যে লোক কাউকে দান করে তার উপকার করে সে (দানকারী) নিজেই নিজের উপকার করে। নিজের মাঝে পরিবর্তন দেখে, নিজের আচরণে পরিবর্তন দেখে শান্তি লাভ করে এবং অন্যের মুখে হাসি দেখে পরোপকারী নিজেই আত্মতৃপ্তি লাভ করে।

যদি আপনি নিজেকে সঙ্কটাপন্ন ও দুঃখে জর্জরিত দেখতে পান তবে অন্যের প্রতি করুণা প্রদর্শন করুন; তাহলে আপনি নিজেই প্রথমে শান্ত্বনা লাভ করবেন। অভাবীকে দান করুন, মজলুমকে রক্ষা করুন, যাতনাগ্রস্তদেরকে সাহায্য করুন আর রোগী দেখতে যান, তবেই আপনি দেখতে পাবেন যে, সুখ সবদিক থেকে আপনাকে ঘিরে রেখেছে। দানকর্ম প্রসাধনীর মতো এটা ব্যবহারকারী, বিক্রেতা ও ক্রেতাকে উপকার করে। (সুগন্ধি বা আতর যেমন যার সংস্পর্শেই আসে তাকেই সুবাসিত করে। -অনুবাদক)

অধিকন্তু, অন্যেকে সাহায্য করে কেউ যদি মানসিক উপকার লাভ করে তা সত্যিই মহান। যদি আপনি বিষন্নতায় ভুগতে থাকেন তবে একটি দানকর্ম আপনার অসুস্থতার উপর সবচেয়ে ভালো ঔষুধের চেয়েও বেশি কার্যকর প্রভাব ফেলবে।

এমনকি আপনি যখন অন্যের সাথে সাক্ষাৎকালে প্রসন্ন হাসি দেন, (প্রকৃতপক্ষে) আপনি তখন দানই করেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: কাউকে অকিঞ্চিৎকর (নগণ্য) ভেবে কোনরূপ দানকর্ম বন্ধ করে দিও না, এমনকি তোমার ভাইয়ের সাথে হাসি মুখে সাক্ষাৎ করাও বন্ধ করিও না। কেননা, সে কাজটাও তোমার আমলনামায় নেকীর পাল্লায় খুবই ভারী হতে পারে।

অপরপক্ষে, অন্যের সাথে সাক্ষাৎকালে আপনি যখন ভ্রুকুটি করেন (ভুরু কোঁচকান) তখন আপনি শক্রতার এমন এক ধরনের চিহ্ন প্রকাশ করেন যা ভ্রাতৃত্ববোধের জন্য এতটাই ক্ষতিকর যে একমাত্র আল্লাহই জানেন যে, এর ক্ষতির পরিধি কত বেশি। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে জানিয়েছেন যে, এক বেশ্যা একবার এক কুকুরকে এক অঞ্জলি পানি পান করানোতে আল্লাহ তাকে এত বড় এক জান্নাত পুরস্কার হিসেবে দান করেন যে, তার প্রশস্ততা সমগ্র আকাশমণ্ডলী ও ভূমণ্ডলের মতো। কেননা পুরস্কারদাতা হলেন ক্ষমাশীল, ধনী ও প্রশংসাযোগ্য।

হে দুর্দশার ভয়ে ভীতরা! অন্যের উপকারার্থেই ভয় ও বিষন্নতা আপনাদেরকে পেয়ে বসে। অন্যকে দান, আতিথেয়তা সহমর্মিতা ও সমর্থন ইত্যাদি বিভিন্নভাবে সাহায্য করুন। আর এমন কাজ করেই আপনার কাঙ্ক্ষিত সকল সুখ পাবেন।

الَّذِي يُؤْتِي مَالَهُ يَتَزَكَّىٰ وَمَا لِأَحَدٍ عِنْدَهُ مِنْ نِعْمَةٍ تُجْزَىٰ إِلَّا ابْتِغَاءَ وَجْهِ رَبِّهِ الْأَعْلَىٰ إِلَّا ابْتِغَاءَ وَجْهِ رَبِّهِ الْأَعْلَىٰ

“যে পরিশুদ্ধ হওয়ার জন্য তার সম্পদ দান করে ও কারো কাছে প্রতিদান আশা করে না, শুধুমাত্র তার মহিমাময় প্রভুর সন্তুষ্টি লাভের জন্যই সে দান করে। এবং অচিরেই সে (জান্নাতে প্রবেশ করে) সন্তুষ্ট হবে।” (৯২-সূরা আল লাইল: আয়াত-১৮-২১)