দুনিয়ার পরে যেহেতু আখিরাত দিবস হবে, তাই এটিকে আখিরাত বা শেষ দিবস হিসাবে নামকরণ করা হয়েছে। কুরআনে আখিরাত দিবসের অনেক নাম রয়েছে।
(১) يوم البعث (পুনরুত্থান দিবস): কেননা তাতে পুনরুত্থান হবে এবং মানুষকে পুনরায় জীবিত করা হবে।
(২) يوم الخروج (বের হওয়ার দিন): কেননা তাতে লোকেরা তাদের কবরসমূহ থেকে হাশরের উদ্দেশ্যে বের হবে।
(৩) يوم القيامة (দন্ডায়মান দিবস): কেননা তাতে মানুষ হিসাবের জন্য আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে।
(৪) يوم الدين (বিচার দিবস): কেননা তাতে সমস্ত সৃষ্টির বিচার করা হবে এবং আমল অনুযায়ী তাদেরকে বদলা দেয়া হবে।
(৫) يوم الفصل (ফায়ছালা দিবস): কেননা তাতে মানুষের মধ্যে ন্যায়ভাবে ফায়ছালা করা হবে।
(৬) يوم الحشر (একত্রিত করার দিন): কেননা তাতে হিসাবের ময়দানে সমস্ত সৃষ্টিকে একত্র করা হবে।
(৭) يوم الجمع (সমাবেত দিবস): কেননা আল্লাহ তা‘আলা তাতে বদলা দেয়ার জন্য সমস্ত মানুষকে একত্র করবেন।
(৮) يوم الحساب (হিসাবের দিন): কেননা তাতে সমস্ত মানুষের ঐসব আমলের হিসাব নেয়া হবে, যা তারা দুনিয়াতে করে থাকে।
(৯) يوم الوعيد (ভয়-ভীতি প্রদর্শনের দিন): কেননা তাতে কাফের-মুশরেকদের জন্য আল্লাহর ভয়-ভীতি বাস্তবায়ন হবে।
(১০) يوم الحسرة (পরিতাপের দিবস): কেননা তাতে কাফের-মুশরেক ও মুনাফেকরা অনুতপ্ত হবে।
(১১) يوم الخلود (অনন্ত জীবনের দিন): কেননা তাতে মানুষ চিরস্থায়ী অনাদি-অনন্ত জীবন লাভ করবে।
(১২) الدار الآخرة (সর্বশেষ বাসস্থান): কেননা আখিরাতের ঘর হবে দুনিয়ার ঘরের পরে এবং আখিরাতের ঘর থেকে অন্য কোনো ঘরে স্থানান্তরিত হওয়ার সুযোগ নেই।
(১৩) دار القرار (চিরস্থায়ী আবাস): কেননা এতে মানুষ চিরকাল থাকবে। এ ঘর ধ্বংস হবেনা এবং এখান থেকে কেউ স্থানান্তরিতও হবে না।
(১৪) دار الخلد (স্থায়ী আবাস): কেননা তাতে মানুষ অনন্তকাল বসবাস করবে।
(১৫) الواقعة (নিশ্চিত ঘটনা): কেননা সেটা অবশ্যই সংঘটিত হবে।
(১৬) الحاقة (সত্য ঘটনা): কেননা সেটা অন্যায়ভাবে প্রত্যেক ঝগড়াটে ও বাক-বিতন্ডাকারীকে পরাজিত করবে। এই দিনে আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়িত হবে এবং এদিনও বাস্তবে সংঘটিত হবে। তাই এটাকে আলহাক্কাহ নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
(১৭) القارعة (বিকট আওয়াজ): কেননা সেটা কর্ণ ও অন্তরসমূহে বিকট আওয়াজ প্রদান করবে।
(১৮) الغاشية (আচ্ছন্নকারী): কেননা এদিনের ভয়াবহ বিপদ জিন-ইনসান সকলকেই আচ্ছাদিত করে ফেলবে।
(১৯) الطامة (ভয়ানক বিপদ): কেননা কিয়ামতের বিপদ অন্যান্য সমস্ত বিপদাপদের চেয়ে ভয়াবহ।
(২০) الآزفة (আসন্ন দিবস): অর্থাৎ অতি নিকটবর্তী দিবস। আখিরাত দিবসকে এ নামে নামকরণ করার মাধ্যমে মানুষকে জানিয়ে দেয়া উদ্দেশ্য যে, সেটা অতি নিকটে।
(২১) يوم التغابن (লোকসানের দিন): কেননা তাতে জান্নাতীগণ লাভবান হবে এবং জাহান্নামীরা লোকসানে পড়বে।
(২২) يوم التناد (আহবান দিবস): কেননা এদিন প্রত্যেক মানুষকেই তার আমলনামাসহ ডাকা হবে। এদিন পরস্পর ডাকাডাকি করবে। জান্নাতীগণ জাহান্নামীদেরকে ডাকবে, জাহান্নামীগণ জান্নাতীদেরকে আহবান করবে এবং আরাফ তথা জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী স্থানের লোকেরাও ডাকাডাকি করবে।