উপদেশ ২৯. ছিয়াম আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ ১ টি

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

হে ঈমানদারগণ! তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ন্যায় তোমাদের উপরও ছিয়ামকে ফরয করা হলো যেন তোমরা আল্লাহভীতি অর্জন করতে পারো (বাক্বারাহ ১৮৩)।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও ছাওয়াবের আশায় রমাযানের ছিয়াম পালন করে তার পূর্বের গুনাহ সমূহ মাফ করে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও ছাওয়াবের আশায় রমাযানের রাত্রি ইবাদতে কাটায় তার পূর্বের গুনাহ সমূহ মাফ করে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও ছওয়াবের আশায় ক্বদরের রাত্রি ইবাদতে কাটায় তার পূর্ববর্তী গুনাহ সমূহ মাফ করে দেয়া হয়’ (মুত্তাফাক্বব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৯৫৮)।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ كُلُّ عَمَلِ بْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ الْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ قَالَ اللهُ تَعَالَى اِلاَّ الصَّوْمَ فَاِنَّهُ لِى وَأَنَا أَجْزِيْ بِهِ يَدَعُ شَهْوَتَهُ وَطَعَامَهُ مِنْ أَجْلِى لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهِ وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبِّهِ، وَلَخَلُوْفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيْحِ الْمِسْكِ وَالصِّيَامُ جُنَّةٌ وَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَصْخَبْ فَاِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّي اِمْرَأٌ صَائِمٌ.

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ‘আদম সন্তানের নেক আমল বাড়ানো হয়ে থাকে। প্রত্যেক নেক আমল দশগুণ হ’তে সাত শত গুণ পর্যন্ত পৌঁছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তবে ছিয়াম ব্যতীত। কারণ ছিয়াম আমারই জন্য পালন করা হয় এবং তার প্রতিদান আমিই দিব। সে আমার জন্য স্বীয় প্রবৃত্তি ও খাদ্য-পানি ত্যাগ করে। ছিয়াম পালনকারীর জন্য দু’টি প্রধান আনন্দ রয়েছে। একটি তার ইফতারের সময় এবং অপরটি জান্নাতে আপন প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের সময়। নিশ্চয়ই ছিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিশকের খুশবু অপেক্ষাও অধিক সুগন্ধময়। ছিয়াম হচ্ছে মানুষের জন্য (জাহান্নাম হ’তে রক্ষার) ঢালস্বরূপ। সুতরাং যখন তোমাদের কারো ছিয়াম পালনের দিন আসে সে যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং অনর্থক শোরগোল না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে ঝগড়া করতে চায় সে যেন বলে আমি একজন ছিয়াম পালনকারী’ (মুত্তাফাক্বব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৯৫৯)।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ أَوَّلُ لَيْلَةٍ مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ صُفِّدَتِ الشَّيَاطِينُ وَمَرَدَةُ الْجِنِّ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ النَّارِ فَلم يفتح مِنْهَا بَاب الْجَنَّةِ فَلَمْ يُغْلَقْ مِنْهَا بَابٌ وَيُنَادِي مُنَادٍ يَا بَاغِيَ الْخَيْرِ أَقْبِلْ وَيَا بَاغِيَ الشَّرِّ أقصر ن وَلِلَّهِ عُتَقَاءُ مِنَ النَّارِ وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ.

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, যখন রমাযান মাসের প্রথম রাত্রি আসে, শয়তান ও অবাধ্য জিন সকলকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করা হয়, অতঃপর তার কোন দরজাই খোলা হয় না এবং জান্নাতের দরজাসমূহ খোলা হয়, অতঃপর তার কোন দরজাই বন্ধ করা হয় না। এ মাসে এক আহবানকারী আহবান করতে থাকে, হে কল্যাণের অমেবষণকারী অগ্রসর হও, হে মন্দের অমেবষণকারী থাম। আল্লাহ তা‘আলা এই মাসে বহু ব্যক্তিকে জাহান্নাম হতে মুক্তি দেন, আর এটা প্রত্যেক রাতেই হয়ে থাকে (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৯৬০)।

عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ فِى الْجَنَّةِ بَابًا يُقَالُ لَهُ الرَّيَّانُ، يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ ... فَإِذَا دَخَلُوا أُغْلِقَ، فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ.

সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (ছাঃ) বলেছেন, জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে, যার নাম রায়আন। ক্বিয়ামতের দিন সে দরজা দিয়ে ছিয়াম পালনকারীরা প্রবেশ করবে। তারা ব্যতীত অন্য কেউ সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তারা প্রবেশ করলে সে দরজা বন্ধ করা হবে। আর কেউ সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না (বুখারী হা/১৮৯৬; তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৯৭৯)

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: اَلصِّيَامُ جُنَّةٌ وَحِصْنٌ حَصِينٌ مِنَ النَّارِ.

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী কারীম(সা.) বলেছেন, ছিয়াম হচ্ছে জাহান্নাম হতে বাঁচার ঢাল এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার সুদৃঢ় দূর্গ (আহমাদ হা/৯২১৪; তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৯৮০)

عَنْ جَابِرٍ عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: إِنَّمَا الصِّيَامُ جُنَّةٌ يَسْتَجِنُّ بِهَا الْعَبْدُ مِنَ النَّارِ هُوَ لِى وَأَنَا أَجْزِى بِهِ.

জাবির (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (ছাঃ) বলেছেন, ছিয়াম হচ্ছে জাহান্নাম থেকে বাঁচার ঢাল, যা দ্বারা বান্দাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করা হবে। আর সেটা আমার জন্য এবং আমি নিজে এর প্রতিদান প্রদান করব (আহমাদ হা/১৫২৯৯; তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৯৮১)

عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رضي الله عنه أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهُ أَلاَ أَدُلُّكَ عَلَى أَبْوَابِ الْخَيْرِ قُلْتُ بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ اَلصَّوْمُ جُنَّةٌ وَالصَّدَقَةُ تُطْفِئُ الْخَطِيْئَةَ كَمَا يُطْفِئُ الْمَاءُ النَّارَ.

মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (ছাঃ) তাকে বললেন, আমি তোমাকে কল্যাণের সব দরজার কথা বলে দিব না? আমি বললাম, কেন বলবেন না? হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! বলেন। তিনি বললেন, ছিয়াম হচ্ছে ঢালস্বরূপ এবং দান পাপ মিটিয়ে দেয়। যেমন পানি আগুন নিভিয়ে দেয় (তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৯৮৩)

عَنْ أَبِى أُمَامَةَ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ مُرْنِى بِعَمَلٍ. قَالَ عَلَيْكَ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لاَ عِدْلَ لَهُ. قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ مُرْنِى بِعَمَلٍ. قَالَ عَلَيْكَ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لاَ عِدْلَ لَهُ. قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ مُرْنِى بِعَمَلٍ. قَالَ عَلَيْكَ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لاَ مِثْلَ لَهُ.

আবু উমামা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাকে একটি আমলের কথা বলুন। তিনি বললেন, তুমি ছিয়াম পালন কর। ইবাদতের জগতে ছিয়ামের সমপর্যায়ের কোন ইবাদত নেই। আমি আবার বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাকে একটি আমলের কথা বলুন। তিনি বললেন, তুমি ছিয়াম পালন কর। ইবাদতের জগতে ছিয়ামের সমপর্যায়ের কোন ইবাদত নেই। আমি আবারও বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাকে একটি আমলের কথা বলুন। তিনি বললেন, তুমি ছিয়াম পালন কর। ইবাদতের জগতে ছিয়ামের দৃষ্টান্ত কোন ইবাদত নেই (তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৯৮৬)।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صُومُوا لِرُؤْيَتِهِ وَأَفْطِرُوا لِرُؤْيَتِهِ فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَأَكْمِلُوا عِدَّةَ شَعْبَانَ ثَلَاثِينَ.

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ছিয়াম রাখ তোমরা চাঁদ দেখে এবং ছিয়াম খুলবে (শাওয়ালের) চাঁদ দেখে। যদি মেঘের কারণে তা গোপন থাকে তোমাদের প্রতি, তবে পূর্ণ করবে শা’বান ত্রিশ দিনে (মুত্তাফাক্বব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৯৭০)

عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّا أُمَّةٌ أُمِّيَّةٌ، لاَ نَكْتُبُ وَلاَ نَحْسِبُ الشَّهْرُ هَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا وَعَقَدَ الْإِبْهَامَ فِي الثَّالِثَةِ ثُمَّ قَالَ الشَّهْرُ هَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا يَعْنِي تَمَامَ الثَّلَاثِينَ يَعْنِي مَرَّةً تِسْعًا وَعِشْرِينَ وَمرَّة ثَلَاثِينَ.

ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, আমরা উম্মি জাতি। লিখতেও পারি না, হিসাবও রাখতে জানি না। মাস হয় এই, এই, ও এইতে (এই বলে তিনি দুই হাতের দশ আঙ্গুল তিনবার দেখালেন) এবং তৃতীয় বারে (এক হাতের) বুড়া আঙ্গুল বন্ধ রাখলেন অতঃপর বললেন, মাস হয় এই, এই, ও এইতে অর্থাৎ, পূর্ণ ত্রিশ দিনে- অর্থাৎ, একবার উনত্রিশ দিনে আরেকবার ত্রিশ দিনে (মুত্তাফাক্বব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৯৭১)