পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
فِيْ شَوَّالٍ سَنَةَ ثَمَانٍ قَالَهُ مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ
মূসা ইবনু ‘উকবাহ (রাঃ) বলেছেন এ যুদ্ধ অষ্টম হিজরীর শাওয়াল মাসে সংঘটিত হয়েছে।
৪৩২৪. উম্মু সালামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আমার কাছে এক হিজড়া ব্যক্তি বসা ছিল, এমন সময়ে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। আমি শুনলাম যে, সে (হিজড়া ব্যক্তি) ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমাইয়া (রাঃ)-কে বলছে, হে ‘আবদুল্লাহ! কী বল, আগামীকাল যদি আল্লাহ তোমাদেরকে তায়েফের উপর বিজয় দান করেন তা হলে গাইলানের কন্যাকে নিয়ে নিও। কেননা সে (এতই কোমলদেহী), সামনের দিকে আসার সময়ে তার পিঠে চারটি ভাঁজ পড়ে আবার পিঠ ফিরালে সেখানে আটটি ভাঁজ পড়ে। [উম্মু সালামাহ (রাঃ) বলেন] তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এদেরকে তোমাদের কাছে ঢুকতে দিও না। [1] ইবনু উয়াইনাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, ইবনু জুরাইজ (রাঃ) বলেছেন, হিজড়ার নাম ছিল হীত। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৮৫)
হিশাম (রহ.) থেকে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি এ হাদীসে এতটুকু বৃদ্ধি করেছেন যে, সেদিন তিনি [নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তায়িফ অবরোধ করা অবস্থায় ছিলেন। [৫২৩৫, ৫৮৮৭; মুসলিম ৩৯/১৩, হাঃ ২১৮০, আহমাদ ২৬৫৫২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৮৬)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
الْحُمَيْدِيُّ سَمِعَ سُفْيَانَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ أُمِّهَا أُمِّ سَلَمَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا دَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدِيْ مُخَنَّثٌ فَسَمِعْتُهُ يَقُوْلُ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ أُمَيَّةَ يَا عَبْدَ اللهِ أَرَأَيْتَ إِنْ فَتَحَ اللهُ عَلَيْكُمْ الطَّائِفَ غَدًا فَعَلَيْكَ بِابْنَةِ غَيْلَانَ فَإِنَّهَا تُقْبِلُ بِأَرْبَعٍ وَتُدْبِرُ بِثَمَانٍ وَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَا يَدْخُلَنَّ هَؤُلَاءِ عَلَيْكُنَّ قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ وَقَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ الْمُخَنَّثُ هِيْتٌ حَدَّثَنَا مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ بِهَذَا وَزَادَ وَهُوَ مُحَاصِرُ الطَّائِفِ يَوْمَئِذٍ.
Narrated Um Salama:
The Prophet (ﷺ) came to me while there was an effeminate man sitting with me, and I heard him (i.e. the effeminate man) saying to `Abdullah bin Abi Umaiya, "O `Abdullah! See if Allah should make you conquer Ta'if tomorrow, then take the daughter of Ghailan (in marriage) as (she is so beautiful and fat that) she shows four folds of flesh when facing you, and eight when she turns her back." The Prophet (ﷺ) then said, "These (effeminate men) should never enter upon you (O women!)." Ibn Juraij said, "That effeminate man was called Hit."
Narrated Hisham:
The above narration and added extra, that at that time, the Prophet, was besieging Taif.
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩২৫. ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়িফ অবরোধ করলেন। কিন্তু তাদের নিকট হতে কিছুই হাসিল করতে পারেননি। তাই তিনি বললেন, ইনশাআল্লাহ আমরা (অবরোধ উঠিয়ে মদিনার দিকে) ফিরে যাব। কথাটি সাহাবীদের মনে ভারী লাগল। তাঁরা বললেন, আমরা চলে যাব, তায়িফ বিজয় করব না? বর্ণনাকারী একবার কাফিলুন শব্দের স্থলে নাকফুলো (অর্থাৎ আমরা ‘যুদ্ধবিহীন ফিরে যাব’) বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে সকালে গিয়ে লড়াই কর। তাঁরা (পরদিন) সকালে লড়াই করতে গেলেন, এতে তাঁদের অনেকেই আহত হলেন। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইনশাআল্লাহ আমরা আগামীকাল ফিরে চলে যাব। তখন সাহাবাদের কাছে কথাটি মনঃপূত হল। এতে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন। বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান (রহ.) একবার বর্ণনা করেছেন যে, তিনি মুচকি হাসি হেসেছেন। হুমাইদী (রহ.) বলেন, সুফ্ইয়ান আমাদেরকে এ হাদীসের পূর্ণ সূত্রটিতে ‘খবর’ শব্দটি ব্যবহার করে বর্ণনা করেছেন। [৬০৮৬, ৭৪৮০; মুসলিম ৩২/২৯, হাঃ ১৭৭৮, আহমাদ ৪৫৮৮] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৮৭)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ أَبِي الْعَبَّاسِ الشَّاعِرِ الْأَعْمَى عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ لَمَّا حَاصَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الطَّائِفَ فَلَمْ يَنَلْ مِنْهُمْ شَيْئًا قَالَ إِنَّا قَافِلُوْنَ إِنْ شَاءَ اللهُ فَثَقُلَ عَلَيْهِمْ وَقَالُوْا نَذْهَبُ وَلَا نَفْتَحُهُ وَقَالَ مَرَّةً نَقْفُلُ فَقَالَ اغْدُوْا عَلَى الْقِتَالِ فَغَدَوْا فَأَصَابَهُمْ جِرَاحٌ فَقَالَ إِنَّا قَافِلُوْنَ غَدًا إِنْ شَاءَ اللهُ فَأَعْجَبَهُمْ فَضَحِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً فَتَبَسَّمَ قَالَ قَالَ الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الْخَبَرَ كُلَّهُ.
Narrated `Abdullah bin `Amr:
When Allah's Messenger (ﷺ) besieged Taif and could not conquer its people, he said, "We will return (to Medina) If Allah wills." That distressed the Companions (of the Prophet (ﷺ) and they said, "Shall we go away without conquering it (i.e. the Fort of Taif)?" Once the Prophet (ﷺ) said, "Let us return." Then the Prophet said (to them), "Fight tomorrow." They fought and (many of them) got wounded, whereupon the Prophet (ﷺ) said, "We will return (to Medina) tomorrow if Allah wills." That delighted them, whereupon the Prophet (ﷺ) smiled. The sub-narrator, Sufyan said once, "(The Prophet) smiled."
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩২৬-৪৩২৭. আবূ ‘উসমান [নাহদী (রহ.)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হাদীসটি শুনেছি সা‘দ থেকে, যিনি আল্লাহর পথে গিয়ে সর্বপ্রথম তীর নিক্ষেপ করেছিলেন এবং আবূ বকর (রাঃ) থেকেও শুনেছি যিনি (তায়িফ অবরোধকালে) সেখানকার স্থানীয় কয়েকজনসহ তায়িফের পাঁচিলের উপর চড়ে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসেছিলেন। তাঁরা দু’জনই বলেছেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি জেনে শুনে অন্যকে নিজের পিতা বলে দাবী করে, তার জন্য জান্নাত হারাম।
হিশাম (রহ.) বলেন, মা‘মার (রহ.) আমাদের কাছে ‘আসিম-আবুল ‘আলিয়া (রহ.) অথবা আবূ ‘উসমান নাহদী (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আমি সা‘দ এবং আবূ বকর (রাঃ)-এর মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীসটি শুনেছি। আসিম (রহ.) বলেন, আমি (আবুল ‘আলিয়া অথবা আবূ ‘উসমান) (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নিশ্চয় আপনাকে হাদীসটি এমন দু’জন রাবী বর্ণনা করেছেন যাঁদেরকে আপনি আপনার নিশ্চয়তার জন্য যথেষ্ট মনে করেন। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই, কেননা তাদের একজন হলেন সেই ব্যক্তি যিনি আল্লাহর রাস্তায় সর্বপ্রথম তীর নিক্ষেপ করেছিলেন। আর অপরজন হলেন তায়েফ থেকে (প্রাচীর টপকে) এসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাক্ষাৎকারী তেইশ জনের একজন। [৬৭৬৬, ৬৭৬৭] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৮৮)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَاصِمٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا عُثْمَانَ قَالَ سَمِعْتُ سَعْدًا وَهُوَ أَوَّلُ مَنْ رَمَى بِسَهْمٍ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَأَبَا بَكْرَةَ وَكَانَ تَسَوَّرَ حِصْنَ الطَّائِفِ فِيْ أُنَاسٍ فَجَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَا سَمِعْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ مَنْ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيْهِ وَهُوَ يَعْلَمُ فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ.
وَقَالَ هِشَامٌ وَأَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ أَوْ أَبِيْ عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ قَالَ سَمِعْتُ سَعْدًا وَأَبَا بَكْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ عَاصِمٌ قُلْتُ لَقَدْ شَهِدَ عِنْدَكَ رَجُلَانِ حَسْبُكَ بِهِمَا قَالَ أَجَلْ أَمَّا أَحَدُهُمَا فَأَوَّلُ مَنْ رَمَى بِسَهْمٍ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَأَمَّا الْآخَرُ فَنَزَلَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثَالِثَ ثَلَاثَةٍ وَعِشْرِيْنَ مِنْ الطَّائِفِ.
Narrated Abu `Uthman:
I heard from Sa`d, the first man who has thrown an arrow in Allah's Cause, and from Abu Bakra who jumped over the wall of the Ta'if Fort along with a few persons and came to the Prophet. They both said, "We heard the Prophet (ﷺ) saying, " If somebody claims to be the son of somebody other than his father knowingly, he will be denied Paradise (i.e. he will not enter Paradise).' " Narrated Ma`mar from `Asim from Abu Al-`Aliya or Abu `Uthman An-Nahdi who said. "I heard Sa`d and Abu Bakra narrating from the Prophet." `Asim said, "I said (to him), 'Very trustworthy persons have narrated to you.' He said, 'Yes, one of them was the first to throw an arrow in Allah's Cause and the other came to the Prophet (ﷺ) in a group of thirty-three persons from Ta'if.'
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩২৮. আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী জিরানা নামক স্থানে অবস্থান করছিলাম। তখন বিলাল (রাঃ) তাঁর কাছে ছিলেন। এমন সময়ে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এক বেদুঈন এসে বলল, আপনি আমাকে যে ওয়াদা দিয়েছিলেন তা পূরণ করবেন না? তিনি তাঁকে বললেন, সুসংবাদ গ্রহণ কর। সে বলল, সুসংবাদ গ্রহণ কর কথাটি তো আপনি আমাকে অনেকবারই বলেছেন। তখন তিনি ক্রোধ ভরে আবূ মূসা ও বিলাল (রাঃ)-এর দিকে ফিরে বললেন, লোকটি সুসংবাদ ফিরিয়ে দিয়েছে। তোমরা দু’জন তা গ্রহণ কর। তাঁরা উভয়ে বললেন, আমরা তা গ্রহণ করলাম। এরপর তিনি পানির একটি পাত্র আনতে বললেন। তিনি এর মধ্যে নিজের উভয় হাত ও মুখমণ্ডল ধুয়ে কুল্লি করলেন। তারপর বললেন, তোমরা উভয়ে এ থেকে পান করো এবং নিজেদের মুখমণ্ডল ও বুকে ছিটিয়ে দাও। আর সুসংবাদ গ্রহণ কর। তাঁরা উভয়ে পাত্রটি তুলে নিয়ে নির্দেশ মত কাজ করলেন। এমন সময় উম্মু সালামাহ (রাঃ) পর্দার আড়াল থেকে ডেকে বললেন, তোমাদের মায়ের জন্যও অতিরিক্ত কিছু রাখ। কাজেই তাঁরা এ থেকে অতিরিক্ত কিছু তাঁর [উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর] জন্য রাখলেন। [১৮৮] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৮৯)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنْتُ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ نَازِلٌ بِالْجِعْرَانَةِ بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِيْنَةِ وَمَعَهُ بِلَالٌ فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ أَلَا تُنْجِزُ لِيْ مَا وَعَدْتَنِيْ فَقَالَ لَهُ أَبْشِرْ فَقَالَ قَدْ أَكْثَرْتَ عَلَيَّ مِنْ أَبْشِرْ فَأَقْبَلَ عَلَى أَبِيْ مُوْسَى وَبِلَالٍ كَهَيْئَةِ الْغَضْبَانِ فَقَالَ رَدَّ الْبُشْرَى فَاقْبَلَا أَنْتُمَا قَالَا قَبِلْنَا ثُمَّ دَعَا بِقَدَحٍ فِيْهِ مَاءٌ فَغَسَلَ يَدَيْهِ وَوَجْهَهُ فِيْهِ وَمَجَّ فِيْهِ ثُمَّ قَالَ اشْرَبَا مِنْهُ وَأَفْرِغَا عَلَى وُجُوْهِكُمَا وَنُحُوْرِكُمَا وَأَبْشِرَا فَأَخَذَا الْقَدَحَ فَفَعَلَا فَنَادَتْ أُمُّ سَلَمَةَ مِنْ وَرَاءِ السِّتْرِ أَنْ أَفْضِلَا لِأُمِّكُمَا فَأَفْضَلَا لَهَا مِنْهُ طَائِفَةً.
Narrated Abu Burda:
Abu Musa said, "I was with the Prophet (ﷺ) when he was encamping at Al-Jarana (a place) between Mecca and Medina and Bilal was with him. A bedouin came to the Prophet (ﷺ) and said, "Won't you fulfill what you have promised me?" The Prophet (ﷺ) said, 'Rejoice (at what I will do for you).' The bedouin said, "(You have said to me) rejoice too often." Then the Prophet (ﷺ) turned to me (i.e. Abu Musa) and Bilal in an angry mood and said, 'The bedouin has refused the good tidings, so you both accept them.' Bilal and I said, 'We accept them.' Then the Prophet (ﷺ) asked for a drinking bowl containing water and washed his hands and face in it, and then took a mouthful of water and threw it therein saying (to us), "Drink (some of) it and pour (some) over your faces and chests and be happy at the good tidings." So they both took the drinking bowl and did as instructed. Um Salama called from behind a screen, "Keep something (of the water for your mother." So they left some of it for her.
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩২৯. সাফওয়ান ইবনু ইয়া‘লা ইবনু উমাইয়া (রহ.) হতে বর্ণিত যে, ইয়া‘লা (রাঃ) বলতেন যে, আহা! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর ওয়াহী অবতীর্ণ হওয়ার মুহূর্তে যদি তাঁকে দেখতে পেতাম। ইয়া‘লা (রাঃ) বলেন, ইতোমধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম জি’রানা নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। তাঁর উপর একটি কাপড় টানিয়ে ছায়া করে দেয়া হয়েছিল। আর সেখানে তাঁর সঙ্গে তাঁর কতিপয় সাহাবীও ছিলেন। এমন সময় তাঁর কাছে এক বেদুঈন আসল। তার গায়ে ছিল একটি খুশবু মাখানো জোববা। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে আপনার অভিমত কী যে গায়ে খুশবু মাখানো জোববা পরিধান ক’রে ‘উমরাহ্ আদায়ের জন্য ইহরাম বেঁধেছে? (এমন সময়) ‘উমার (রাঃ) হাত দিয়ে ইশারা করে ইয়া‘লা (রাঃ)-কে আসতে বললেন। ইয়া‘লা (রাঃ) এলে ‘উমার (রাঃ) তাঁর মাথাটি (কাপড়ের ছায়ায়) ঢুকিয়ে দিলেন। [তখন তিনি ইয়া‘লা (রাঃ) দেখতে পেলেন যে] নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চেহারা লাল বর্ণ হয়ে রয়েছে। শ্বাস-প্রশ্বাস জোরে চলছে। এ অবস্থা কিছুক্ষণ পর্যন্ত ছিল, তারপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এল। তখন তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সে লোকটি কোথায়, কিছুক্ষণ আগে যে আমাকে ‘‘উমরাহর বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিল। লোকটিকে খুঁজে আনা হলে তিনি বললেনঃ তোমার গায়ে যে খুশবু রয়েছে তা তুমি তিনবার ধুয়ে ফেল এবং জোববাটি খুলে ফেল। তারপর হাজ্জ পালনে যা কর, ‘উমরাহ্তেও সেগুলোই কর। [১৫৩৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৯০)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَطَاءٌ أَنَّ صَفْوَانَ بْنَ يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ أَخْبَرَهُ أَنَّ يَعْلَى كَانَ يَقُوْلُ لَيْتَنِيْ أَرَى رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ يُنْزَلُ عَلَيْهِ قَالَ فَبَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْجِعْرَانَةِ وَعَلَيْهِ ثَوْبٌ قَدْ أُظِلَّ بِهِ مَعَهُ فِيْهِ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ إِذْ جَاءَهُ أَعْرَابِيٌّ عَلَيْهِ جُبَّةٌ مُتَضَمِّخٌ بِطِيْبٍ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ كَيْفَ تَرَى فِيْ رَجُلٍ أَحْرَمَ بِعُمْرَةٍ فِيْ جُبَّةٍ بَعْدَمَا تَضَمَّخَ بِالطِّيْبِ فَأَشَارَ عُمَرُ إِلَى يَعْلَى بِيَدِهِ أَنْ تَعَالَ فَجَاءَ يَعْلَى فَأَدْخَلَ رَأْسَهُ فَإِذَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُحْمَرُّ الْوَجْهِ يَغِطُّ كَذَلِكَ سَاعَةً ثُمَّ سُرِّيَ عَنْهُ فَقَالَ أَيْنَ الَّذِيْ يَسْأَلُنِيْ عَنِ الْعُمْرَةِ آنِفًا فَالْتُمِسَ الرَّجُلُ فَأُتِيَ بِهِ فَقَالَ أَمَّا الطِّيْبُ الَّذِيْ بِكَ فَاغْسِلْهُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ وَأَمَّا الْجُبَّةُ فَانْزِعْهَا ثُمَّ اصْنَعْ فِيْ عُمْرَتِكَ كَمَا تَصْنَعُ فِيْ حَجِّكَ.
Narrated Safwan bin Ya`la bin Umaiya:
Ya`la used to say, "I wish I could see Allah's Messenger (ﷺ) at the time when he is being inspired divinely." Ya`la added "While the Prophet (ﷺ) was at Al-Ja'rana, shaded with a cloth sheet (in the form of a tent) and there were staying with him, some of his companions under it, suddenly there came to him a bedouin wearing a cloak and perfumed extravagantly. He said, "O Allah's Messenger (ﷺ) ! What is your opinion regarding a man who assumes the state of Ihram for `Umra wearing a cloak after applying perfume to his body?" `Umar signalled with his hand to Ya`la to come (near). Ya`la came and put his head (underneath that cloth sheet) and saw the Prophet (ﷺ) red-faced and when that state (of the Prophet (ﷺ) ) was over, he said, "Where is he who as already asked me about the `Umra?" The man was looked for and brought to the Prophet (ﷺ) The Prophet (ﷺ) said (to him), "As for the perfume you have applied to your body, wash it off your body) thrice, and take off your cloak, and then do in your `Umra the rites you do in your Hajj."
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩৩০. ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু ‘আসিম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুনাইনের দিবসে আল্লাহ যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গানীমাতের সম্পদ দান করলেন তখন তিনি ঐগুলো সেসব মানুষের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন যাদের হৃদয়কে ঈমানের উপর সুদৃঢ় করার প্রয়োজন তিনি অনুভব করেছিলেন। আর আনসারগণকে কিছুই দিলেন না। ফলে তাঁরা যেন নাখোশ হয়ে গেলেন। কেননা অন্যেরা যা পেয়েছে তাঁরা তা পাননি। অথবা তিনি বলেছেনঃ তাঁরা যেন দুঃখিত হয়ে গেলেন। কেননা অন্যোরা যা পেয়েছে তারা তা পাননি। কাজেই নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে সম্বোধন করে বললেন, হে আনসারগণ! আমি কি তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট পাইনি, অতঃপর আল্লাহ আমার দ্বারা তোমাদের হিদায়াত দান করেছেন? তোমরা ছিলে পরস্পর বিচ্ছিন্ন, অতঃপর আল্লাহ আমার মাধ্যমে তোমাদেরকে পরস্পরকে জুড়ে দিয়েছেন। তোমরা ছিলে দরিদ্র, অতঃপর আল্লাহ আমার মাধ্যমে তোমাদেরকে অভাবমুক্ত করেছেন। এভাবে যখনই তিনি কোন কথা বলেছেন তখন আনসারগণ জবাবে বলেছেন, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই আমাদের উপর অধিক ইহ্সানকারী। তিনি বললেনঃ আল্লাহর রাসূলের জবাব দিতে তোমাদেরকে বাধা দিচ্ছে কিসে? তাঁরা তখনও তিনি যা কিছু বলছেন তার উত্তরে বলে যাচ্ছেন, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই আমাদের উপর অধিক ইহ্সানকারী। তিনি বললেন, তোমরা ইচ্ছা করলে বলতে পার যে, আপনি আমাদের কাছে এমন এমন (সংকটময়) সময়ে এসেছিলেন কিন্তু তোমরা কি এ কথায় সন্তুষ্ট নও যে, অন্যান্য লোক বকরী ও উট নিয়ে ফিরে যাবে আর তোমরা তোমাদের বাড়ি ফিরে যাবে আল্লাহর নবীকে সঙ্গে নিয়ে। যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাকে হিজরত করানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত না থাকত তা হলে আমি আনসারদের মধ্যকারই একজন থাকতাম। যদি লোকজন কোন উপত্যকা ও গিরিপথ দিয়ে চলে তা হলে আমি আনসারদের উপত্যকা ও গিরিপথ দিয়েই চলব। আনসারগণ হল (নাববী) ভিতরের পোশাক আর অন্যান্য লোক হল উপরের পোশাক। আমার বিদায়ের পর অচিরেই তোমরা দেখতে পাবে অন্যদের অগ্রাধিকার। তখন ধৈর্য ধারণ করবে (দ্বীনের উপর টিকে থাকবে) যে পর্যন্ত না তোমরা হাউজে কাউসারে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ কর। [৭২৪৫; মুসলিম ১২/৪৬, হাঃ ১০৬১, আহমাদ ১৬৪৭০] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৯১)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ يَحْيَى عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيْمٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَاصِمٍ قَالَ لَمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَى رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ حُنَيْنٍ قَسَمَ فِي النَّاسِ فِي الْمُؤَلَّفَةِ قُلُوْبُهُمْ وَلَمْ يُعْطِ الْأَنْصَارَ شَيْئًا فَكَأَنَّهُمْ وَجَدُوْا إِذْ لَمْ يُصِبْهُمْ مَا أَصَابَ النَّاسَ فَخَطَبَهُمْ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ أَلَمْ أَجِدْكُمْ ضُلَّالًا فَهَدَاكُمْ اللهُ بِيْ وَكُنْتُمْ مُتَفَرِّقِيْنَ فَأَلَّفَكُمْ اللهُ بِيْ وَعَالَةً فَأَغْنَاكُمْ اللهُ بِيْ كُلَّمَا قَالَ شَيْئًا قَالُوا اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَمَنُّ قَالَ مَا يَمْنَعُكُمْ أَنْ تُجِيْبُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ كُلَّمَا قَالَ شَيْئًا قَالُوا اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَمَنُّ قَالَ لَوْ شِئْتُمْ قُلْتُمْ جِئْتَنَا كَذَا وَكَذَا أَتَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالشَّاةِ وَالْبَعِيْرِ وَتَذْهَبُوْنَ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى رِحَالِكُمْ لَوْلَا الْهِجْرَةُ لَكُنْتُ امْرًَا مِنَ الْأَنْصَارِ وَلَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا وَشِعْبًا لَسَلَكْتُ وَادِيَ الْأَنْصَارِ وَشِعْبَهَا الْأَنْصَارُ شِعَارٌ وَالنَّاسُ دِثَارٌ إِنَّكُمْ سَتَلْقَوْنَ بَعْدِيْ أُثْرَةً فَاصْبِرُوْا حَتَّى تَلْقَوْنِيْ عَلَى الْحَوْضِ.
Narrated `Abdullah bin Zaid bin `Asim:
When Allah gave to His Apostle the war booty on the day of Hunain, he distributed that booty amongst those whose hearts have been (recently) reconciled (to Islam), but did not give anything to the Ansar. So they seemed to have felt angry and sad as they did not get the same as other people had got. The Prophet (ﷺ) then delivered a sermon before them, saying, "O, the assembly of Ansar! Didn't I find you astray, and then Allah guided you on the Right Path through me? You were divided into groups, and Allah brought you together through me; you were poor and Allah made you rich through me." Whatever the Prophet (ﷺ) said , they (i.e. the Ansar) said, "Allah and his Apostle have more favours to do." The Prophet (ﷺ) said, "What stops you from answering the Messenger of Allah?" But whatever he said to them, they replied, "Allah and His Apostle have more favours to do." The Prophet (ﷺ) then said, "If you wish you could say: 'You came to us in such-and-such state (at Medina).' Wouldn't you be willing to see the people go away with sheep and camels while you go with the Prophet (ﷺ) to your homes? But for the migration, I would have been one of the Ansar, and if the people took their way through a valley or mountain pass, I would select the valley or mountain pass of the Ansar. The Ansar are Shiar (i.e. those clothes which are in direct contact with the body and worn inside the other garments), and the people are Dithar (i.e. those clothes which are not in direct contact with the body and are worn over other garments). No doubt, you will see other people favoured over you, so you should be patient till you meet me at the Tank (of Kauthar).
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩৩১. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন আল্লাহ তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাওয়াযিন গোত্রের সম্পদ থেকে গানীমাত হিসেবে যতটুকু দান করতে চেয়েছেন দান করলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতিপয় লোককে একশ‘ করে উট দান করলেন। (এ অবস্থা দেখে) আনসারদের কিছুসংখ্যক লোক বলে ফেললেন, আল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ক্ষমা করুন, তিনি কুরায়শদেরকে দিচ্ছেন আর আমাদেরকে বাদ দিচ্ছেন। অথচ আমাদের তলোয়ার থেকে এখনো তাদের রক্ত টপটপ করে পড়ছে। আনাস (রাঃ) বলেন, তাঁদের একটি চামড়ার তৈরি তাঁবুতে জমায়েত করলেন এবং তাঁরা ব্যতীত অন্য কাউকে এখানে থাকতে অনুমতি দিলেন না। এরপর তাঁরা সবাই জমায়েত হলে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে বললেন, তোমাদের নিকট হতে কী কথা আমার নিকট পৌঁছল? আনসারদের জ্ঞানীগুণী লোকেরা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের নেতৃস্থানীয় কেউ তো কিছু বলেনি, তবে আমাদের কতিপয় কমবয়সী লোকেরা বলেছে য, আল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ক্ষমা করুন, তিনি আমাদেরকে বাদ দিয়ে কুরাইশদেরকে (গানীমাতের মাল) দিচ্ছেন। অথচ আমাদের তরবারিগুলো থেকে এখনো তাদের রক্ত টপটপ করে পড়ছে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি অবশ্য এমন কিছু লোককে দিচ্ছি যারা সবেমাত্র কুফর ত্যাগ করে ইসলামে প্রবেশ করেছে। আর তা এ জন্যে যেন তাদের মনকে আমি ঈমানের উপর সুদৃঢ় করতে পারি। তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, অন্যান্য লোক ফিরে যাবে ধন-সম্পদ নিয়ে আর তোমরা বাড়ি ফিরে যাবে (আল্লাহর) নবীকে সঙ্গে নিয়ে? আল্লাহর কসম! তোমরা যে জিনিস নিয়ে ফিরে যাবে তা অনেক উত্তম ঐ ধন-সম্পদ অপেক্ষা, যা নিয়ে তারা ফিরে যাবে। আনসারগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেন, অচিরেই তোমরা (নিজেদের উপর) অন্যদের প্রবল অগ্রাধিকার দেখতে পাবে। অতএব, (আমার মৃত্যুর পর) আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা পর্যন্ত তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে। আমি হাউজে কাউসারের নিকট থাকব। আনাস (রাঃ) বলেন, কিন্তু তাঁরা (আনসাররা) ধৈর্যধারণ করেননি। [৩১৪৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৯২)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ نَاسٌ مِنَ الْأَنْصَارِ حِيْنَ أَفَاءَ اللهُ عَلَى رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَفَاءَ مِنْ أَمْوَالِ هَوَازِنَ فَطَفِقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُعْطِيْ رِجَالًا الْمِائَةَ مِنَ الإِبِلِ فَقَالُوْا يَغْفِرُ اللهُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُعْطِيْ قُرَيْشًا وَيَتْرُكُنَا وَسُيُوْفُنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَائِهِمْ قَالَ أَنَسٌ فَحُدِّثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِمَقَالَتِهِمْ فَأَرْسَلَ إِلَى الْأَنْصَارِ فَجَمَعَهُمْ فِيْ قُبَّةٍ مِنْ أَدَمٍ وَلَمْ يَدْعُ مَعَهُمْ غَيْرَهُمْ فَلَمَّا اجْتَمَعُوْا قَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا حَدِيْثٌ بَلَغَنِيْ عَنْكُمْ فَقَالَ فُقَهَاءُ الْأَنْصَارِ أَمَّا رُؤَسَاؤُنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ فَلَمْ يَقُوْلُوْا شَيْئًا وَأَمَّا نَاسٌ مِنَّا حَدِيْثَةٌ أَسْنَانُهُمْ فَقَالُوْا يَغْفِرُ اللهُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُعْطِيْ قُرَيْشًا وَيَتْرُكُنَا وَسُيُوْفُنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَائِهِمْ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَإِنِّيْ أُعْطِيْ رِجَالًا حَدِيْثِيْ عَهْدٍ بِكُفْرٍ أَتَأَلَّفُهُمْ أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالأَمْوَالِ وَتَذْهَبُوْنَ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى رِحَالِكُمْ فَوَاللهِ لَمَا تَنْقَلِبُوْنَ بِهِ خَيْرٌ مِمَّا يَنْقَلِبُوْنَ بِهِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ قَدْ رَضِيْنَا فَقَالَ لَهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَتَجِدُوْنَ أُثْرَةً شَدِيْدَةً فَاصْبِرُوْا حَتَّى تَلْقَوْا اللهَ وَرَسُوْلَهُ صلى الله عليه وسلم فَإِنِّيْ عَلَى الْحَوْضِ قَالَ أَنَسٌ فَلَمْ يَصْبِرُوْا.
Narrated Anas Bin Malik:
When Allah gave Allah's Messenger (ﷺ) what he gave of the properties of the Hawazin tribe as a war booty, the Prophet (ﷺ) started giving some men 100 camels each. The Ansar (then) said, "May Allah forgive Allah's Messenger (ﷺ)s as he gives to Quraish and leaves us although our swords are still dribbling with the blood of Quraish." Allah Apostle was informed of their statement, so he sent for the Ansar and gathered them in a leather tent, and did not call anybody else along with them. When they al I gathered, the Prophet (ﷺ) got up and said, "What is this talk being informed to me about you?" The learned men amongst the Ansar said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! Our chiefs did not say anything, but some people amongst us who are younger in age said. 'May Allah forgive Allah's Messenger (ﷺ) as he gives (of the booty) to Quraish and leaves us though our swords are still dribbling with their blood." The Prophet (ﷺ) said, "I give to these men who have newly deserted heathenism (and embraced Islam) so as to attract their hearts. Won't you be happy that the people take the wealth while you take the Prophet (ﷺ) with you to your homes? By Allah, what you are taking is better than whatever they are taking." They (i.e. the Ansar) said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! We are satisfied." The Prophet (ﷺ) then said to them. "You will find others favored over you greatly, so be patient till you meet Allah and His Apostle and I will be at the Tank then." Anas added: But they did not remain patient.
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩৩২. আনাস (ইবনু মালিক) (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের দিনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশদের মধ্যে গানীমাতের মাল বণ্টন করে দিলেন। এতে আনসারগণ নাখোশ হয়ে গেলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, লোকজন পার্থিব সম্পদ নিয়ে ফিরে যাবে আর তোমরা আল্লাহর রাসূলকে নিয়ে ফিরবে? তাঁরা উত্তর দিলেন, অবশ্যই (আমার সন্তুষ্ট)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি লোকজন কোন উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়ে চলে তা হলে আমি আনসারদের উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়ে চলব। [৩১৪৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৯৩)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ عَنْ أَنَسٍ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ فَتْحِ مَكَّةَ قَسَمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم غَنَائِمَ بَيْنَ قُرَيْشٍ فَغَضِبَتْ الْأَنْصَارُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالدُّنْيَا وَتَذْهَبُوْنَ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالُوْا بَلَى قَالَ لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا أَوْ شِعْبًا لَسَلَكْتُ وَادِيَ الْأَنْصَارِ أَوْ شِعْبَهُمْ.
Narrated Anas:
When it was the day of the Conquest (of Mecca) Allah's Messenger (ﷺ) distributed the war booty amongst the people of Quraish which caused the Ansar to become angry. So the Prophet (ﷺ) said, "Won't you be pleased that the people take the worldly things and you take Allah's Messenger (ﷺ) with you? "They said, "Yes." The Prophet (ﷺ) said, "If the people took their way through a valley or mountain pass, I would take my way through the Ansar's valley or mountain pass."
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩৩৩. আনাস (ইবনু মালিক) (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুনায়ন[1]-এর দিন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাওয়াযিন গোত্রের মুখোমুখী হলেন। তাঁর সঙ্গে ছিল দশ হাজার (মুহাজির ও আনসার সৈনিক) এবং (মক্কার) নও-মুসলিম। যুদ্ধে এরা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করল। এ মুহূর্তে তিনি [নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, ওহে আনসার সকল! তাঁরা জওয়াব দিলেন, আমরা হাযির, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার সাহায্য করতে আমরা প্রস্তুত এবং আপনার সামনেই আমরা উপস্থিত। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাওয়ারী থেকে নেমে পড়লেন। তিনি বললেন, আমি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল। মুশরিকরা পরাজিত হল। তিনি নও-মুসলিম এবং মুহাজিরদেরকে (গানীমাতে) বণ্টন করে দিলেন। আর আনসারদেরকে কিছুই দিলেন না। (এতে তারা নিজেদের মধ্যে সে কথা বলাবলি করছিল।) তখন তিনি তাদেরকে ডেকে এনে একটি তাঁবুর ভিতর জমায়েত করলেন এবং বললেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট থাকবে না যে, লোকজন বাকরী ও উট নিয়ে যাবে আর তোমরা যাবে আল্লাহর রাসূলকে নিয়ে। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বললেন, যদি লোকজন উপত্যকা দিয়ে চলে আর আনসাররা গিরিপথ দিয়ে চলে তা হলে আমি আনসারদের গিরিপথকেই বেছে নেব। [৩১৪৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৯৪)
তারা বানূ মুযার ও বানূ হেলাল গোত্রকেও তাদের সাথে নিয়ে নিলো এবং চার হাজার বীর যোদ্ধা নিয়ে মক্কাহর পথে রওয়ানা হলো। তারা হুনায়নের উপত্যকায় এসে অবতরণ করলো। তাদের নেতা মালিক ইবনু ‘আউফের পরামর্শক্রমে তাদের স্ত্রী, শিশু, মাল ও গবাদি পশুকেও সঙ্গে নিয়ে ছিল, তার যুক্তি ছিল এর ফলে কেউ যুদ্ধ ক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়ে যাবে না।
এ সংবাদ শুনে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কাহ হতে সামনে অগ্রসর হলেন এবং তাঁর সঙ্গে মক্কাহর আরও দু’হাজার লোক যোগ দিয়েছিল। এদের মধ্যে অমুসলিমরাও ছিল এবং চুক্তিবদ্ধ মূর্তী পূজকরাও ছিল। সৈনদের মোট সংখ্যা বারো হাজারে দাঁড়িয়েছিল। নিজেদের সংখ্যাধিক্য দেখে সৈন্যদের মনে অহংকারও এসে গিয়েছিল এবং এজন্যে তারা যেখানে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এরূপ স্থলেও সতর্কতা অবলম্বন করেনি। শত্রুপক্ষ পূর্ব হতেই সেখানে প্রস্ত্তত হয়েছিল। পাহাড়ের আবশ্যকীয় ঘাটিগুলি অধিকার করে এবং নিকটবর্তী উপত্যকায় বহু সংখ্যক অব্যর্থ লক্ষ্য তীরন্দাজ সৈন্য বসিয়ে দিয়ে নিজেদের অবস্থা বেশ মযবুত করে নিয়েছিল। প্রাতঃকালে মুসলিম বাহিনী অগ্রসর হবার আয়োজন করেছে, এমন সময় হাওয়াযেনের বিরাট বাহিনী প্রচন্ড বেগে তাদের উপর আপতিত হলো। নব দীক্ষিত মুসলিম এবং অমুসলিম সৈন্যরা আগ্রহাতিশয্য বশতঃ বাহিনীর অগ্রে অগ্রে যাত্রা করছিল। তাদের অনেকের নিকট আবশ্যকীয় অস্ত্রশস্ত্র ও ছিল না। তারা অসতর্ক অবস্থায় শত্রুদের ঘাটির নিকট পৌঁছল। এমতাবস্থায় শত্রুরা তাদের উপর এতো তীর বর্ষণ করলো যে, অগ্রবর্তী সেনাদল মুখ ফিরিয়ে পালাতে শুরু করলো। মুসলিমরা এটা সামলে নিয়ে শত্রু পক্ষের আক্রমণ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলেন বটে, কিন্তু অগ্রবর্তী সৈন্যদলের ঐ ঘৃণিত পলায়নের জন্যে তখন এমনই বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল যে, তাদের সে চেষ্টায় বিশেষ কোন ফল হলো না। এই ভীষণ দুর্যোগের মধ্যে পতিত হয়েও রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মুহূর্তের জন্যেও বিচলিত হননি। এই সময় তিনি নিজের শ্বেত খচ্চরের উপর আরোহণ করে মুসলিমদেরকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দিতে লাগলেন। কিন্তু ঐ বিশৃঙ্খলা ও কোলাহলের মধ্যে তাঁর কন্ঠস্বর কারো কর্ণে প্রবেশ করলো না। দু’একজন ব্যতীত সবাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেন । ঐ সময় আববাস (রাঃ) রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খচ্চরের লাগাম এবং আবু সুফ্ইয়ান (রাঃ) তাঁর পালানের রেকাব ধরে দাড়িয়েছিলেন। মাত্র আর দু-তিন জন মুসলিম তাঁর পাশে টিকে ছিলেন।
দ্বাদশ সহস্র আত্নোৎসর্গী সৈন্য চক্ষের পলকে উধাও হয়ে গেছে। অগণিত শত্রু সেনা নাঙ্গা তরবারী হস্তে আক্রমণ করতে আসছে, সেদিকে তাঁর একটুও লক্ষ নেই। ঐ সময় তিনি খচ্চর হতে অবতরণ করলেন এবং নতজানু হয়ে নিজের পরম জনের নিকট সাহায্য ও শক্তি প্রার্থনা করতে লাগলেন। তারপর পুনরায় খচ্চরে আরোহণ করে অগণিত শত্রুদলের উপর আক্রমণ করার জন্য তিনি দ্রুতবেগে অগ্রসর হলেন। ঐ সময় তিনি দৃঢ় কন্ঠে ও গুরুগম্ভীর স্বরে ঘোষণা করলেনঃ انا النبي لا كذب انا ابن عبد المطلب
‘‘আমি নাবী, এতে মিথ্যার লেশমাত্র নেই, আমি ‘আবদুল মুত্তালিবের সন্তান।’’ ভাবার্থ ছিলঃ আমার সত্যবাদিতার মাপকাটি কোন সেনাবাহিনীর জয় বা পরাজয় নয়, বরং আমার সত্যবাদিতা স্বয়ং আমার সত্ত্বার দ্বারা হয়ে থাকে।’’
ঐ সময় ‘আববাস (রাঃ) একটি উচ্চ স্থানে আরোহণ পূর্বক তার স্বভাব সিদ্ধ উচ্চ কন্ঠে মুসলিমদেরকে আহবান করতে লাগলেনঃ হে আনসার বীরগণ! হে শাজারার বায়‘আতকারীগণ! হে মুসলিম বীরবৃন্দ! হে মুহাজিরগণ! কোথায় তোমরা? এই দিকে ছুটে এসো।’’
সদ্য প্রসূত গাভী যেমন স্বীয় বৎসের বিপদ দর্শণে চীৎকার করতে করতে ছুটে আসে, ‘আববাসের (রাঃ) আহবান শ্রবণ করে মুসলিম সৈনিকগণ এরূপ ছুটে আসতে লাগলেন। অতঃপর নতুনভাবে সৈন্যদের শ্রেণী বিন্যাস করা হলো। আনসার ও মুহাজিরকে আগে বাড়িয়ে দেয়া হলো। এরপত্ম তারা শত্রু পক্ষকে সমবেতভাবে আক্রমণ করলেন। শত্রুরা মুসলিমদের তরবারির সামনে বেশীক্ষণ টিকে থাকতে পারলো না। তারা স্ত্রী পুত্র রণ সম্ভার ও সমস্ত ধন দৌলত যুদ্ধক্ষেত্রে ফেলেই ইতস্ততঃ পালিয়ে গেল।
পলায়নের পর শত্রু পক্ষের কতক সৈন্য তাদের নেতা মালিক ইবনু আওফের সাথে তায়িফের দূর্গে আশ্রয় গ্রহণ করলো।
দ্বিতীয় দল, যাদের সাথে তাদের পরিবার বর্গ ছিল এবং ধন-সম্পদ ছিল, আওতাসের ঘাঁটিতে গিয়ে আত্মগোপন করলো।
রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়িফের দূর্গ অবরোধের নির্দেশ দিলেন এবং আওতাসের দিকে আবু আমির আশ‘আরী (রাঃ) পৌঁছে শত্রুদের স্ত্রী-পুত্র ও ধন-সম্পদেত্ম উপর অধিকার লাভ করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আওতাসের ফলাফল অবগত হলেন তখন তিনি দূর্গের অবরোধ উঠিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিলেন। কেননা, ঐ লোকগুলি স্ত্রী-পুত্র নিয়ে কঠিন বিপদে পড়েছিল।
আওতাসের ২৪ হাজার উট, চল্লিশ হাজার বকরী, চার হাজার উকিয়া চাঁদি এবং ছয় হাজার নারী ও শিশু মুসলিমদের হস্তগত হয়েছিল।
রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখনও যুদ্ধ ক্ষেত্রেই ছিলেন। এমন সময় হাওয়াযেন গোত্রের ছয় জন সর্দার আসলো এবং করুণার আবেদন পেশ করলো।
তাদের মধ্যে ঐ লোকগুলি ছিল যারা তায়েফে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর পাথর বর্ষণ করেছিল এবং শেষ পর্যন্ত যায়েদ (রাঃ) সেখান হতে রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অজ্ঞান অবস্থায় উঠিয়ে নিয়ে আসেন।
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘‘হাঁ আমি স্বয়ং তোমাদের জন্যে অপেক্ষা করছিলাম (এবং এই অপেক্ষার মধ্যে প্রা্য় দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে যায় এবং গানীমাতের মালও বন্টিত হয়নি)। আমি আমার অংশের এবং আমার বংশের ভাগের বন্দীদেরকে সহজেই ছেড়ে দিতে পারি। আর আমার সাথে যদি শুধু আনসার ও মুহাজিরই থাকতো তাহলে সবাইকে ছেড়ে দেয়াও কঠিন ছিল না। কিন্তু তোমরা তো দেখতেই পাচ্ছ যে, এই সেনাবাহিনীতে আমার সাথে ঐ লোকেরা রয়েছে যারা এখনও মুসলিম হয়নি। এ জন্যে একটা কৌশলের প্রয়োজন আছে। তোমরা আগামীকাল ফজরের ছালাতের সময়ে এসো এবং সাধারণ সমাবেশে তোমাদের আবেদন পেশ করো। ঐ সময় কোন এক উপায় বের হয়ে আসবে।’’ তিনি আরো বললেনঃ ‘‘তোমরা হয় ধনমাল নেয়া পছন্দ করো অথবা স্ত্রী-পুত্র। কেননা, আক্রমণকারী সৈন্যদের সব কিছুই ছেড়ে দেয়া কঠিন।’’
পরের দিন ঐ নেতৃ বর্গই আসলো এবং তারা সাধারণ সমাবেশে নিজেদের বন্দীদের মুক্তির আবেদন নাবী কারীমের সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম খিদমতে পেশ করলো।
তুলনাবিহীন দয়া দাক্ষিণ্য ও করুণা প্রদর্শনঃ রাহমাতের নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘‘আমি আমার ও বানু আবদিল মু্ত্তালিবের বন্দীদেরকে কোন বিনিময় গ্রহণ ছাড়াই মুক্ত করে দিচ্ছি।’’ আনসার ও মুহাজিররা তাঁর এ ঘোষণা শুনে বললেনঃ ‘‘আমরাও নিজ নিজ বন্দীদেরকে কোন মুক্তিপণ ছাড়াই মুক্ত করে দিলাম।’’
এখন বাকী থাকল বানু সালিম ও বানু ফাযরাহ্। তাদের কাছে এটা খুবই বিস্ময়কর ব্যাপার ছিল যে, আক্রমণকারী সৈন্যদের প্রতি (যারা ভাগ্যক্রমে পরাজিত হয়েছে) এরূপ দয়া প্রদর্শন করা হবে। এ জন্যে তারা নিজ নিজ অংশের বন্দীদেরকে মুক্ত করল না। রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে ডাকলেন। প্রত্যেক বন্দীর মূল্য ছয়টি উট নির্ধারণ করা হলো। এই মূল্য নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই প্রদান করলেন। এভাবে বাকী বন্দীদেরকে তিনি মুক্ত করে দিলেন । অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বন্দীদের প্রত্যেককে নতুন বস্ত্র পরিয়ে বিদায় করলেন।
দুধ-বোনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনঃ এই বন্দীদের মধ্যে দাই হালীমার কন্যা শায়মা বিনতুল হারিসও ছিল। নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঐ দুধ-বোনকে চিনতে পারলেন এবং তার সম্মানে নিজের চাদরখানা মাটিতে বিছিয়ে দিলেন। অতঃপর তাকে বললেনঃ‘‘যদি তুমি আমার কাছে থাকো তাহলে ভালো কথা। আর যদি তুমি নিজের সম্প্রদায়ের মধ্যে ফিরে যেতে চাও তাহলে তাতে আমার কোন আপত্তি নেই।’’ সে ফিরে যেতে চাওয়ায় রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সসম্মানে তার কওমের মধ্যে পাঠিয়ে দিলেন।
অকৃত্রিম সহচরদের আন্তরিকতার নমুনাঃ গানীমাতের মাল রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ জায়গাতেই বন্টন করে দিলেন। বড় ÿড় অংশ তিনি ঐ লোকদেরকে প্রদান করলেন যারা অল্পদিন পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করেছিল। আনসারদেরকে, যারা অত্যন্ত অকৃত্রিম ছিলেন, কিছুই দিলেন না। তিনি বললেনঃ ‘‘আনসারদের সাথে আমি নিজেই আছি। মানুষ ধন-দৌলত নিয়ে নিজ নিজ বাড়ীতে যাবে, আর আনসারগণ আল্লাহর রসূলকে সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ে নিজেদের বাড়ীতে প্রবেশ করবে।’’
আনসারগণ এতে এতো সন্তুষ্ট হন যে সম্পদ প্রাপকরা এমন সন্তুষ্টি লাভ করতে পারেননি। (রহমাতুল লিল ‘আলামীন)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا أَزْهَرُ عَنْ ابْنِ عَوْنٍ أَنْبَأَنَا هِشَامُ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ حُنَيْنٍ الْتَقَى هَوَازِنُ وَمَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَشَرَةُ آلَافٍ وَالطُّلَقَاءُ فَأَدْبَرُوْا قَالَ يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ قَالُوْا لَبَّيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَسَعْدَيْكَ لَبَّيْكَ نَحْنُ بَيْنَ يَدَيْكَ فَنَزَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَنَا عَبْدُ اللهِ وَرَسُوْلُهُ فَانْهَزَمَ الْمُشْرِكُوْنَ فَأَعْطَى الطُّلَقَاءَ وَالْمُهَاجِرِيْنَ وَلَمْ يُعْطِ الْأَنْصَارَ شَيْئًا فَقَالُوْا فَدَعَاهُمْ فَأَدْخَلَهُمْ فِيْ قُبَّةٍ فَقَالَ أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالشَّاةِ وَالْبَعِيْرِ وَتَذْهَبُوْنَ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا وَسَلَكَتْ الْأَنْصَارُ شِعْبًا لَاخْتَرْتُ شِعْبَ الْأَنْصَارِ.
Narrated Anas:
When it was the day of (the battle of) Hunain, the Prophet (ﷺ) confronted the tribe of Hawazin while there were ten-thousand (men) besides the Tulaqa' (i.e. those who had embraced Islam on the day of the Conquest of Mecca) with the Prophet. When they (i.e. Muslims) fled, the Prophet (ﷺ) said, "O the group of Ansari" They replied, "Labbaik, O Allah's Messenger (ﷺ) and Sadaik! We are under your command." Then the Prophet (ﷺ) got down (from his mule) and said, "I am Allah's Slave and His Apostle." Then the pagans were defeated. The Prophet (ﷺ) distributed the war booty amongst the Tulaqa and Muhajirin (i.e. Emigrants) and did not give anything to the Ansar. So the Ansar spoke (i.e. were dissatisfied) and he called them and made them enter a leather tent and said, Won't you be pleased that the people take the sheep and camels, and you take Allah's Messenger (ﷺ) along with you?" The Prophet (ﷺ) added, "If the people took their way through a valley and the Ansar took their way through a mountain pass, then I would choose a mountain pass of the Ansar."
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩৩৪. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের লোকজনকে জমায়েত করে বললেন, কুরাইশরা সবেমাত্র জাহিলীয়্যাত ছেড়েছে আর তারা দুর্দশাগ্রস্ত। তাই আমি তাদেরকে অনুদান দিয়ে তাদের মন জয় করার ইচ্ছা করেছি। তোমরা কি সন্তুষ্ট নও যে, লোকেরা পার্থিব সম্পদ নিয়ে ফিরে যাবে আর তোমরা তোমাদের ঘরে ফিরে যাবে আল্লাহর রাসূলকে নিয়ে। তারা বললেন, অবশ্যই আমরা সন্তুষ্ট। তিনি আরো বললেন, যদি লোকজন উপত্যকা দিয়ে চলে আর আনসাররা গিরিপথ দিয়ে চলে, তা হলে আনসারদের গিরিপথ অথবা তিনি বলেছেন, আনসারদের উপত্যকা দিয়েই চলব। [৩১৪৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৯৫)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ جَمَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم نَاسًا مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ إِنَّ قُرَيْشًا حَدِيْثُ عَهْدٍ بِجَاهِلِيَّةٍ وَمُصِيْبَةٍ وَإِنِّيْ أَرَدْتُ أَنْ أَجْبُرَهُمْ وَأَتَأَلَّفَهُمْ أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَرْجِعَ النَّاسُ بِالدُّنْيَا وَتَرْجِعُوْنَ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى بُيُوْتِكُمْ قَالُوْا بَلَى قَالَ لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا وَسَلَكَتْ الْأَنْصَارُ شِعْبًا لَسَلَكْتُ وَادِيَ الْأَنْصَارِ أَوْ شِعْبَ الْأَنْصَارِ.
Narrated Anas:
The Prophet (ﷺ) gathered some people of Ansar and said, "The People of Quraish are still close to their Pre-lslamic period of ignorance and have suffered a lot, and I want to help them and attract their hearts (by giving them the war booty). Won't you be pleased that the people take the worldly things) and you take Allah's Messenger (ﷺ) with you to your homes?" They said, "Yes, (i.e. we are pleased with this distribution)." The Prophet (ﷺ) said, "'If the people took their way through a valley and the Ansar took their way through a mountain pass, then I would take the Ansar's valley or the Ansar's mountain pass."
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩৩৫. ‘আবদুল্লাহ (ইবনু মাস‘ঊদ) (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুনাইনের গানীমাত বণ্টন করলেন, তখন আনসারদের এক ব্যক্তি বলে ফেলল যে, এই বণ্টনের ব্যাপারে তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করেননি। কথাটি শুনে আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আসলাম এবং তাঁকে কথাটি জানিয়ে দিলাম। তখন তাঁর চেহারার রং পরিবর্তিত হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ, মূসা (আঃ)-এর উপর রহমত বর্ষণ করুন। তাঁকে এর চেয়েও অধিক কষ্ট দেয়া হয়েছিল। তাতে তিনি ধৈর্য ধারণ করেছিলেন। [৩১৫০] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৯৬)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ لَمَّا قَسَمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قِسْمَةَ حُنَيْنٍ قَالَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ مَا أَرَادَ بِهَا وَجْهَ اللهِ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ فَتَغَيَّرَ وَجْهُهُ ثُمَّ قَالَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَى مُوْسَى لَقَدْ أُوْذِيَ بِأَكْثَرَ مِنْ هَذَا فَصَبَرَ.
Narrated `Abdullah:
When the Prophet (ﷺ) distribute the war booty of Hunain, a man from the Ansar said, "He (i.e. the Prophet), did not intend to please Allah in this distribution." So I came to the Prophet (ﷺ) and informed him of that (statement) whereupon the color of his face changed and he said, "May Allah bestow His Mercy on Moses, for he was troubled with more than this, but he remained patient."
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩৩৬. ‘আবদুল্লাহ (ইবনু মাস‘ঊদ) (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুনাইনের দিন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কোন লোককে (গানীমাতের মাল) প্রদানের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেন। যেমন আকরা’কে একশ’ উট দিয়েছিলেন। ‘উয়াইনাহ্কে ততই দিয়েছিলেন। অন্যদেরও দিয়েছিলেন। এতে এক ব্যক্তি বলে উঠল, এ বণ্টনে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করা হয়নি। (রাবী বলেন) তখন আমি বললাম, অবশ্যই আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা জানিয়ে দিব। [এ কথা জানানো হলে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, আল্লাহ মূসা (আঃ)-এর উপর রহম করুন। তাঁকে এর চেয়েও অধিক কষ্ট দেয়া হয়েছিল। তাতে তিনি ধৈর্য ধারণ করেন। [৩১৫০] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৯৭)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ حُنَيْنٍ آثَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم نَاسًا أَعْطَى الْأَقْرَعَ مِائَةً مِنَ الإِبِلِ وَأَعْطَى عُيَيْنَةَ مِثْلَ ذَلِكَ وَأَعْطَى نَاسًا فَقَالَ رَجُلٌ مَا أُرِيْدَ بِهَذِهِ الْقِسْمَةِ وَجْهُ اللهِ فَقُلْتُ لَأُخْبِرَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَحِمَ اللهُ مُوْسَى قَدْ أُوْذِيَ بِأَكْثَرَ مِنْ هَذَا فَصَبَرَ.
Narrated `Abdullah:
When it was the day of Hunain, Prophet favored some people over some others (in the distribution of the booty). He gave Al-Aqra' one-hundred camels and gave Uyaina the same, and also gave other people (of Quraish). A man said, "Allah's Pleasure was not the aim, in this distribution." I said, "I will inform the Prophet (about your statement)." The Prophet (ﷺ) said, "May Allah bestow Mercy on Moses, for he was troubled more this but he remained patient."
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৭. তায়িফের যুদ্ধ।
৪৩৩৭. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুনাইনের দিন হাওয়াযিন, গাতফান ও অন্যান্য গোত্রগুলো নিজেদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিসহ যুদ্ধক্ষেত্রে এল। আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-
এর সঙ্গে ছিল দশ হাজার (ও কিছু সংখ্যক) তুলাকা [1] সৈনিক। যুদ্ধে তারা সবাই তাঁর পাশ থেকে পিছনে সরে গেল। ফলে তিনি একাকী রয়ে গেলেন। সেই সময়ে তিনি আলাদা আলাদাভাবে দু’টি ডাক দিয়েছিলেন, তিনি ডান দিক ফিরে বলেছিলেন, ওহে আনসারগণ! তাঁরা সবাই উত্তর করলেন, আমরা উপস্থিত হে আল্লাহর রাসূল! আপনি সুসংবাদ নিন, আমরা আপনার সঙ্গেই আছি। এরপর তিনি বাম দিকে ফিরে বলেছিলেন, ওহে আনসারগণ! তাঁরা সবাই উত্তরে বললেন, আমরা উপস্থিত হে আল্লাহর রাসূল! আপনি সুসংবাদ নিন। আমরা আপনার সঙ্গেই আছি। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাদা রঙের খচ্চরটির পিঠে ছিলেন। তিনি নিচে নেমে পড়লেন এবং বললেন, আমি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল। (শেষে) মুশরিকরাই পরাজিত হল। সে যুদ্ধে বিপুল পরিমাণ গানীমাত হস্তগত হল। তিনি সেসব সম্পদ মুহাজির এবং নও-মুসলিমদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। আর আনসারদেরকে কিছুই দেননি। তখন আনসারদের (কেউ কেউ) বললেন, কঠিন মুহূর্ত আসলে ডাকা হয় আমাদেরকে আর গানীমাত দেয়া হয় অন্যদেরকে। কথাটি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছে গেল। তাই তিনি তাদেরকে একটি তাঁবুতে জমায়েত করে বললেন, ওহে আনসারগণ! একী কথা আমার কাছে পৌঁছল? তাঁরা চুপ করে থাকলেন। তিনি বললেন, হে আনসারগণ! তোমরা কি খুশি থাকবে না যে, লোকজন দুনিয়ার ধন-সম্পদ নিয়ে ফিরে যাবে আর তোমরা (বাড়ি ফিরে যাবে আল্লাহর রাসূলকে সঙ্গে নিয়ে? তাঁরা বললেনঃ অবশ্যই। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি লোকজন একটি উপত্যকা দিয়ে চলে আর আনসারগণ একটি গিরিপথ দিয়ে চলে তাহলে আমি আনসারদের গিরিপথকেই গ্রহণ করে নেব। বর্ণনাকারী হিশাম (রহ.) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আবূ হামযাহ (আনাস ইবনু মালিক) আপনি কি এ ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন? উত্তরে তিনি বললেন, আমি তাঁর নিকট হতে কখন বা অনুপস্থিত থাকতাম? [৩১৪৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৯৮)
بَابُ غَزْوَةِ الطَّائِفِ
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ مُعَاذٍ حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ عَنْ هِشَامِ بْنِ زَيْدِ بْنِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمَ حُنَيْنٍ أَقْبَلَتْ هَوَازِنُ وَغَطَفَانُ وَغَيْرُهُمْ بِنَعَمِهِمْ وَذَرَارِيِّهِمْ وَمَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَشَرَةُ آلَافٍ وَمِنْ الطُّلَقَاءِ فَأَدْبَرُوْا عَنْهُ حَتَّى بَقِيَ وَحْدَهُ فَنَادَى يَوْمَئِذٍ نِدَاءَيْنِ لَمْ يَخْلِطْ بَيْنَهُمَا الْتَفَتَ عَنْ يَمِيْنِهِ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ قَالُوْا لَبَّيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَبْشِرْ نَحْنُ مَعَكَ ثُمَّ الْتَفَتَ عَنْ يَسَارِهِ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ قَالُوْا لَبَّيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَبْشِرْ نَحْنُ مَعَكَ وَهُوَ عَلَى بَغْلَةٍ بَيْضَاءَ فَنَزَلَ فَقَالَ أَنَا عَبْدُ اللهِ وَرَسُوْلُهُ فَانْهَزَمَ الْمُشْرِكُوْنَ فَأَصَابَ يَوْمَئِذٍ غَنَائِمَ كَثِيْرَةً فَقَسَمَ فِي الْمُهَاجِرِيْنَ وَالطُّلَقَاءِ وَلَمْ يُعْطِ الْأَنْصَارَ شَيْئًا فَقَالَتْ الْأَنْصَارُ إِذَا كَانَتْ شَدِيْدَةٌ فَنَحْنُ نُدْعَى وَيُعْطَى الْغَنِيْمَةَ غَيْرُنَا فَبَلَغَهُ ذَلِكَ فَجَمَعَهُمْ فِيْ قُبَّةٍ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ مَا حَدِيْثٌ بَلَغَنِيْ عَنْكُمْ فَسَكَتُوْا فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ أَلَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالدُّنْيَا وَتَذْهَبُوْنَ بِرَسُوْلِ اللهِ تَحُوْزُوْنَهُ إِلَى بُيُوْتِكُمْ قَالُوْا بَلَى فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا وَسَلَكَتْ الْأَنْصَارُ شِعْبًا لَأَخَذْتُ شِعْبَ الْأَنْصَارِ وَقَالَ هِشَامٌ قُلْتُ يَا أَبَا حَمْزَةَ وَأَنْتَ شَاهِدٌ ذَاكَ قَالَ وَأَيْنَ أَغِيْبُ عَنْهُ.
Narrated Anas Bin Malik:
When it was the day (of the battle) of Hunain, the tributes of Hawazin and Ghatafan and others, along with their animals and offspring (and wives) came to fight against the Prophet (ﷺ) The Prophet (ﷺ) had with him, ten thousand men and some of the Tulaqa. The companions fled, leaving the Prophet (ﷺ) alone. The Prophet then made two calls which were clearly distinguished from each other. He turned right and said, "O the group of Ansar!" They said, "Labbaik, O Allah's Messenger (ﷺ)! Rejoice, for we are with you!" Then he turned left and said, "O the group of Ansar!" They said, "Labbaik! O Allah's Messenger (ﷺ)! Rejoice, for we are with you!" The Prophet (ﷺ) at that time, was riding on a white mule; then he dismounted and said, "I am Allah's Slave and His Apostle." The infidels then were defeated, and on that day the Prophet (ﷺ) gained a large amount of booty which he distributed amongst the Muhajirin and the Tulaqa and did not give anything to the Ansar. The Ansar said, "When there is a difficulty, we are called, but the booty is given to other than us." The news reached the Prophet (ﷺ) and he gathered them in a leather tent and said, "What is this news reaching me from you, O the group of Ansar?" They kept silent, He added," O the group of Ansar! Won't you be happy that the people take the worldly things and you take Allah's Messenger (ﷺ) to your homes reserving him for yourself?" They said, "Yes." Then the Prophet said, "If the people took their way through a valley, and the Ansar took their way through a mountain pass, surely, I would take the Ansar's mountain pass." Hisham said, "O Abu Hamza (i.e. Anas)! Did you witness that? " He replied, "And how could I be absent from him?"