এ জাতীয় কথা বলা তাক্বদীরে অবিচল বিশ্বাস বিরোধী এবং ছোট শির্ক ও বটে। কারণ, কোন ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর এমন বলা: ‘‘যদি এমন করতাম তাহলে এমন হতো না’’ অথবা ‘‘যদি এমন না করতাম তাহলে এমন হতো না’’ এ কথাই প্রমাণ করে যে, বান্দাহ্ আল্লাহ্ তা’আলার ইচ্ছা ছাড়াও স্বেচ্ছায় নিজের লাভ বা ক্ষতি তথা যে কোন কাজ করতে পারে।
’উহুদের যুদ্ধে মুসলমানদের উপর অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ নেমে আসলে তাদের মধ্যে যারা মুনাফিক তারা এ ব্যাপারে উপরোল্লিখিত উক্তি উচ্চারণ করে। আল্লাহ্ তা’আলা তাদের সম্পর্কে নিন্দা করে বলেন:
يَقُوْلُوْنَ لَوْ كَانَ لَنَا مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ مَا قُتِلْنَا هَاهُنَا، قُلْ لَوْ كُنْتُمْ فِيْ بُيُوْتِكُمْ لَبَرَزَ الَّذِيْنَ كُتِبَ عَلَيْهِمُ الْقَتْلُ إِلَى مَضَاجِعِهِمْ
‘‘তারা বলে: যদি এ ব্যাপারে (যুদ্ধের নীতি নির্ধারণের ব্যাপারে) আমাদের কোন হাত থাকতো তাহলে আজ আমাদেরকে এখানে হত্যা করা হতো না। আপনি বলে দিন: যদি তোমরা আজ তোমাদের ঘরেও থাকতে তবুও যাদের ব্যাপারে আজ নিহত হওয়া লিপিবদ্ধ রয়েছে তারা অবশ্যই নিজ মৃত্যুস্থানে উপস্থিত হতে’’। (আ’লি ইমরান : ১৫৪)
উক্ত আয়াত এটাই প্রমাণ করে যে, কোন ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর ‘‘যদি’’ শব্দ উচ্চারণ করা মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য। খাঁটি মুসলমানের বৈশিষ্ট্য নয়। খাঁটি মুসলমানের বৈশিষ্ট্য হলো, তার উপর কোন বিপদ আসলে সে এমন শব্দ উচ্চারণ করবে যা ধৈর্য, সাওয়াবের আশা ও তাক্বদীরে দৃঢ় বিশ্বাস বুঝাবে।
আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
الْـمُؤْمِنُ الْقَوِيُّ خَيْرٌ وَأَحَبُّ إِلَى اللهِ مِنَ الْـمُؤْمِنِ الضَّعِيْفِ، وَفِيْ كُلٍّ خَيْرٌ، اِحْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ وَاسْتَعِنْ بِاللهِ وَلاَ تَعْجَزْ، وَإِنْ أَصَابَكَ شَيْءٌ فَلاَ تَقُلْ: لَوْ أَنِّيْ فَعَلْتُ كَانَ كَذَا وَكَذَا، وَلَكِنْ قُلْ: قَدَّرَ اللهُ وَمَا شَاءَ فَعَلَ، فَإِنَّ لَوْ تَفْتَحُ عَمَلَ الشَّيْطَانِ
‘‘শক্তিশালী মু’মিন দুর্বল মু’মিন অপেক্ষা অনেক ভালো এবং আল্লাহ্ তা’আলার নিকট অধিক পছন্দনীয়। তবে উভয়ের মধ্যে কম ও বেশি কল্যাণ রয়েছে। যা তোমার উপকারে আসবে তা করতে সর্বদা তুমি উৎসাহী থাকবে এবং আল্লাহ্ তা’আলার সাহায্য কামনা করবে। অক্ষমের ন্যায় বসে থাকবে না। কোন অঘটন ঘটলে এ কথা বলবে না যে, যদি এমন করতাম তা হলে এমন এমন হতো। বরং বলবে: আল্লাহ্ তা’আলা ইহা আমার ভাগ্যে রেখেছেন এবং তিনি যা চেয়েছেন তাই করেছেন। কারণ, ‘‘যদি’’ শব্দটি শয়তানের শয়তানীর দরোজা খুলে দেয়’’। (মুসলিম, হাদীস ২৬৬৪)