পরিবারিক সমস্যা সমাধানে তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদের ভূমিকা

যদি স্বামী-স্ত্রী একে অন্যকে মেনে নিতে না পারে, তাদের মধ্যে ঝগড়া ঝাটি, মনোমালিন্যতা ভুল বুঝাবুঝি লেগেই থাকে। তখন তাদেরকে বিবাহ বন্ধনে অটল থাকতে বাধ্য করা যাবে না, বরং ইসলামী শরী‘আত স্বামীকে তালাক প্রদানের অনুমতি আর স্ত্রীকে খুলা‘-এর মাধ্যমে নিজেকে মুক্ত করে নেওয়ার অনুমতি প্রদান করেছে। কারণ, এমতাবস্থায় তাদের মধ্যে বিবাহ বহাল রাখা তাদের জন্য এবং বিশেষ করে সন্তানের জন্য বিচ্ছেদের চেয়েও অধিক ক্ষতিকারক।

এজন্যই ইসলাম স্বামী-স্ত্রীর এ বিষয়াবলিকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছে, কুরআনে তার বিস্তারিত বর্ণনা এসেছে এবং স্বামী-স্ত্রীকে তাদের দায়িত্ব, অধিকার ও করণীয় সম্পর্কে সতর্ক ও নসীহত করেছে। ইসলাম স্বামী-স্ত্রী উভয়কে তাদের নিজ সত্ত্বা ও তাদের ব্যক্তিগত মালিকানার সম্পত্তি নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার ও খরচ করার অধিকার দিয়েছে। এতে স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের ওপর বাড়াবাড়ি ও সীমালঙ্ঘন বা অন্য কোনো ধরনের প্রতারণামূলক আশ্রয় না নিয়ে তাদের মধ্যে প্রেম-প্রীতি-ভালবাসা ও একে অন্যের পরিপূরক ও সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে সুখী সুন্দর পরিবার গঠন ও জীবন পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তারপরেও যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যটা হয়েই যায়, তাহলে ইসলাম তাদেরকে সৎ ও সঠিক পন্থায় যে কোনোও মাধ্যমেই হোক মীমাংসার নির্দেশ দিয়েছে। যাতে বিচ্ছেদের মাধ্যমে একটি পরিবার ধ্বংস না হয় এবং সন্তান সন্ততি বিপদে না পড়ে। কিন্তু তার পরেও যদি তাদের মধ্যে সমঝোতা ও মীমাংসা সম্ভব না হয়, তখন ইসলাম স্বামীকে তালাকের মাধ্যমে আর স্ত্রীকে খুলা‘-এর মাধ্যমে বিচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে। এতে তাদের উভয়েরই ক্ষতি রয়েছে, তালাকের ক্ষেত্রে স্বামী তার স্ত্রীকে প্রদত্ত মোহর হারাবে এবং আরেকটি সংসার গড়তে অতিরিক্ত বোঝা-সহ নতুন করে ভরণ পোষণের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। আর খুলা‘র ক্ষেত্রে স্ত্রী তার প্রাপ্য সম্পদ তথা মোহর হারালো। এ জন্যই ইসলামী শরী‘আত খুলা-এর ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীকে মোহর হিসেবে যে সম্পদ দিয়েছেন তাতেই খুলা‘ করার নির্দেশ দিয়েছে। এ হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর সংসার ও তাদের বিচ্ছেদের বিষয়ে ইসলামী শরী‘আতের দিক নির্দেশনা।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে