কেউ শয়তানের ধোকায় পড়ে ব্যভিচার করে ফেললে সে যদি অবিবাহিত হয় তা হলে তাকে একশটি বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর করা হবে। আর যদি সে বিবাহিত হয় তা হলে তাকে রজম তথা পাথর মেরে হত্যা করা হবে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ٱلزَّانِيَةُ وَٱلزَّانِي ۡلِدُواْ كُلَّ وَٰحِدٖ مِّنۡهُمَا مِاْئَةَ جَلۡدَةٖۖ وَلَا تَأۡخُذۡكُم بِهِمَا رَأۡفَةٞ فِي دِينِ ٱللَّهِ إِن كُنتُمۡ تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِۖ وَلۡيَشۡهَدۡ عَذَابَهُمَا طَآئِفَةٞ مِّنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٢﴾ [النور: ٢]

“ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী; তাদের প্রত্যেককে তোমরা একশ করে বেত্রাঘাত করবে। আল্লাহর বিধান কার্যকরী করণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবিত করতে না পারে যদি তোমরা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালে বিশ্বাসী হয়ে থাকো এবং মুমিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে”। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ২]

আবু হুরায়রা ও যায়েদ ইবন খালিদ জুহানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত তারা বলেন,

«جَاءَ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! اِقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ، فَقَامَ خَصْمُهُ فَقَالَ: صَدَقَ، اِقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ ، فَقَالَ الْأَعْرَابِيُّ: إِنَّ ابْنِيْ كَانَ عَسِيْفاً عَلَى هَذَا، فَزَنَى بِامْرَأَتِهِ ، فَقَالُوْا لِيْ: عَلَى ابْنِكَ الرَّجْمُ، فَفَدَيْتُ ابْنِيْ مِنْهُ بِمِئَةٍ مِنَ الْغَنَمِ وَوَلِيْدَةٍ، ثُمَّ سَأَلْتُ أَهْلَ الْعِلْمِ فَقَالُوْا: إِنَّمَا عَلَى ابْنِكَ جَلْدُ مِئَةٍ وَتَغْرِيْبُ عَامٍ، فَقَالَ النَّبِيُّ e: لَأَقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللهِ ، أَمَّا الْوَلِيْدَةُ وَالْغَنَمُ فَرَدٌّ عَلَيْكَ، وَعَلَى ابْنِكَ جَلْدُ مِئَةٍ وَتَغْرِيْبُ عَامٍ، وَأَمَّا أَنْتَ يَا أُنَيْسُ! فَاغْدُ عَلَى امْرَأَةِ هَذَا فَارْجُمْهَا ، فَغَدَا عَلَيْهَا أُنَيْسٌ فَرَجَمَهَا»

“জনৈক বেদুঈন ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বললো: হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাদের মাঝে কোর‘আনের ফায়সালা করুন। তার প্রতিপক্ষও দাঁড়িয়ে বললো: সে সত্য বলেছে। আপনি আমাদের মাঝে কোর‘আনের ফায়সালা করুন। তখন বেদুঈন ব্যক্তিটি বললো: আমার ছেলে এ লোকটির নিকট কামলা খাটতো। ইতিমধ্যে সে এর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচার করে বসে। সবাই আমাকে বললো: তোমার ছেলেটিকে পাথর মেরে হত্যা করতে হবে। তখন আমি আমার ছেলেটিকে ছাড়িয়ে নেই এ লোকটিকে একটি বান্দী ও একশটি ছাগল দিয়ে। অতঃপর অত্র এলাকার আলিমদেরকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বললো, তোমার ছেলেকে একশটি বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর করতে হবে। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাদের মাঝে কুরআনের বিচার করছি, বান্দী ও ছাগলগুলো তোমাকে ফেরত দেওয়া হবে এবং তোমার ছেলেটিকে একশটি বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর করতে হবে। আর হে উনাইস! তুমি এর স্ত্রীর নিকট যাও। অতঃপর তাকে রজম করো। অতএব, উনাইস তার নিকট গেলো। অতঃপর তাকে রজম করলো”।[1]

উবাদা ইবন সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«خُذُوْا عَنِّيْ، خُذُوْا عَنِّيْ، فَقَدْ جَعَلَ اللهُ لَـهُنَّ سَبِيْلاً ، الْبِكْرُ بِالْبِكْرِ جَلْدُ مِئَةٍ وَنَفْـيُ سَنَةٍ ، وَالثَّيِّبُ بِالثَّيِّبِ جَلْدُ مِئَةٍ وَالرَّجْمُ»

“তোমরা আমার নিকট থেকে বিধানটি সংগ্রহ করে নাও। তোমরা আমার নিকট থেকে বিধানটি সংগ্রহ করে নাও। আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য একটি ব্যবস্থা দিয়েছেন তথা বিধান অবতীর্ণ করেছেন। অবিবাহিত যুবক-যুবতীর শাস্তি হচ্ছে, একশটি বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর। আর বিবাহিত পুরুষ ও মহিলার শাস্তি হচ্ছে, একশটি বেত্রাঘাত ও রজম তথা পাথর মেরে হত্যা”।[2]

উক্ত হাদীসে বিবাহিত পুরুষ ও মহিলাকে একশটি বেত্রাঘাত করার কথা থাকলেও তা করতে হবে না। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মায়িয ও গামিদী মহিলাকে একশটি করে বেত্রাঘাত করেন নি। বরং অন্য হাদীসে তাদেরকে শুধু রজম করারই প্রমাণ পাওয়া যায়।

আরেকটি কথা হচ্ছে, শরী‘আতের সাধারণ নিয়ম হলো, কারোর ওপর কয়েকটি দণ্ডবিধি একত্রিত হলে এবং তার মধ্যে হত্যার বিধানও থাকলে তাকে শুধু হত্যাই করা হয়। অন্যগুলো করা হয় না। উমার ও ’উস্মান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা এটির ওপরই আমল করেছেন এবং ‘আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও ইহা বর্ণিত হয়েছে। তবে ‘আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু তার যুগে জনৈক ব্যক্তিকে রজমও করেছেন এবং বেত্রাঘাতও। আব্দল্লাহ ইবন ‘আব্বাস, উবাই ইবন কা‘ব এবং আবু যরও এ মত পোষণ করেন।

আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«ضَرَبَ رَسُوْلُ اللهِ e وَغَرَّبَ، وَضَرَبَ أَبُوْ بَكْرٍ t وَغَرَّبَ، وَضَرَبَ عُمَرُ t وَغَرَّبَ»

“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরেছেন (বেত্রাঘাত করেছেন) ও দেশান্তর করেছেন, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু মেরেছেন ও দেশান্তর করেছেন এবং উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু মেরেছেন ও দেশান্তর করেছেন”।[3]

ইমরান ইবন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«أَتَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِمْرَأَةٌ مِنْ جُهَيْنَةَ، وَهِيَ حُبْلَى مِنَ الزِّنَا، فَقَالَتْ: يَا نَبِيَّ اللهِ! أَصَبْتُ حَدًّا فَأَقِمْهُ عَلَيَّ، فَدَعَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلِيَّهَا، فَقَالَ: أَحْسِنْ إِلَيْهَا، فَإِذَا وَضَعَتْ فَأْتِنِيْ بِهَا، فَفَعَلَ، فَأَمَرَ بِهَا، فَشُكَّتْ عَلَيْهَا ثِيَابُهَا، ثُمَّ أُمِرَ بِهَا فَرُجِمَتْ، ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهَا، فَقَالَ عُمَرُ: أَتُصَلِّيْ عَلَيْهَا يَا نَبِيَّ اللهِ! وَقَدْ زَنَتْ؟! فَقَالَ: لَقَدْ تَابَتْ تَوْبَةً لَوْ قُسِّمَتْ بَيْنَ سَبْعِيْنَ مِنْ أَهْلِ الْمَدِيْنَةِ لَوَسِعَتْهُمْ، وَهَلْ وَجَدْتَ أَفْضَلَ مِنْ أَنْ جَادَتْ بِنَفْسِهَا لِلَّهِ تَعَالَى»

“একদা জনৈকা জুহানী মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসলো। তখন সে ব্যভিচার করে গর্ভবতী। সে বললো: হে আল্লাহর নবী! আমি ব্যভিচারের শাস্তি পাওয়ার উপযুক্ত। অতএব, আপনি তা আমার ওপর প্রয়োগ করুন। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার অভিভাবককে ডেকে বললেন, এর ওপর একটু দয়া করো। এ যখন সন্তান প্রসব করবে তখন তুমি তাকে আমার নিকট নিয়ে আসবে। লোকটি তাই করলো। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করলে তার কাপড় শরীরের সাথে শক্ত করে বেঁধে দেওয়া হলো। এরপর তাকে রজম করা হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত পড়ান। উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আশ্চর্যান্বিতের স্বরে বললেন, আপনি এর জানাযার সালাত পড়াচ্ছেন; অথচ সে ব্যভিচারিণী?! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে এমন তাওবা করেছে যা মদীনাবাসীর সত্তরজনকে বন্টন করে দেওয়া হলেও তা তাদের জন্য যথেষ্ট হবে। তুমি এর চাইতেও কি উৎকৃষ্ট কোনো কিছু পেয়েছো যে তার জীবন স্বেচ্ছায় আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য বিলিয়ে দিয়েছে”।[4]

উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু একদা তার এক সুদীর্ঘ খুৎবায় বলেন,

«إِنَّ اللهَ بَعَثَ مُحَمَّداً بِالْـحَقِّ، وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الْكِتَابَ، فَكَانَ فِيْمَا أَنْزَلَ اللهُ عَلَيْهِ آيَةُ الرَّجْمِ، قَرَأْنَاهَا، وَوَعَيْنَاهَا، وَعَقَلْنَاهَا، فَرَجَمَ رَسُوْلَ الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَرَجَمْنَا بَعْدَهُ، فَأَخْشَى إِنْ طَالَ بِالنَّاسِ زَمَانٌ أَنْ يَّقُوْلَ قَائِلٌ: مَا نَجِدُ الرَّجْمَ فِيْ كِتَابِ اللهِ، فَيَضِلُّوْا بِتَرْكِ فَرِيْضَةٍ أَنْزَلَهَا اللهُ»

“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সত্য দীন দিয়ে পাঠিয়েছেন এবং তাঁর ওপর কুরআন অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ওপর যা অবতীর্ণ করেছেন তার মধ্যে রজমের আয়াতও ছিলো। আমরা তা পড়েছি, মুখস্থ করেছি ও বুঝেছি। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন এবং আমরাও তাঁর ইন্তেকালের পর রজম করেছি। আশঙ্কা হয় বহু কাল পর কেউ বলবে, আমরা কুরআন মাজীদে রজম পাই নি। অতঃপর তারা আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত একটি ফরয কাজ ছেড়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে”।[5]

উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু যে আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন, তা হচ্ছে:

﴿الشَّيْخُ وَالشَّيْخَةُ إِذَا زَنَيَا ، فَارْجُمُوْهُمَا أَلْبَتَّةَ ، نَكَالاً مِّنَ اللهِ ، وَاللهُ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ﴾

“বয়স্ক (বিবাহিত) পুরুষ ও মহিলা যখন ব্যভিচার করে তখন তোমরা তাদেরকে সন্দেহাতীতভাবে পাথর মেরে হত্যা করবে। এটি হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তাদের জন্য শাস্তিস্বরূপ এবং আল্লাহ তা‘আলা পরাক্রমশালী ও সুকৌশলী”।

উক্ত আয়াতটির তিলাওয়াত রহিত হয়েছে। তবে উহার বিধান এখন ও কিয়ামত পর্যন্ত চালু থাকবে।

কোনো অবিবাহিত ব্যভিচারী কিংবা ব্যভিচারিণী যদি এমন অসুস্থ অথবা দুর্বল হয় যে, তাকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে একশটি বেত্রাঘাত করা হলে তার মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে তা হলে তাকে একশটি বেত একত্র করে একবার প্রহার করা হবে।

সাঈদ ইবন সা‘দ ইবন উবাদাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كَانَ فِيْ أَبْيَاتِنَا رُوَيْجِلٌ ضَعِيْفٌ ، فَخَبُثَ بِأَمَةٍ مِنْ إِمَائِهِمْ ، فَذَكَرَ ذَلِكَ سَعِيْدٌ لِرَسُوْلِ اللهِ e ، فَقَالَ: اِضْرِبُوْهُ حَدَّهُ ، فَقَالُوْا: يَـا رَسُوْلَ اللهِ! إِنَّهُ أَضْعَفُ مِنْ ذَلِكَ ، فَقَالَ: خُذُوْا عِثْكَالاً فِيْهِ مِئَةُ شِمْرَاخٍ ، ثُمَّ اضْرِبُوْهُ بِهِ ضَرْبَةً وَاحِدَةً ، فَفَعَلُوْا»

“আমাদের এলাকায় জনৈক দুর্বল ব্যক্তি বসবাস করতো। হঠাৎ সে জনৈকা বান্দির সাথে ব্যভিচার করে বসে। ব্যাপারটি সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানালে তিনি বললেন, তাকে তার প্রাপ্য শাস্তি দিয়ে দাও তথা একশটি বেত্রাঘাত করো। উপস্থিত সকলে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! সে তো তা সহ্য করতে পারবে না। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, একটি খেজুর বিহীন একশটি শাখাগুচ্ছ বিশিষ্ট থোকা নিয়ে তাকে তা দিয়ে এক বার মারবে। অতএব, তারা তাই করলো”।[6]

অমুসলিমকেও ইসলামী বিচারাধীন রজম করা যেতে পারে।

জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«رَجَمَ النَّبِيُّ رَجُلاً مِنْ أَسْلَمَ ، وَرَجُلاً مِنَ الْيَهُوْدِ وَامْرَأَة»

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলাম বংশের একজন পুরুষকে এবং একজন ইয়াহূদী পুরুষ ও একজন মহিলাকে রজম করেন”।[7]

ব্যভিচারের কারণে কোনো সন্তান জন্ম নিলে এবং ভাগ্যক্রমে সে জীবনে বেঁচে থাকলে তার মায়ের সন্তান রূপেই সে পরিচয় লাভ করবে। বাপের সন্তান রূপে নয়। কারণ, তার কোনো বৈধ বাপ নেই। অতএব, ব্যভিচারীর পক্ষ থেকে সে কোনো মিরাস পাবে না।

আবু হুরায়রা ও আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত তারা বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الحَجَرُ»

“সন্তান মহিলারই এবং ব্যভিচারীর জন্য শুধু পাথর তথা রজম”।[8]

‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ عَاهَرَ أَمَةً أَوْ حُرَّةً فَوَلَدُهُ وَلَدُ زِنَا ، لاَ يَرِثُ وَلاَ يُوْرَثُ»

“যে ব্যক্তি কোনো বান্দী অথবা স্বাধীন মহিলার সঙ্গে ব্যভিচার করলো তার সন্তান হবে ব্যভিচারের সন্তান। সে মিরাস পাবে না এবং তার মিরাসও কেউ পাবে না”।[9]

যে কোনো ঈমানদার পবিত্র পুরুষের জন্য কোনো ব্যভিচারিণী মেয়েকে বিবাহ করা হারাম। তেমনিভাবে যে কোনো ঈমানদার সতী মেয়ের জন্যও কোনো ব্যভিচারী পুরুষকে বিবাহ করা হারাম।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ٱلزَّانِي لَا يَنكِحُ إِلَّا زَانِيَةً أَوۡ مُشۡرِكَةٗ وَٱلزَّانِيَةُ لَا يَنكِحُهَآ إِلَّا زَانٍ أَوۡ مُشۡرِكٞۚ وَحُرِّمَ ذَٰلِكَ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٣﴾ [النور: ٣]

“একজন ব্যভিচারী পুরুষ আরেকজন ব্যভিচারিণী অথবা মুশরিকা মেয়েকেই বিবাহ করে এবং একজন ব্যভিচারিণী মেয়েকে আরেকজন ব্যভিচারী পুরুষ অথবা মুশরিকই বিবাহ করে। মুমিনদের জন্য তা করা হারাম”। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩]

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৬৯৫, ২৬৯৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৯৭, ১৬৯৮; তিরমিযী, হাদীস ১৪৩৩; আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৪৪৫; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৫৯৭

[2] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৯০; সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৪১৫, ৪৪১৬; সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ১৪৩৪; সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৫৯৮

[3] তিরমিযী, হাদীস নং ১৪৩৮

[4] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৯৬; আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৪৪০; তিরমিযী, হাদীস ১৪৩৫; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৬০৩

[5] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৮২৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৯১; আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৪১৮

[6] আহমদ: ৫/২২২; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৬২২

[7] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭০১

[8] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৫৩, ২২১৮, ৬৮১৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৫৭, ১৪৫৮; ইবন হিব্বান, হাদীস ৪১০৪; হাকিম, হাদীস নং ৬৬৫১; তিরমিযী, হাদীস ১১৫৭; বায়হাক্বী, হাদীস নং ১৫১০৬; আবু দাউদ, হাদীস নং ২২৭৩; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২০৩৫, ২০৩৭; আহমদ, হাদীস নং ৪১৬, ৪১৭

[9] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৭৯৪
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে