যাকাত ফরয হওয়ার জন্য যেসব মালে পূর্ণ এক চন্দ্র বছর মালিকানার শর্তারোপ করা হয়েছে এবং যেসব মালে করা হয়নি, এ দু’টির মধ্যে পার্থক্য হল, বর্ধনশীল ও অবর্ধনশীল হওয়া। অর্থাৎ বর্ধনশীল মালের যাকাত ফরয হওয়ার জন্য পূর্ণ এক চন্দ্র বছর মালিকানায় থাকা শর্ত। আর অবর্ধনশীল মাল পূর্ণ এক বছর মালিকানায় থাকা শর্ত নয়। যেমন-
মাটি থেকে উৎপন্ন শস্য ও ফল : যে সকল শস্য ও ফল মাটি থেকে উৎপন্ন হয় সেগুলোর যাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য এক বছর পূর্ণ হওয়া শর্ত নয়। বরং শস্য কর্তনের পরেই তা নিছাব পরিমাণ হলে তার যাকাত দিতে হবে। কেননা শস্য কর্তনের পরে তা বৃদ্ধি হয় না। বরং তা পর্যায়ক্রমে কমে যায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَهُوَ الَّذِيْ أَنْشَأَ جَنَّاتٍ مَعْرُوْشَاتٍ وَغَيْرَ مَعْرُوْشَاتٍ وَالنَّخْلَ وَالزَّرْعَ مُخْتَلِفًا أُكُلُهُ وَالزَّيْتُوْنَ وَالرُّمَّانَ مُتَشَابِهًا وَغَيْرَ مُتَشَابِهٍ كُلُوْا مِنْ ثَمَرِهِ إِذَا أَثْمَرَ وَآتُوْا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ وَلَا تُسْرِفُوْا إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِيْنَ-
‘তিনিই লতা ও বৃক্ষ-উদ্যানসমূহ সৃষ্টি করেছেন এবং খেজুর বৃক্ষ, বিভিন্ন স্বাদ বিশিষ্ট খাদ্যশস্য, যায়তুন ও ডালিম সৃষ্টি করেছেন- এগুলি একে অপরের সদৃশ এবং বিসদৃশও। যখন তা ফলবান হয় তখন তার ফল আহার করবে আর ফসল তুলবার দিনে তার হক (যাকাত) প্রদান করবে এবং অপচয় করবে না; নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদেরকে ভালবাসেন না’ (আন‘আম ৬/১৪১)।
অনুরূপভাবে গবাদি পশুর বাচ্চা ও ব্যবসায়িক মালের লভ্যাংশের যাকাত ফরয হওয়ার জন্য পূর্ণ এক বছর মালিকানায় থাকা শর্ত নয়। বরং এটা তার মূলের অনুসরণ করবে। অর্থাৎ গবাদি পশুর বাচ্চা তার মায়ের হিসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে এবং ব্যবসায়িক মালের লভ্যাংশ তার মূলধনের সাথে হিসাব হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছাহাবায়ে কেরামকে পশু পালনকারীদের নিকট থেকে যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু বয়স এক বছর পূর্ণ হয়েছে কি-না তা জিজ্ঞেস করতে বলেননি।[1]