى عَظِيمِ بُصْرَى، فَدَفَعَهُ عَظِيمُ بُصْرَى إِلَى هِرَقْلَ قَالَ: فَقَالَ هِرَقْل: هَلْ ههُنَا أَحَدٌ مِنْ قَوْمِ هذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالُوا: نَعَمْ قَالَ: فَدُعِيتُ فِي نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ، فَدَخَلْنَا عَلَى هِرَقْلَ، فَأَجْلَسَنَا بَيْنَ يَدَيْهِ؛ فَقَالَ: أَيُّكُمْ أَقْرَبُ نَسَبًا مِنْ هذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ: فَقُلْتُ: أَنَا فَأَجْلَسُونِي بَيْنَ يَدَيْهِ، وَأَجْلَسُوا أَصْحَابِي خَلْفِي ثُمَّ دَعَا بِتُرْجُمَانِهِ، فَقَالَ قُلْ لَهُمْ: إِنِّي سَائِلٌ هذَا عَنْ هذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ، فَإِنْ كَذَبنِي فَكَذِّبُوهُ قَالَ أَبُو سُفْيَانَ: وَايْمُ اللهِ لَوْلاَ أَنْ يُؤْثِرُوا عَلَيَّ الْكَذِبَ لَكَذَبْتُ ثُمَّ قَالَ لِتُرْجُمَانِهِ: سَلْهُ كَيْفَ حَسَبُهُ فِيكُمْ قَالَ: قُلْتُ هُوَ فِينَا ذُو حَسَبِ قَالَ: فَهَلْ كَانَ مِنْ آبائِهِ مَلِكٌ قَالَ: قُلْتُ لا فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ قُلْتُ لاَ قَالَ: أَيَتَّبِعُهُ أَشْرَافُ النَّاسِ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ قَالَ: قُلْتُ بَلْ ضعَفَاؤُهُمْ قَالَ: يَزِيدُونَ أَوْ يَنْقُصُونَ قَالَ: قُلْتُ لاَ، بَلْ يَزِيدُونَ قَالَ: هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ سَخْطَةً لَهُ قَالَ: قُلْتُ لاَ
قَالَ: فَهَلْ قَاتَلْتُمُوهُ قَالَ: قُلْتُ نَعَمْ قَالَ: فَكَيْفَ كَانَ قِتَالُكُمْ إِيَّاهُ قَالَ: قُلْتُ تَكُونُ الْحَرْبُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُ سِجَالاً، يُصِيبُ مِنَّا وَنصِيبُ مِنْهُ قَالَ: فَهَلْ يَغْدِرُ قَالَ: قُلْتُ لاَ، وَنَحْنُ مِنْهُ فِي هذِهِ الْمُدَّةِ لاَ نَدْرِي مَا هُوَ صَانِعٌ فِيها قَالَ: وَاللهِ مَا أَمْكَنَنِي مِنْ كَلِمَةٍ أُدْخِلُ فِيهَا شَيْئًا غَيْرَ هذِهِ قَالَ: فَهَلْ قَالَ هذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قُلْتُ لا

ثُمَّ قَالَ لِتُرْجُمَانِهِ: قلْ لَهُ: إِنِّي سَأَلْتُكَ عَنْ حَسَبِهِ فِيكُمْ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ فِيكُمْ ذُو حَسَبٍ، وَكَذلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِي أَحْسَابِ قَوْمِهَا وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ فِي آبائِهِ مَلِكٌ، فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ فَقُلْتُ لَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ آبائِهِ وَسَأَلْتُكَ عَنْ أَتْبَاعِهِ، أَضُعَفَاؤُهُمْ أَمْ أَشْرَافُهُمْ فَقُلْتَ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَدَعَ الْكَذِبَ علَى النَّاسِ ثُمَّ يَذْهَبَ فَيَكْذِبَ عَلَى اللهِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدخُلَ فِيهِ سَخْطَةً لَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ وَكَذلِكَ الإِيمَانُ إِذَا خَالَطَ بَشَاشَةَ الْقُلُوبِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ فَزَعَمْتَ أَنَّهُمْ يَزِيدُونَ وَكَذلِكَ الإِيمَانُ حَتَّى يَتِمَّ وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَاتَلْتُمُوهُ فَزَعَمْتَ أَنَّكُمْ قَاتَلْتُمُوهُ، فَتَكُونُ الْحَرْبُ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ سِجَالاً، يَنَالُ مِنْكُمْ وَتَنَالُونَ مِنْهُ وَكَذلِكَ الرُّسُلُ تُبْتَلَى ثُمَّ تَكُونُ لَهُمُ الْعاقِبَةُ وَسَأَلْتكَ هَلْ يَغْدِرُ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ لاَ يَغْدِرُ وَكَذلِكَ الرُّسُلُ لاَ تَغْدِرُ وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ أَحَدٌ هذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ فَقُلْتُ لَوْ كَانَ قَالَ هذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قُلْتُ رَجُلٌ ائْتَمَّ بِقَوْلٍ قِيلَ قَبْلَهُ قَالَ: ثُمَّ قَالَ بِمَ يَأْمُرُكُمْ قَالَ: قُلْتُ يَأْمُرُنَا بِالصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ وَالصِّلَةِ وَالْعَفَافِ قَالَ: إِنْ يَكُ مَا تَقُولُ فِيهِ حَقًّا فَإِنَّهُ نَبِيٌّ وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ وَلَمْ أَكُ أَظُنُّهُ مِنْكُمْ وَلَوْ أَنِّي أَعْلَمُ أَنِّي أَخْلُصُ إِلَيْهِ لأَحْبَبْتُ لِقَاءَهُ وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمَيْهِ وَلَيَبْلُغَنَّ مُلْكُهُ مَا تَحْتَ قَدَمَيَّ قَالَ: ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَرَأَهُ، فَإِذَا فِيهِ: بِسْمِ اللهِ الرَحْمنِ الرَّحِيمِ، مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى أَمَّا بَعْدُ فإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ، أَسْلِمْ تَسْلَمْ، وَأَسْلِمْ يُؤْتِكَ اللهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ، فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ (وَيَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللهَ) إِلَى قَوْلِهِ (اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ)
فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ ارْتَفَعَتِ الأَصْوَاتُ عِنْدَهُ، وَكَثُرَ اللَّغَطُ، وَأُمِرَ بِنَا فَأُخْرِجْنَا
قَالَ: فَقُلْتُ لأَصْحَابِي حِينَ خَرَجْنَا: لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِي كَبْشَةَ، إِنَّهُ لَيَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الأَصْفَر فَمَا زِلْتُ مُوقِنًا بِأَمْرِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللهُ عَلَيَّ الإِسْلاَمَ

حديث ابي سفيان عن ابن عباس، قال: حدثني ابو سفيان، من فيه الى في، قال: انطلقت في المدة التي كانت بيني وبين رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: فبينا انا بالشام اذ جيء بكتاب من النبي صلى الله عليه وسلم الى هرقل قال: وكان دحية الكلبي جاء به، فدفعه الى عظيم بصرى، فدفعه عظيم بصرى الى هرقل قال: فقال هرقل: هل ههنا احد من قوم هذا الرجل الذي يزعم انه نبي فقالوا: نعم قال: فدعيت في نفر من قريش، فدخلنا على هرقل، فاجلسنا بين