পরিচ্ছেদঃ ৬০/১০. পরিচ্ছেদ নাই।
৩৩৬৬. আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! পৃথিবীতে সর্বপ্রথম কোন মাসজিদ তৈরী করা হয়েছে? তিনি বললেন, মসজিদে হারাম। আমি বললাম, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, মসজিদে আকসা। আমি বললাম, উভয় মসজিদের (তৈরীর) মাঝে কত ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, চল্লিশ বছর। অতঃপর তোমার যেখানেই সালাতের সময় হবে, সেখানেই সালাত আদায় করে নিবে। কেননা এর মধ্যে ফযীলত নিহিত রয়েছে। (৩৪২৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১২৪)
باب
حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ التَّيْمِيُّ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَيُّ مَسْجِدٍ وُضِعَ فِي الأَرْضِ أَوَّلَ قَالَ الْمَسْجِدُ الْحَرَامُ قَالَ قُلْتُ ثُمَّ أَيٌّ قَالَ الْمَسْجِدُ الأَقْصَى قُلْتُ كَمْ كَانَ بَيْنَهُمَا قَالَ أَرْبَعُوْنَ سَنَةً ثُمَّ أَيْنَمَا أَدْرَكَتْكَ الصَّلَاةُ بَعْدُ فَصَلِّهْ فَإِنَّ الْفَضْلَ فِيْهِ
Narrated Abu Dhar:
I said, "O Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam)! Which mosque was first built on the surface of the earth?" He said, "Al- Masjid-ul-,Haram (in Mecca)." I said, "Which was built next?" He replied "The mosque of Al-Aqsa ( in Jerusalem) ." I said, "What was the period of construction between the two?" He said, "Forty years." He added, "Wherever (you may be, and) the prayer time becomes due, perform the prayer there, for the best thing is to do so (i.e. to offer the prayers in time).
পরিচ্ছেদঃ ৬০/১০. পরিচ্ছেদ নাই।
৩৩৬৭. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। ওহুদ পর্বত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দৃষ্টিগোচর হলো। তিনি বললেন, এ পর্বত আমাদের ভালবাসে আর আমরাও তাকে ভালবাসি। হে আল্লাহ! ইবরাহীম (আঃ) মক্কাকে হারাম ঘোষণা করেছেন আর আমি হারাম ঘোষণা করছি এর দুই প্রান্তের মধ্যবর্তী স্থানকে (মদিনাকে)। এ হাদীসটি ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ)-ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন। (৩৭১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১২৫)
باب
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِيْ عَمْرٍو مَوْلَى الْمُطَّلِبِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم طَلَعَ لَهُ أُحُدٌ فَقَالَ هَذَا جَبَلٌ يُحِبُّنَا وَنُحِبُّهُ اللَّهُمَّ إِنَّ إِبْرَاهِيْمَ حَرَّمَ مَكَّةَ وَإِنِّيْ أُحَرِّمُ مَا بَيْنَ لَابَتَيْهَا وَرَوَاهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ زَيْدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
Narrated Anas bin Malik:
When the mountain of Uhud came in the sight of Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) he said. "This is a mountain that loves us and is loved by us. O Allah! Abraham made Mecca a sanctuary, and I make (the area) in between these two mountains (of Medina) a sanctuary."
পরিচ্ছেদঃ ৬০/১০. পরিচ্ছেদ নাই।
৩৩৬৮. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম [আয়িশা (রাঃ)-কে বলেছেন, তুমি কি জান তোমার কাউম যখন কা’বা ঘর নির্মাণ করেছে, তখন তারা ইবরাহীম (আঃ)-এর ভিত্তি হতে তা ছোট করেছে? তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি তা ইবরাহীম (আঃ)-এর ভিত্তির উপর পুনর্নির্মাণ করবেন না? তিনি বললেন, যদি তোমার কাওম কুফরী হতে অল্পকাল আগে আগত না হতো। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, যদি ‘আয়িশাহ (রাঃ) এ হাদীসটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে শুনে থাকেন, তবে আমি মনে করি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতীমে কা’বার সংলগ্ন দু’টি কোণকে চুমু দেয়া একমাত্র এ কারণে পরিহার করেছেন যে, কা’বার ঘর ইবরাহীম (আঃ)-এর ভিত্তির উপর পুরাপুরি নির্মাণ করা হয়নি। রাবী ইসমাঈল (রহ.) বলেন, ইবনু আবূ বকর হলেন, আব্দুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকর। (১২৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১২৬)
باب
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ ابْنَ أَبِيْ بَكْرٍ أَخْبَرَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ عَنْ عَائِشَةَزَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ أَلَمْ تَرَيْ أَنَّ قَوْمَكِ لَمَّا بَنَوْا الْكَعْبَةَ اقْتَصَرُوْا عَنْ قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيْمَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَا تَرُدُّهَا عَلَى قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيْمَ فَقَالَ لَوْلَا حِدْثَانُ قَوْمِكِ بِالْكُفْرِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ لَئِنْ كَانَتْ عَائِشَةُ سَمِعَتْ هَذَا مِنْ رَسُوْلِ اللهِ مَا أُرَى أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَرَكَ اسْتِلَامَ الرُّكْنَيْنِ اللَّذَيْنِ يَلِيَانِ الْحِجْرَ إِلَّا أَنَّ الْبَيْتَ لَمْ يُتَمَّمْ عَلَى قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيْمَ وَقَالَ إِسْمَاعِيْلُ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِيْ بَكْرٍ
Narrated `Aisha:
(The wife of the Prophet) Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) said (to her). "Don't you see that when your folk built the Ka`ba, they did not build it on all the foundations built by Abraham?" I said, "O Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam)! Why don't we rebuild it on the foundations of Abraham?" He said. "But for the fact that your folk have recently given up infidelity (I would have done so). Narrated Ibn `Umar: Aisha must have heard this from Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) for I see that Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) used not to touch the two corners facing Al-Hijr only because the House had not been built on the foundations of Abraham.''
পরিচ্ছেদঃ ৬০/১০. পরিচ্ছেদ নাই।
৩৩৬৯. আবূ হুমাইদ সা’ঈদী (রাঃ) হতে বর্ণিত। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কিভাবে আপনার উপর দরূদ পাঠ করব? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এভাবে পড়বে, হে আল্লাহ!
(আল্লা-হুম্মা সাল্লি ’আলা মুহাম্মাদিউওয়া ’আযওয়াজিহি ওয়া যুররিয়্যাতিহি কামা সাল্লাইতা ’আলা আলি ইবরাহীমা, ওয়া বারিক ’আলা মুহাম্মাদিউওয়া ’ আযওয়াজিহি ওয়া যুররিয়্যাতিহি কামা বা-রাক্তা ’আলা আ-লি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ)
আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর, তাঁর স্ত্রীগণের উপর এবং তাঁর বংশধরদের উপর রহমত নাযিল করুন, যেরূপ আপনি রহমত নাযিল করেছেন ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশধরদের উপর। আর আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর, তাঁর স্ত্রীগণের উপর এবং তাঁর বংশধরগণের উপর এমনিভাবে বরকত নাযিল করুন যেমনি আপনি বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয় আপনি অতি প্রশংসিত এবং অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। (৬৩৬০) (মুসলিম৩/১৭ , আহমাদ ২৩৬৬১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১২৭)
باب
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ حُمَيْدٍ السَّاعِدِيُّ أَنَّهُمْ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ كَيْفَ نُصَلِّيْ عَلَيْكَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قُوْلُوْا اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ
Narrated Abu Humaid As-Sa`id:
The people asked, "O Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam)! How shall we (ask Allah to) send blessings on you?" Allah's Apostle replied, "Say: O Allah! Send Your Mercy on Muhammad and on his wives and on his off spring, as You sent Your Mercy on Abraham's family; and send Your Blessings on Muhammad and on his offspring, as You sent Your Blessings on Abraham's family, for You are the Most Praiseworthy, the Most Glorious."
পরিচ্ছেদঃ ৬০/১০. পরিচ্ছেদ নাই।
৩৩৭০. ‘আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কা‘ব ইবনু উজরা (রাঃ) আমার সঙ্গে দেখা করে বললেন, আমি কি আপনাকে এমন একটি হাদিয়া দেব না যা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে শুনেছি? আমি বললাম, হাঁ, আপনি আমাকে সে হাদিয়া দিন। তিনি বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাদের উপর অর্থাৎ আহলে বাইতের উপর কিভাবে দরূদ পাঠ করতে হবে? কেননা, আল্লাহ তো (কেবল) আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাম করব। তিনি বললেন, তোমরা এভাবে বল, ‘‘হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম (আঃ) এবং তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বংশধরদের উপর তেমনি বরকত দান করুন যেমনি আপনি বরকত দান করেছেন ইবরাহীম (আঃ) এবং ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদার অধিকারী। (৪৭৯৭, ৬৩৫৭) (মুসলিম ৩/১৭ হাঃ ৪০৬, আহমাদ ১৮১৫৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১২৮)
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি বেশি বেশি সালাত ও সালাম পাঠ করার প্রতি এই হাদীসটি উৎসাহ প্রদান করে। তবে তাঁর প্রতি সালাত বা দরূদ পাঠ করার উত্তম পন্থা হলো নিম্নরূপ:
"اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ، اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ ".
(صحيح البخاري, رقم الحديث ৩৩৭০, وصحيح مسلم, رقم الحديث ৬৬ - (৪০৬), واللفظ للبخاري).
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে এমনভাবে সম্মানিত করুন, যেমনভাবে ইবরাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গকে সম্মানিত করেছেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত মহিমান্বিত।
হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে যে সম্মান বা মর্যাদা প্রদান করেছেন, সে সম্মান বা মর্যাদা এমনভাবে বলবৎ রাখুন, যেমনভাবে ইবরাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গের সম্মান বা মর্যাদা বলবৎ রেখেছেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত মহিমান্বিত।
[সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩৭০ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৬ -(৪০৬), তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]।
২। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি আল্লাহর সালাত বা দরূদ এর অর্থ:
معنى صلاة الله على الرسول: تعظيم الله للرسول, وثناؤه عليه.
এর অর্থ হলো: আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]কে অতিশয় সম্মানিত ও গৌরবান্বিত করা।
এবং
معنى اللهم صل على محمد: اللهم عَظِّمْهُ في الدنيا والآخرة بما يليق به.
এর অর্থ হলো: হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদকে তাঁর উপযুক্ত সম্মান দুনিয়াতে এবং পরকালে প্রদান করুন।
৩। এই হাদীসটির দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় যে, আমাদের নাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]এর প্রতি সালাম পাঠ করার বিষয়টি শরীয়ত সম্মত একটি কাজ। এই বিষয়টি প্রমাণিত হয় মহান আল্লাহর বাণীর দ্বারা। কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন:
اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِکَتَهٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡهِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا ﴿۵۶﴾
ভাবার্থের অনুবাদ: “নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে অতিশয় সম্মান করেন। এবং ফেরেশতাগণ আল্লাহর নিকটে নাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর অতিশয় সম্মান প্রার্থনা করেন। সুতরাং হে ঈমানদার মুসলিম জাতি! তোমরাও নাবী মুহাম্মাদ এর অতিশয় সম্মান করো ও তাঁর প্রতি যথাযথভাবে সালাম পেশ করো”। (সূরা আল আহযাব, আয়াত নং ৫৬)।
এই আয়াতের সঙ্গে একটি হাদীস সংযুক্ত রয়েছে, আর তা হলো এই যে, আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:
"إِنَّ لِلَّهِ مَلاَئِكَةً سَيَّاحِيْنَ فيِ الأرْضِ يُبَلِّغُونِي مِنْ أُمَّتِي السَّلاَمَ ".
(سنن النسائي, رقم الحديث ১২৮২, وصححه الألباني).
অর্থ: আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “আল্লাহর পক্ষ থেকে পৃথিবীতে এমন কতকগুলি ভ্রমণকারী ফেরেশতামণ্ডলী নির্ধারিত রয়েছেন, যাঁরা আমার প্রতি আমার উম্মতের পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছিয়ে দেন”।
(সুনান নাসায়ী, হাদীস নং ১২৮২, আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী হাদীসটিকে সহীহ ( সঠিক ) বলেছেন) ।
আমাদের নাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর একটি অধিকার বা প্রাপ্য তাঁর উম্মতের উপর হলো এই যে, তাঁর উম্মতের প্রতিটি মানুষ যেন তাঁর প্রতি সালাম পেশ করে। তাই প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তিকে আদেশ প্রদান করা হয়েছে যে, সে যেন আল্লাহর রাসূলের প্রতি সাধারণভাবে যে কোনো সময়ে সালাম প্রেরণ করে কিংবা কতকগুলি নির্দিষ্ট সময়ে সালাম প্রেরণ করে যেমন, নামাজের তাশাহহোদ পাঠের সময় এবং মাসজিদে প্রবেশ করার সময় বা মাসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় আল্লাহর রাসূলের প্রতি সালাম প্রেরণ করা। এবং নাবী কারীম [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর অনুপস্থিতিতেও তাঁর মৃত্যুবরণ করার পর অথবা তাঁর জীবদ্দশাতেও তাঁর প্রতি সালাম পেশ করার বিধান নির্ধারিত রয়েছে। তবে এই বিধানটি শুধু মাত্র তাঁরই জন্য প্রযোজ্য এবং কেবল মাত্র তাঁরই বৈশিষ্ট্য। অন্য কোনো মানুষের জন্য প্রযোজ্য নয় এবং এটা অন্য কোনো মানুষের বৈশিষ্ট্যও নয়। তাই অন্য কোনো নির্দিষ্ট মানুষকে তার অনুপস্থিতিতে তার প্রতি সালাম পেশ করা বৈধ নয়। শুধু মাত্র নাবী কারীম [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত রয়েছে যে, তাঁকে তাঁর উম্মতের সালাম পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়। এর দ্বারা মুসলিম ব্যক্তি নাবী কারীম [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে সালাম দেওয়ার মর্যাদা লাভ করে থাকে এবং তাঁর প্রতি তার এই সালাম পেশ করাও হয়। যদিও সে আল্লাহর রাসূলের জীবদ্দশাতে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য পথের দূরত্ব অতিক্রম না করে থাকে অথবা যদিও সে তাঁর মৃত্যুবরণ করার পর তাঁর কবরের নিকটে উপস্থিত না হয়ে থাকে।
৪। সালাম এর ভাবার্থ হলো: সকল প্রকারের অমঙ্গল এবং দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্তি, শান্তি, পরিত্রাণ এবং নিরাপত্তা প্রাপ্ত হওয়া।
৫। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি অধিকতর সালাম প্রেরণ করার নিয়মটি হলো এই যে,
اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ أيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ.
অর্থ: “হে নাবী আপনার প্রতি সর্ব প্রকার শান্তি, আল্লাহর করুণা ও তাঁর কল্যাণ অবতীর্ণ হোক”।
পাঠ করা।
অথবা
اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ.
অর্থ: “হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি সর্ব প্রকার শান্তি অবতীর্ণ হোক”।
বলে আল্লাহর রাসূলের প্রতি সালাম পেশ করা।
কিংবা
اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا نَبِيَّ اللهِ.
অর্থ: “হে আল্লাহর নাবী! আপনার প্রতি সর্ব প্রকার শান্তি অবতীর্ণ হোক”।
পাঠ করে আল্লাহর রাসূলের প্রতি সালাম পেশ করা উচিত।
নচেৎ
اَلسَّلاَمُ عَلَى النَّبِيِّ.
অর্থ: “আল্লাহর নাবীর প্রতি সর্ব প্রকার শান্তি অবতীর্ণ হোক”।
উচ্চারণ করেও আল্লাহর রাসূলের প্রতি সালাম পেশ করা যেতে পারে।
তবে মুসলিম ব্যক্তির সঠিক ভাবে জেনে রাখা উচিত যে, আমাদের এই সালাম ফেরেশতাগণের মাধ্যমে আমাদের নাবীর প্রতি পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়। যেমন এর পূর্বে উল্লিখিত হাদীসটির দ্বারা এই বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। সেই হাদীসটি হলো এই যে, আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:
"إِنَّ لِلَّهِ مَلاَئِكَةً سَيَّاحِيْنَ فيِ الأرْضِ يُبَلِّغُونِيْ مِنْ أُمَّتِي السَّلاَمَ ".
(سنن النسائي, رقم الحديث ১২৮২, وصححه الألباني).
