পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১. বিয়ে করার অনুপ্রেরণা দান। শ্রবণ করিনি এ ব্যাপারে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনঃ ‘তোমরা নারীদের মধ্য হতে নিজেদের পছন্দ মত বিয়ে কর।’ (আন-নিসা ৪:৩)
৫০৬৩. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিন জনের একটি দল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ’ইবাদাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের বাড়িতে আসল। যখন তাঁদেরকে এ সম্পর্কে জানানো হলো, তখন তারা ’ইবাদাতের পরিমাণ কম মনে করল এবং বলল, নবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে আমাদের তুলনা হতে পারে না। কারণ, তাঁর আগের ও পরের সকল গুনাহ্ ক্ষমা ক’রে দেয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি সারা জীবন রাতভর সালাত আদায় করতে থাকব। অপর একজন বলল, আমি সব সময় সওম পালন করব এবং কক্ষনো বাদ দিব না।
অপরজন বলল, আমি নারী সংসর্গ ত্যাগ করব, কখনও বিয়ে করব না। এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট এলেন এবং বললেন, ’’তোমরা কি ঐ সব লোক যারা এমন এমন কথাবার্তা বলেছ? আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি বেশিঅনুগত; অথচ আমি সওম পালন করি, আবার তা থেকে বিরতও থাকি। সালাত আদায় করি এবং নিদ্রা যাই ও মেয়েদেরকে বিয়েও করি। [1] সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের প্রতি বিরাগ পোষণ করবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়।[2] [মুসলিম ১৬/১, হাঃ ১৪০১, আহমাদ ১৩৫৩৪] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৩)
باب التَّرْغِيبُ فِي النِّكَاحِ لِقَوْلِهِ تَعَالَى: {فَانْكِحُوا مَا طَابَ لَكُمْ مِنَ النِّسَاءِ
سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ أَخْبَرَنَا حُمَيْدُ بْنُ أَبِي حُمَيْدٍ الطَّوِيلُ أَنَّه“ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ جَاءَ ثَلاَثَةُ رَهْطٍ إِلٰى بُيُوْتِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُوْنَ عَنْ عِبَادَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا أُخْبِرُوْا كَأَنَّهُمْ تَقَالُّوْهَا فَقَالُوْا وَأَيْنَ نَحْنُ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَدْ غُفِرَ لَه“ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه„ وَمَا تَأَخَّرَ قَالَ أَحَدُهُمْ أَمَّا أَنَا فَإِنِّي أُصَلِّي اللَّيْلَ أَبَدًا وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَصُوْمُ الدَّهْرَ وَلاَ أُفْطِرُ وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَعْتَزِلُ النِّسَاءَ فَلاَ أَتَزَوَّجُ أَبَدًا فَجَاءَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَيْهِمْ فَقَالَ أَنْتُمْ الَّذِينَ قُلْتُمْ كَذَا وَكَذَا أَمَا وَاللهِ إِنِّي لأخْشَاكُمْ للهِ÷ وَأَتْقَاكُمْ لَه“ لَكِنِّي أَصُوْمُ وَأُفْطِرُ وَأُصَلِّي وَأَرْقُدُ وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي.
কিন্তু যদি কেউ সার্বিক দিক থেকে সমর্থ হওয়া সত্ত্বেও রসূলের সুন্নাতের প্রতি অনীহা ও অবিশ্বাসের কারণে বিয়ে পরিত্যাগ করে, তাহলে সে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর তরীকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
[2] আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে যে প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য ও চাহিদা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন সেগুলোকে উপেক্ষা করে আল্লাহর প্রিয়পাত্র হওয়া তো দূরের কথা, মানুষ মানুষের স্তরেই থাকতে পারবে না। মানুষ অতিরিক্ত খাদ্য খেলে বা একেবারেই খাদ্য পরিত্যাগ করলে তার বেঁচে থাকা নিয়েই আশঙ্কা দেখা দিবে। একাধারে সওম পালন করলেও একই অবস্থা দেখা দিবে। তাই আল্লাহর রসূল আমাদেরকে এমন শিক্ষা দিয়েছেন যাতে আমরা মানুষ হিসেবে স্বাভাবিক জীবন যাপন করেও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি। জীবনের যে কোন ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক পন্থা অবলম্বন করলে দুর্ভোগ ও বিপর্যয় আসবে। খ্রীস্টান পাদ্রীদের অনুসৃত বৈরাগ্যবাদ ও দাম্পত্য জীবনের প্রতি লোক-দেখানো অনীহা তাদের অনেককেই যৌনাচারের ক্ষেত্রে পশুর স্তরে নামিয়ে দিয়েছে।
ইসলামে নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের একমাত্র বৈধ পন্থা হল বিবাহ। পরিবার গঠন, সংরক্ষণ ও বংশ বিস্তারের জন্যই বিয়ে ছাড়া আর কোন বিধি সম্মত পথ নেই। এর মাধ্যমেই ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবন পবিত্র ও কলূষমুক্ত হয়ে নৈতিকতার সর্বোচ্চ শিখরে উন্নীত হতে পারে। এ জন্যই ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করলে আল্লাহর চিরাচরিত বিধান এবং নাবী -এর সুন্নাত হিসেবে বিয়ে করা ফরয আর এ অবস্থায় অর্থনৈতিক দিক থেকে সমর্থ না হলে সওম পালন করার বিধান দেয়া হয়েছে। আবার শারীরিক দিক থেকে সমর্থ হলে আর ব্যভিচারে লিপ্ত হবার আশঙ্কা না থাকলে বিয়ে করা মুসতাহাব। আর যৌবিক চাহিদা শূন্য হলে বিয়ে করা মুবাহ্। আবার এ অবস্থায় যদি মহিলার পক্ষ থেকে তার বিয়ের উদ্দেশ্যই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে এরূপ স্বামীর শারীরিকভাবে সমর্থ নারীকে বিয়ে করা মাকরূহ।
কিন্তু যদি কেউ সার্বিক দিক থেকে সমর্থ হওয়া সত্ত্বেও রসূলের সুন্নাতের প্রতি অনীহা ও অবিশ্বাসের কারণে বিয়ে পরিত্যাগ করে, তাহলে সে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর তরীকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
Narrated Anas bin Malik:
A group of three men came to the houses of the wives of the Prophet (ﷺ) asking how the Prophet (ﷺ) worshipped (Allah), and when they were informed about that, they considered their worship insufficient and said, "Where are we from the Prophet (ﷺ) as his past and future sins have been forgiven." Then one of them said, "I will offer the prayer throughout the night forever." The other said, "I will fast throughout the year and will not break my fast." The third said, "I will keep away from the women and will not marry forever." Allah's Messenger (ﷺ) came to them and said, "Are you the same people who said so-and-so? By Allah, I am more submissive to Allah and more afraid of Him than you; yet I fast and break my fast, I do sleep and I also marry women. So he who does not follow my tradition in religion, is not from me (not one of my followers).
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১. বিয়ে করার অনুপ্রেরণা দান। শ্রবণ করিনি এ ব্যাপারে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনঃ ‘তোমরা নারীদের মধ্য হতে নিজেদের পছন্দ মত বিয়ে কর।’ (আন-নিসা ৪:৩)
৫০৬৪. যুহরী (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’উরওয়াহ (রহ.) আমাকে অবহিত করেছেন যে, তিনি ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে আল্লাহর এ বাণী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ ’’যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীমদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে নারীদের মধ্য হতে নিজেদের পছন্দমত দুই-দুই, তিন-তিন ও চার-চার জনকে বিয়ে কর, কিন্তু যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, তোমরা সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে কিংবা তোমাদের অধীনস্থ দাসীকে; এটাই হবে অবিচার না করার কাছাকাছি।’’ (সূরাহঃ আন-নিসাঃ ৩)
’আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, হে ভাগ্নে! এক ইয়াতীম বালিকা এমন একজন অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে ছিল, যে তার সম্পদ ও রূপের প্রতি আকৃষ্ট ছিল। সে তাকে যথোচিতের চেয়ে কম মাহর দিয়ে বিয়েকরার ইচ্ছা করে। তখন লোকদেরকে নিষেধ করা হলো ঐসব ইয়াতীমদের বিয়ে করার ব্যাপারে। তবে যদি তারা সুবিচার করে ও পূর্ণ মাহর আদায় করে (তাহলে বিয়ে করতে পারবে)। (অন্যথায়) তাদের বাদ দিয়ে অন্য নারীদের বিয়ে করার আদেশ করা হলো। [২৪৯৪] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৪)
باب التَّرْغِيبُ فِي النِّكَاحِ لِقَوْلِهِ تَعَالَى: {فَانْكِحُوا مَا طَابَ لَكُمْ مِنَ النِّسَاءِ
عَلِيٌّ سَمِعَ حَسَّانَ بْنَ إِبْرَاهِيمَ عَنْ يُوْنُسَ بْنِ يَزِيدَ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ أَنَّه“ سَأَلَ عَائِشَةَ عَنْ قَوْلِه„ تَعَالٰى : (وَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لاَ تُقْسِطُوا فِي الْيَتَامَى فَانْكِحُوا مَا طَابَ لَكُمْ مِنَ النِّسَاءِ مَثْنَى وَثُلاَثَ وَرُبَاعَ فَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لاَ تَعْدِلُوا فَوَاحِدَةً أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ لاَ تَعُولُوا). (سورة النساء : 3)
قَالَتْ يَا ابْنَ أُخْتِي الْيَتِيمَةُ تَكُوْنُ فِي حَجْرِ وَلِيِّهَا فَيَرْغَبُ فِي مَالِهَا وَجَمَالِهَا يُرِيدُ أَنْ يَتَزَوَّجَهَا بِأَدْنٰى مِنْ سُنَّةِ صَدَاقِهَا فَنُهُوْا أَنْ يَنْكِحُوْهُنَّ إِلاَّ أَنْ يُقْسِطُوْا لَهُنَّ فَيُكْمِلُوْا الصَّدَاقَ وَأُمِرُوْا بِنِكَاحِ مَنْ سِوَاهُنَّ مِنَ النِّسَاءِ.
Narrated 'Urwa:
that he asked `Aisha about the Statement of Allah: 'If you fear that you shall not be able to deal justly with the orphan girls, then marry (other) women of your choice, two or three or four; but if you fear that you shall not be able to deal justly (with them), then only one, or (the captives) that your right hands possess. That will be nearer to prevent you from doing injustice.' (4.3) `Aisha said, "O my nephew! (This Verse has been revealed in connection with) an orphan girl under the guardianship of her guardian who is attracted by her wealth and beauty and intends to marry her with a Mahr less than what other women of her standard deserve. So they (such guardians) have been forbidden to marry them unless they do justice to them and give them their full Mahr, and they are ordered to marry other women instead of them."
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/২. রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী, ‘‘তোমাদের মধ্যে যাদের বিয়ের সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে। কেননা, বিয়ে তার দৃষ্টিকে নিম্নমুখী রাখতে সাহায্য করবে এবং তার লজ্জাস্থান রক্ষা করবে এবং যার প্রয়োজন নেই সে বিয়ে করবে কিনা?’’
৫০৬৫. ’আলক্বামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন আমি ’আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম, ’উসমান (রাঃ) তাঁর সঙ্গে মিনাতে দেখা করে বলেন, হে আবূ ’আবদুর রহমান! আপনার সাথে আমার কিছু দরকার আছে। অতঃপর তারা দু’জনে এক পাশে গেলেন। তারপর ’উসমান (রাঃ) বললেন, হে আবূ ’আবদুর রহমান! আমি কি আপনার সঙ্গে এমন একটি কুমারী মেয়ের বিয়ে দিব, যে আপনাকে আপনার অতীত কালকে স্মরণ করিয়ে দিবে? ’আবদুল্লাহ্ যখন দেখলেন, তার এ বিয়ের দরকার নেই তখন তিনি আমাকে ’হে ’আলক্বামাহ’ বলে ইঙ্গিত করলেন। আমি তাঁর কাছে গিয়ে বলতে শুনলাম, আপনি আমাকে এ কথা বলছেন (এ ব্যাপারে) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন, হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে এবং যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ’সওম’ পালন করে। কেননা, সওম যৌন ক্ষমতাকে দমন করে। [১৯০৫; মুসলিম ১৬/১, হাঃ ১৪০০, আহমাদ ৪০৩৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৫)
بَاب قَوْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ لأَ÷نَّه“ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَهَلْ يَتَزَوَّجُ مَنْ لاَ أَرَبَ لَه“ فِي النِّكَاحِ.
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ قَالَ حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ كُنْتُ مَعَ عَبْدِ اللهِ فَلَقِيَه“ عُثْمَانُ بِمِنًى فَقَالَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمٰنِ إِنَّ لِي إِلَيْكَ حَاجَةً فَخَلَوَا فَقَالَ عُثْمَانُ هَلْ لَكَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمٰنِ فِي أَنْ نُزَوِّجَكَ بِكْرًا تُذَكِّرُكَ مَا كُنْتَ تَعْهَدُ فَلَمَّا رَأٰى عَبْدُ اللهِ أَنْ لَيْسَ لَه“ حَاجَةٌ إِلٰى هٰذَا أَشَارَ إِلَيَّ فَقَالَ يَا عَلْقَمَةُ فَانْتَهَيْتُ إِلَيْهِ وَهُوْ يَقُوْلُ أَمَا لَئِنْ قُلْتَ ذ‘لِكَ لَقَدْ قَالَ لَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّه“ لَه“ وِجَاءٌ.
Narrated 'Alqama:
While I was with `Abdullah, `Uthman met him at Mina and said, "O Abu `Abdur-Rahman ! I have something to say to you." So both of them went aside and `Uthman said, "O Abu `Abdur-Rah. man! Shall we marry you to a virgin who will make you remember your past days?" When `Abdullah felt that he was not in need of that, he beckoned me (to join him) saying, "O 'Alqama!" Then I heard him saying (in reply to `Uthman), "As you have said that, (I tell you that) the Prophet (ﷺ) once said to us, 'O young people! Whoever among you is able to marry, should marry, and whoever is not able to marry, is recommended to fast, as fasting diminishes his sexual power.
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৩. বিয়ে করার যার সামর্থ্য নেই, সে সওম পালন করবে।
৫০৬৬. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে আমরা কতক যুবক ছিলাম; আর আমাদের কোন কিছু ছিল না। এই হালতে আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে যুব সম্প্রদায় [1]! তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে। কেননা, বিয়ে তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান হিফাযত করে এবং যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম পালন করে। কেননা, সওম তার যৌনতাকে দমন করবে। [১৯০৫](আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৬)
بَاب مَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ الْبَاءَةَ فَلْيَصُمْ.
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ قَالَ حَدَّثَنِي عُمَارَةُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ دَخَلْتُ مَعَ عَلْقَمَةَ وَالأَسْوَدِ عَلٰى عَبْدِ اللهِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم شَبَابًا لاَ نَجِدُ شَيْئًا فَقَالَ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّه“ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّه“ لَه“ وِجَاءٌ.