يديه؛ فقال: ايكم اقرب نسبا من هذا الرجل الذي يزعم انه نبي فقال ابو سفيان: فقلت: انا فاجلسوني بين يديه، واجلسوا اصحابي خلفي ثم دعا بترجمانه، فقال قل لهم: اني ساىل هذا عن هذا الرجل الذي يزعم انه نبي، فان كذبني فكذبوه قال ابو سفيان: وايم الله لولا ان يوثروا علي الكذب لكذبت ثم قال لترجمانه: سله كيف حسبه فيكم قال: قلت هو فينا ذو حسب قال: فهل كان من اباىه ملك قال: قلت لا فهل كنتم تتهمونه بالكذب قبل ان يقول ما قال قلت لا قال: ايتبعه اشراف الناس ام ضعفاوهم قال: قلت بل ضعفاوهم قال: يزيدون او ينقصون قال: قلت لا، بل يزيدون قال: هل يرتد احد منهم عن دينه بعد ان يدخل فيه سخطة له قال: قلت لا قال: فهل قاتلتموه قال: قلت نعم قال: فكيف كان قتالكم اياه قال: قلت تكون الحرب بيننا وبينه سجالا، يصيب منا ونصيب منه قال: فهل يغدر قال: قلت لا، ونحن منه في هذه المدة لا ندري ما هو صانع فيها قال: والله ما امكنني من كلمة ادخل فيها شيىا غير هذه قال: فهل قال هذا القول احد قبله قلت لا ثم قال لترجمانه: قل له: اني سالتك عن حسبه فيكم فزعمت انه فيكم ذو حسب، وكذلك الرسل تبعث في احساب قومها وسالتك هل كان في اباىه ملك، فزعمت ان لا فقلت لو كان من اباىه ملك قلت رجل يطلب ملك اباىه وسالتك عن اتباعه، اضعفاوهم ام اشرافهم فقلت بل ضعفاوهم وهم اتباع الرسل وسالتك هل كنتم تتهمونه بالكذب قبل ان يقول ما قال فزعمت ان لا فعرفت انه لم يكن ليدع الكذب على الناس ثم يذهب فيكذب على الله وسالتك هل يرتد احد منهم عن دينه بعد ان يدخل فيه سخطة له فزعمت ان لا وكذلك الايمان اذا خالط بشاشة القلوب وسالتك هل يزيدون ام ينقصون فزعمت انهم يزيدون وكذلك الايمان حتى يتم وسالتك هل قاتلتموه فزعمت انكم قاتلتموه، فتكون الحرب بينكم وبينه سجالا، ينال منكم وتنالون منه وكذلك الرسل تبتلى ثم تكون لهم العاقبة وسالتك هل يغدر فزعمت انه لا يغدر وكذلك الرسل لا تغدر وسالتك هل قال احد هذا القول قبله فزعمت ان لا فقلت لو كان قال هذا القول احد قبله قلت رجل اىتم بقول قيل قبله قال: ثم قال بم يامركم قال: قلت يامرنا بالصلاة والزكاة والصلة والعفاف قال: ان يك ما تقول فيه حقا فانه نبي وقد كنت اعلم انه خارج ولم اك اظنه منكم ولو اني اعلم اني اخلص اليه لاحببت لقاءه ولو كنت عنده لغسلت عن قدميه وليبلغن ملكه ما تحت قدمي قال: ثم دعا بكتاب رسول الله صلى الله عليه وسلم فقراه، فاذا فيه: بسم الله الرحمن الرحيم، من محمد رسول الله الى هرقل عظيم الروم سلام على من اتبع الهدى اما بعد فاني ادعوك بدعاية الاسلام، اسلم تسلم، واسلم يوتك الله اجرك مرتين، فان توليت فان عليك اثم الاريسيين (ويا اهل الكتاب تعالوا الى كلمة سواء بيننا وبينكم ان لا نعبد الا الله) الى قوله (اشهدوا بانا مسلمون) فلما فرغ من قراءة الكتاب ارتفعت الاصوات عنده، وكثر اللغط، وامر بنا فاخرجنا قال: فقلت لاصحابي حين خرجنا: لقد امر امر ابن ابي كبشة، انه ليخافه ملك بني الاصفر فما زلت موقنا بامر رسول الله صلى الله عليه وسلم انه سيظهر حتى ادخل الله علي الاسلام

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৩২/ জিহাদ (كتاب الجهاد)