পরিচ্ছেদঃ ৪/২. পবিত্রতা ব্যতীত সালাত কবূল হবে না।
৪/১. بَاب مَا جَاءَ فِي الْوُضُوءِ
৪/১. উযূর বর্ণনা।
وَقَوْلِ اللهِ تَعَالَى (إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ)
قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ وَبَيَّنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ فَرْضَ الْوُضُوءِ مَرَّةً مَرَّةً وَتَوَضَّأَ أَيْضًا مَرَّتَيْنِ وَثَلاَثًا وَلَمْ يَزِدْ عَلَى ثَلاَثٍ وَكَرِهَ أَهْلُ الْعِلْمِ الْإِسْرَافَ فِيهِ وَأَنْ يُجَاوِزُوا فِعْلَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.
আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (ওহে যারা ঈমান এনেছ!) তোমরা যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন ধৌত করে নিবে নিজেদের মুখমণ্ডল এবং হাত কনুই পর্যন্ত আর মাসেহ করে নিবে নিজেদের মস্তক এবং ধৌত করে নিবে নিজেদের পা গ্রন্থি পর্যন্ত। (সূরাহ্ আল-মায়িদাহ্ ৫/৬)
আবূ ’আবদুল্লাহ্ বুখারী (রহ.) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উযূর ফরজ হ’ল এক-একবার করে ধোয়া। তিনি দু’-দু’বার করে এবং তিন-তিনবার করেও উযূ করেছেন, কিন্তু তিনবারের অধিক ধৌত করেন নি। পানির অপচয় করা এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ’আমলের সীমা অতিক্রম করাকে ’উলামায়ে কিরাম মাকরূহ বলেছেন।
১৩৫. আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’যে ব্যক্তির হাদাস হয় তার সালাত কবূল হবে না, যতক্ষণ না সে উযূ করে। হাযরা-মাওতের জনৈক ব্যক্তি বলল, ’হে আবূ হুরাইরাহ! হাদাস কী?’ হাদাস কী?’ তিনি বললেন, ’নিঃশব্দে বা সশব্দে বায়ু বের হওয়া।’ (৬৯৫৪; মুসলিম ২/২, হাঃ ২২৫, আহমাদ ৮০৮৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৩৭)
بَاب لاَ تُقْبَلُ صَلاَةٌ بِغَيْرِ طُهُورٍ.
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تُقْبَلُ صَلاَةُ مَنْ أَحْدَثَ حَتَّى يَتَوَضَّأَ قَالَ رَجُلٌ مِنْ حَضْرَمَوْتَ مَا الْحَدَثُ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ فُسَاءٌ أَوْ ضُرَاطٌ.
Chapter. No Salat (prayer) Is Accepted Without Ablution (i.e, To Remove, The Small Hadath By Ablution Or The Big Hadath By Taking A Bath)
Narrated Abu Huraira:
Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) said, "The prayer of a person who does Hadath (passes urine, stool or wind) is not accepted till he performs the ablution." A person from Hadaramout asked Abu Huraira, "What is 'Hadath'?" Abu Huraira replied, " 'Hadath' means the passing of wind."
পরিচ্ছেদঃ ৪/৩. উযূর ফযীলত এবং উযূর প্রভাবে যাদের উযূর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ উজ্জ্বল হবে।
১৩৬. নু‘আয়ম মুজমির (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ হুরাইরাহ (রাযি.)-এর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। অতঃপর তিনি উযূ করে বললেনঃ ‘আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন আমার উম্মাতকে এমন অবস্থায় আহবান করা হবে যে, উযূর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে।’ (মুসলিম ২/১২, হাঃ ২৪৬, আহমাদ ৯২০৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৩৮)
بَاب فَضْلِ الْوُضُوءِ وَالْغُرُّ الْمُحَجَّلُونَ مِنْ آثَارِ الْوُضُوءِ.
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِلاَلٍ، عَنْ نُعَيْمٍ الْمُجْمِرِ، قَالَ رَقِيتُ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ عَلَى ظَهْرِ الْمَسْجِدِ، فَتَوَضَّأَ فَقَالَ إِنِّي سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ أُمَّتِي يُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ غُرًّا مُحَجَّلِينَ مِنْ آثَارِ الْوُضُوءِ، فَمَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أَنْ يُطِيلَ غُرَّتَهُ فَلْيَفْعَلْ
প্রাসঙ্গিক আলোচনা
ওযূর মাকরূহ বিষয়সমূহ
ওযূর যেমনি ফরয রয়েছে, তেমনি তাতে রয়েছে কিছু সুন্নাত। কিন্তু অতিরিক্ত কাজ করাও কিন্তু মাকরূহ বা অপছন্দনীয় কাজ। ওযূর মধ্যে বেশ কিছু অপছন্দনীয় কাজ রয়েছে নিম্নে সেগুলো বর্ণনা করা হলো:
১. অপবিত্রতা ছিটে ওযূকারীর দিকে আসতে পারে এমন অপবিত্র স্থানে ওযূ করা।
২. ওযূতে তিনবারের অধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধৌত করা। কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন তিনবার ধৌত করেছেন। তিনি বলেছেন, "অতঃপর যে ব্যক্তি এর অধিক করে সে অবশ্যই যুলুম ও অন্যায় করে।”
৩. পানি ব্যবহারে অপচয় করা। যেহেতু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মুদ পানি দিয়ে ওযূ করেছেন। আর মুদ হলো মাঝারি ধরনের পূর্ণ মানুষের এক মুঠো। তাছাড়া যেকোনো কিছুতে অপচয় করা নিষেধ।
৪. ওযূতে এক বা একাধিক সুন্নাত ছেড়ে দেয়া; কেননা সুন্নাত ছেড়ে দিলে সাওয়াব কমে যায়। তাই সুন্নতের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া উচিৎ, ছেড়ে দেয়া অনুচিত।
ওযূর অঙ্গসমূহ বাড়িয়ে ধৌত করা
হাদীসের শেষের অংশটুকু আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহুর কথা। উপরোক্ত বর্ণনাগুলো থেকে বুঝা যায় যে, আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহু ওযূর অঙ্গসমূহ একটু বাড়িয়ে ধৌত করতেন। এটি ছিল তার ইজতিহাদ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনটি করেছেন প্রমাণিত হয়নি। আর সেজন্য আলেমগণ এ বিষয়টি নিয়ে মতভেদ করেছেন। অধিকাংশ আলেম এভাবে চেহারা, দু' হাত ও দু পায়ের ওযূর জায়গা থেকে বাড়তি অংশ ধৌত করা মুস্তাহাব বলেছেন। কিন্তু ইমাম মালিক, ইমাম আহমাদ উপরোক্ত অঙ্গসমূহের ফরয অংশের অতিরিক্ত অংশ ইচ্ছাকৃত ধৌত করা মুস্তাহাব নয় বলেছেন। শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ, ইবনুল কাইয়্যেম, ইবন সাদী রাহিমাহুমুল্লাহ এ মতটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
Narrated Nu`am Al-Mujmir:
Once I went up the roof of the mosque, along with Abu Huraira. He perform ablution and said, "I heard the Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) saying, "On the Day of Resurrection, my followers will be called "Al-Ghurr-ul- Muhajjalun" from the trace of ablution and whoever can increase the area of his radiance should do so (i.e. by performing ablution regularly).' "
পরিচ্ছেদঃ ৪/৪. নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহের কারণে উযু করতে হয় না।
১৩৭. ‘আব্বাদ ইবনু তামীম (রহ.)-এর চাচা হতে বর্ণিত। একদা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হল যে, তার মনে হয়েছিল যেন সালাতের মধ্যে কিছু হয়ে গিয়েছিল। তিনি বললেনঃ সে যেন ফিরে না যায়, যতক্ষণ না শব্দ শোনে বা দুর্গন্ধ পায়। (১৭৭, ২০৫৬; মুসলিম ৩/২৬, হাঃ ৩৬১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৩৯)
بَاب مَنْ لاَ يَتَوَضَّأُ مِنْ الشَّكِّ حَتَّى يَسْتَيْقِنَ.
حَدَّثَنَا عَلِيٌّ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، أَنَّهُ شَكَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الرَّجُلُ الَّذِي يُخَيَّلُ إِلَيْهِ أَنَّهُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلاَةِ. فَقَالَ " لاَ يَنْفَتِلْ ـ أَوْ لاَ يَنْصَرِفْ ـ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا "
প্রাসঙ্গিক আলোচনা
হাদীসে অভিযোগকারী হচ্ছেন হাদীসের বর্ণনাকারী স্বয়ং আবদুল্লাহ ইবন যায়েদ ইবন আসেম আল-মাযেনী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। আর এখানে 'ধারণা' হয় বলা হয়েছে। সুতরাং যদি বাতাস বের হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় তখন ওযূ ভঙ্গ হওয়ার জন্য শব্দ বা গন্ধের প্রয়োজন হবে না।
হাদীসের শিক্ষা
১. কোনো কিছুর যদি দু'টি অবস্থা হতে পারে যেমন হালাল ছিল তা দৃঢ়ভাবে নির্ধারিত কিন্তু পরবর্তীতে কোনো এক কারণে হারাম হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় তখন সেটাকে দৃঢ় অবস্থার ওপর রাখতে হবে। অর্থাৎ মূলনীতি হচ্ছে যা আগে ছিল তা-ই রাখা, যতক্ষণ না ভিন্নটি প্রমাণিত হচ্ছে।
২. শুধুমাত্র ওযূ ভঙ্গ হওয়ার বিষয়টি সন্দেহ হিসেবে আসলে তার কারণে সালাত থেকে বের হওয়া যাবে না।
৩. যখন কারো পিছনের রাস্তা দিয়ে বাতাস বের হবে তখন তা তার ওযূ নষ্ট করে দিবে, চাই বের হওয়ার বিষয়টি শব্দ শোনা কিংবা গন্ধ বা অন্য কিছুর মাধ্যমে সাব্যস্ত হবে।
৪. যেসব জিনিস বলতে লজ্জা লাগে সেগুলো না বলে পরিহার করাই উচিত।
৫. যার ওযূ আছে তিনি যদি ওযূ ভঙ্গ হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ করেন, তখন সে সন্দেহের কারণে তার ওযূ করা আবশ্যক নয়; যতক্ষণ না তার ওযূ ভঙ্গ হওয়ার বিষয়টি দৃঢ়ভাবে সাব্যস্ত হচ্ছে।
৬. হাদীসে শব্দ ও গন্ধের বিষয়টি দৃঢ় হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। নতুবা যদি সত্যি সত্যিই তিনি অনুভব করেন যে, তার থেকে বায়ু বের হয়েছে তখন ওযূ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
Narrated 'Abbas bin Tamim: My uncle asked Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) about a person who imagined to have passed wind during the prayer. Allah' Apostle replied: "He should not leave his prayers unless he hears sound or smells something."
পরিচ্ছেদঃ ৪/৫. হালকাভাবে উযূ করা।
১৩৮. ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমিয়েছিলেন, এমনকি তাঁর নিঃশ্বাসের শব্দ হতে লাগল। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করলেন। সুফ্ইয়ান (রহ.) আবার কখনো বলেছেন, তিনি শুয়ে পড়লেন, এমনকি নাক ডাকার আওয়ায হতে লাগল। অতঃপর দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলেন। অন্য সূত্রে সুফইয়ান (রহ.) ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেনঃ আমি এক রাতে আমার খালা মাইমূনাহ (রহ.)-এর নিকট রাত কাটালাম। রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে উঠলেন এবং রাতের কিছু অংশ চলে যাবার পর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ঝুলন্ত মশক হতে হালকা ধরনের উযূ করলেন। রাবী ‘আমর (রহ.) বলেন যে, হালকাভাবে ধুলেন, পানি কম ব্যবহার করলেন এবং সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) বলেন, তখন তিনি যেভাবে উযূ করেছেন আমিও সেভাবে উযূ করলাম এবং এসে তাঁর বাঁয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। সুফইয়ান (রহ.) কখনো কখনো يسار (বাম) শব্দের স্থলে شمال বলতেন। তারপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ধরে তাঁর ডান দিকে দাঁড় করালেন। অতঃপর আল্লাহর যতক্ষণ ইচ্ছা ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি সালাত আদায় করলেন। অতঃপর কাত হলেন আর ঘুমিয়ে পড়লেন, এমনকি তাঁর নাক ডাকালেন। অতঃপর মুয়াযযিন এসে তাঁকে সালাতের কথা জানিয়ে দিলেন। তিনি তার সঙ্গে সালাতের জন্য চললেন এবং সালাত আদায় করলেন, কিন্তু উযূ করলেন না। আমরা ‘আমর (রহ.)-কে বললামঃ লোকে বলে যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর চোখ ঘুমায় কিন্তু তাঁর অন্তর ঘুমায় না। তখন ‘আমর (রহ.) বললেন, ‘আমি ‘উবায়দ ইবনু ‘উমায়র (রহ.)-কে বলতে শুনেছি, নবীগণের স্বপ্ন ওয়াহী। অতঃপর তিনি তিলাওয়াত করলেন। إِنِّي أَرَى فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ ‘‘আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে কুরবানী করছি’’- (সূরাহ্ আস্ সাফ্ফাত ৩৭/১০২)। (১১৭ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪০)
بَاب التَّخْفِيفِ فِي الْوُضُوءِ.
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، قَالَ أَخْبَرَنِي كُرَيْبٌ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم نَامَ حَتَّى نَفَخَ ثُمَّ صَلَّى ـ وَرُبَّمَا قَالَ اضْطَجَعَ حَتَّى نَفَخَ ـ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى. ثُمَّ حَدَّثَنَا بِهِ سُفْيَانُ مَرَّةً بَعْدَ مَرَّةٍ عَنْ عَمْرٍو عَنْ كُرَيْبٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ بِتُّ عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ لَيْلَةً، فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم مِنَ اللَّيْلِ، فَلَمَّا كَانَ فِي بَعْضِ اللَّيْلِ قَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم فَتَوَضَّأَ مِنْ شَنٍّ مُعَلَّقٍ وُضُوءًا خَفِيفًا ـ يُخَفِّفُهُ عَمْرٌو وَيُقَلِّلُهُ ـ وَقَامَ يُصَلِّي فَتَوَضَّأْتُ نَحْوًا مِمَّا تَوَضَّأَ، ثُمَّ جِئْتُ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ ـ وَرُبَّمَا قَالَ سُفْيَانُ عَنْ شِمَالِهِ ـ فَحَوَّلَنِي فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ، ثُمَّ صَلَّى مَا شَاءَ اللَّهُ، ثُمَّ اضْطَجَعَ، فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ، ثُمَّ أَتَاهُ الْمُنَادِي فَآذَنَهُ بِالصَّلاَةِ، فَقَامَ مَعَهُ إِلَى الصَّلاَةِ، فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ. قُلْنَا لِعَمْرٍو إِنَّ نَاسًا يَقُولُونَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَنَامُ عَيْنُهُ وَلاَ يَنَامُ قَلْبُهُ. قَالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ عُبَيْدَ بْنَ عُمَيْرٍ يَقُولُ رُؤْيَا الأَنْبِيَاءِ وَحْىٌ، ثُمَّ قَرَأَ (إِنِّي أَرَى فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ).
Narrated Kuraib: Ibn `Abbas said, "The Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) slept till he snored and then prayed (or probably lay till his breath sounds were heard and then got up and prayed)." Ibn `Abbas added: "I stayed overnight in the house of my aunt, Maimuna, the Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) slept for a part of the night, (See Fath-al-Bari page 249, Vol. 1), and late in the night, he got up and performed ablution from a hanging water skin, a light (perfect) ablution and stood up for the prayer. I, too, performed a similar ablution, then I went and stood on his left. He drew me to his right and prayed as much as Allah wished, and again lay and slept till his breath sounds were heard. Later on the Mu'adh-dhin (call maker for the prayer) came to him and informed him that it was time for Prayer. The Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) went with him for the prayer without performing a new ablution." (Sufyan said to `Amr that some people said, "The eyes of Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) sleep but his heart does not sleep." `Amr replied, "I heard `Ubaid bin `Umar saying that the dreams of Prophets were Divine Inspiration, and then he recited the verse: 'I (Abraham) see in a dream, (O my son) that I offer you in sacrifice (to Allah)."
পরিচ্ছেদঃ ৪/৬. পূর্ণরূপে উযূ করা ।
وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ الْإِنْقَاءُ.
ইবনু ’উমার (রাযি.) বলেন, ’ভালভাবে পরিষ্কার করাই হল পূর্ণরূপে উযূ করা।’
১৩৯. উসামাহ ইবনু যায়দ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’আরাফার ময়দান হতে রওনা হলেন এবং উপত্যকায় পৌঁছে নেমে তিনি পেশাব করলেন। অতঃপর উযূ করলেন কিন্তু উত্তমরূপে উযূ করলেন না। আমি বললাম, ’হে আল্লাহর রাসূল! সালাত আদায় করবেন কি?’ তিনি বললেনঃ ’সালাতের স্থান তোমার সামনে।’ অতঃপর তিনি আবার সওয়ার হলেন। অতঃপর মুযদালিফায় এসে সওয়ারী থেকে নেমে উযূ করলেন। এবার পূর্ণরূপে উযূ করলেন। তখন সালাতের জন্য ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দেওয়া হল। তিনি মাগরিবের সালাত আদায় করলেন। অতঃপর সকলে তাদের অবতরণস্থলে নিজ নিজ উট বসিয়ে দিল। পুনরায় ’ইশার ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দেয়া হল। অতঃপর তিনি ঈশার সালাত আদায় করলেন এবং উভয় সালাতের মধ্যে অন্য কোন সালাত আদায় করলেন না। (১৮১, ১৬৬৭, ১৬৬৯, ১৬৭২; মুসলিম ১৫/৪৫, হাঃ ১২৮০, আহমাদ ২১৮০১, ২১৮০৮, ২১৮৯০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪১)
بَاب إِسْبَاغِ الْوُضُوءِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُولُ دَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ عَرَفَةَ حَتَّى إِذَا كَانَ بِالشِّعْبِ نَزَلَ فَبَالَ، ثُمَّ تَوَضَّأَ وَلَمْ يُسْبِغِ الْوُضُوءَ. فَقُلْتُ الصَّلاَةَ يَا رَسُولَ اللَّهِ. فَقَالَ " الصَّلاَةُ أَمَامَكَ ". فَرَكِبَ، فَلَمَّا جَاءَ الْمُزْدَلِفَةَ نَزَلَ فَتَوَضَّأَ، فَأَسْبَغَ الْوُضُوءَ، ثُمَّ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَصَلَّى الْمَغْرِبَ، ثُمَّ أَنَاخَ كُلُّ إِنْسَانٍ بَعِيرَهُ فِي مَنْزِلِهِ، ثُمَّ أُقِيمَتِ الْعِشَاءُ فَصَلَّى وَلَمْ يُصَلِّ بَيْنَهُمَا.
Narrated Usama bin Zaid:
Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) proceeded from `Arafat till when he reached the mountain pass, he dismounted, urinated and then performed ablution but not a perfect one. I said to him, ("Is it the time for) the prayer, O Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) ?" He said, "The (place of) prayer is ahead of you." He rode till when he reached Al-Muzdalifa, he dismounted and performed ablution and a perfect one, The (call for) Iqama was pronounced and he led the Maghrib prayer. Then everybody made his camel kneel down at its place. Then the Iqama was pronounced for the `Isha' prayer which the Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) led and no prayer was offered in between the two . prayers (`Isha' and Maghrib).
পরিচ্ছেদঃ ৪/৭. এক আজলা পানি দিয়ে দু’ হাতে মুখমণ্ডল
ধোয়া।
১৪০. ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি উয়ু করলেন এবং তাঁর মুখমণ্ডল ধুলেন। এক আজলা পানি নিয়ে তা দিয়ে কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন। অতঃপর আর এক আজলা পানি নিয়ে তা দিয়ে অনুরূপ করলেন অর্থাৎ আরেক হাতের সাথে মিলিয়ে মুখমণ্ডল ধুলেন। অতঃপর আর এক আজলা পানি নিয়ে তা দিয়ে ডান হাত ধুলেন। অতঃপর আর এক আজলা পানি নিয়ে তা দিয়ে তাঁর বাঁ হাত ধুলেন। অতঃপর তিনি মাথা মাসহ(মাসেহ) করলেন। অতঃপর আর এক আজলা পানি নিয়ে ডান পায়ের উপর ঢেলে দিয়ে তা ধুয়ে ফেললেন। অতঃপর আর এক আজলা পানি নিয়ে তা দিয়ে বাম পা ধুলেন। অতঃপর বললেনঃ ‘আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এভাবে উযূ করতে দেখেছি।’ (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪২)
بَاب غَسْلِ الْوَجْهِ بِالْيَدَيْنِ مِنْ غَرْفَةٍ وَاحِدَةٍ.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ، قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو سَلَمَةَ الْخُزَاعِيُّ، مَنْصُورُ بْنُ سَلَمَةَ قَالَ أَخْبَرَنَا ابْنُ بِلاَلٍ ـ يَعْنِي سُلَيْمَانَ ـ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ تَوَضَّأَ فَغَسَلَ وَجْهَهُ، ثُمَّ أَخَذَ غَرْفَةً مِنْ مَاءٍ، فَمَضْمَضَ بِهَا وَاسْتَنْشَقَ، ثُمَّ أَخَذَ غَرْفَةً مِنْ مَاءٍ، فَجَعَلَ بِهَا هَكَذَا، أَضَافَهَا إِلَى يَدِهِ الأُخْرَى، فَغَسَلَ بِهِمَا وَجْهَهُ، ثُمَّ أَخَذَ غَرْفَةً مِنْ مَاءٍ، فَغَسَلَ بِهَا يَدَهُ الْيُمْنَى، ثُمَّ أَخَذَ غَرْفَةً مِنْ مَاءٍ، فَغَسَلَ بِهَا يَدَهُ الْيُسْرَى، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، ثُمَّ أَخَذَ غَرْفَةً مِنْ مَاءٍ فَرَشَّ عَلَى رِجْلِهِ الْيُمْنَى حَتَّى غَسَلَهَا، ثُمَّ أَخَذَ غَرْفَةً أُخْرَى، فَغَسَلَ بِهَا رِجْلَهُ ـ يَعْنِي الْيُسْرَى ـ ثُمَّ قَالَ هَكَذَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَتَوَضَّأُ.
Narrated `Ata' bin Yasar:
Ibn `Abbas performed ablution and washed his face (in the following way): He ladled out a handful of water, rinsed his mouth and washed his nose with it by putting in water and then blowing it out. He then, took another handful (of water) and did like this (gesturing) joining both hands, and washed his face, took another handful of water and washed his right forearm. He again took another handful of water and washed his left forearm, and passed wet hands over his head and took another handful of water and poured it over his right foot (up to his ankles) and washed it thoroughly and similarly took another handful of water and washed thoroughly his left foot (up to the ankles) and said, "I saw Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) performing ablution in this way."
পরিচ্ছেদঃ ৪/৮. সর্বাবস্থায়, এমনকি সহবাসের সময়েও বিসমিল্লাহ্ বলা।
১৪১. ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ তার স্ত্রীর সাথে মিলনের পূর্বে যদি বলে, আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। আল্লাহ্! তুমি আমাদেরকে শয়তান থেকে দূরে রাখ এবং যা আমাদেরকে দান করবে তাকেও শয়তান থেকে দূরে রাখ)- অতঃপর (এ মিলনের দ্বারা) তাদের কিসমতে কোন সন্তান থাকলে শয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। (৩২৭১, ৩২৮৩, ৫১৬৫, ৬৩৮৮, ৭৩৯৬; মুসলিম ত্বলাক (তালাক) অধ্যায়, অনুচ্ছেদ ১৭ হাঃ ১৪৩৪, আহমাদ ১৯০৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪৩)
بَاب التَّسْمِيَةِ عَلَى كُلِّ حَالٍ وَعِنْدَ الْوِقَاعِ.
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا أَتَى أَهْلَهُ قَالَ بِسْمِ اللَّهِ اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا. فَقُضِيَ بَيْنَهُمَا وَلَدٌ، لَمْ يَضُرَّهُ بِسْمِ اللَّهِ اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا ".
Narrated Ibn `Abbas: The Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) said, "If anyone of you on having sexual relations with his wife said (and he must say it before starting) 'In the name of Allah. O Allah! Protect us from Satan and also protect what you bestow upon us (i.e. the coming offspring) from Satan, and if it is destined that they should have a child then, Satan will never be able to harm that offspring."
পরিচ্ছেদঃ ৪/৯. পায়খানায় যাওয়ার সময় কী বলতে হয়?
১৪২. আনাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন প্রকৃতির ডাকে শৌচাগারে যেতেন তখন বলতেন, “আল্লাহুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল খুবুছি ওয়াল খাবায়িছ” ’’হে আল্লাহ্! আমি মন্দ কাজ ও শয়তান থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি।’’ ইবনু ’আর’আরা (রহ.) শু’বাহ (রহ.) সূত্রেও অনুরূপ বর্ণনা করেন। গুনদার (রহ.) শু’বাহ (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন, إِذَا أَتَى الْخَلاَءَ (যখন শৌচাগারে যেতেন)। মূসা (রহ.) হাম্মাদ (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন, إِذَا دَخَلَ (যখন প্রবেশ করতেন)। সা’ঈদ ইবনু যায়দ (রহ.) ’আবদুল ’আযীয (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন, ’যখন প্রবেশ করার ইচ্ছা করতেন।’ (৬৩২২; মুসলিম ৩/৪২, হাঃ ৩৭৫, আহমাদ ১১৯৪৭, ১১৯৮৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪৪)
بَاب مَا يَقُولُ عِنْدَ الْخَلاَءِ
حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا، يَقُولُ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ الْخَلاَءَ قَالَ " اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ ". تَابَعَهُ ابْنُ عَرْعَرَةَ عَنْ شُعْبَةَ. وَقَالَ غُنْدَرٌ عَنْ شُعْبَةَ إِذَا أَتَى الْخَلاَءَ. وَقَالَ مُوسَى عَنْ حَمَّادٍ إِذَا دَخَلَ. وَقَالَ سَعِيدُ بْنُ زَيْدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَدْخُلَ.
হাদীসের শিক্ষা
১. বাথরুমে পায়খানা ব্যবহার করার জন্য গেলে উপরোক্ত দো'আ পাঠ করা সুন্নাত।
২. আলেমগণ বলেছেন, এর মাধ্যমে শয়তানের ওয়াসওয়াসা, কুমন্ত্রণা ও বিভিন্ন প্রকার ধোকা থেকে হিফাযত থাকা যায়। শয়তান ওযূতে সমস্যা করে, সালাত বিনষ্ট করতে চেষ্টা চালায় এসব থেকে বাঁচার জন্য এ দোআ করা উচিত।
৩. শয়তানের অন্যতম অস্ত্র হচ্ছে মানুষকে ময়লা, পায়খানা ইত্যাদির মাধ্যমে অশুচি করে ফেলবে। তাই শয়তানদের থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া জরুরী।
৪. ময়লা ও অপবিত্রতা থেকে বেঁচে থাকা ফরয: অনুরূপভাবে যা মানুষকে এসব থেকে বাঁচাতে পারবে তা অবলম্বন করাও জরুরী; কারণ হাদীসে পেশাব থেকে না বাঁচার কারণে কবরে শাস্তি হওয়ার বিষয়টি সাব্যস্ত হয়েছে।
৫. 'ইস্তেআযাহ' হচ্ছে অদৃশ্য শত্রুর ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য আশ্রয় চাওয়া। এটি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কাছে চাওয়ার অর্থ হচ্ছে শির্ক করা। সুতরাং ইস্তেআযাহ কেবল আল্লাহর কাছেই চাইতে হবে।
Narrated Anas: Whenever the Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) went to answer the call of nature, he used to say, "Allah-umma inni a`udhu bika minal khubuthi wal khaba'ith i.e. O Allah, I seek Refuge with You from all offensive and wicked things (evil deeds and evil spirits).
পরিচ্ছেদঃ ৪/১০. পায়খানার নিকট পানি রাখা।
১৪৩. ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানায় গেলেন, তখন আমি তাঁর জন্য উযূর পানি রাখলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ ‘এটা কে রেখেছে?’ তাঁকে জানানো হলে তিনি বললেনঃ ‘হে আল্লাহ্! তুমি তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান কর।’ (৭৫; মুসলিম ৪৪/৩০, হাঃ ২৪৭৭, আহমাদ ২৩৯৭, ২৮৮১, ৩০২৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪৫)
بَاب وَضْعِ الْمَاءِ عِنْدَ الْخَلاَءِ.
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ، قَالَ حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم دَخَلَ الْخَلاَءَ، فَوَضَعْتُ لَهُ وَضُوءًا قَالَ " مَنْ وَضَعَ هَذَا ". فَأُخْبِرَ فَقَالَ " اللَّهُمَّ فَقِّهْهُ فِي الدِّينِ
Narrated Ibn `Abbas: Once the Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) entered a lavatory and I placed water for his ablution. He asked, "Who placed it?" He was informed accordingly and so he said, "O Allah! Make him (Ibn `Abbas) a learned scholar in religion (Islam).
পরিচ্ছেদঃ ৪/১১. পেশাব পায়খানা করার সময় কিবলামুখী হবে না, তবে দেয়াল অথবা কোন আড় থাকলে ভিন্ন কথা।
১৪৪. আবূ আইয়ুব আনসারী (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন শৌচাগারে যায়, তখন সে যেন কিবলার দিকে মুখ না করে এবং তার দিকে পিঠও না করে, বরং তোমরা পূর্ব দিক এবং পশ্চিম দিকে ফিরে বসবে (এই নির্দেশ মাদ্বীনার বাসিন্দাদের জন্য)।* (৩৯৪; মুসলিম ২/১৭, হাঃ ২৬৪, আহমাদ ২৩৫৮৩, ২৩৫৯৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪৬)
بَاب لاَ تُسْتَقْبَلُ الْقِبْلَةُ بِغَائِطٍ أَوْ بَوْلٍ إِلاَّ عِنْدَ الْبِنَاءِ جِدَارٍ أَوْ نَحْوِهِ
حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا أَتَى أَحَدُكُمُ الْغَائِطَ فَلاَ يَسْتَقْبِلِ الْقِبْلَةَ وَلاَ يُوَلِّهَا ظَهْرَهُ، شَرِّقُوا أَوْ غَرِّبُوا
Narrated Abu Aiyub Al-Ansari: Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) said, "If anyone of you goes to an open space for answering the call of nature he should neither face nor turn his back towards the Qibla; he should either face the east or the west.
পরিচ্ছেদঃ ৪/১২. যে ব্যক্তি দু’ ইটের উপর বসে মলমূত্র ত্যাগ করল।
১৪৫. ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ‘লোকে বলে পেশাব পায়খানা করার সময় ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)হর দিকে এবং বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে বসবে না।’ ‘আবদুল্লাহ্ ইব্ন ‘উমার (রাযি.) বলেন, ‘আমি একদা আমাদের ঘরের ছাদে উঠলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দেখলাম বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে দু’টি ইটের উপর স্বীয় প্রয়োজনে বসেছেন। তিনি [ওয়াসী (রহ.)-কে] বললেন, তুমি বোধ হয় তাদের মধ্যে শামিল, যারা পাছায় ভর দিয়ে সালাত আদায় করে। আমি বললাম, ‘আল্লাহর কসম! আমি জানি না।’ মালিক (রহ.) বলেন, (এর অর্থ হলো) যারা সালাত আদায় করে এবং মাটি থেকে পাছা না উঠিয়ে সিজদা দেয়। (১৪৮,১৪৯,৩১০২ ; মুসলিম ২/১৭, হাঃ ২৬৬, আহমাদ ৪৮১২, ৪৯৯১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪২ হাদীসের শেষাংশ নেই, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪৭)
بَاب مَنْ تَبَرَّزَ عَلَى لَبِنَتَيْنِ.
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ، عَنْ عَمِّهِ، وَاسِعِ بْنِ حَبَّانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ إِنَّ نَاسًا يَقُولُونَ إِذَا قَعَدْتَ عَلَى حَاجَتِكَ، فَلاَ تَسْتَقْبِلِ الْقِبْلَةَ وَلاَ بَيْتَ الْمَقْدِسِ. فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ لَقَدِ ارْتَقَيْتُ يَوْمًا عَلَى ظَهْرِ بَيْتٍ لَنَا، فَرَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى لَبِنَتَيْنِ مُسْتَقْبِلاً بَيْتَ الْمَقْدِسِ لِحَاجَتِهِ. وَقَالَ لَعَلَّكَ مِنَ الَّذِينَ يُصَلُّونَ عَلَى أَوْرَاكِهِمْ، فَقُلْتُ لاَ أَدْرِي وَاللَّهِ. قَالَ مَالِكٌ يَعْنِي الَّذِي يُصَلِّي وَلاَ يَرْتَفِعُ عَنِ الأَرْضِ، يَسْجُدُ وَهُوَ لاَصِقٌ بِالأَرْضِ.
Narrated `Abdullah bin `Umar:
People say, "Whenever you sit for answering the call of nature, you should not face the Qibla or Baitul-Maqdis (Jerusalem)." I told them. "Once I went up the roof of our house and I saw Allah's Apostle answering the call of nature while sitting on two bricks facing Baitul-Maqdis (Jerusalem) (but there was a screen covering him. ' (Fath-al-Bari, Page 258, Vol. 1).
পরিচ্ছেদঃ ৪/১৩. পেশাব পায়খানার জন্য নারীদের বাইরে যাওয়া।
১৪৬. ‘আয়িশাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর স্ত্রীগণ রাতের বেলায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে খোলা ময়দানে যেতেন। আর ‘উমার (রাযি.) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতেন, ‘আপনার স্ত্রীগণকে পর্দায় রাখুন।’ কিন্তু আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা করেননি। এক রাতে ‘ইশার সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর স্ত্রী সওদাহ বিন্তু যাম‘আহ (রাযি.) প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বের হন। তিনি ছিলেন দীর্ঘাঙ্গী। ‘উমার (রাযি.) তাঁকে ডেকে বললেন, ‘হে সওদা! আমি কিন্তু তোমাকে চিনে ফেলেছি।’ যেন পর্দার হুকুম অবতীর্ণ হয় সেই উদ্দেশ্যেই তিনি এ কথা বলেছিলেন। অতঃপর আল্লাহ্ তা‘আলা পর্দার হুকুম অবতীর্ণ করেন। (১৪৭, ৪৭৯৫, ৫২৩৭, ৬২৪০ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪৮)
بَاب خُرُوجِ النِّسَاءِ إِلَى الْبَرَازِ.
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ أَزْوَاجَ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم كُنَّ يَخْرُجْنَ بِاللَّيْلِ إِذَا تَبَرَّزْنَ إِلَى الْمَنَاصِعِ ـ وَهُوَ صَعِيدٌ أَفْيَحُ ـ فَكَانَ عُمَرُ يَقُولُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم احْجُبْ نِسَاءَكَ. فَلَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَفْعَلُ، فَخَرَجَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ زَوْجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً مِنَ اللَّيَالِي عِشَاءً، وَكَانَتِ امْرَأَةً طَوِيلَةً، فَنَادَاهَا عُمَرُ أَلاَ قَدْ عَرَفْنَاكِ يَا سَوْدَةُ. حِرْصًا عَلَى أَنْ يَنْزِلَ الْحِجَابُ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ آيَةَ الْحِجَابِ.
Narrated `Aisha:
The wives of the Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) used to go to Al-Manasi, a vast open place (near Baqi` at Medina) to answer the call of nature at night. `Umar used to say to the Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) "Let your wives be veiled," but Allah's Apostle did not do so. One night Sauda bint Zam`a the wife of the Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) went out at `Isha' time and she was a tall lady. `Umar addressed her and said, "I have recognized you, O Sauda." He said so, as he desired eagerly that the verses of Al-Hijab (the observing of veils by the Muslim women) may be revealed. So Allah revealed the verses of "Al-Hijab" (A complete body cover excluding the eyes).
পরিচ্ছেদঃ ৪/১৩. পেশাব পায়খানার জন্য নারীদের বাইরে যাওয়া।
১৪৭. ‘আয়িশাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ‘তোমাদের প্রয়োজনের জন্য বের হবার অনুমতি দেয়া হয়েছে।’ হিশাম (রহ.) বলেন, অর্থাৎ পেশাব পায়খানার জন্য। (১৪৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪৯)
بَاب خُرُوجِ النِّسَاءِ إِلَى الْبَرَازِ.
حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " قَدْ أُذِنَ أَنْ تَخْرُجْنَ فِي حَاجَتِكُنَّ ". قَالَ هِشَامٌ يَعْنِي الْبَرَازَ
Narrated `Aisha:
The Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) said to his wives, "You are allowed to go out to answer the call of nature. "
পরিচ্ছেদঃ ৪/১৪. গৃহের মধ্যে পেশাব পায়খানা করা।
১৪৮. ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমি আমার বিশেষ এক প্রয়োজনে হাফসাহ (রাযি.)-এর ঘরের ছাদে উঠলাম। তখন দেখলাম, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিবলার দিকে পিঠ দিয়ে শাম-এর দিকে মুখ করে তাঁর প্রয়োজনে বসেছেন।’ (১৪৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৫০)
بَاب التَّبَرُّزِ فِي الْبُيُوتِ
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ، عَنْ وَاسِعِ بْنِ حَبَّانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ ارْتَقَيْتُ فَوْقَ ظَهْرِ بَيْتِ حَفْصَةَ لِبَعْضِ حَاجَتِي، فَرَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْضِي حَاجَتَهُ مُسْتَدْبِرَ الْقِبْلَةِ مُسْتَقْبِلَ الشَّأْمِ.
প্রাসঙ্গিক আলোচনা
হাদীসের বক্তব্য থেকে বুঝা যায় যে, বাধা দিবে না এমন হলে, কারো ঘরের ছাদে উঠা জায়েজ। প্রয়োজন বলতে হাদীসে পায়খানা সারার কথা বুঝানো হয়েছে। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, যা বলা অসুন্দর তা ভিন্নভাবে তুলে ধরাই শ্রেয়।
বাহ্যিক দৃষ্টিতে উক্ত হাদীস দু'টিকে পরস্পর বিরোধী মনে হলেও আসলে তা পরস্পর বিরোধী নয়। এ ব্যাপারে আলেমগণের কয়েকটি মত পাওয়া যায়-
(১) আলেমগণের কেউ কেউ উভয় হাদীসের মধ্যে সামঞ্জস্য সাধনে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরের মধ্যে প্রাকৃতিক কাজ করছিলেন, আর পূর্বোক্ত হাদীসের নির্দেশনা হচ্ছে ঘরের বাইরের স্থানের জন্য।
(২) অপর দল বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য এটা বিশেষ ব্যতিক্রম ছিল।
(৩) কেউ বলেছেন, ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমার উপরোক্ত ঘটনাটি সম্ভবত নিষেধ করার পূর্বে ছিল।
Narrated `Abdullah bin `Umar:
I went up to the roof of Hafsa's house for some job and I saw Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) answering the call of nature facing Sham (Syria, Jordan, Palestine and Lebanon regarded as one country) with his back towards the Qibla.
পরিচ্ছেদঃ ৪/১৪. গৃহের মধ্যে পেশাব পায়খানা করা।
১৪৯. ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ‘একদা আমি আমাদের ঘরের উপর উঠে দেখলাম, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি ইটের উপর বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বসেছেন। (১৪৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৫১)
بَاب التَّبَرُّزِ فِي الْبُيُوتِ
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، قَالَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ، أَنَّ عَمَّهُ، وَاسِعَ بْنَ حَبَّانَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ أَخْبَرَهُ قَالَ لَقَدْ ظَهَرْتُ ذَاتَ يَوْمٍ عَلَى ظَهْرِ بَيْتِنَا، فَرَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَاعِدًا عَلَى لَبِنَتَيْنِ مُسْتَقْبِلَ بَيْتِ الْمَقْدِسِ.
Narrated `Abdullah bin `Umar: Narrated: Once I went up the roof of our house and saw Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) answering the call of nature while sitting over two bricks facing Baitul-Maqdis (Jerusalem).
পরিচ্ছেদঃ ৪/১৫. পানি দ্বারা শৌচ কাজ করা।
১৫০. আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হতেন তখন আমি ও অপর একটি ছেলে পানির পাত্র নিয়ে আসতাম। অর্থাৎ তিনি তা দিয়ে শৌচকার্য সারতেন। (১৫১, ১৫২, ২১৭, ৫০০; মুসলিম ২/২১, হাঃ ২৭০, আহমাদ ১৩৭১৯, ১৩১০৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৫২)
بَاب الِاسْتِنْجَاءِ بِالْمَاءِ.
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، هِشَامُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي مُعَاذٍ ـ وَاسْمُهُ عَطَاءُ بْنُ أَبِي مَيْمُونَةَ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم إِذَا خَرَجَ لِحَاجَتِهِ أَجِيءُ أَنَا وَغُلاَمٌ مَعَنَا إِدَاوَةٌ مِنْ مَاءٍ. يَعْنِي يَسْتَنْجِي بِهِ.
প্রাসঙ্গিক আলোচনা
তখনকার যুগে বর্তমান সময়ের মতো অত্যাধুনিক বাথরুম ছিল না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত লজ্জাশীল ছিলেন, তিনি বাথরুমে যাওয়ার সময় আড়াল করতেন। তাই তিনি একটি বর্শা নিতেন, যার উপর কাপড় দিয়ে আড়াল করে নিয়ে তিনি তার কাজ সারতেন।
হাদীসের শিক্ষা
১. শুধু পানি দিয়ে ইস্তিঞ্জা করা (পবিত্র হওয়া) জায়েয। বরং শুধু পাথরের চেয়ে শুধু পানি দিয়ে ইস্তিঞ্জা করা উত্তম। কারণ, পানি দ্বারা বেশি পবিত্র হওয়া যায়। তবে পাথর ও পানি দু'টি ব্যবহারে নিষেধ নেই। তখন আগে পাথর ব্যবহার করবেন পরে পানি; যাতে করে পরিপূর্ণ পবিত্রতা অর্জিত হয়। ইমাম নাওয়াওয়ী বলেছেন যার ওপর সালাফ ও খালাফের একটি গোষ্ঠী একমত এবং বিখ্যাত ফাতওয়াবিদরা ঐকমত্য পোষণ করেছেন তা হলো, পাথর (ঢিলা) ও পানি উভয়টি ব্যবহার করা উত্তম।
২ মুসলিমের উচিত আগে থেকেই পবিত্রতা অর্জনের ব্যবস্থাপনা রাখা; কারণ হতে পারে তার অব্যবস্থাপনার কারণে প্রয়োজন সেরেই দাঁড়িয়ে যাবে ফলে কাপড়-চোপড় ময়লা করে ফেলবে।
৩. গোপনাঙ্গ ঢাকা ফরয। স্ত্রী ব্যতীত কারো গোপনাঙ্গের দিকে নজর দেয়া জায়েয নয়।
৪. ছোট বাচ্চাদের দ্বারা খেদমত নেয়া জায়েয, যদিও তারা স্বাধীন লোক হয়।
৫. এ হাদীসের মাধ্যমে আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহুর মর্যাদা ও তার বুদ্ধিমত্তাও সাব্যস্ত হচ্ছে।
Narrated Anas bin Malik:
Whenever Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) went to answer the call of nature, I along with another boy used to accompany him with a tumbler full of water. (Hisham commented, "So that he might wash his private parts with it.)"
পরিচ্ছেদঃ ৪/১৬. পবিত্রতা অর্জনের জন্য কারো সঙ্গে পানি নিয়ে যাওয়া।
وَقَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ أَلَيْسَ فِيكُمْ صَاحِبُ النَّعْلَيْنِ وَالطَّهُورِ وَالْوِسَادِ.
আবুদ-দারদা (রাযি.) বলেন, তোমাদের মধ্যে কি জুতা, পানি ও বালিশ বহনকারী ব্যক্তিটি [’আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’ঊদ (রাযি.)] নেই?
১৫১. আনাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হতেন তখন আমি এবং আমাদের অন্য একটি ছেলে তাঁর পিছনে পানির পাত্র নিয়ে যেতাম। (১৫০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৫৩)
بَاب مَنْ حُمِلَ مَعَهُ الْمَاءُ لِطُهُورِهِ
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي مُعَاذٍ ـ هُوَ عَطَاءُ بْنُ أَبِي مَيْمُونَةَ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا، يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا خَرَجَ لِحَاجَتِهِ تَبِعْتُهُ أَنَا وَغُلاَمٌ مِنَّا مَعَنَا إِدَاوَةٌ مِنْ مَاءٍ.
Narrated Anas: Whenever Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) went to answer the call of nature, I along with another boy from us used to go behind him with a tumbler full of water.
পরিচ্ছেদঃ ৪/১৭. ইস্তিন্জার জন্য পানির সাথে (লৌহ ফলকযুক্ত) লাঠি নিয়ে যাওয়া।
১৫২. আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন পায়খানায় যেতেন তখন আমি এবং একটি ছেলে পানির পাত্র এবং ‘আনাযা’ নিয়ে যেতাম। তিনি পানি দ্বারা শৌচকার্য করতেন। (১৫০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৯)
নাযর (রহ.) ও শাযান (রহ.) শু‘বাহ (রহ.) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন। হাদীসে বর্ণিত ‘আনাযা’ শব্দের অর্থ এমন লাঠি যার মাথায় লোহা লাগানো থাকে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৫৪)
بَاب حَمْلِ الْعَنَزَةِ مَعَ الْمَاءِ فِي الِاسْتِنْجَاءِ.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي مَيْمُونَةَ، سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدْخُلُ الْخَلاَءَ، فَأَحْمِلُ أَنَا وَغُلاَمٌ إِدَاوَةً مِنْ مَاءٍ، وَعَنَزَةً، يَسْتَنْجِي بِالْمَاءِ. تَابَعَهُ النَّضْرُ وَشَاذَانُ عَنْ شُعْبَةَ. الْعَنَزَةُ عَصًا عَلَيْهِ زُجٌّ.
Narrated Anas bin Malik: Whenever Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) went to answer the call of nature, I along with another boy used to carry a tumbler full of water (for cleaning the private parts) and a short spear (or stick).
পরিচ্ছেদঃ ৪/১৮. ডান হাতে শৌচকার্য করা নিষেধ।
১৫৩. আবূ ক্বাতাদাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন পান করে, তখন সে যেন পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না ছাড়ে। আর যখন শৌচাগারে যায় তখন তার পুরুষাঙ্গ যেন ডান হাত দিয়ে স্পর্শ না করে এবং ডান হাত দিয়ে যেন শৌচকার্য না করে। (১৫৪, ৫৬৩০; মুসলিম ২/১৮, হাঃ ২৬৭, আহমাদ ২২৬২৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৫৫)
بَاب النَّهْيِ عَنِ الِاسْتِنْجَاءِ بِالْيَمِينِ
حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ ـ هُوَ الدَّسْتَوَائِيُّ ـ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا شَرِبَ أَحَدُكُمْ فَلاَ يَتَنَفَّسْ فِي الإِنَاءِ، وَإِذَا أَتَى الْخَلاَءَ فَلاَ يَمَسَّ ذَكَرَهُ بِيَمِينِهِ، وَلاَ يَتَمَسَّحْ بِيَمِينِهِ ".
হাদীসের শিক্ষা
১. পেশাব করার সময় ডান হাতে গোপনাঙ্গ না ধরার নির্দেশনা। এটি মূলত মাকরূহ।
২. বিনা ওযরে ডান হাতে পায়খানা পরিষ্কার করা নিষেধ।
৩. পানিয়ের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলা নিষেধ। অনুরূপভাবে ফুঁ দেয়াও নিষেধ।
৪. যেকোনো ভদ্র ও উত্তম কাজে ডান হাত, পক্ষান্তরে যেকোনো ময়লা কাজের জন্য বাম হাত ব্যবহার বাঞ্ছনীয়।
৫. ডান হাতের ফযীলত বর্ণিত হলো।
৬. ইসলাম যে পরিপূর্ণ ও তাতে খুঁটিনাটি সবকিছুর নির্দেশনা রয়েছে এটি তার প্রমাণ।
Narrated Abu Qatada:
Allah's Messenger (sallallahu ‘alaihi wa sallam) said, "Whenever anyone of you drinks water, he should not breathe in the drinking utensil, and whenever anyone of you goes to a lavatory, he should neither touch his penis nor clean his private parts with his right hand."
পরিচ্ছেদঃ ৪/১৯. প্রস্রাব করার সময় ডান হাতে পুরুষাঙ্গ ধরবে না।
১৫৪. আবূ ক্বাতাদাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমাদের কেউ যখন পেশাব করে তখন সে যেন কখনো ডান হাত দিয়ে তার পুরুষাঙ্গ না ধরে এবং ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য না করে এবং পান করার সময় যেন পাত্রের মধ্যে শ্বাস না ছাড়ে। (১৫৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৫৬)
. بَاب لاَ يُمْسِكُ ذَكَرَهُ بِيَمِينِهِ إِذَا بَال
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا بَالَ أَحَدُكُمْ فَلاَ يَأْخُذَنَّ ذَكَرَهُ بِيَمِينِهِ، وَلاَ يَسْتَنْجِي بِيَمِينِهِ، وَلاَ يَتَنَفَّسْ فِي الإِنَاءِ ".
Narrated Abu Qatada: The Prophet (sallallahu ‘alaihi wa sallam) said, "Whenever anyone of you makes water he should not hold his penis or clean his private parts with his right hand. (And while drinking) one should not breathe in the drinking utensil ."