আমাদের লোকেদের মতে যুবক-যুবতী বলতে তাদেরকে বোঝানো হয়েছে যারা বালেগ [পূর্ণ বয়স্ক] হয়েছে এবং ত্রিশ বছর বয়স পার হয়ে যায়নি।
আর এ যুবক-যুবতীদের বিয়ের জন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকীদ করলেন কেন, তার কারণ সম্পর্কে আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী তার বিশ্ববিখ্যাত বুখারীর ভাষ্য গ্রন্থ ‘‘উমদাতুল ক্বারী’’ গ্রন্থে লিখেছেনঃ
‘‘হাদীসে কেবলমাত্র যুবক-যুবতীদের বিয়ে করতে বলার কারণ এই যে, বুড়োদের অপেক্ষা এ বয়সের লোকেদের মধ্যেই বিয়ে করার প্রবণতা ও দাবী অনেক বেশী বর্তমান দেখা যায়।
যুবক-যুবতীদের বিয়ে যৌন সম্ভোগের পক্ষে খুবই স্বাদপূর্ণ হয়। মুখের গন্ধ খুবই মিষ্টি হয়, দাম্পত্য জীবন যাপন খুবই সুখকর হয়, পারস্পরিক কথাবার্তা খুব আনন্দদায়ক হয়, দেখতে খুবই সৌন্দর্যমন্ডিত হয়, স্পর্শ খুব আরামদায়ক হয় এবং স্বামী বা স্ত্রী তার জুড়ির চরিত্রে এমন কতগুলো গুণ সৃষ্টি করতে পারে যা খুবই পছন্দনীয় হয়, আর এ বয়সের দাম্পত্য ব্যাপার প্রায়ই গোপন রাখা ভাল লাগে। যুবক বয়স যেহেতু যৌন সম্ভোগের জন্য মানুষকে উন্মুখ করে দেয়। এ কারণে তার দৃষ্টি যে কোন মেয়ের দিকে আকৃষ্ট হতে পারে এবং সে যৌন উচ্ছৃঙ্খলতায় পড়ে যেতে পারে। এজন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বয়সের ছেলেমেয়েকে বিয়ে করতে তাকীদ করেছেন এবং বলেছেনঃ বিয়ে করলে চোখ যৌন সুখের সন্ধানে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াবে না এবং বাহ্যত তার কোন ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। এ কারণে রসল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদিও কথা শুরু করেছেন যুবক মাত্রকেই সম্বোধন করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ের এ তাকীদকে নির্দিষ্ট করেছেন কেবল এমন সব যুবক-যুবতীদের জন্য যাদের বিয়ের সামর্থ্য আছে। আর যারা বিয়ের ব্যয় বহনের সঙ্গতি রাখে না তারা সওম পালন করবে। সওম পালন তাদের যৌন উত্তেজনা দমন করবে। কারণ পানাহারের মাত্রা কম হলে যৌন চাহিদা প্রদমিত হয়।
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১- এই হাদীসটির মধ্যে (الْبَاءَة) শব্দটি ভরণপোষণের অর্থ নেওয়া হয়েছে। সুতরাং যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর ভরণপোষণের ক্ষমতা রাখবে সে ব্যক্তি বিবাহ করবে। আর যে ব্যক্তি বিবাহ করার সামর্থ্য রাখবে না, সে ব্যক্তি রোজা রাখবে। আর যে ব্যক্তির মধ্যে যৌন ক্ষমতা বা সঙ্গমের ক্ষমতা নেই সে ব্যক্তির রোজা রাখার প্রয়োজন নেই। যেহেতু তার যৌন ক্ষমতা দমন করার দরকার নেই। এই ক্ষেত্রে (الْبَاءَة) শব্দটির ভরণপোষণের অর্থে নেওয়া অপরিহার্য হয়ে যাবে। তবে ইসলাম ধর্মের কতকগুলি বিদ্বান (আল্লাহ তাঁদের প্রতি দয়া করুন) বলেছেন:
বিবাহ করার সামর্থ্য বলতে দুইটি বিষয় বুঝানো হয়:
প্রথম বিষযটি হলো: বিবাহ করার সামর্থ্য এবং নিজের স্ত্রীর ভরণপোষণের ক্ষমতা।
দ্বিতীয় বিষযটি হলো: যৌন ক্ষমতা বা সংগমের ক্ষমতা।
সুতরাং যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর ভরণপোষণের ক্ষমতা রাখবে এবং যৌন ক্ষমতা বা সঙ্গমের ক্ষমতা রাখবে, সে ব্যক্তি বিবাহ করবে।
এই হাদীসটির মধ্যে (وِجَاءٌ) শব্দটির দ্বারা যৌন ক্ষমতা দমন ও যৌন কুপ্রবৃত্তির অমঙ্গল এবং অশালীন কর্ম নিয়ন্ত্রণ করার অর্থ নেওয়া হয়েছে।
২- যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর ভরণপোষণের ক্ষমতা রাখবে এবং যৌন ক্ষমতা বা সংগমের ক্ষমতা রাখবে, সে ব্যক্তি যেন বিবাহ করে, তার প্রতি এই হাদীসটি গভীরভাবে উৎসাহ প্রদান করে।
৩- মানব জীবনে বিবাহের প্রভাব অতি গভীর; তাই এর দ্বারা লজ্জাস্থান এবং দৃষ্টির অমঙ্গল হতে সুন্দর ও সঠিক পন্থায় রক্ষা পাওয়া যায়। আর আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির চর্চা হয় এবং যৌন কুপ্রবৃত্তির অমঙ্গল হতে পরিত্রাণও পাওয়া যায়।
Narrated `Abdullah:
We were with the Prophet (ﷺ) while we were young and had no wealth whatever. So Allah's Messenger (ﷺ) said, "O young people! Whoever among you can marry, should marry, because it helps him lower his gaze and guard his modesty (i.e. his private parts from committing illegal sexual intercourse etc.), and whoever is not able to marry, should fast, as fasting diminishes his sexual power."
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৪. বহুবিবাহ
৫০৬৭. ’আত্বা (রহ.) বলেন, আমরা ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-এর সঙ্গে ’সারিফ’ নামক স্থানেমাইমূনাহ (রাঃ)-এর জানাযায় হাজির ছিলাম। ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, ইনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী। কাজেই যখন তোমরা তাঁর জানাযাহ উঠাবে তখন ধাক্কা-ধাক্কি এবং তা জোরে নাড়া-চাড়া করো না; বরং ধীরে ধীরে নিয়ে চলবে। কেননা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নয়জন সহধর্মিণী ছিলেন। [1] আট জনের সঙ্গেতিনি পালাক্রমে রাত্রি যাপন করতেন। আর একজনের সঙ্গে রাত্রি যাপনের কোন পালা ছিল না। [2] [মুসলিম ১৭/১১৪, হাঃ ১৪৬৫] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৭)
بَاب كَثْرَةِ النِّسَاءِ
إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوْسٰى أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوْسُفَ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ قَالَ حَضَرْنَا مَعَ ابْنِ عَبَّاسٍ جِنَازَةَ مَيْمُوْنَةَ بِسَرِفَ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ هٰذِه„ زَوْجَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا رَفَعْتُمْ نَعْشَهَا فَلاَ تُزَعْزِعُوْهَا وَلاَ تُزَلْزِلُوْهَا وَارْفُقُوْا فَإِنَّه“ كَانَ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تِسْعٌ كَانَ يَقْسِمُ لِثَمَانٍ وَلاَ يَقْسِمُ لِوَاحِدَةٍ.
১। কোন পুরুষ যখন দীর্ঘদিনের বিবাহিত জীবনে স্ত্রীর কারণে সন্তানাদি থেকে বঞ্চিত থাকে, তখন এ সীমাহীন বঞ্চনার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে অন্য নারীকে বিবাহ করা।
২। স্ত্রী যদি চিররুগ্না হয়ে পড়ে কিংবা পাগল হয়ে যায় কিংবা বয়সের কারণে যৌনকর্মে আসক্তিহীন হয়ে যায় সেক্ষেত্রে সবল সুঠাম দেহের অধিকারী কোন পুরুষ কি আরেকটি বিবাহ না করে যৌন উত্তেজনার আগুনে আজীবন জ্বলতে থাকবে? নাকি গার্লফ্রেন্ড ও প্রণয়িনী জোগাড় করে অশ্লীলতার বিস্তার ঘটিয়ে সমাজকে অনৈতিকতায় ভরে তুলবে?
