পরিচ্ছেদঃ ৪/৫৯. বাচ্চাদের পেশাব।
بَابُ يُهَرِيقُ الْمَاءَ عَلَى الْبَوْلِ
৪/০০. পেশাবের উপর পানি গড়ানো।
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ قَالَ وَحَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ فَبَالَ فِي طَائِفَةِ الْمَسْجِدِ فَزَجَرَهُ النَّاسُ فَنَهَاهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا قَضَى بَوْلَهُ أَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِذَنُوبٍ مِنْ مَاءٍ فَأُهْرِيقَ عَلَيْهِ.
আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা জনৈক বেদুঈন এসে মসজিদের এক পাশে পেশাব করে দিল। তা দেখে লোকজন তাকে ধমক দিতে লাগল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিষেধ করলেন। সে তার পেশাব করা শেষ করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আদেশে এর উপর এক বালতি পানি ঢেলে দেয়া হল। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২১)
২২২. উম্মুল মু’মিনীন মা ’আয়িশাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট একটি ছেলে শিশুকে আনা হল। শিশুটি তাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল। তিনি পানি আনালেন এবং এর উপর ঢেলে দিলেন। (৫৪৬৮, ৬০০২, ৬৩৫৫ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২২)
প্রাসঙ্গিক আলোচনা
ছেলে শিশুর পেশাবের হুকুম
অত্র হাদীসে বর্ণিত ছেলে শিশুর পেশাবের হুকুম যতক্ষণ শুধু মায়ের দুধ খায় অন্য কিছু দ্বারা জীবন নির্বাহ করে না তখন পর্যন্ত কার্যকর হবে। যদি মায়ের দুধের সাথে অন্য খাবারও গ্রহণ করে তখন আর এ হুকুমের আওতায় আসবে না। মুসলিমের অপর বর্ণনায় এসেছে, 'সে তখনো খাবার খাওয়ার মতো প্রাপ্ত বয়স্ক হয় হাদীসে উল্লিখিত ‘নম্বহ'- এর অর্থ এখানে অধিকাংশ ফকীহ পানি ছিটিয়ে দেয়া বলেছেন। অবশ্য ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ এখানেও ধোয়ার অর্থই নিয়েছেন। তবে বিশুদ্ধ হচ্ছে পানি ছিটিয়ে দেয়া অর্থই; কারণ হাদীসের অন্যান্য শব্দে স্পষ্টভাবে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা ধুয়ে ফেলেননি।'
তাহনীকের হুকুম
ছোট বাচ্চাদেরকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে আনা হতো সাধারণত 'তাহনীক করার জন্য। তাহনীক হচ্ছে বাচ্চাদের মুখে খেজুর ইত্যাদি চিবিয়ে দেয়া। অনেক আলেমের মতে যা কেবল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য খাস। কারণ, অন্য কারো মুখ ভাইরাসমুক্ত হওয়ার প্রমাণ লাগবে। পরবর্তীতে সাহাবী ও তাবেয়ীদের মধ্যে তাহনীকের বহুল প্রচলন ছিল না। যা প্রমাণ করে যে, এটা কেবল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য নির্দিষ্ট। তবে কোনো কোনো আলেম বিভিন্ন নস ও কোনো কোনো তাবেয়ী ও আলেমগণের দ্বারা তাহনীক হওয়ার কারণে তাহনীককে ব্যাপকভাবে অনুমোদন করেন। যদিও বিষয়টি আমার কাছে পছন্দনীয় নয়। এর পরিবর্তে খেজুর পানি দিয়ে নরম করে মুখে দেওয়া যায়।
হাদীসের শিক্ষা
১. ছোট ছেলে শিশুর পেশাবও নাপাক।
২. তবে তা থেকে পাক হওয়ার ব্যাপারে সামান্যতম ছাড় দেখা যাচ্ছে, সেটা হচ্ছে পানি প্রবাহিত করে ধৌত করতে হবে না। পেশাবের জায়গায় বেশ পরিমাণে পানি ছিটিয়ে দিলেই তা পবিত্র হয়ে যাবে।
৩. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের অত্যন্ত সুন্দর চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।
৪. বাচ্চার পায়খানা অন্যান্য নাপাকীর মতোই ধৌত করতে হবে।
৫. ময়লার স্থান যত দ্রুত সম্ভব ধুয়ে ফেলা উত্তম; যাতে করে ভূলে না যাওয়া হয়।
৬. সাহাবায়ে কেরাম কর্তৃক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বাচ্চাদেরকে দো'আ ও তাহনীকের জন্য নিয়ে আসা; যাতে করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখের পবিত্র লালার বরকত তাদের বাচ্চাদের পেটে প্রবেশ করে।
بَاب بَوْلِ الصِّبْيَانِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، أَنَّهَا قَالَتْ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِصَبِيٍّ، فَبَالَ عَلَى ثَوْبِهِ، فَدَعَا بِمَاءٍ فَأَتْبَعَهُ إِيَّاهُ.
Narrated `Aisha (the mother of faithful believers): A child was brought to Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) and it urinated on the garment of the Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) . The Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) asked for water and poured it over the soiled place.
পরিচ্ছেদঃ ৪/৫৯. বাচ্চাদের পেশাব।
২২৩. উম্মু কায়স বিনত মিহসান (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, তিনি তাঁর এমন একটি ছোট ছেলেকে নিয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এলেন যে তখনো খাবার খেতে শিখেনি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুটিকে তাঁর কোলে বসালেন। তখন সে তাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল। তিনি পানি আনিয়ে এর উপর ছিটিয়ে দিলেন এবং তা ধৌত করলেন না।* (৫৬৯৩; মুসলিম ২/৩১, হাঃ ২৮৭, আহমাদ ২৭০৬৪, ২৭০৭২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৩)
بَاب بَوْلِ الصِّبْيَانِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ أُمِّ قَيْسٍ بِنْتِ مِحْصَنٍ، أَنَّهَا أَتَتْ بِابْنٍ لَهَا صَغِيرٍ، لَمْ يَأْكُلِ الطَّعَامَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَأَجْلَسَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حِجْرِهِ، فَبَالَ عَلَى ثَوْبِهِ، فَدَعَا بِمَاءٍ فَنَضَحَهُ وَلَمْ يَغْسِلْهُ.
Narrated Um Qais bint Mihsin: I brought my young son, who had not started eating (ordinary food) to Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) who took him and made him sit in his lap. The child urinated on the garment of the Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) , so he asked for water and poured it over the soiled (area) and did not wash it.