অর্থ: আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “আল্লাহর পক্ষ থেকে পৃথিবীতে এমন কতকগুলি ভ্রমণকারী ফেরেশতামণ্ডলী নির্ধারিত রয়েছেন, যাঁরা আমার প্রতি আমার উম্মতের পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছিয়ে দেন”।
(সুনান নাসায়ী, হাদীস নং ১২৮২, আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী হাদীসটিকে সহীহ ( সঠিক ) বলেছেন) ।
৬। কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য এটা জায়েজ বা বৈধ নয় যে, সে সম্মিলিতভাবে, একযোগে একসুরে কোন একটি নির্দিষ্ট পন্থায় আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি সালাম পেশ বা প্রেরণ করবে। তাই প্রত্যেক ব্যক্তি আপন আপন সুরে, পৃথকভাবে এবং স্বতন্ত্রপদ্ধতিতে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি অধিকতর সালাম প্রেরণ করবে। কেননা সম্মিলিতভাবে, একযোগে, একসুরে কোন একটি নির্দিষ্ট পন্থায় আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি সালাম পেশ বা প্রেরণ করার নিয়মটি ইসলামী শরীয়ত বা বিধানের মধ্যে পাওয়া যায় না। তাই এককভাবে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি বেশি বেশি বা অধিকতর সালাম পেশ বা প্রেরণ করাই উচিত।
باب
حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ حَفْصٍ وَمُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ قَالَا حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ فَرْوَةَ مُسْلِمُ بْنُ سَالِمٍ الْهَمْدَانِيُّ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عِيْسَى سَمِعَ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِيْ لَيْلَى قَالَ لَقِيَنِيْ كَعْبُ بْنُ عُجْرَةَ فَقَالَ أَلَا أُهْدِيْ لَكَ هَدِيَّةً سَمِعْتُهَا مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ بَلَى فَأَهْدِهَا لِيْ فَقَالَ سَأَلْنَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ كَيْفَ الصَّلَاةُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الْبَيْتِ فَإِنَّ اللهَ قَدْ عَلَّمَنَا كَيْفَ نُسَلِّمُ عَلَيْكُمْ قَالَ قُوْلُوْا اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ
Narrated `Abdur-Rahman bin Abi Laila:
Ka`b bin Ujrah met me and said, "Shall I not give you a present I got from the Prophet?" `Abdur- Rahman said, "Yes, give it to me." I said, "We asked Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) saying, 'O Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam)! How should one (ask Allah to) send blessings on you, the members of the family, for Allah has taught us how to salute you (in the prayer)?' He said, 'Say: O Allah! Send Your Mercy on Muhammad and on the family of Muhammad, as You sent Your Mercy on Abraham and on the family of Abraham, for You are the Most Praise-worthy, the Most Glorious. O Allah! Send Your Blessings on Muhammad and the family of Muhammad, as You sent your Blessings on Abraham and on the family of Abraham, for You are the Most Praise-worthy, the Most Glorious.' "
পরিচ্ছেদঃ ৬০/১০. পরিচ্ছেদ নাই।
৩৩৭১. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান এবং হুসাইন (রাঃ)-এর জন্য নিম্নোক্ত দু‘আ পড়ে পানাহ চাইতেন আর বলতেন, তোমাদের পিতা ইবরাহীম (আঃ) ইসমাঈল ও ইসহাক (আঃ)-এর জন্য দু‘আ পড়ে পানাহ চাইতেন। আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট হতে পানাহ চাচ্ছি। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১২৯)
باب
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ الْمِنْهَالِ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُعَوِّذُ الْحَسَنَ وَالْحُسَيْنَ وَيَقُوْلُ إِنَّ أَبَاكُمَا كَانَ يُعَوِّذُ بِهَا إِسْمَاعِيْلَ وَإِسْحَاقَ أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
Narrated Ibn `Abbas:
The Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) used to seek Refuge with Allah for Al-Hasan and Al-Husain and say: "Your forefather (i.e. Abraham) used to seek Refuge with Allah for Ishmael and Isaac by reciting the following: 'O Allah! I seek Refuge with Your Perfect Words from every devil and from poisonous pests and from every evil, harmful, envious eye.' "