উল্লেখ্য অনুরূপভাবে স্বামী যদি চিররুগ্ন হয়ে পড়ে কিংবা পাগল হয়ে যায় কিংবা বয়সের কারণে যৌনকর্মে আসক্তিহীন হয়ে যায় সেক্ষেত্রে তার ঘর সংসার করা কিংবা না করার ব্যাপারে স্ত্রীরও স্বাধীনতা রয়েছে। সে ইচ্ছে করলে খুলা ত্বলাক করিয়ে নিতে পারবে। অতএব একাধিক বিয়ের বিষয়টি শুধুমাত্র সেই স্বামীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য যার শারীরিক ও আর্থিক সহ সার্বিক দিক দিয়ে সামর্থ্য রয়েছে।
৩। যুদ্ধের ফলে- যেমনটি প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে ইউরোপে ঘটেছিল- পুরুষের সংখ্যা কমে গেলে বহু নারী অবিবাহিতা থেকে যাবে যদি একাধিক স্ত্রী গ্রহণের অনুমতি না থাকে। সেক্ষেত্রে ঐ সকল নারীরা অবৈধ যৌনাচারে লিপ্ত হয়ে গোটা সমাজকে কলূষিত করে তুলবে।
৪। কোন কোন পুরুষ অন্যান্য পুরুষদের চেয়ে অধিক দৈহিক শক্তির অধিকারী। এরূপ পুরুষদের জন্য একজন স্ত্রী নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। কেননা, ইচ্ছে করেও সে তার জৈবিক শক্তিকে চেপে রাখতে পারে না। এমন পুরুষদের জন্য আইনগতভাবেই দ্বিতীয় বিবাহের অনুমতি থাকা বাঞ্ছনীয়। নতুবা এসব পুরুষের দ্বারা সমাজে কলূষতার বিস্তার ঘটবে।
৫। কোন শ্রমজীবী মনে করতে পারে যে, তার আরেকজন স্ত্রী হলে শ্রমের কাজে তাকে সাহায্য করতে পারবে, এমতাবস্থায় দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করা তার অর্থনৈতিক প্রয়োজন। এভাবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আরো অনেক প্রয়োজন দেখা দিতে পারে যার কারণে এক ব্যক্তি এক স্ত্রী বর্তমান থাকতে আরো স্ত্রী গ্রহণে বাধ্য হতে পারে।
ইসলাম একাধিক বিবাহের অনুমতি দিয়েছে যা বহুবিধ কারণে ন্যায়সঙ্গত ও যুক্তিযুক্ত। কোন নারী যদি এ বিধানকে অবজ্ঞা করে তবে তার ঈমানের ব্যাপারে আশংকা রয়েছে।
চারের অধিক স্ত্রী গ্রহণের নিষেধাজ্ঞা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য প্রযোজ্য ছিল না। এ সম্পর্কে সূরা আহযাবের ৫০ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন- হে নাবী! আমি তোমার জন্য বৈধ করেছি তোমার স্ত্রীগণকে যাদের মাহর তুমি প্রদান করেছ, আর বৈধ করেছি সে সব মহিলাদেরকেও যারা আল্লাহর দেয়া দাসীদের মধ্য হতে তোমার মালিকানাভুক্ত হবে, তোমার সে সব চাচাতো, ফুফাতো, মামাতো, খালাতো বোনদেরকেও (বিবাহ বৈধ করেছি) যারা তোমার সাথে হিজরত করে এসেছে এবং কোন মু’মিন নারী নাবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিকট নিজেকে পেশ করলে এবং নাবী তাকে বিয়ে করতে চাইলে সেও বৈধ- এটা বিশেষ করে তোমার জন্য, অন্য মু’মিনদের জন্য নয়। মু’মিনদের স্ত্রী আর তাদের দাসীদের ব্যাপারে কী সব বিধি-বিধান দিয়েছি তা আমি জানি, (আমি তোমাকে সে সব বিধি বিধানের ঊর্ধ্বে রেখেছি) যাতে তোমার পক্ষে কোন প্রকার সংকীর্ণতার অসুবিধা না থাকে; আর আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়াবান।
স্ত্রী গ্রহণের ব্যাপারে আল্লাহ যে নাবীর জন্য বিশেষ বিধানের ব্যবস্থা করলেন এখানে আমরা তার তাৎপর্য ও কারণ বিশ্লেষণের চেষ্টা করব। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ২৫ বছর বয়সে ৪০ বছর বয়স্কা এক পৌঢ়াকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে একাদিক্রমে ২৫টি বছর তাঁর সঙ্গে অত্যন্ত পরিতৃপ্তিময় দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করেন। এ পৌঢ়ার ইন্তেকাল হলে সাওদা (রাঃ) নাম্নী এক বয়োবৃদ্ধাকে বিয়ে করেন। পূর্ণ ৪টি বছর এই বয়োবৃদ্ধাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একমাত্র স্ত্রী হয়েছিলেন। অপরদিকে নাবীর উপর অর্পিত হয়েছিল একটি সম্পূর্ণ আনাড়ি ও সেকেলে জাতিকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এক উচ্চ, উন্নত, পবিত্র ও সুসভ্য জাতি হিসেবে গড়ে তোলার বিরাট ও বিশাল দায়িত্ব। এজন্য শুধু পুরুষদেরকে গড়ে তোলাই যথেষ্ট ছিল না। নারীদেরকে তৈরিরও প্রয়োজন ছিল। অথচ ইসলামী সমাজে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমতাবস্থায় নারী সমাজের মাঝে দ্বীনী দা‘ওয়াতের কাজ ব্যাপকভাবে পরিচালনার জন্য প্রথমত কিছু সংখ্যক নারীকে শিক্ষা-প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে তোলার একান্ত প্রয়োজন ছিল। আর বিভিন্ন বয়সের কিছু সংখ্যক নারীকে স্ত্রী হিসেবে একান্তে প্রশিক্ষিত করা ছাড়া অন্য কোন উপায়ে এ কাজ সঠিকভাবে সফল করা সম্ভব ছিল না। আর তা একজন নারীর পক্ষে একেবারেই অসম্ভব ছিল, ফলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-র জন্য একাধিক নারীকে বিবাহের প্রয়োজন দ্বীনী প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তদুপরি জাহিলী জীবন ব্যবস্থা খতম করে তদস্থলে ইসলামী জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্যে বিভিন্ন গোত্র-পরিবারের সঙ্গে বৈবাহিক আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপন করে সম্পর্ক পাকাকরণ ও শত্রুতার অবসান ঘটানোর প্রয়োজন ছিল খুব বেশি। এ দৃষ্টিতে বিচার করলে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব বিয়ে করেছিলেন সেসব বিবাহ ইসলামের সমাজ সংগঠন ও প্রসারে খুবই কল্যাণকর প্রমাণিত হয়েছিল। ‘আয়িশাহ ও হাফসাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বিয়ে করে তিনি আবূ বাক্র ও ‘উমার (রাঃ)-এর সঙ্গে সম্পর্ক অধিক দৃঢ় ও স্থায়ী করে নিয়েছিলেন। উম্মু সালামাহ (রাঃ)-ও ছিলেন এমন পরিবারের কন্যা যার সাথে আবূ জাহ্ল ও খালিদ বিন ওয়ালীদের নিকটতর সম্পর্ক ছিল। আর উম্মু হাবীবাহ (রাঃ) ছিলেন আবূ সুফ্ইয়ানের কন্যা। এসব বিবাহ সম্পর্কিত গোত্র-পরিবারগুলোর তাঁর সাথে শত্রুতা-বিদ্বেষের তীব্রতা অনেকাংশে কমে গিয়েছিল। উম্মে হাবীবা (রাঃ)-কে বিয়ে করার পর আবূ সুফ্ইয়ান আর কোনদিনই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়নি। সাফিয়া, জুয়াইরিয়া ও রায়হানা (রাযি.) ইয়াহূদী পরিবারের মেয়ে ছিলেন। তাদেরকে মুক্তি দিয়ে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাদেরকে বিয়ে করলেন তখন ইয়াহূদীদের শত্রুতাপূর্ণ আচরণ স্তিমিত হয়ে গেল। এর কারণ ছিল এই যে, এ সময় আরব ঐতিহ্য অনুযায়ী জামাতা কেবল কনের পরিবারের নয়, গোটা গোত্রেরই জামাতা হত এবং জামাতার সঙ্গে লড়াই সংঘর্ষ করা ছিল অত্যন্ত লজ্জাকর ব্যাপার। আর পোষ্যপুত্রের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে কেউ বিয়ে করতে পারবে না- এ জাহিলী রসম রেওয়াজকে চূর্ণ করার জন্য আল্লাহ তা‘আলা যায়দ বিন হারিসাহ (রাঃ)-এর তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর সঙ্গে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন যা কুরআনের সূরা আহযাবে বর্ণিত হয়েছে। নাবী পত্নীগণ কর্তৃক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত ইসলামী বিধি-বিধান এক অক্ষয় সম্পদ হিসেবে হাদীসের কিতাবগুলোতে বিদ্যমান আছে। এ ক্ষেত্রে বিশেষতঃ ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর অবদান শতাব্দীর পর শতাব্দীব্যাপী মানুষের মাঝে ইসলামের আলো বিকীরণ করে চলেছে। উল্লেখ্য নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতোগুলি বিয়ে আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ীই করেছিলেন এবং চারাধিক বিয়ে তাঁর জন্যই খাস ছিল। এছাড়া তিনি যদি কামুক [না‘ঊযুবিল্লাহ্] হতেন তাহলে একজন অর্ধ বয়সী নারীকে বিয়ে করতেন না এবং শুধুমাত্র তাকে নিয়েই দীর্ঘ দিন সন্তুষ্ট থাকতেন না। এরূপ হলে তিনি জাহেলী যুগের মক্কার কাফিরদের থেকে তাঁর ন্যায় পরায়ণতা ও চারিত্রিক গুণাবলীর কারণে আল-আমীন উপাধিও পেতেন না।
[2] যার সঙ্গে রাত্রি যাপনের পালা ছিল না তিনি হলেন সাউদা বিনতে যাম‘আ (রাঃ), বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি নিজের পালায় ছাড় দিয়ে তা ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে দান করেছিলেন।
Narrated 'Ata:
We presented ourselves along with Ibn `Abbas at the funeral procession of Maimuna at a place called Sarif. Ibn `Abbas said, "This is the wife of the Prophet (ﷺ) so when you lift her bier, do not Jerk it or shake it much, but walk smoothly because the Prophet (ﷺ) had nine wives and he used to observe the night turns with eight of them, and for one of them there was no night turn."
