শারহু মাসাইলিল জাহিলিয়্যাহ ৯১. সীমালঙ্ঘন করা শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান ১ টি

বাড়াবাড়ি করাই জাহিলদের নিকট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা যথাযথভাবে তার বাণীতে উল্লেখ করেছেন।

..........................................

ব্যাখ্যা: (البغي) বাড়াবাড়ি বা সীমালঙ্ঘন বলতে মানুষের জীবন-সম্পদ হরণ ও সম্মানহানী করা। জাহিলরা এ ধরণের সীমালঙ্ঘন করে নিজেদের দাম্ভিকতা প্রদর্শন করতো। এর মাধ্যমে তারা তাদের নিদর্শন ও অন্যায় কথা-কর্মের প্রশংসা করতো। ইসলাম আর্বিভাবের পর তা হারাম ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মানুষের প্রতি ন্যায়ের আদেশ দেয়া হয়েছে। নীপিড়ীতদের জীবনের নিরাপত্তা বিধিবদ্ধ করা হয়েছে, যাতে সীমালঙ্ঘনকারীরা পরাভূত হয় এবং নির্যাতিতরা সাহায্য প্রাপ্ত হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَالْأِثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَأَنْ تُشْرِكُوا بِاللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَاناً وَأَنْ تَقُولُوا عَلَى اللَّهِ مَا لا تَعْلَمُونَ) [لأعراف:33]

বল, আমার রব তো হারাম করেছেন অশ্লীল কাজ যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে, আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর সাথে তোমাদের শরীক করা, যে ব্যাপারে আল্লাহ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর উপরে এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না (সূরা আরাফ ৭:৩৩)।

সর্বপরি অশ্লীলতা, শিরক ও জ্ঞানহীন কথা বলা সবই বাড়াবাড়ির অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ وَالْإِحْسَانِ وَإِيتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ) [النحل : 90]

নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফ, সদাচার এবং নিকটাত্মীয়দের দান করার আদেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, মন্দ কাজ ও সীমালঙ্ঘন হতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর (সূরা নাহাল ১৬:৯০)।

বিদায় হজ্জের ভাষণে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

إن دماءكم وأعراضكم وأموالكم عليكم حرام، كحرمة يومكم هذا، في بلدكم هذا، في شهركم هذا، ألا هل بلغت؟

তোমাদের জীবন, সম্পদ ও ইজ্জত-সম্মান তোমাদের জন্য তেমনি সম্মানিত, যেমন সম্মানিত তোমাদের এ দিনটি, তোমাদের এ শহর এবং তোমাদের এ মাস। পরে তিনি মাথা উঠিয়ে বললেন, হে আল্লাহ! আমি কি আপনার পয়গাম পৌঁছে দিয়েছি?[1] আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِناً مُتَعَمِّداً فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِداً فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَاباً عَظِيماً) [النساء:93]

আর যে ইচ্ছাকৃত কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লা‘নত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন (সূরা নিসা ৪:৯৩)।রবের বিধান প্রতিষ্ঠার কারণে নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে, মুসলিমদের মাঝে ভালবাসা বিস্তার লাভ করেছে। জাহিলী কর্ম-কান্ড দুরিভূত হয়েছে। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগত প্রতিপালকের জন্যই।

>
[1].ছ্বহীহ বুখারী, হা/৬৭, ১০৫, ১৭৩৯, ছ্বহীহ মুসলিম, হা/১৬৭৯।
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে