৩৩৭. সর্বাপেক্ষা খারাপ ঘটনার দৃশ্য অবলোকনের জন্য প্রস্তুত থাকুন

আলিয়া মাদরাসায় (উচ্চতর বিদ্যালয়ে) আমি টপ গ্রেডস (উচ্চতর মানসমূহ) পাওয়ার জন্য অত্যধিক প্রতিযোগী হয়ে গেলাম, একটি বিশেষ সাময়িক পরীক্ষায় আমি এতটা পরিশ্রম করেছিলাম যে, আমি ক্লাশে সেকেণ্ড (দ্বিতীয়) হওয়ার নিচে অন্য কোন কিছু হওয়ার আশা করিনি। কিন্তু তা ঘটেছিল বলে আপনি মনে করেন? আমি ইংরেজিতে ফেল করেছিলাম যেটাকে আমি ভয় করতাম। আমি এর কারণ একেবারেই বুঝতে পারলাম না।

আমার মাথার উপর হতাশার কালো মেঘ জমে গেল আর এরপর কয়েক রাত আমার ঘুমাতে কষ্ট হলো। আমার কয়েকজন সহপাঠী আমার ব্যর্থতায় খুশিও হলো বটে। যা ঘটেছিল তা ছিল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। পরবর্তী কয়েক দিনের মত আমি বিষগ্ন ও দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে পড়লাম। একজন শিক্ষক আমার অবস্থা লক্ষ্য করেছিলেন এবং আমাকে উৎসাহিত করার জন্য ও আমাকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। জীবনের এ সময়ের কথা যখনই আমার মনে পড়ে তখনই একথা ভেবে আমি বিস্মিত হয়ে যাই যে, কত গুরুতরভাবে এ ঘটনা আমাকে আক্রান্ত করেছিল। যে হতাশায় আমি ভুগছিলাম তা আমাকে একটুও সাহায্য করেনি এবং তা আমার সেই ‘ফেল’ কে ‘পাশ’ বানিয়ে দিতে পারেনি। আমি আপনাকে যা বলতে চাই তা হলোঃ ব্যর্থতার কারণে যদি আপনি হতাশ ও ভগ্ন হৃদয় হয়ে যান তবে এ কথা মনে করবেন না যে, হঠাৎ করে আপনি সফলতা অর্জন করতে পারবেন। এমনটা কখনও ঘটবে না। আপনার উপর এ ধরনের ব্যর্থতার একমাত্র প্রভাব হলো যে, এটা আপনাকে আরো বেশি ব্যর্থ করে দিবে।

আমি যখন মাস্টার্স কোর্সের থিসিস পুরো করলাম তখন A গ্রেড পাওয়ার আশা করছিলাম। আমি ভেবেছিলাম আমার সম্পাদনা A গ্রেড পাওয়ার যোগ্য; কিন্তু, অবশেষে আমি শুধুমাত্র ‘B’ গ্রেড পেয়েছিলাম। এ ঘটনা যখন ঘটল তখন আমি বাড়াবাড়ি করলাম এবং আমার গ্রেড নিয়ে অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে পড়লাম।

আমার এক বুদ্ধিমান বন্ধু আমাকে বললেন, ‘ধর, কোন কারণবশত তুমি তোমার মাস্টার ডিগ্রি কখনও শেষ করতে পারলে না। তখন তুমি কী করবে? তাছাড়া, তুমি যদি মাস্টার ডিগ্রিই সমাপ্ত কর তবে ‘A’ অথবা ‘B’ গ্রেডে সত্যিকার তেমন কি-ই-বা পার্থক্য আছে?” সে যা বলেছিল তা ছিল জাজ্বল্যমান সত্য আর এতে আমার বোধোদয় হয়েছিল। এখন আমি বুঝি যে, এরূপ অবস্থার মোকাবেলার উত্তম পন্থা হলো- সম্ভাব্য সর্বাপেক্ষা খারাপ ফলাফলের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত থাকা।

এ অভিজ্ঞতা থেকে আমি একটি উত্তম শিক্ষা গ্রহণ করলাম। যখন আমার ডক্টর কোর্সের থিসিস জমা দেয়ার সময় হলো তখন সংশ্লিষ্ট বিভাগ থিসিস জমা দেয়ার তারিখকে অনেক পিছিয়ে দিল। আমার থিসিস ইতোমধ্যে উত্তমরূপে সমাপ্ত হয়ে গিয়েছিল। যেহেতু আমি সব কিছুর জন্যই প্রস্তুত ছিলাম তাই তাদের বিলম্ব আমার উপর বড় ধরনের কোন প্রভাব ফেলেনি।

যে ব্যক্তি তার ব্যবসায় দেউলিয়া হয়ে যাবার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত আছে সে ব্যক্তি আংশিক লোকসানের কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবে না।