৮. ৩. ২. হাদীস বিচারে কাশফের কোনো ভূমিকা নেই

হাদীস বিচারের ক্ষেত্রে কাশফের কোনোই অবদান নেই। কাশফ, স্বপ্ন ইত্যাদি আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া নিয়ামত মাত্র, আনন্দ ও শুকরিয়ার উৎস। ইচ্ছামতো প্রয়োগের কোনো বিষয় নয়। আল্লাহ তা’আলা উমার (রা)-কে কাশফের মাধ্যমে শত শত মাইল দূরে অবস্থিত সারিয়ার সেনাবাহিনীর অবস্থা দেখিয়েছিলেন, অথচ সে উমারকে (রা) হত্যা করতে তাঁরই পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা আবু লু’লুর কথা তিনি টের পেলেন না।

এছাড়া কাশফ, স্বপ্ন ইত্যাদি দ্বারা কখনোই হক বাতিলের বা ঠিক বেঠিকের ফয়সালা হয় না। সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে বিভিন্ন মতবিরোধ ও সমস্যা ঘটেছে, কখনোই একটি ঘটনাতেও তাঁরা কাশফ, ইলহাম, স্বপ্ন ইত্যাদির মাধ্যমে হক বা বাতিল জানার চেষ্টা করেন নি। খুলাফায়ে রাশেদীন - আবু বাক্র, উমার, উসমান ও আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুম-এর দরবারে অনেক সাহাবী হাদীস বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারীর ভুলভ্রান্তির সন্দেহ হলে তাঁরা সাক্ষী চেয়েছেন অথবা বর্ণনাকারীকে কসম করিয়েছেন। কখনো কখনো তাঁরা বর্ণনাকারীর ভুলের বিষয়ে বেশি সন্দিহান হলে তার বর্ণিত হাদীসকে গ্রহণ করেন নি। কিন্তু কখনোই তাঁরা কাশফে মাধ্যমে হাদীসের সত্যাসত্য বিচার করেন নি। পরবর্তী প্রায় অর্ধ শতাব্দীকাল সাহাবীগণ হাদীস বর্ণনা করেছেন, শুনেছেন ও হাদীসের সহীহ, যয়ীফ ও বানোয়াট নির্ধারণের জন্য সনদ বর্ণনার ব্যবস্থা নিয়েছেন। বর্ণনাকারীর অবস্থা অনুসারে হাদীস গ্রহণ করেছেন বা যয়ীফ হিসেবে বর্জন করেছেন। কিন্তু কখনোই তাঁরা কাশফের উপর নির্ভর করেননি।

হাদীসের বিশুদ্ধতা নির্ণয়ের জন্য সনদের উপর নির্ভর করা সুন্নাতে খুলাফায়ে রাশেদীন ও সুন্নাতে সাহাবা। আর এ বিষয়ে কাশফ, ইলহাম বা স্বপ্নের উপর নির্ভর করা খেলাফে-সুন্নাত, বিদ‘আত ও ধ্বংসাত্মক প্রবণতা।