পরিচ্ছেদঃ ৬৫/৪১/১. আল্লাহর বাণীঃ

(41) سُوْرَةُ حم السَّجْدَةِ

সূরাহ (৪১) : হা-মীম আস্সিজদা (ফুসসিলাত)

وَقَالَ طَاوُسٌ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ (اِئْتِيَا طَوْعًا) أَوْ كَرْهًا أَعْطِيَا (قَالَتَا أَتَيْنَا طَآئِعِيْنَ) أَعْطَيْنَا وَقَالَ الْمِنْهَالُ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ قَالَ رَجُلٌ لِابْنِ عَبَّاسٍ إِنِّيْ أَجِدُ فِي الْقُرْآنِ أَشْيَاءَ تَخْتَلِفُ عَلَيَّ قَالَ فَلَا أَنْسَابَ بَيْنَهُمْ (يَوْمَئِذٍ وَّلَا يَتَسَآءَلُوْنَ) و (وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلٰى بَعْضٍ يَّتَسَآءَلُوْنَ وَلَا يَكْتُمُوْنَ اللهَ حَدِيْثًا وَاللهِ رَبِّنَا مَا كُنَّا مُشْرِكِيْنَ) فَقَدْ كَتَمُوْا فِيْ هَذِهِ الْآيَةِ وَقَالَ (أَمِ السَّمَآءُ بَنَاهَا) إِلَى قَوْلِهِ (دَحَاهَا) فَذَكَرَ خَلْقَ السَّمَاءِ قَبْلَ خَلْقِ الْأَرْضِ ثُمَّ قَالَ (أَئِنَّكُمْ لَتَكْفُرُوْنَ بِالَّذِيْ خَلَقَ الْأَرْضَ فِيْ يَوْمَيْنِ) إِلَى قَوْلِهِ (طَآئِعِيْنَ) فَذَكَرَ فِيْ هَذِهِ خَلْقَ الْأَرْضِ قَبْلَ خَلْقِ السَّمَاءِ وَقـَالَ (وَكَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا)(عَزِيْزًا حَكِيْمًا)(سَمِيْعًامبَصِيْرًا) فَكَأَنَّهُ كَانَ ثُمَّ مَضَى فَقَالَ فَلَا أَنْسَابَ بَيْنَهُمْ فِي النَّفْخَةِ الْأُوْلَى ثُمَّ يُنْفَخُ فِي الصُّوْرِ فَصَعِقَ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ إِلَّا مَنْ شَاءَ اللهُ فَلَا أَنْسَابَ بَيْنَهُمْ عِنْدَ ذَلِكَ وَلَا يَتَسَاءَلُوْنَ ثُمَّ فِي النَّفْخَةِ الآخِرَةِ (أَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلٰى بَعْضٍ يَّتَسَآءَلُوْنَ)وَأَمَّا قَوْلُهُ (مَا كُنَّا مُشْرِكِيْنَ وَلَا يَكْتُمُوْنَ اللهَ) حَدِيْثًا فَإِنَّ اللهَ يَغْفِرُ لِأَهْلِ الإِخْلَاصِ ذُنُوْبَهُمْ وَقَالَ الْمُشْرِكُوْنَ تَعَالَوْا نَقُوْلُ لَمْ نَكُنْ مُشْرِكِيْنَ فَخُتِمَ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ فَتَنْطِقُ أَيْدِيْهِمْ فَعِنْدَ ذَلِكَ عُرِفَ أَنَّ اللهَ لَا يُكْتَمُ حَدِيْثًا وَعِنْدَهُ (يَوَدُّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا) الْآيَةَ وَ(خَلَقَ الْأَرْضَ فِيْ يَوْمَيْنِ ثُمَّ خَلَقَ السَّمَآءَ ثُمَّ اسْتَوٰى إِلَى السَّمَآءِ فَسَوَّاهُنَّ فِيْ يَوْمَيْنِ اٰخَرَيْنِ ثُمَّ دَحَا الْأَرْضَ) وَدَحْوُهَا أَنْ أَخْرَجَ مِنْهَا الْمَاءَ وَالْمَرْعَى وَخَلَقَ الْجِبَالَ وَالْجِمَالَ وَالآكَامَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِيْ يَوْمَيْنِ آخَرَيْنِ فَذَلِكَ قَوْلُهُ (دَحَاهَا) وَقَوْلُهُ (خَلَقَ الْأَرْضَ فِيْ يَوْمَيْنِ) فَجُعِلَتْ الْأَرْضُ وَمَا فِيْهَا مِنْ شَيْءٍ فِيْ أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ وَخُلِقَتْ السَّمَوَاتُ فِيْ يَوْمَيْنِ (وَكَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا) سَمَّى نَفْسَهُ ذَلِكَ وَذَلِكَ قَوْلُهُ أَيْ لَمْ يَزَلْ كَذَلِكَ فَإِنَّ اللهَ لَمْ يُرِدْ شَيْئًا إِلَّا أَصَابَ بِهِ الَّذِيْ أَرَادَ فَلَا يَخْتَلِفْ عَلَيْكَ الْقُرْآنُ فَإِنَّ كُلاًّ مِنْ عِنْدِ اللهِ قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ حَدَّثَنِيْ يُوْسُفُ بْنُ عَدِيٍّ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَمْرٍو عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِيْ أُنَيْسَةَ عَنِ الْمِنْهَالِ بِهَذَا.

وَقَالَ مُجَاهِدٌ لَهُمْ أَجْرٌ غَيْرُ مَمْنُوْنٍ مَحْسُوْبٍ أَقْوَاتَهَا أَرْزَاقَهَا فِيْ كُلِّ سَمَاءٍ أَمْرَهَا مِمَّا أَمَرَ بِهِ نَحِسَاتٍ مَشَائِيْمَ وَقَيَّضْنَا لَهُمْ قُرَنَاءَ قَرَنَّاهُمْ بِهِمْ تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمْ الْمَلَائِكَةُ عِنْدَ الْمَوْتِ اهْتَزَّتْ بِالنَّبَاتِ وَرَبَتْ ارْتَفَعَتْ مِنْ أَكْمَامِهَا حِيْنَ تَطْلُعُ لَيَقُوْلَنَّ هَذَا لِيْ أَيْ بِعَمَلِيْ أَنَا مَحْقُوْقٌ بِهَذَا وَقَالَ غَيْرُهُ سَوَاءً لِلسَّائِلِيْنَ قَدَّرَهَا سَوَاءً فَهَدَيْنَاهُمْ دَلَلْنَاهُمْ عَلَى الْخَيْرِ وَالشَّرِّ كَقَوْلِهِ وَهَدَيْنَاهُ النَّجْدَيْنِ وَكَقَوْلِهِ هَدَيْنَاهُ السَّبِيْلَ وَالْهُدَى الَّذِيْ هُوَ الإِرْشَادُ بِمَنْزِلَةِ أَصْعَدْنَاهُ وَمِنْ ذَلِكَ قَوْلُهُ أُوْلَئِكَ الَّذِيْنَ هَدَى اللهُ فَبِهُدَاهُمْ اقْتَدِهْ يُوْزَعُوْنَ يُكَفُّوْنَ مِنْ أَكْمَامِهَا قِشْرُ الْكُفُرَّى هِيَ الْكُمُّ وَقَالَ غَيْرُهُ وَيُقَالُ لِلْعِنَبِ إِذَا خَرَجَ أَيْضًا كَافُوْرٌ وَكُفُرَّى وَلِيٌّ حَمِيْمٌ الْقَرِيْبُ مِنْ مَحِيْصٍ حَاصَ عَنْهُ أَيْ حَادَ مِرْيَةٍ وَمُرْيَةٌ وَاحِدٌ أَيْ امْتِرَاءٌ وَقَالَ مُجَاهِدٌ اعْمَلُوْا مَا شِئْتُمْ هِيَ وَعِيْدٌ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ ادْفَعْ بِالَّتِيْ هِيَ أَحْسَنُ الصَّبْرُ عِنْدَ الْغَضَبِ وَالْعَفْوُ عِنْدَ الإِسَاءَةِ فَإِذَا فَعَلُوْهُ عَصَمَهُمْ اللهُ وَخَضَعَ لَهُمْ عَدُوُّهُمْ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيْمٌ.

তাউস (রহ.)....ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন, ائْتِيَا طَوْعًاأعطيا অর্থাৎ তোমরা উভয় আস; তারা উভয়ে বলল, أَتَيْنَا طَآئِعِيْنَ অর্থাৎ আমরা এলাম। মিনহাল (রহ.) সা’ঈদ (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, জনৈক ব্যক্তি ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-কে প্রশ্ন করল, আমি কুরআনে এমন বিষয় পাচ্ছি, যা আমার কাছে পরস্পর বিরোধী মনে হচ্ছে। আল্লাহ্ বলেছেন, যে দিন (যে দিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে) সেদিন পরস্পরের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অপরের খোঁজ খবর নেবে না।’’ আবার বলেছেন, ’’তারা একে অপরের সামনা-সামনি হয়ে খোঁজ খবর নেবে।’’ ’’তারা আল্লাহ্ থেকে কোন কথাই গোপন করতে পারবে না।’’ (তারা বলবে) ’’আল্লাহ আমাদের রব! আমরা মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না।’’ এতে বোঝা যাচ্ছে যে, তারা আল্লাহ্ থেকে নিজেদের মুশরিক হবার ব্যাপারটিকে লুকিয়ে রাখবে। (তোমাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিন), না আকাশ সৃষ্টি? তিনিই তা নির্মাণ করেছেন....এরপর পৃথিবীকে করেছেন সুবিস্তৃত’’ পর্যন্ত। এখানে আকাশকে যমীনের পূর্বে সৃষ্টি করার কথা বলেছেন; কিন্তু অন্য এক স্থানে বর্ণিত আছে যে, ’’তোমরা কি তাঁকে স্বীকার করবেই যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দুই দিনে, আমরা এলাম অনুগত হয়ে।’’ এখানে যমীনকে আকাশের পূর্বে সৃষ্টির কথা উল্লেখ রয়েছে।

আল্লাহ্ বলেছেনঃ (وَكَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا)(عَزِيْزًا حَكِيْمًا)(سَمِيْعًامبَصِيْرًا) উপরোক্ত আয়াতসমূহের প্রেক্ষাপটে বোঝা যাচ্ছে যে, উপরোক্ত গুণাবলী প্রথমে আল্লাহর মধ্যে ছিল; কিন্তু এখন নেই। (জনৈক ব্যক্তির এসব প্রশ্ন শুনার পর) ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বললেন, ’’যে দিন পরস্পরের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন থাকবে না।’’

এ আয়াতের সম্পর্ক হল প্রথমবার শিঙ্গায় ফুঁক দেয়ার সঙ্গে। কেননা, ইরশাদ হয়েছে যে, এরপর শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে। ফলে যাদেরকে আল্লাহ্ ইচ্ছে করেন, তারা বাদে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সকলে মূর্ছিত হয়ে পড়বে। এ সময় পরস্পরের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অন্যের খোঁজ খবর নেবে না। তারপর শেষবারের মত শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার পর তারা একে অপরের সামনাসামনি হয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

দ্বিতীয় প্রশ্ন সম্পর্কে এক আয়াতে আছে, ’’তারা আল্লাহ্ থেকে কোন কথাই গোপন করতে পারে না।’’ অন্য আয়াতে আছে ’’মুশরিকগণ বলবে যে, আমরা তো মুশরিক ছিলাম না।’’ এর সমাধান হচ্ছে এই যে, কিয়ামতের দিন প্রথমে আল্লাহ্ রাববুল আলামীন মুখ্লিস লোকদের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেবেন। এ দেখে মুশরিকরা বলবে, আস! আমরাও বলব, (হে আল্লাহ্! আমরাও তো মুশ্রিক ছিলাম না। তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাদের মুখে মোহর লাগিয়ে দেবেন। তখন তাদের হাত কথা বলবে। এ সময় প্রকাশ পাবে যে, ’’তাদের কোন কথাই আল্লাহ্ থেকে গোপন রাখা যাবে না।’’ এবং এ সময়ই কাফিরগণ আকাঙ্ক্ষা করবে (.....হায়! যদি তারা মাটির সঙ্গে মিশে যেত)। তৃতীয় প্রশ্ন সম্বন্ধে সমাধান হচ্ছে এই যে, প্রথমে আল্লাহ্ তা’আলা দু’দিনে যমীন সৃষ্টি করেছেন। এরপর আসমান সৃষ্টি করেন। তারপর তিনি আকাশের প্রতি মনোযোগ দেন এবং তাকে বিন্যস্ত করেন দু’দিনে। তারপর তিনি যমীনকে বিছিয়ে দিয়েছেন। যমীনকে বিছিয়ে দেয়ার অর্থ হচ্ছে, এর মাঝে পানি ও চারণভূমির বন্দোবস্ত করা, পর্বত-টিলা, উট এবং আসমান ও মধ্যবর্তী সমস্ত কিছু সৃষ্টি করা। এ সবকিছুও তিনি আরো দু’দিনে সৃষ্টি করেন। আল্লাহর বাণীঃ دَحَاهَا -এর মধ্যে এ কথাই বর্ণনা করা হয়েছে : خَلَقَ الْأَرْضَ فِيْ يَوْمَيْنِ ’এবং তিনি দু’দিনে যমীন সৃষ্টি করেছেন’’ এ কথাও ঠিক; তবে যমীন এবং যত কিছু যমীনের মধ্যে বিদ্যমান আছে এসব তিনি চার দিনে সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করা হয়েছে দু’দিনে।

وَكَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا সম্বন্ধে উত্তর এই যে, আল্লাহ্ রাববুল আলামীন নিজেই এ সমস্ত বিশেষণযুক্ত নামের দ্বারা নিজের নামকরণ করেছেন। উল্লিখিত গুণবাচক নামের অর্থ হচ্ছে এই যে, আল্লাহ্ রাববুল ’আলামীন সর্বদাই এই গুণে গুণান্বিত থাকবেন। কারণ, আল্লাহ্ রাববুল আলামীন যখন কারো প্রতি কিছু করার ইচ্ছে করেন, তখন তিনি তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী করেই থাকেন, সুতরাং কুরআনের আলোচ্য বিষয়ের একটিকে অপরটির বিপরীত সাব্যস্ত করবে না। কেননা, এগুলো সব আল্লাহর পক্ষ হতে অবতীর্ণ হয়েছে। মুজাহিদ (রহ.) বলেছেনممنون অর্থ গণনাকৃত। أَقْوَاتَهَا তাদের জীবিকা। فِيْ كُلِّ سَمَآءٍ أَمْرَهَا যার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। نَحِسَاتٍ শুভ। وَقَيَّضْنَا لَهُمْ قُرَنَآءَআমি তাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম তাদের সহচর। تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمْ الْمَلَآئِكَةُতাদের নিকটবর্তী হয় মালায়িকাহ। আর এ সময়টি হচ্ছে عِنْدَ الْمَوْتِমৃত্যুর সময়। اهْتَزَّتْফলে ফুলে আন্দোলিত হয়ে উঠে। وَرَبَتْ বেড়ে যায় এবং স্ফীত হয়ে উঠে। মুজাহিদ ব্যতীত অন্যেরা বলেছেন, مِنْ أَكْمَامِهَاযখন তা আবরণ হতে বিকশিত হয়। لَيَقُوْلَنَّهَذَالِيْ আমলের ভিত্তিতে এ সমস্ত অনুগ্রহের হকদার আমিই। سَوَآءً لِلسَّآئِلِيْنَআমি সমভাবে নির্ধারণ করেছি। فَهَدَيْنَاهُمْ অর্থাৎ আমি তাদেরকে ভাল-মন্দ সম্বন্ধে পথ বলে দিয়েছি। যেমন, আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেন, ’’এবং আমি তাকে দু’টি পথই দেখিয়েছি।’’ অন্যত্র বর্ণিত আছে যে, ’’আমি তাকে ভাল পথের নির্দেশ দিয়েছি।’’ الْهُدٰىপথ দেখানো এবং গন্তব্য স্থান পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেয়া। এ অর্থেই কুরআনে বর্ণিত আছে যে, ’’তাদেরই আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করেন। يُوْزَعُوْنَ তাদের আটক রাখা হবে। مِنْ أَكْمَامِهَا অর্থ বাকলের উপরের আবরণ। এটাকেكم ও বলা হয়। وَلِيٌّحَمِيْمٌ নিকটতম বন্ধু। مِنْ مَحِيْصٍ শব্দটি حَاصَعَنْهُ থেকে নির্গত হয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে, সে তার থেকে পলায়ন করেছে। مِرْيَةٌ এবং مُرْيَةٌ একার্থবোধক শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে সন্দেহ। মুজাহিদ বলেছেন, اعْمَلُوْامَاشِئْتُمْ (তোমাদের যা ইচ্ছে কর) বাক্যটি মূলত সতর্কবাণী হিসেবে এখানে ব্যবহৃত হয়েছে। ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, بِالَّتِيْ هِيَأَحْسَنُ -এর মর্মার্থ হচ্ছে, রাগের মুহূর্তে ধৈর্যধারণ করা এবং অন্যায় ব্যবহারকে ক্ষমা করে দেয়া। যখন কোন মানুষ ক্ষমা ও ধৈর্যধারণ করে তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাকে হেফাজত করেন এবং তার শত্রুকে তার সামনে নত করে দেন। ফলে সে তার অন্তরঙ্গ বন্ধুতে পরিণত হয়ে যায়।

(وَمَا كُنْتُمْ تَسْتَتِرُوْنَ أَنْ يَّشْهَدَ عَلَيْكُمْ سَمْعُكُمْ وَلَآ أَبْصَارُكُمْ وَلَا جُلُوْدُكُمْ وَلٰكِنْ ظَنَنْتُمْ أَنَّ اللهَ لَا يَعْلَمُ كَثِيْرًا مِّمَّا تَعْمَلُوْنَ)

তোমাদের কান, তোমাদের চোখ ও তোমাদের চামড়া তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে না- এ ধারণার বশবর্তী হয়ে তোমরা তাদের কাছে কিছু গোপন করতে না। উপরন্তু তোমরা মনে করতে যে, তোমরা যা কর তার অনেক কিছুই আল্লাহ জানেন না। (সূরাহ হা-মীম আস্-সিজদা ৪১/২২)


৪৮১৬. ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। আল্লাহর বাণীঃ ’’তোমাদের কর্ণ তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে- এ থেকে তোমরা কখনো নিজেদের লুকাতে পারবে না।’’ আয়াত সম্পর্কে বলেন, কুরাইশ গোত্রের দু’ ব্যক্তি ছিল, যাদের জামাতা ছিল বানী সাকীফ গোত্রের অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) দু’ ব্যক্তি ছিল বানী সাকীফ গোত্রের আর তাদের জামাতা ছিল কুরাইশ গোত্রের। তারা সকলেই একটি ঘরে ছিল। তারা পরস্পর বলল, তোমার কী ধারণা, আল্লাহ্ কি আমাদের কথা শুনতে পাচ্ছেন? একজন বলল, তিনি আমাদের কিছু কথা শুনছেন। এরপর দ্বিতীয় ব্যক্তি বলল, তিনি যদি আমাদের কিছু কথা শুনতে পান, তাহলে সব কথাও শুনতে পাবেন। তখন নাযিল হলঃ ’’তোমাদের কান ও তোমাদের চোখ তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে, এ থেকে তোমরা কখনো নিজেদের লুকাতে পারবে না।.....আয়াতের শেষ পর্যন্ত। [৪৮১৭, ৭৫২১; মুসলিম ৫০/২৭৭৫, আহমাদ ৩৮৭৫] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৪৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৪৫৩)।

بَاب قَوْلُهُ :

الصَّلْتُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ عَنْ رَوْحِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ أَبِيْ مَعْمَرٍ عَنْ ابْنِ مَسْعُوْدٍ (وَمَا كُنْتُمْ تَسْتَتِرُوْنَ أَنْ يَّشْهَدَ عَلَيْكُمْ سَمْعُكُمْ) وَلَا أَبْصَارُكُمْ الْآيَةَ قَالَ كَانَ رَجُلَانِ مِنْ قُرَيْشٍ وَخَتَنٌ لَهُمَا مِنْ ثَقِيْفَ أَوْ رَجُلَانِ مِنْ ثَقِيْفَ وَخَتَنٌ لَهُمَا مِنْ قُرَيْشٍ فِيْ بَيْتٍ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ أَتُرَوْنَ أَنَّ اللهَ يَسْمَعُ حَدِيْثَنَا قَالَ بَعْضُهُمْ يَسْمَعُ بَعْضَهُ وَقَالَ بَعْضُهُمْ لَئِنْ كَانَ يَسْمَعُ بَعْضَهُ لَقَدْ يَسْمَعُ كُلَّهُ فَأُنْزِلَتْ (وَمَا كُنْتُمْ تَسْتَتِرُوْنَ أَنْ يَّشْهَدَ عَلَيْكُمْ سَمْعُكُمْ وَلَآ أَبْصَارُكُمْ).

الصلت بن محمد حدثنا يزيد بن زريع عن روح بن القاسم عن منصور عن مجاهد عن ابي معمر عن ابن مسعود وما كنتم تستترون ان يشهد عليكم سمعكم ولا ابصاركم الاية قال كان رجلان من قريش وختن لهما من ثقيف او رجلان من ثقيف وختن لهما من قريش في بيت فقال بعضهم لبعض اترون ان الله يسمع حديثنا قال بعضهم يسمع بعضه وقال بعضهم لىن كان يسمع بعضه لقد يسمع كله فانزلت وما كنتم تستترون ان يشهد عليكم سمعكم ولا ابصاركم


Narrated Ibn Mas`ud:

(regarding) the Verse: 'And you have not been screening against yourself lest your ears, and your eyes and your skins should testify against you..' (41.22) While two persons from Quraish and their brotherin- law from Thaqif (or two persons from Thaqif and their brother-in-law from Quraish) were in a house, they said to each other, "Do you think that Allah hears our talks?" Some said, "He hears a portion thereof" Others said, "If He can hear a portion of it, He can hear all of it." Then the following Verse was revealed: 'And you have not been screening against yourself lest your ears, and your eyes and your skins should testify against you...' (41.22)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬৫/ কুরআন মাজীদের তাফসীর (كتاب التفسير) 65/ Prophetic Commentary on the Qur'an (Tafseer of the Prophet (pbuh)