“তাদেরই জন্যে রয়েছে নিরাপত্তা এবং তারা সঠিক পথপ্রাপ্ত।” (৬-সূরা আন’আমঃ আয়াত-৮২)

“যিনি তাদেরকে ক্ষুধার সময় খাবার খাইয়েছেন এবং তাদেরকে ভয় থেকে নিরাপদ করেছেন।” (১০৬-সূরা কুরাইশঃ আয়াত-৪)

“আমি কি তাদের জন্য একটি নিরাপদ পবিত্র আশ্রয়স্থল প্রতিষ্ঠিত করিনি?” (২৮-সূরা আল কাছাছঃ আয়াত-৫৭)

“আর যে কেউ এতে প্রবেশ করে সে নিরাপদ।” (৩-সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত-৯৭)

“অতএব, তাকে তার নিরাপদস্থানে বা তাকে তার নিরাপত্তায় পৌঁছিয়ে দাও।” (৯-সূরা তাওবাঃ আয়াত-৬)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন

مَن بات آمنًا في سربه معافيا في بدنه عنده قوت يومه فكأنما حيزت له الدنيا بحذافيرها

ভাবাৰ্থঃ “যে ব্যক্তি প্রশান্ত চিত্তে সুস্থ শরীরে ও দিবসের খাবার নিয়ে (জোগাড় করে বা খেয়ে) রাত কাটাল (ঘুমাল) সে যেন গোটা দুনিয়ার মালিক হলো।”

আত্মার নিরাপত্তা হলো ঈমান ও সত্যকে নিশ্চিতভাবে জানা। ঘরের নিরাপত্তা হলো লজ্জা ও বিচ্যুতি হতে মুক্ত হওয়া এবং শান্তি ও স্বর্গীয় পথ নির্দেশে (এলাহী হেদায়েতে) ভরপুর হওয়া। আমাদের জাতির নিরাপত্তা হলো ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, ন্যায়ের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ও শরীয়তের বাস্তবায়ন (আইন প্রয়োগ)। নিরাপত্তার শক্র হলো ভয়।

“অতএব, সে ভয়ে এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে সেখানে থেকে পালিয়ে গেল।” (২৮-সূরা আল কাছাছঃ আয়াত-২১)

“সুতরাং তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় কর।” (৫-সূরা মায়িদাঃ আয়াত-৩)

উপরে যে সব ধরনের নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে তার ভিত্তিতে ভীতদের জন্য বা কাফেরদের জন্য কোন নিরাপত্তা নেই। আল্লাহর কসম এ পার্থিব জীবন কতই না করুণা উদ্রেক কর। যদি আপনি আপনার জীবনের এক দিকে (বিষয়ে) সমৃদ্ধ হন তবে আপনি নিশ্চয় অপরদিকে (বিষয়ে) শোচনীয়। যদি একদিকে সম্পদ আসে তবে আরেক দিকে অসুখ আসে। যদি আপনার শরীর সুস্থ থাকে তবে অন্য কোন সমস্যা দেখা দিবে। আর যখন সব কিছু ভালোভাবে চলছে মনে হয় এবং আপনি চুড়ান্তভাবে স্থির বোধ করেন তখন তো আপনি শবাধারে রক্ষিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত

নজদের আল আশা নামক কবি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল তাকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কবিতা আবৃতি করে শুনাতে ও ইসলাম গ্রহণ করতে। আবু সুফিয়ান (তিনি তখনও মুসলমান হননি) পথে কবির সাথে সাক্ষাত করে তাকে তার উদ্দেশ্য থেকে ফিরাতে ও তাকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য ১০০ (একশত) উট উপহার দেয়ার প্রস্তাব করল। কবি উপহার গ্রহণ করল। যাত্রা ফিরানোর (ফিরে যাওয়ার) জন্য সে যখন নাকি একটি উটে চড়ে বসল, আর এমনিই সেটা ক্ষেপে গিয়ে তাকে ছুড়ে মারল, এতে সে মাথা ভূমিতে রেখে পড়ে গেল এবং আঘাতের ফলে তার ঘাড় মটকে গিয়ে সে মরে গেল। সে দ্বীন-দুনিয়া কোনটা অর্জন না করেই এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল।