পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৪২. পিতা বা অভিভাবক কুমারী অথবা বিবাহিতা মেয়েকে তাদের সম্মতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারে না।
৫১৩৬. আবূ সালামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তাদের কাছে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন বিধবা নারীকে তার সম্মতি ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারী মহিলাকে তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারবে না। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! কেমন করে তার অনুমতি নেয়া হবে। তিনি বললেন, তার চুপ থাকাটাই হচ্ছে তার অনুমতি। [1] [৬৯৭০; মুসলিম ১৬/৮, হাঃ ১৪১৯, আহমাদ ৯৬১১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬০)
কিন্তু বড়ই দুর্ভাগ্যের ব্যাপার বর্তমান অধঃপতিত মুসলিম সমাজে মেয়েদের এ অধিকার বাস্তব ক্ষেত্রে কার্যকর হচ্ছে না। এর অপর একটি দিক বর্তমানে খুবই প্রাবল্য লাভ করেছে। আধুনিক ছেলেমেয়েরা তাদের বিয়ের ব্যাপারে তাদের বাপ-মা- গার্জিয়ানদের কোন তোয়াক্কাই রাখে না। তাদের কোন পরোয়াই করা হয় না। ‘বিয়ে নিজের পছন্দেই ঠিক’ এ কথার সত্যতা অস্বীকার করা হচ্ছে না, তেমনি এ কথাও অস্বীকার করার উপায় নেই, আধুনিক যুবক যুবতীরা যৌবনের উদ্দামতায় অবাধ মেলামেশার গড্ডালিকা প্রবাহে পড়ে দিশেহারা হয়ে যেতে পারে এবং ভাল-মন্দ, শোভন অশোভন বিচারশূন্য হয়ে যেখানে সেখানে আত্মদান করে বসতে পারে। তাই উদ্যম-উৎসাহের সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ বিচার বিবেচনারও বিশেষ প্রয়োজন। কেননা বিয়ে কেবলমাত্র যৌন পরিতৃপ্তির মাধ্যম নয়; ঘর, পরিবার, সন্তান, সমাজ, জাতি ও দেশ সর্বোপরি নৈতিকতার প্রশ্নও তার সাথে গভীরভাবে জড়িত। তাই বিয়ের ব্যাপারে ছেলেমেয়ের পিতা বা অলীর মতামতের গুরুত্ব আছে। কেননা সাধারণতঃ অলী-পিতা-মাতা নিজেদের ছেলেমেয়ের কখনো অকল্যাণকামী হতে পারে না। তাই বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পিতামাতার মতের গুরুত্ব কিছুতেই অস্বীকার করা চলে না।
ছেলের বিয়েতে অলী তথা অভিভাবকের বাধ্য বাধকতা নেই কিন্তু মেয়ের জন্য বাধ্যবাধকতা রয়েছে। মেয়ের বৈধ অলী থাকাবস্থায় তাকে না জানিয়ে নকল অলী বানিয়ে কোর্ট ম্যরেজের মাধ্যমে যত বিবাহ হয়ে থাকে তা সবই বাতিল। তাদের দাম্পত্য জীবন হবে ব্যভিচারী জীবনের মত। তাদের অর্জিত সন্তান সন্ততি জারজ হিসেবে পরিগণিত হবে। এ অভিশপ্ত জীবন থেকে পরিত্রাণের জন্য তাদেরকে বৈধ অলীর মাধ্যমে পুনর্বিবাহ পড়াতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় অলী বর্তমান থাকা সত্ত্বেও তাকে গুরুত্ব না দিয়ে এবং তার নির্দেশ ও সম্মতি ব্যতিরেকে অন্য কোন লোককে অলী হিসেবে দাঁড় করিয়ে বিবাহ কার্য সম্পন্ন করা হয়, এটা না-জায়িয। বরং মূল অলী নিজেই অথবা তার অবর্তমানে যাকে দায়িত্ব দিবে সে অলী হিসেবে বিবাহ কার্য সম্পাদন করবে।
উল্লেখ্য অলী কর্তৃক মেয়ের পক্ষ থেকে পূর্ব অনুমতি বা সমর্থন নিতে হবে ঠিক আছে। কিন্তু বৈধ অলীর [অভিভাবকের] সমর্থন ও অনুমতি ব্যতীত কোন মেয়ের বিয়েই বৈধ হবে না। কারণ আয়েশা হতে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেনঃ রসূল বলেছেনঃ
(أَيُّمَا امْرَأَةٍ لَمْ يُنْكِحْهَا الْوَلِيُّ فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ...).
‘‘যে মেয়েকে তার অভিভাবক বিয়ে না দিবে [সে নিজে বিয়ে করলে] তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল...।’’ [হাদীসটি ইবনু মাজাহ্ বর্ণনা করেছেন, হাদীসটি সহীহ্, দেখুন ‘‘সহীহ্ ইবনু মাজাহ্’’ (১৮৭৯)।
অন্য বর্ণনায় আয়েশা হতে বর্ণিত হয়েছে রসূল বলেছেনঃ
(أَيُّمَا امْرَأَةٍ نَكَحَتْ بِغَيْرِ إِذْنِ مَوَالِيهَا فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ ...).
‘‘যে মেয়েই তার অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত বিয়ে করবে তার বিয়ে বাতিল। এ কথাটি তিনবার উল্লেখ করেন।’’ [এ ভাষায় হাদীসটি ইমাম আবূ দাঊদ (২০৮৩), তিরমিযী (১১০২) বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি সহীহ্, দেখুন ‘‘সহীহ্ আবী দাঊদ’’, ‘‘সহীহ্ তিরমিযী’’, ‘‘সহীহ্ জামে‘ইস সাগীর’’ (২৭০৯) ও ‘‘মিশকাত’’ (৩১৩১)]।
بَاب لاَ يُنْكِحُ الأَبُ وَغَيْرُهُ الْبِكْرَ وَالثَّيِّبَ إِلاَّ بِرِضَاهَا
مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ يَحْيٰى عَنْ أَبِي سَلَمَةَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ حَدَّثَهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ تُنْكَحُ الأَيِّمُ حَتّٰى تُسْتَأْمَرَ وَلاَ تُنْكَحُ الْبِكْرُ حَتّٰى تُسْتَأْذَنَ قَالُوا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَكَيْفَ إِذْنُهَا قَالَ أَنْ تَسْكُتَ.
Narrated Abu Huraira:
The Prophet (ﷺ) said, "A matron should not be given in marriage except after consulting her; and a virgin should not be given in marriage except after her permission." The people asked, "O Allah's Messenger (ﷺ)! How can we know her permission?" He said, "Her silence (indicates her permission).
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৪২. পিতা বা অভিভাবক কুমারী অথবা বিবাহিতা মেয়েকে তাদের সম্মতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারে না।
৫১৩৭. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! নিশ্চয়ই কুমারী মেয়েরা লজ্জা করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তার চুপ থাকাটাই হচ্ছে তার সম্মতি। [৬৯৪৬, ৬৯৭১](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬১)
بَاب لاَ يُنْكِحُ الأَبُ وَغَيْرُهُ الْبِكْرَ وَالثَّيِّبَ إِلاَّ بِرِضَاهَا
عَمْرُو بْنُ الرَّبِيعِ بْنِ طَارِقٍ قَالَ أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ عَنْ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ عَنْ أَبِي عَمْرٍو مَوْلَى. عَائِشَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّهَا قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ الْبِكْرَ تَسْتَحِي قَالَ رِضَاهَا صَمْتُهَا
Narrated `Aisha:
I said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! A virgin feels shy." He said, "Her consent is (expressed by) her silence."