পরিচ্ছেদঃ ৮৮/৩. যারা ফরযসমূহ গ্রহণ করতে অস্বীকার করে এবং যাদেরকে ধর্মত্যাগের অপরাধে অপরাধী করা হয়েছে তাদেরকে হত্যা করা
৬৯২৪. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যু হল এবং আবূ বকর (রাঃ) খলীফা হলেন আর আরবের যারা কাফির হল, তখন ’উমার (রাঃ) বললেন, হে আবূ বকর! আপনি কিভাবে লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করবেন? অথচ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে ততক্ষণ পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে যতক্ষণ না তারা ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ (আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই) বলবে। আর যে কেউ ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ্’ বলে, যথার্থ কারণ না থাকলে সে তার জান-মাল আমার হাত থেকে রক্ষা করে নেয়। আর তার হিসাব আল্লাহর দায়িত্বে।[1] [১৩৯৯] (আধুনিক প্রকাশনী-৬৪৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫৬)
(১) প্রথম প্রকার : যারা মূর্তি পূজার দিকে প্রত্যাবর্তন করেছিল।
(২) দ্বিতীয় প্রকার : যারা মুসাইলামাতুল কাযযাব ও আসওয়াদ আনাসীর অনুসারী ছিল। নবী (সাঃ) এর মৃত্যুর পূর্বেই তারা নবুওয়াতের দাবী করেছিল। ইয়ামামার অধিবাসীরা মুসাইলামার অনুসারী ছিল। আর সান‘আর অধিবাসীরা ছিল আসওয়াদ আনাসির অনুসারী। নবী (সাঃ) এর মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বেই হত্যা করা হয়েছিল আসওয়াদকে। তার অনুসারীদের অল্প কিছু যা অবিশষ্ট ছিল তাদেরকে আবু বকর (রাঃ) এর খিলাফতের সময় রাসূল (সাঃ) এর যাকাত আদায়কারী আমেলেরা হত্যা করেছিল। আর আবু বকর (রাঃ) খালিদ ইবনু ওয়ালিদের নেতৃত্বে একদল সৈন্য প্রেরণ করেছিলেন মুসাইলামার বিরুদ্ধে এবং তাঁরা তাকে হত্যা করেছিল।
(৩) তৃতীয় প্রকার : যারা ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল, কিন্তু তারা যাকাত দিতে অস্বীকার করেছিল। তাদের যুক্তি হল যাকাত রাসূল (সাঃ) এর সাথেই নির্দিষ্ট। তারা তাদের স্বপক্ষে এই আয়াত পেশ করে,
{خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ إِنَّ صَلاَتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ وَاللّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ}
[সূরা আত্-তাওবাহ (৯): ১০৩]।
ফলে তাদের ধারণা ছিল যে, যাকাত দেয়া নবী (সাঃ) এর সাথে সম্পৃক্ত। কেননা তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তাদেরকে পবিত্র করতে এবং তাদের উপর রহমতের জন্য দু‘আ করতে পারবে না। নবীর (সাঃ) মৃত্যুর পরে যদি যাকাত অন্যকে দেয় তাহলে তার দোয়া কীভাবে তাদের জন্য প্রশান্তির হবে?
এই প্রকার লোকদের বিরূদ্ধে যুদ্ধ করার ব্যাপারেই ওমর (রাঃ) আবু বকর (রাঃ) এর সাথে বিতর্ক করেছিলেন, যেমন এই পরিচ্ছেদের হাদীসে এসেছে। আর আবু মুহাম্মাদ ইবনু হাযম তাঁর সুবিখ্যাত গ্রন্থ المل والنحل এর মধ্যে বলেন, নবী (সাঃ) এর মৃত্যুর পর আরবরা চার ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল।
(১) প্রথম শ্রেণীর লোক পূর্ণ ইসলামের উপরেই প্রতিষ্ঠিত ছিল- এদের সংখ্যাই সবচাইতে বেশী।
(২) দ্বিতীয় শ্রেণীর লোক ইসলামের উপরই প্রতিষ্ঠিত ছিল, কিন্তু তারা বলল, আমরা যাকাত দেয়া ছাড়া ইসলামের সকল বিধান প্রতিষ্ঠা করব। এরা প্রথম শ্রেণীর চাইতে সংখ্যায় ছিল কম।
(৩) তৃতীয় শ্রেণীর লোকেরা কুফর ও মুরতাদ হওয়ার ঘোষণা দেয়। যেমন-তুলাইহা ও সুজাহ এর অনুগামীরা।
(৪) চতুর্থ শ্রেণীর লোকেরা উপরোক্ত তিন শ্রেণীর লোকদের কারো অনুসরণ না করে অপেক্ষাই ছিল যে, যারা বিজয় লাভ করবে তাদেরকে তারা অনুসরণ করবে। কিন্তু আলহামদু লিল্লাহ, এক বছর অতিবাহিত না হতেই সবাই আবার ইসলামের সুশীতল ছায়ার তলে ফিরে এসেছিল। (ফাতহুল বারী)
بَاب قَتْلِ مَنْ أَبَى قَبُولَ الْفَرَائِضِ وَمَا نُسِبُوا إِلَى الرِّدَّةِ
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ لَمَّا تُوُفِّيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَاسْتُخْلِفَ أَبُو بَكْرٍ وَكَفَرَ مَنْ كَفَرَ مِنْ الْعَرَبِ قَالَ عُمَرُ يَا أَبَا بَكْرٍ كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ فَمَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ فَقَدْ عَصَمَ مِنِّي مَالَهُ وَنَفْسَهُ إِلاَّ بِحَقِّهِ وَحِسَابُهُ عَلَى اللهِ
Narrated Abu Huraira:
When the Prophet (ﷺ) died and Abu Bakr became his successor and some of the Arabs reverted to disbelief, `Umar said, "O Abu Bakr! How can you fight these people although Allah's Messenger (ﷺ) said, 'I have been ordered to fight the people till they say: 'None has the right to be worshipped but Allah, 'and whoever said, 'None has the right to be worshipped but Allah', Allah will save his property and his life from me, unless (he does something for which he receives legal punishment) justly, and his account will be with Allah?'
পরিচ্ছেদঃ ৮৮/৩. যারা ফরযসমূহ গ্রহণ করতে অস্বীকার করে এবং যাদেরকে ধর্মত্যাগের অপরাধে অপরাধী করা হয়েছে তাদেরকে হত্যা করা
৬৯২৫. আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! যারা সালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমি যুদ্ধ করব। কেননা, যাকাত হল মালের হক। আল্লাহর কসম! যদি তারা একটি বকরীর বাচ্চাও না দেয় যা তারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে দিত, তাহলে তা না দেয়ার কারণে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব। ’উমার (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমি বুঝতে পারলাম যে, এটা আর কিছু নয় এবং আল্লাহ্ আবূ বকর (রাঃ)-এর বক্ষ যুদ্ধের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। পরে আমি বুঝতে পারলাম যে, (আবূ বকর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন) এটি-ই হক। [১৪০০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫৬)
بَاب قَتْلِ مَنْ أَبَى قَبُولَ الْفَرَائِضِ وَمَا نُسِبُوا إِلَى الرِّدَّةِ
قَالَ أَبُو بَكْرٍ وَاللهِ لأقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ فَإِنَّ الزَّكَاةَ حَقُّ الْمَالِ وَاللهِ لَوْ مَنَعُونِي عَنَاقًا كَانُوا يُؤَدُّونَهَا إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَقَاتَلْتُهُمْ عَلَى مَنْعِهَا قَالَ عُمَرُ فَوَاللهِ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ رَأَيْتُ أَنْ قَدْ شَرَحَ اللهُ صَدْرَ أَبِي بَكْرٍ لِلْقِتَالِ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ الْحَقُّ
"Abu Bakr said, "By Allah! I will fight whoever differentiates between prayers and Zakat as Zakat is the right to be taken from property (according to Allah's Orders). By Allah! If they refused to pay me even a kid they used to pay to Allah's Messenger (ﷺ), I would fight with them for withholding it." `Umar said, "By Allah: It was nothing, but I noticed that Allah opened Abu Bakr's chest towards the decision to fight, therefore I realized that his decision was right."