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৪. বহুবিবাহ
৫০৬৮. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একই রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সকল স্ত্রীর নিকট যেতেন আর তাঁর ছিল ন’জন স্ত্রী। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৫) অন্য সনদে ’মুসাদ্দাদ’ এর জায়গায় খলীফা এর নামআছে। [২৬৮] (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৮)
بَاب كَثْرَةِ النِّسَاءِ
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَطُوْفُ عَلٰى نِسَائِه„ فِي لَيْلَةٍ وَاحِدَةٍ وَلَه“ تِسْعُ نِسْوَةٍ و قَالَ لِي خَلِيفَةُ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ عَنْ قَتَادَةَ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.
Narrated Anas:
The Prophet (ﷺ) used to go round (have sexual relations with) all his wives in one night, and he had nine wives.
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৪. বহুবিবাহ
৫০৬৯. সা’ঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) আমাকে বললেন, তুমি কি বিয়ে করেছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, বিয়ে কর। কারণ, এই উম্মাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তির অধিক সংখ্যক স্ত্রী ছিল। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৯)
بَاب كَثْرَةِ النِّسَاءِ
عَلِيُّ بْنُ الْحَكَمِ الأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ رَقَبَةَ عَنْ طَلْحَةَ الْيَامِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ قَالَ لِي ابْنُ عَبَّاسٍ هَلْ تَزَوَّجْتَ قُلْتُ لاَ قَالَ فَتَزَوَّجْ فَإِنَّ خَيْرَ هٰذِهِ الأُمَّةِ أَكْثَرُهَا نِسَاءً.
Narrated Sa`id bin Jubair:
Ibn `Abbas asked me, "Are you married?" I replied, "No." He said, "Marry, for the best person of this (Muslim) nation (i.e., Muhammad) of all other Muslims, had the largest number of wives."
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৫. যদি কেউ কোন নারীকে বিয়ে করার উদ্দেশে হিজরাত করে কিংবা কোন নেক কাজ করে তবে সে তার নিয়্যত অনুসারে কর্মফল) পাবে।
৫০৭০. ’উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিয়্যতের ওপরেই কাজের ফলাফল নির্ভর করে এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিয়্যত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। কাজেই যার হিজরত আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টির জন্য, তার হিজরত আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের জন্যই। আর যার হিজরত পার্থিব লাভের জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিয়ে করার জন্য, তার হিজরতের ফল সেটাই, যে উদ্দেশে সে হিজরত করেছে। [১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০০)
بَاب مَنْ هَاجَرَ أَوْ عَمِلَ خَيْرًا لِتَزْوِيجِ امْرَأَةٍ فَلَه“ مَا نَوَى
يَحْيٰى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ يَحْيٰى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْحَارِثِ عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَقَّاصٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْعَمَلُ بِالنِّيَّةِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَو‘ى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُه“ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه„ فَهِجْرَتُه“ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه„ وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُه“ إِلٰى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا فَهِجْرَتُه“ إِلٰى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ.
Narrated `Umar bin Al-Khattab:
The Prophet (ﷺ) said, "The rewards (of deeds) are according to the intention, and everybody will get the reward for what he has intended. So whoever emigrated for Allah's and His Apostle's sake, his emigration was for Allah and His Apostle; and whoever emigrated for worldly benefits, or to marry a woman, then his emigration was for the thing for what he emigrated for."
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৬. এমন দরিদ্র লোকের সঙ্গে বিয়ে যিনি কুরআন ও ইসলাম সম্পর্কে অবহিত।
فِيهِ سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
সাহল ইবনু সা’দ নবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
৫০৭১. ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সঙ্গে জিহাদে অংশ গ্রহণ করতাম। আমাদের সঙ্গে আমাদের বিবিগণ থাকত না। তাই আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি খাসি হয়ে যাব? তিনি আমাদেরকে তা করতে নিষেধ করলেন। [৪৬১৫] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০১)
بَاب تَزْوِيجِ الْمُعْسِرِ الَّذِي مَعَهُ الْقُرْآنُ وَالإِسْلاَمُ
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنّٰى حَدَّثَنَا يَحْيٰى حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي قَيْسٌ عَنْ ابْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ كُنَّا نَغْزُوْ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْسَ لَنَا نِسَاءٌ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلاَ نَسْتَخْصِي فَنَهَانَا عَنْ ذَلِكَ.
Narrated Ibn Masud:
We used to fight in the holy battles in the company of the Prophet (ﷺ) and we had no wives with us. So we said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! Shall we get castrated?" The Prophet (ﷺ) forbade us to do so.
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৭. কেউ যদি তার মুসলিম) ভাইকে বলে, আমার স্ত্রীদের মধ্যে যাকে চাও, আমি তোমার জন্য তাকে ত্বলাক্ব দেব।
৫০৭২. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আবদুর রহমান ইবনু ’আওফ (রাঃ) মদিনায় আসলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামতাঁর এবং সা’দ ইবনু রাবী’ আল আনসারী (রাঃ)-এর মধ্যে ভ্রাতৃ বন্ধন গড়ে দিলেন। এ আনসারীর দু’জন স্ত্রী ছিল। সা’দ (রাঃ) ’আবদুর রহমান (রাঃ)-কে নিবেদন করলেন, আপনি আমার স্ত্রী এবং সম্পদের অর্ধেক নিন। তিনি উত্তরে বললেন, আল্লাহ্ আপনার স্ত্রী ও সম্পদে বারাকাত দিন। আপনি আমাকে বাজার দেখিয়ে দিন। এরপর তিনি বাজারে গিয়ে পনির ও মাখনের ব্যবসা করে লাভবান হলেন। কিছুদিন পরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর শরীরে হলুদ রং-এর দাগ দেখতে পেলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, হে ’আবদুর রহমান। তোমার কী হয়েছে? তিনি উত্তরে বললেন, আমি এক আনসারী মেয়েকে বিয়ে করেছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কত মাহর দিয়েছ। তিনি উত্তরে বললেন, খেজুরের আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওয়ালীমার ব্যবস্থা কর, একটি বকরী দিয়ে হলেও।[1] [২০৪৯] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০২)
بَاب قَوْلِ الرَّجُلِ لأَ÷خِيهِ انْظُرْ أَيَّ زَوْجَتَيَّ شِئْتَ حَتّٰى أَنْزِلَ لَكَ عَنْهَا رَوَاه“ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ عَوْفٍ
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ قَدِمَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ عَوْفٍ فَآخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَه“ وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ الأَنْصَارِيِّ وَعِنْدَ الأَنْصَارِيِّ امْرَأَتَانِ فَعَرَضَ عَلَيْهِ أَنْ يُنَاصِفَه“ أَهْلَه“ وَمَالَه“ فَقَالَ بَارَكَ اللهُ لَكَ فِي أَهْلِكَ وَمَالِكَ دُلُّوْنِي عَلَى السُّوْقِ فَأَتَى السُّوْقَ فَرَبِحَ شَيْئًا مِنْ أَقِطٍ وَشَيْئًا مِنْ سَمْنٍ فَرَآهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ أَيَّامٍ وَعَلَيْهِ وَضَرٌ مِنْ صُفْرَةٍ فَقَالَ مَهْيَمْ يَا عَبْدَ الرَّحْمٰنِ فَقَالَ تَزَوَّجْتُ أَنْصَارِيَّةً قَالَ فَمَا سُقْتَ إِلَيْهَا قَالَ وَزْنَ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ قَالَ أَوْلِمْ وَلَوْ بِشَاةٍ.
বিয়েতে ‘মাহর’ অবশ্য দেয় হিসেবে ধার্য করার এবং তা যথারীতি আদায় করার জন্য ইসলামে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেনঃ {فَمَااسْتَمْتَعْتُمْبِهِمِنْهُنَّفَآتُوهُنَّأُجُورَهُنَّفَرِيضَةً} ‘‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের কাছ থেকে যে যৌন স্বাদ গ্রহণ কর, তার বিনিময়ে তাদের মাহর ফরয হিসেবেই আদায় কর’’- (সূরা আন্-নিসা ৪ঃ ২৪)।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিয়ের সময় অবশ্য পূরণীয় শর্ত হচ্ছে তা, যার বিনিময়ে তোমরা স্ত্রীর যৌন অঙ্গ নিজের জন্য হালাল করে নাও। আর তা হচ্ছে মাহর- (মুসনাদে আহমাদ)। উল্লেখ্য ইসলামী শারী‘আত অনুযায়ী মাহর আদায় করা আবশ্যকীয়। কিন্তু বিয়ের দিনেই আদায় করতে হবে এমনটি অপরিহার্য নয়। বিয়ের দিনে স্ত্রীর নিকট যাবার পূর্বে কিছু আদায় করতে হবে মর্মে ইমাম আবূ দাঊদ একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন কিন্তু হাদীসটি দুর্বল, এতে তিনি বিয়ের পর আলী (রাযি.)-কে স্ত্রী ফাতিমা (রাযি.)-এর কাছে মাহরের কিছু না দিয়ে যেতে নিষেধ করেছেন। ... [হাদীসটি দুর্বল, দেখুন ‘‘য‘ঈফ আবী দাঊদ’’ (২১২৬)]।
মাহরের পরিমাণ কী হওয়া উচিত ইসলামী শারীআতে এ সম্পর্কে বিশেষভাবে কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি, কোন সুস্পষ্ট পরিমাণ ঠিক করে দেয়া হয়নি। তবে এ কথা স্পষ্ট যে, প্রত্যেক স্বামীরই কর্তব্য হচ্ছে তার আর্থিক সামর্থ্য ও স্ত্রীর মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রেখে উভয় পক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোন পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বেঁধে দেয়া। আর মেয়ে পক্ষেরও তাতে সহজেই রাযী হয়ে যাওয়া উচিত। আল্লাহর রসূলের যুগের অতি দরিদ্রতার কারণে মাহর হিসেবে এমনকি একটি লোহার আংটি দিতে, কিংবা পুরুষটির যা কিছু কুরআনের জানা আছে তা স্ত্রীকে শিখিয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। অপরদিকে কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে- {وَآتَيْتُمْإِحْدَاهُنَّقِنْطَاراً}
‘‘এবং তোমরা মেয়েদের এক একজনকে ‘বিপুল পরিমাণ’ ধন-সম্পদ মাহর বাবদ দিয়েছ’’- (সূরা আন্-নিসা ৪ঃ ২০)। এ আয়াতের ভিত্তিতে বিপুল পরিমাণ সম্পদ মাহর বাবদ দেয়া জায়িয প্রমাণিত হচ্ছে।
আমাদের ভারতবর্ষে ‘মাহরে ফাতেমী’ নামে একটি কথা শুনা যায়। এরূপ কথা মূল্যহীন কারণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী এর সামর্থ্যের দিকে দৃষ্টি রেখেই তাঁর মেয়ে ফাতিমার জন্য মাহর নির্দিষ্ট করেছিলেন। আর ‘মাহরে ফাতেমী’ বলে ইসলামী শারী‘আতের মধ্যে কোন বিধান নেই। অতএব ‘মাহরে ফাতেমী’ অনুসরণ করার কোনই যৌক্তিকতা নেই।
দুঃখজনক হলেও সত্য বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে একটি কুসংস্কার চালু হয়েছে, তা হচ্ছে এই যে, মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয় মাহরের পরিমাণ যেভাবেই হোক না কেন বেশী করতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি যেখানে ছেলের পাঁচ হাজার প্রদান করার সামর্থ্য রয়েছে সেখানে দু’লক্ষ/ তিন লক্ষ যেভাবেই হোক লিখে নিতে হবে। এ ভাবনায় যে, স্বামী যদি কোন সময় মেয়েকে ত্বলাক দিতে চায়, উভয়ের মাঝে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয় তাহলে অতি সহজেই স্বামীকে যেন কাবূ করা যায়। অনেক সময় মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয় মাহর তো আদায় করতে হয় না অতএব বেশী লিখতে অসুবিধা কী। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, আমাদের সমাজের এক শ্রেণীর লোক মাহর আদায় করে না এবং এটিকে তুচ্ছ ব্যাপার মনে করে প্রকারান্তরে বিয়ের ক্ষেত্রে ইসলামী শারী‘আতের একটি অন্যতম বিধানকে অগ্রাহ্য করে এবং নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করার চেষ্টা চালায়। এটাকে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের নির্দেশের বিরুদ্ধে এক প্রকারের ধৃষ্টতা বললে অত্যুক্তি করা হবে না।
Narrated Anas bin Malik:
`Abdur-Rahman bin `Auf came (from Mecca to Medina) and the Prophet (ﷺ) made a bond of brotherhood between him and Sa`d bin Ar-Rabi` Al-Ansari. Al-Ansari had two wives, so he suggested that `Abdur- Rahman take half, his wives and property. `Abdur-Rahman replied, "May Allah bless you with your wives and property. Kindly show me the market." So `Abdur-Rahman went to the market and gained (in bargains) some dried yoghurt and some butter. After a few days the Prophet (ﷺ) saw `Abdur-Rahman with some yellow stains on his clothes and asked him, "What is that, O `Abdur-Rahman?" He replied, "I had married an Ansari woman." The Prophet (ﷺ) asked, "How much Mahr did you give her?" He replied, "The weight of one (date) stone of gold." The Prophet (ﷺ) said, "Offer a banquet, even with one sheep."
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৮. বিয়ে না করা এবং খাসি হয়ে যাওয়া অপছন্দনীয়।
৫০৭৩. সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’উসমান ইবনু মাজ’উনকে বিয়ে করা থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে যদি অনুমতি দিতেন, তাহলে আমরাও খাসি হয়ে যেতাম। [৫০৭৪; মুসলিম ১৬/১, হাঃ ১৪০২, আহমাদ ১৫১৬] ] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৩)
بَاب مَا يُكْرَه“ مِنَ التَّبَتُّلِ وَالْخِصَاءِ
أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ سَمِعَ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ يَقُوْلُ سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ يَقُوْلُ رَدَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلٰى عُثْمَانَ بْنِ مَظْعُوْنٍ التَّبَتُّلَ وَلَوْ أَذِنَ لَه“ لاَخْتَصَيْنَا
Narrated Sa`d bin Abi Waqqas:
Allah's Messenger (ﷺ) forbade `Uthman bin Maz'un to abstain from marrying (and other pleasures) and if he had allowed him, we would have gotten ourselves castrated.
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৮. বিয়ে না করা এবং খাসি হয়ে যাওয়া অপছন্দনীয়।
৫০৭৪. (ভিন্ন একটি সনদে) সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’উসমান ইবনু মাজ’উনকে বিয়ে করা থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করেছেন। তিনি তাকে অনুমতি দিলে, আমরাও খাসি হয়ে যেতাম। [৫০৭৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৪)
بَاب مَا يُكْرَه“ مِنَ التَّبَتُّلِ وَالْخِصَاءِ
حَدَّثَنَا أَبُوْ الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّه“ سَمِعَ سَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ يَقُوْلُ لَقَدْ رَدَّ ذ‘لِكَ يَعْنِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَلٰى عُثْمَانَ بْنِ مَظْعُوْنٍ وَلَوْ أَجَازَ لَهُ التَّبَتُّلَ لاَخْتَصَيْنَا.
Narrated Sa`d bin Abi Waqqas:
The Prophet (ﷺ) prevented `Uthman bin Mazun from that (not marrying), and had he allowed him, we would have got ourselves castrated.
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৮. বিয়ে না করা এবং খাসি হয়ে যাওয়া অপছন্দনীয়।
৫০৭৫. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সঙ্গে জিহাদে অংশ নিতাম; কিন্তু আমাদের কোন কিছু ছিল না। সুতরাং আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বললাম, আমরা কি খাসি হয়ে যাব? তিনি আমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করলেন এবং কোন মহিলার সঙ্গে একটি কাপড়ের বদলে হলেও বিয়ে করার অনুমতি দিলেন এবং আমাদেরকে এই আয়াত পাঠ করে শোনালেনঃ অর্থাৎ, ’’ওহে ঈমানদারগণ! পবিত্র বস্তুরাজি যা আল্লাহ তোমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন সেগুলোকে হারাম করে নিও না আর সীমালঙ্ঘন করো না, অবশ্যই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালবাসেন না।’’ (আল-মায়িদাহ ৫:৮৭)[৪৬১৫] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৫ প্রথমাংশ)
بَاب مَا يُكْرَه“ مِنَ التَّبَتُّلِ وَالْخِصَاءِ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ قَيْسٍ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ كُنَّا نَغْزُو مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلَيْسَ لَنَا شَىْءٌ فَقُلْنَا أَلاَ نَسْتَخْصِي فَنَهَانَا عَنْ ذَلِكَ ثُمَّ رَخَّصَ لَنَا أَنْ نَنْكِحَ الْمَرْأَةَ بِالثَّوْبِ، ثُمَّ قَرَأَ عَلَيْنَا (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تُحَرِّمُوا طَيِّبَاتِ مَا أَحَلَّ اللَّهُ لَكُمْ وَلاَ تَعْتَدُوا إِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ).
Narrated 'Abdullah:
We used to participate in the holy battles led by Allah's Messenger (ﷺ) and we had nothing (no wives) with us. So we said, "Shall we get ourselves castrated?" He forbade us that and then allowed us to marry women with a temporary contract (2) and recited to us: -- 'O you who believe ! Make not unlawful the good things which Allah has made lawful for you, but commit no transgression.' (5.87)
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৮. বিয়ে না করা এবং খাসি হয়ে যাওয়া অপছন্দনীয়।
৫০৭৬. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একজন যুবক। আমার ভয় হয় যে, আমার দ্বারা না জানি কোন গুনাহর কাজ সংঘটিত হয়ে যায়; অথচ আমার কাছে নারীদেরকে বিয়ে করার মতো কিছু নেই। এ কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ থাকলেন। আমি আবার ও কথা বললাম। তিনি চুপ থাকলেন। আমি আবারও ও কথা বললাম। তিনি চুপ থাকলেন। আবারও ও কথা বললে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, হে আবূ হুরাইরাহ! তোমার ভাগ্যলিপি লেখা হয়ে গেছে আর কলমের কালি শুকিয়ে গেছে। তুমি খাসি হও বা না হও, তাতে কিছু আসে যায় না। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৫ শেষাংশ)
بَاب مَا يُكْرَه“ مِنَ التَّبَتُّلِ وَالْخِصَاءِ
وَقَالَ أَصْبَغُ أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ عَنْ يُوْنُسَ بْنِ يَزِيدَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّي رَجُلٌ شَابٌّ وَأَنَا أَخَافُ عَلٰى نَفْسِي الْعَنَتَ وَلاَ أَجِدُ مَا أَتَزَوَّجُ بِه„ النِّسَاءَ فَسَكَتَ عَنِّي ثُمَّ قُلْتُ مِثْلَ ذ‘لِكَ فَسَكَتَ عَنِّي ثُمَّ قُلْتُ مِثْلَ ذ‘لِكَ فَسَكَتَ عَنِّي ثُمَّ قُلْتُ مِثْلَ ذ‘لِكَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَا أَبَا هُرَيْرَةَ جَفَّ الْقَلَمُ بِمَا أَنْتَ لاَقٍ فَاخْتَصِ عَلٰى ذ‘لِكَ أَوْ ذَرْ.
Narrated Abu Huraira:
I said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! I am a young man and I am afraid that I may commit illegal sexual intercourse and I cannot afford to marry." He kept silent, and then repeated my question once again, but he kept silent. I said the same (for the third time) and he remained silent. Then repeated my question (for the fourth time), and only then the Prophet said, "O Abu Huraira! The pen has dried after writing what you are going to confront. So (it does not matter whether you) get yourself castrated or not."
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৯. কুমারী মেয়েদেরকে বিয়ে করা সম্পর্কে।
وَقَالَ ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لِعَائِشَةَ لَمْ يَنْكِحِ النَّبِيُّصلى الله عليه وسلم بِكْرًا غَيْرَكِ.
ইবনু আবী মুলাইকাহ (রহ.) বলেন, ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে বললেন, আপনাকে ছাড়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামআর কোন কুমারীকে বিয়ে করেননি।
৫০৭৭. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মনে করুন আপনি একটি ময়দানে পৌঁছেছেন, সেখানে একটি গাছ আছে যার কিছু অংশ খাওয়া হয়ে গেছে। আর এমন আর একটি গাছ পেলেন, যার কিছুই খাওয়া হয়নি। এর মধ্যে কোন্ গাছের পাতা আপনার উটকে খাওয়াবেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, যে গাছ থেকে কিছুই খাওয়া হয়নি। এ কথার উদ্দেশ্য হল- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ব্যতীত অন্য কোন কুমারীকে বিয়ে করেননি। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৬)
بَاب نِكَاحِ الأَبْكَارِ
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَخِي، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ لَوْ نَزَلْتَ وَادِيًا وَفِيهِ شَجَرَةٌ قَدْ أُكِلَ مِنْهَا، وَوَجَدْتَ شَجَرًا لَمْ يُؤْكَلْ مِنْهَا، فِي أَيِّهَا كُنْتَ تُرْتِعُ بَعِيرَكَ قَالَ " فِي الَّذِي لَمْ يُرْتَعْ مِنْهَا ". تَعْنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَتَزَوَّجْ بِكْرًا غَيْرَهَا.
Narrated `Aisha:
I said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! Suppose you landed in a valley where there is a tree of which something has been eaten and then you found trees of which nothing has been eaten, of which tree would you let your camel graze?" He said, "(I will let my camel graze) of the one of which nothing has been eaten before." (The sub-narrator added: `Aisha meant that Allah's Messenger (ﷺ) had not married a virgin besides herself .)
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৯. কুমারী মেয়েদেরকে বিয়ে করা সম্পর্কে।
৫০৭৮. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দু’বার আমাকে স্বপ্নযোগে তোমাকে দেখানো হয়েছে। এক ব্যক্তি রেশমী কাপড়ে জড়িয়ে তোমাকে নিয়ে যাচ্ছিল, আমাকে দেখে বলল, এ হচ্ছে তোমার স্ত্রী। তখন আমি তার পর্দা খুললাম, আর সেটা হলে তুমি। তখন আমি বললাম, এ স্বপ্ন যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, তবে তিনি বাস্তবে তা-ই করবেন। [৩৮৯৫] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৭)
بَاب نِكَاحِ الأَبْكَارِ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أُرِيتُكِ فِي الْمَنَامِ مَرَّتَيْنِ، إِذَا رَجُلٌ يَحْمِلُكِ فِي سَرَقَةِ حَرِيرٍ فَيَقُولُ هَذِهِ امْرَأَتُكَ، فَأَكْشِفُهَا فَإِذَا هِيَ أَنْتِ، فَأَقُولُ إِنْ يَكُنْ هَذَا مِنْ عِنْدِ اللَّهِ يُمْضِهِ ".
Narrated `Aisha:
Allah's Messenger (ﷺ) said (to me), "You have been shown to me twice in (my) dreams. A man was carrying you in a silken cloth and said to me, 'This is your wife.' I uncovered it; and behold, it was you. I said to myself, 'If this dream is from Allah, He will cause it to come true.' "
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১০. ত্বলাক্বপ্রাপ্তা অথবা বিধবামেয়েকে বিয়ে করা।
وَقَالَتْ أُمُّ حَبِيبَةَ قَالَ لِي النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لاَ تَعْرِضْنَ عَلَيَّ بَنَاتِكُنَّ وَلاَ أَخَوَاتِكُنَّ».
উম্মু হাবীবাহ (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, আমাকে তোমাদের কন্যাদেরকে বা বোনদেরকে আমার সঙ্গে (বিয়ের) প্রস্তাব দিও না।
৫০৭৯. জাবির ইবনু ’আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে জিহাদ থেকে ফিরছিলাম। আমি আমার দুর্বল উটটি দ্রুত চালাতে চেষ্টা করছিলাম। এমন সময় এক আরোহী আমার পিছন থেকে আমার উটটিকে ছড়ি দিয়ে খোঁচা দিলে উটটি দ্রুত চলতে লাগল যেমন ভাল ভাল উটকে তুমি চলতে দেখ। ফিরে দেখি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি আমাকে প্রশ্ন করলেন, জাবির, তোমার এত তাড়াতাড়ি করার কারণ কী? আমি উত্তর দিলাম, আমি নতুন বিয়ে করেছি। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কুমারী, না বিধবা? আমি উত্তর দিলাম, বিধবা। তিনি বললেন, তুমি কুমারী মেয়ে বিয়ে করলে না? যার সঙ্গে খেলা-কৌতুক করতে আর সেও তোমার সঙ্গে খেলা-কৌতুক করত। বর্ণনাকারী বলেন, যখন আমরা মদিনা্য় প্রবেশ করব, এমন সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তুমি অপেক্ষা কর এবং রাতে প্রবেশ কর, যেন অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী নিজের অবিন্যস্ত কেশরাশি বিন্যাস করতে পারে এবং লোম পরিষ্কার করতে পারে। [৪৪৩; মুসলিম ৩৩/৫৬, হাঃ ১৯২৮, আহমাদ ১৩১১৭] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৮)
بَاب تَزْوِيجِ الثَّيِّبَاتِ
أَبُوْ النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ حَدَّثَنَا سَيَّارٌ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَفَلْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَزْوَةٍ فَتَعَجَّلْتُ عَلٰى بَعِيرٍ لِي قَطُوْفٍ فَلَحِقَنِي رَاكِبٌ مِنْ خَلْفِي فَنَخَسَ بَعِيرِي بِعَنَزَةٍ كَانَتْ مَعَه“ فَانْطَلَقَ بَعِيرِي كَأَجْوَدِ مَا أَنْتَ رَاءٍ مِنَ الإِبِلِ فَإِذَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا يُعْجِلُكَ قُلْتُ كُنْتُ حَدِيثَ عَهْدٍ بِعُرُسٍ قَالَ أَبِكْرًا أَمْ ثَيِّبًا قُلْتُ ثَيِّبًا قَالَ فَهَلاَّ جَارِيَةً تُلاَعِبُهَا وَتُلاَعِبُكَ قَالَ فَلَمَّا ذَهَبْنَا لِنَدْخُلَ قَالَ أَمْهِلُوْا حَتّٰى تَدْخُلُوْا لَيْلاً أَيْ عِشَاءً لِكَيْ تَمْتَشِطَ الشَّعِثَةُ وَتَسْتَحِدَّ الْمُغِيبَةُ.
Narrated Jabir bin `Abdullah:
While we were returning from a Ghazwa (Holy Battle) with the Prophet, I started driving my camel fast, as it was a lazy camel A rider came behind me and pricked my camel with a spear he had with him, and then my camel started running as fast as the best camel you may see. Behold! The rider was the Prophet (ﷺ) himself. He said, 'What makes you in such a hurry?" I replied, I am newly married " He said, "Did you marry a virgin or a matron? I replied, "A matron." He said, "Why didn't you marry a young girl so that you may play with her and she with you?" When we were about to enter (Medina), the Prophet (ﷺ) said, "Wait so that you may enter (Medina) at night so that the lady of unkempt hair may comb her hair and the one whose husband has been absent may shave her pubic region.
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১০. ত্বলাক্বপ্রাপ্তা অথবা বিধবামেয়েকে বিয়ে করা।
৫০৮০. জাবির ইবনু ’আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বিয়ে করলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেমন মেয়ে বিয়ে করেছ? আমি বললাম, পূর্ব বিবাহিতা মেয়েকে বিয়ে করেছি। তিনি বললেন, কুমারী মেয়ে এবং তাদের কৌতুক তুমি চাও না? (রাবী মুহাজির বলেন) আমি এ ঘটনা ’আমর ইবনু দ্বীনার (রাঃ)-কে জানালে তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু ’আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন, তুমি কেন কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না, যার সাথে তুমি খেলা-কৌতুক করতে এবং সে তোমার সাথে খেলা-কৌতুক করত? [৪৪৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৯)
بَاب تَزْوِيجِ الثَّيِّبَاتِ
حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا مُحَارِبٌ، قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، رضى الله عنهما يَقُولُ تَزَوَّجْتُ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا تَزَوَّجْتَ ". فَقُلْتُ تَزَوَّجْتُ ثَيِّبًا. فَقَالَ " مَا لَكَ وَلِلْعَذَارَى وَلِعَابِهَا ". فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَمْرِو بْنِ دِينَارٍ فَقَالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ يَقُولُ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " هَلاَّ جَارِيَةً تُلاَعِبُهَا وَتُلاَعِبُكَ ".
Narrated Jabir bin `Abdullah:
When I got married, Allah's Messenger (ﷺ) said to me, "What type of lady have you married?" I replied, "I have married a matron' He said, "Why, don't you have a liking for the virgins and for fondling them?" Jabir also said: Allah's Messenger (ﷺ) said, "Why didn't you marry a young girl so that you might play with her and she with you?'
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১১. বয়স্ক পুরুষের সঙ্গে অল্প বয়স্কা মেয়েদের বিয়ে।
৫০৮১. ’উরওয়াহ (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর (রাঃ)-এর কাছে ’আয়িশাহ (রাঃ)-এর বিয়ের পয়গাম দিলেন। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমি আপনার ভাই। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি আমার আল্লাহর দ্বীনের এবং কিতাবের ভাই। কিন্তু সে আমার জন্য হালাল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১০)
بَاب تَزْوِيجِ الصِّغَارِ مِنَ الْكِبَارِ
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يَزِيدَ عَنْ عِرَاكٍ عَنْ عُرْوَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَطَبَ عَائِشَةَ إِلٰى أَبِي بَكْرٍ فَقَالَ لَه“ أَبُوْ بَكْرٍ إِنَّمَا أَنَا أَخُوْكَ فَقَالَ أَنْتَ أَخِي فِي دِينِ اللهِ وَكِتَابِه„ وَهِيَ لِي حَلاَلٌ.
Narrated 'Urwa:
The Prophet (ﷺ) asked Abu Bakr for `Aisha's hand in marriage. Abu Bakr said "But I am your brother." The Prophet (ﷺ) said, "You are my brother in Allah's religion and His Book, but she (Aisha) is lawful for me to marry."
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১২. কোন্ প্রকৃতির মেয়ে বিয়ে করা উচিত এবং কোন্ ধরনের মেয়ে উত্তম এবং নিজের ঔরসের জন্য কোন্ ধরনের মেয়ে পছন্দ করা মুস্তাহাব।
৫০৮২. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উষ্ট্রারোহী মহিলাদের মধ্যে কুরাইশ বংশীয়া মহিলারা সর্বোত্তম। তারা শিশু সন্তানদের প্রতি স্নেহশীল এবং স্বামীর মর্যাদার উত্তম রক্ষাকারিণী। [৩৪৩৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১১)
بَاب إِلٰى مَنْ يَنْكِحُ وَأَيُّ النِّسَاءِ خَيْرٌ؟ وَمَا يُسْتَحَبُّ أَنْ يَتَخَيَّرَ لِنُطَفِه„ مِنْ غَيْرِ إِيجَابٍ
أَبُوْ الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ خَيْرُ نِسَاءٍ رَكِبْنَ الإِبِلَ صَالِحُ نِسَاءِ قُرَيْشٍ أَحْنَاه“ عَلٰى وَلَدٍ فِي صِغَرِه„ وَأَرْعَاه“ عَلٰى زَوْجٍ فِي ذَاتِ يَدِه„.
Narrated Abu Huraira:
The Prophet (ﷺ) said, "The best women are the riders of the camels and the righteous among the women of Quraish. They are the kindest women to their children in their childhood and the more careful women of the property of their husbands."