অহংকার করা জাহিলদের নিকট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যদিও তা হক্ব হয়। তাই এটা নিষেধ করা হয়েছে।

...........................................

ব্যাখ্যা: জাহিলী সমস্যা হলো অহংকার করা যদিও তা হক্বের ব্যাপারে হয়। তারা নিজেদের ও বাপদাদার কর্ম-কান্ডের মাধ্যমে দাম্ভিকতা প্রকাশ করতো যা নিষিদ্ধ। কেননা, কর্মরীতির অহংকার আশ্চার্যবোধ এবং অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করতে প্রেরণা দেয় যা নিষিদ্ধ এবং তা জাহিলী কর্মের অন্তর্ভুক্ত। কোন মুসলিমের জন্য অহংকার করা বৈধ নয়। যখনই অহংকারপূর্ণ বিষয়ে প্রচেষ্টা ও আমল করবে তখনই তা অবহেলা বলে গণ্য হবে। আর তখন আল্লাহ তা‘আলা যা ওয়াজীব করেছেন তা পালন করবে না। সুতরাং আল্লাহ, পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের হক্ব সর্বোত্তম। তাই মানুষ যখন ইহসান অথবা সৎ অথবা কল্যাণকর কাজ করে তখন কিভাবে অহংকার করতে পারে যদিও তার কাছে এসব কাজ সহজ হয়ে থাকে?

এটা সৃষ্টির মাঝে মানুষের অহংকার বুঝায়। অপরদিকে মানুষ যখন তার কর্ম নিয়ে আল্লাহর সাথে অহংকার করে তখন তা মারাত্নক আকার ধারণ করে। কেননা, সে তার কর্মের মাধ্যমে বিষ্ময় প্রকাশ করে, কর্মের আধিক্য তুলে ধরে। এসব কর্মই মানুষের আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। তাই স্পষ্ট কথা হলো বান্দার নিজের ও আল্লাহর ব্যাপারে সর্বদাই নিজেকে ছোট মনে করা আবশ্যক। আর বান্দা ও সৃষ্টির মাঝেও নিজেকে নিচু রাখা আবশ্যক। কেননা, মানুষ নিজেকে ছোট মনে করলে বিনম্রতা লাভে প্রেরণা পায়, যা অধিক কল্যাণ অর্জনে উদ্ভুদ্ধ করে। পক্ষান্তরে, নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করলে এটা তাকে কল্যাণকর কাজ থেকে বিরত থাকতে প্ররোচিত করে এবং মনে করে সে চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এভাবে সে কল্যাণ থেকে বিরত থাকে।

মোদ্দা কথা হলো অহংকার করা কোন মুসলিমের জন্যই উচিত নয়। এটা কেবল জাহিলী কর্মই বটে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন উল্লেখ করলেন যে, তিনি বনী আদমের নেতা তখন বললেন, কোন অহংকার করা চলবে না (لما ذكر أنه سيد ولد آدم- قال: "ولا فخر)।[1] তার পদ-মর্যাদায় কেউ সমান হতে পারবে না এসত্ত্বেও তিনি বললেন, কোন অহংকার করা যাবে না। তিনি নিজের অহংকারকে নাকোচ করে দিলেন। কেবল তিনি আল্লাহ তা‘আলার নিআ‘মত ও শুকরিয়া আদায়ের সংবাদ দিলেন, অহংকার করতে বলেননি।

>
[1]. আবু সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

أنا سيد ولد آدم يوم القيامة ولا فخر، وبيدي لواء الحمد ولا فخر، وما من نبي يومئذ آدم فمن سواه إلا تحت لوائي، وأنا أول من تنشق عنه الأرض ولا فخر ... أخرجه الترمذي 5/308 رقم 3160 5/587 رقم 3624 ، وقال في الموضعين: هذا حديث حسن صحيح. وصححه الألباني في صحيح الجامع رقم 1468

কিয়ামতের দিন আমি আদম সন্তানদের ইমাম (নেতা) হব, এতে অহংকার নেই। হামদের (আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসার) পতাকা আমার হাতেই থাকবে, এতেই গর্ব নেই। সে দিন আল্লাহ তা‘আলা নাবী আদম আলাইহিস সালাম এবং নাবীগণের সকলেই আমার পতাকার নিচে থাকবেন। সর্ব প্রথম আমার জন্যই মাটিকে বিদীর্ণ করা হবে, এতে কোন অহংকার নেই। তিরমিযী ৫/৩০৮ হা/৩১৬০, ৫/৩৬২ হা/৩৬২৪। ছ্বহীহ জামে হা/১৪৬৮।
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে