বলা হয় আনুশের ওয়ান বলেছেনঃ “এ দুনিয়াতে দুর্দশা দু’ ধরনের। প্রথম প্রকারের প্রতিকার আছে; দুশ্চিন্তা হলো এর ঔষুধ। আর দ্বিতীয় প্রকারের কোন প্রতিকার নেই; ধৈর্যই এর আরোগ্যকর চিকিৎসা।

বলা হয় যে, “যে ধৈর্য ধরে সে সফল হয়।”

বলা হয়েছে যে, “মৃত্যু তালাশ করে বাঁচতে চেষ্টা কর। কেননা, মৃত্যু তালাশ করার কারণে কত লোকই না বেঁচে আছে। আর বেঁচে থাকতে চাওয়ার কারণে কত লোকই না ধ্বংস হয়ে গেছে। অধিকাংশ সময়ই অনিশ্চিত পথে চলার পরই নিরাপত্তা আসে।”

আরবরা বলত, “নিশ্চয়ই মন্দ কাজেরও ভালো-মন্দ স্তর আছে”, আবু উবাইদাহ একথার ব্যাখ্যা করেন এভাবে, “আপনি যদি কোন সংকটে পড়ে থাকেন তবে জেনে রাখুন যে আপনি এর চেয়ে আরো অনেক বেশি মন্দ বা খারাপ অবস্থার শিকার হতে পারতেন। আপনার যদি এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি থাকে তবে আপনি আরো ভালোভাবে সংকটের মোকাবিলা করতে পারবেন।”

যখন সকল আশা ভরসা শেষ হয়ে যায়, অধিকাংশ সময় তখনই সংকট নিরসনের (সমস্যা সমাধানের) উপায় বেরিয়ে আসে (পাওয়া যায়)।

“আমি তাদের নিকট থেকেই তাদের উত্তম আমলগুলো কবুল (গ্রহণ) করি এবং তাদের মন্দ (বদ) আমলগুলোকে আমি উপেক্ষা করি; তারা জান্নাতবাসী হবে। এ সত্য অঙ্গীকারই তাদেরকে দেয়া হতো।” (৪৬-সূরা আহকাফঃ আয়াত-১৬) (কাফেরদেরকে শাস্তি দেয়া হচ্ছিল না তাই) এমনকি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন এবং তারা ভেবেছিল যে তাদেরকে (তাদের জাতি কর্তৃক) অস্বীকার করা হলো এমন সময় তাদের নিকট আমার সাহায্য এলো।” (১২-সূরা ইউসুফঃ আয়াত-১১০)

إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ

“নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” (২-সূরা বাকারাঃ আয়াত-১৫৩)

إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُم بِغَيْرِ حِسَابٍ

“কেবলমাত্র ধৈর্যশীলদেরকেই তাদের পুরস্কার পূর্ণমাত্রায় (পুরাপুরি) বেহিসাবে দেয়া হবে।” (৩৯-সূরা যুমারঃ আয়াত-১০)

মাঝে মাঝে যখন সকল আশা ভরসা শেষ হয়ে যায় এবং সব কিছু অন্ধকার মনে হয়, তখন আল্লাহ সফলতা ও শান্তি এনে দেন। আল্লাহর নিকট আশা করতে আমাদেরকে উৎসাহিত করার জন্য তার প্রতি পুরোপুরি নির্ভর ও বিশ্বাস করার জন্য এবং কখনও তার সাহায্যের আশা ত্যাগ না করার জন্যই এমনটি হয় (আল্লাহ করেন)। বিপদগ্রস্ত অবস্থায়ও প্রত্যেকের এ কথা জেনে সন্তুষ্ট থাকা উচিত যে, সে ছোট খাট বিপদাক্রান্ত হয়েছে এবং বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে। ইছহাক (নামে এক আবেদ লোক) বলেছেন, “আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে বিপদগ্ৰস্ত করে পরে তাকে ধ্বংস থেকে রক্ষা করেন, তখন সম্ভবত তিনি তাকে (সে বিপদ দ্বারা) পরীক্ষা করেন। এভাবে বিপদাপদ (ছদ্মবেশে) এক মহাকল্যাণ।”

বলা হয়েছে যে, যে কষ্ট সহ্য করে এবং ধৈর্যশীল হওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর বিধানের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে। তাহলে সে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তার কোন গোপন কল্যাণ হবে।

কোন কোন খ্রিস্টান বর্ণনা করেছে যে, তাদের কোন নবী বলেছেন, “কষ্ট হলো আল্লাহ পক্ষ থেকে শিক্ষাদান আর শিক্ষাদান সব সময়ের জন্য নয়। অতএব, যখন কাউকে শিক্ষাদান করা হয় ও সে ধৈর্য ধরে তার জন্য শুভ সংবাদ রয়েছে। এমন লোককে এমন মুকুট পরানো হবে যা হবে উত্তরণ ও বিজয়ের প্রতীক। এমন বিজয়, যার প্রতিশ্রুতি আল্লাহ তাদেরকে দিয়েছেন যারা তাকে ভালবাসে ও তার আনুগত্য করে।”

(আবেদ) ইছহাক আরো বলেছেন– “যদি তুমি কোন সংকটের ধারালো থাবায় ধরা পড় তবে অভিযোগ করা থেকে সাবধান থেকো। কেননা নিরাপত্তার উপায় হলো কঠিন পথে চলা।”