২৯- তারপর সাফা দরজা দিয়ে বের হয়ে সাফা পাহাড়ে গেলেন। সাফা পাহাড়ের কাছাকাছি এসে পাঠ করলেন :

«إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ أَبْدَأُ بِمَا بَدَأَ اللَّهُ بِهِ»

‘নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। আল্লাহ যা দিয়ে শুরু করেছেন, আমিও তা দিয়ে শুরু করছি’। অতপর তিনি সাফা দিয়ে শুরু করলেন এবং কাবাঘর দেখা যায় এই রকম উঁচুতে উঠলেন।

৩০- অতপর তিনি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর একত্ববাদ, বড়ত্ব ও প্রশংসার কথা ঘোষণা করলেন এবং বললেন,

«لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْد يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كَلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ أَنْجَزَ وَعْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَهَزَمَ الأَحْزَابَ وَحْدَه».

(লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল্ মুল্কু ওয়ালাহুল হাম্দু ইউহয়ী ওয়া ইয়ুমীতু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু আনজাযা ওয়াদাহু, ওয়া নাছারা আবদাহু ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহ্।)

‘আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক। তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই। প্রশংসাও তাঁর। তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন। আর তিনি সকল বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক। তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করেছেন; তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং একাই শত্রু-দলগুলোকে পরাজিত করেছেন।’[1] অতপর এর মাঝে তিনি দো‘আ করলেন এবং এরূপ তিনবার পাঠ করলেন।

৩১- এরপর মারওয়া পাহাড়ের দিকে হেঁটে চললেন। যখন তিনি বাতনুলওয়াদীতে পদার্পন করলেন, তখন তিনি দৌড়াতে লাগলেন। অবশেষে যখন তাঁর পদযুগল ‘উপত্যকার অপর প্রান্তে’[2] মারওয়ায় আরোহন করতে গেল, তখন তিনি স্বাভাবিক গতিতে চলতে লাগলেন। অবশেষে মারওয়ায় আসলেন। অতপর তাতে চড়লেন এবং বায়তুল্লাহ্‌র দিকে তাকালেন।[3]

৩২- অতপর সাফা পাহাড়ে যা করেছিলেন মারওয়া পাহাড়েও তাই করলেন।

[1]. নাসাঈ, মুসলিম।

[2] মুসনাদে আহমদ।

[3]. নাসাঈ।

৩৩- মারওয়া পাহাড়ে শেষ চক্করকালে তিনি বললেন, হে লোক সকল!

«لَوْ أَنِّى اسْتَقْبَلْتُ مِنْ أَمْرِى مَا اسْتَدْبَرْتُ لَمْ أَسُقِ الْهَدْىَ وَجَعَلْتُهَا عُمْرَةً فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ لَيْسَ مَعَهُ هَدْىٌ فَلْيَحِلَّ وَلْيَجْعَلْهَا عُمْرَةً. »

‘আমি আগে যা করে এসেছি তা যদি আবার নতুন করে শুরু করার সুযোগ থাকত, তাহলে হাদী বা কুরবানীর পশু সাথে নিয়ে আসতাম না এবং হজকে উমরায় পরিণত করতাম। তোমাদের মধ্যে যার সাথে হাদী বা পশু নেই সে যেন হালাল হয়ে যায় এবং এটাকে উমরাতে পরিণত করে।’[1] অন্য বর্ণনায় এসেছে,

«أَحِلُّوا مِنْ إِحْرَامِكُمْ فَطُوفُوا بِالْبَيْتِ وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَقَصِّرُوا ثُمَّ أَقِيمُوا حَلاَلاً حَتَّى إِذَا كَانَ يَوْمُ التَّرْوِيَةِ فَأَهِلُّوا بِالْحَجِّ وَاجْعَلُوا الَّتِي قَدِمْتُمْ بِهَا مُتْعَةًً».

‘বায়তুল্লাহ্‌র তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করে তোমরা তোমাদের ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাও এবং চুল ছোট করে ফেল। অতপর হালাল অবস্থায় অবস্থান কর। এমনভাবে যখন তারবিয়া দিবস (যিলহজের আট তারিখ) হবে, তোমরা হজের ইহরাম বেঁধে তালবিয়া পাঠ কর। আর তোমরা যে হজের ইহরাম করে এসেছ, সেটাকে তামাত্তুতে পরিণত কর।[2]

৩৪- তখন সুরাকা ইবন মালিক ইবন জু‘ছুম মারওয়া পাহাড়ের পাদদেশে ছিলেন, তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমাদের এই উমরায় রূপান্তর করে তামাত্তু করা কি শুধু এ বছরের জন্য নাকি সব সময়ের জন্য? তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’হাতের আঙ্গুলগুলো পরস্পরের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে বললেন,

«دَخَلَتِ الْعُمْرَةُ فِى الْحَجِّ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ، لاَ بَلْ لأَبَدٍ أَبَدٍ، لاَ بَلْ لأَبَدٍ أَبَدٍ»

‘হজের ভেতরে উমরা কিয়ামত দিন পর্যন্ত প্রবিষ্ট হয়েছে, না বরং তা সবসময়ের জন্য, না বরং তা সবসময়ের জন্য’ এ কথাটি তিনি তিনবার বললেন।’[3]

৩৫- সুরাকা ইবন মালিক রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমাদেরকে দীনের ব্যাখ্যা দিন, আমাদেরকে যেন এখনই সৃষ্টি করা হয়েছে (অর্থাৎ আমাদেরকে সদ্যভূমিষ্ট সন্তানের ন্যায় দীনের তালীম দিন)। আজকের আমল কিসের ওপর ভিত্তি করে? কলম যা লিখে শুকিয়ে গিয়েছে এবং তাকদীর যে বিষয়ে অবধারিত হয়ে গিয়েছে, তার ভিত্তিতে? না কি ভবিষ্যতের নতুন কোনো বিষয়ের ভিত রচিত হবে?[4] তিনি বললেন,

«لَا، بَل فيمَا جَفَّت به الأَقلاَم وَجَرَت به المَقَاديرُ.»

‘না, বরং যা লিখে কলম শুকিয়ে গিয়েছে এবং যে ব্যাপারে তাকদীর নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে, তা-ই তোমরা আমল করবে। তিনি বললেন, ‘তাহলে’[5] আর আমলের দরকার কি? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

«اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ [لِمَا خُلِقَ لَهُ]»

‘তোমরা আমল করে যাও, তোমাদের কেউ যে জন্য সৃষ্ট হয়েছ তার জন্য সে কাজটা করা সহজ করে দেয়া হয়েছে[6]।’[7]

৩৬- জাবের রা. বলেন, ‘তিনি আমাদেরকে আদেশ দিলেন, আমরা হালাল হয়ে গেলে যেন হাদীর ব্যবস্থা করি।’[8] ‘আমাদের মধ্য থেকে এক উটে সাতজন অংশ নিতে পারে।’[9] ‘যার সাথে হাদী নেই সে যেন হজের সময়ে তিনদিন রোজা রাখে আর যখন নিজ পরিবারের নিকট অর্থাৎ দেশে ফিরে যাবে তখন যেন সাতদিন রোজা রাখে।’[10]

৩৭- ‘অতপর আমরা বললাম, কী হালাল হবে? তিনি বললেন,

الْحِلُّ كُلُّهُ.

‘সব কিছু হালাল হয়ে যাবে।’’[11]

৩৮- ‘বিষয়টি আমাদের কাছে কঠিন মনে হল এবং আমাদের অন্তর সংকুচিত হয়ে গেল।’[12]

[1]. সাহাবাগণের মধ্যে যারা হাদী সঙ্গে নিয়ে আসেন নি রাসূল সা. তাঁদেরকে উমরা করে হালাল হতে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তাদের হজ মুশরিকদের বিপরীত হয়। কেননা, মুশরিকরা মনে করতো হজের মাসসমূহে ওমরা পালন জঘন্যতম অপরাধ। (বুখারী : ৭২৩০)

[2]. বুখারী ও মুসলিম।

[3]. ইবন জারূদ, আল-মুনতাকা।

[4]. অর্থাৎ, আমাদের কর্মকান্ড কি আগেই নির্ধারিত নাকি আমরা সামনে যা করব সেটাই চূড়ান্ত?

[5]. মুসনাদে আহমদ।

[6]. অর্থাৎ তাকদীর যদি ভাল লিখা হয়ে থাকে, তাহলে ভাল কাজ করা তার জন্য সহজ হবে। আর যদি তাকদীরে খারাপ লিখা থাকে, তবে খারাপ কাজ করা তার জন্য সহজ করে দেয়া হবে।

[7]. মুসনাদে আহমদ।

[8]. মুসলিম, মুসনাদে আহমদ।

[9]. মুসনাদে আহমদ।

[10]. মুয়াত্তা, বায়হাকী।

[11]. মুসনাদে আহমদ, তাহাবী।

[12]. মুসনাদে আহমদ, নাসাঈ।

৩৯- ‘জাবের রা. বলেন, আমরা বের হয়ে বাতহা[1] নামক জায়গায় গেলাম। তিনি বলেন, এমতাবস্থায় একজন লোক বলতে লাগল,

عَهْدِي بِأَهْلِي الْيَوْمَ

‘আজকে আমার পরিবারের সাথে আমার সাক্ষাতের পালা।’’[2]

৪০- ‘জাবের রা. বলেন, আমরা পরস্পর আলোচনা করতে লাগলাম। অতপর আমরা বললাম, আমরা হাজী হিসেবে বের হয়েছিলাম। হজ ছাড়া আমরা অন্য কিছুর নিয়ত করিনি। এমতাবস্থায় আমাদের কাছে আরাফা দিবস আসতে যখন আর মাত্র চার দিন বাকী।’[3] ‘এক বর্ণনায় এসেছে, পাঁচ রাত্রি, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নির্দেশ দিলেন, যেন আমরা আমাদের স্ত্রীদের সাথে মিলিত হই। অতপর আমরা আমাদের আরাফার উদ্দেশ্যে (মিনাতে) গমন করব, অথচ আমাদের লিঙ্গসমূহ সবে মাত্র বীর্য স্খলিত করেছে। [অর্থাৎ এটা কেমন কাজ হবে?] বর্ণনাকারী বললেন, আমি যেন জাবের রা. এর কথার সাথে হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে দেখানোর ব্যাপারটি দেখতে পাচ্ছি। মোট কথা, তাঁরা বললেন, আমরা কিভাবে তামাত্তু করব অথচ আমরা শুধু হজের উল্লেখ করেছি।’[4]

৪১- জাবের রা. বলেন, ‘বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর কাছে পৌঁছল। আমরা জানি না এটা কি আসমান থেকে তাঁর নিকট পৌঁছল নাকি মানুষের নিকট থেকে পৌঁছল।’[5]

[1]. বায়তুল্লাহর পূর্বদিকে অবস্থিত।

[2]. মুসনাদে আহমদ।

[3]. মুসনাদে আহমদ।

[4]. বুখারী, মুসলিম।

[5]. মুসলিম।
হজকে উমরায় পরিণত করতে রাসূল্লাল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহবান সাহাবীগণের সাড়া

৪২- ‘অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে’[1] ‘মানুষের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুণাবলি বর্ণনা করে বললেন,’[2]

«أَبَاللَّهِ تُعَلِّمُونِي أَيُّهَا النَّاسُ، قَدْ عَلِمْتُمْ أَنِّي أَتْقَاكُمْ لِلَّهِ وَأَصْدَقُكُمْ وَأَبَرُّكُمْ»

‘হে মানুষ, তোমরা কি আমাকে আল্লাহ সম্পর্কে জ্ঞান দিচ্ছ?’[3] তোমরা জানো নিশ্চয় আমি তোমাদের চেয়ে আল্লাহকে বেশি ভয় করি, তোমাদের চেয়ে অধিক সত্যবাদি, তোমাদের চেয়ে অধিক সৎকর্মশীল।

«افْعَلُوا مَا آمُرُكُمْ بِهِ فَإِنِّى لَوْلاَ هَدْيِي لَحَلَلْتُ كَمَا تَحِلُّون وَلَكِنْ لاَ يَحِلُّ مِنِّي حَرَامٌ حَتَّى يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ. وَلَوِ اسْتَقْبَلْتُ مِنْ أَمْرِى مَا اسْتَدْبَرْتُ لَمْ أَسُقِ الْهَدْىَ فَحِلُّوا»

‘আমি তোমাদেরকে যা নির্দেশ করছি তা পালন কর।’[4] আমার সাথে যদি হাদী (যবেহের জন্য পশু) না থাকত, তাহলে আমি অবশ্যই হালাল হয়ে যেতাম যেরূপ তোমরা হালাল হয়ে যাচ্ছ। ‘কিন্তু যতক্ষণ না হাদী তার নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছবে, [অর্থাৎ দশ তারিখ হাদী যবেহ না হবে] ততক্ষণ আমার পক্ষে হারামকৃত বিষয়াদি হালাল হবে না।’[5] ‘যদি আমি যা পিছনে রেখে এসেছি এমন কাজগুলো আবার নতুন করে করার সুযোগ থাকত, তাহলে হাদী সাথে নিয়ে আসতাম না। অতএব, তোমরা হালাল হয়ে যাও।’[6]

৪৩- ‘জাবের রা. বললেন, আমরা আমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করলাম এবং সুগন্ধি ব্যবহার করলাম। আমরা আমাদের স্বাভাবিক পোশাক-পরিচ্ছেদ পরিধান করলাম।’[7] ‘আমরা রাসূলের কথা শুনলাম এবং মেনে নিলাম।’[8] ‘অতপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এবং যাদের সাথে হাদী ছিল[9] তারা ব্যতিত সবাই হালাল হয়ে গেল এবং চুল ছোট করল।’[10]

[1]. মুসলিম, তাহাবী, ইবন মাজাহ্‌।

[2]. মুসনাদে আহমদ, তাহাবী,

[3]. বুখারী।

[4]. বুখারী, মুসলিম।

[5]. বুখারী।

[6] মুসলিম, ইবন মাজাহ্‌, তাহাবী।

[7]. মুসলিম, নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ।

[8]. মুসলিম, তাহাবী।

[9]. যাদের সাথে হাদী ছিল তাঁরা হলেন, রাসূল সা., তালহা রা., আবু বকর রা., উমর রা., যুল ইয়াসারা রা. ও যুবাইর রা.। সুতরাং তাঁরা কিরান হজ করেছেন। এরা ছাড়া সবাই তামাত্তু হজ করেছেন। (বুখারী, মুসলিম ও মুসনাদে আহমদ)

[10]. ইবন মাজাহ্‌, তাহাবী।
রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মত ইহরাম বেঁধে ইয়ামান থেকে আলী রা.-এর আগমন

৪৪- ‘এদিকে আলী রা. তাঁর কর্মস্থল ইয়ামান থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লমের উটগুলো নিয়ে আগমন করলেন।’[1]

৪৫- তিনি ফাতিমা রা. কে তাদের মধ্যে পেলেন যারা হালাল হয়েছেন। ‘এমনকি তিনি মাথা আঁচড়িয়েছেন,’[2] রঙ্গীন পোশাক পরেছেন এবং সুরমা ব্যবহার করেছেন। তিনি ফাতিমা রা. কে এই অবস্থায় দেখে তা অপছন্দ করলেন। ‘তিনি বললেন, তোমাকে এ রকম করার জন্য কে নির্দেশ দিয়েছে?’[3] ফাতেমা রা. বললেন, আমার পিতা আমাকে এ রকম করার নির্দেশ দিয়েছেন।

৪৬- জাবের রা. বলেন, আলী রা. ইরাকে থাকা অবস্থায় বলতেন, ‘ফাতেমার কৃতকর্মের ওপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেকে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য তাঁর কাছে গেলাম, ফাতেমা যা রাসূলের বরাত দিয়ে বলেছেন সে সম্পর্কে তাঁর কাছে জিজ্ঞেস করলাম। আমি রাসূলকে জানালাম যে, আমি ফাতেমার এই কাজকে অপছন্দ করেছি; ‘কিন্তু সে আমাকে বলেছে, আমার পিতা আমাকে এরকম করতে নির্দেশ দিয়েছেন।’[4] তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

«صَدَقَتْ صَدَقَتْ صَدَقَتْ أَنَا أَمَرْتُهَا بِهِ»

‘সে সত্য বলেছে, সে সত্য বলেছে, ‘সে সত্য বলেছে,’[5] ‘আমিই তাকে এরকম করতে নির্দেশ দিয়েছি।’[6]

৪৬- জাবের রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ আলীকে বললেন, হজের নিয়ত করার সময় তুমি কি বলেছিলে? তিনি বললেন, আমি বলেছি,

مَا قُلْتَ حِينَ فَرَضْتَ الْحَجَّ ؟ قَالَ : قُلْتُ : اللَّهُمَّ إِنِّي أُهِلَّ بِمَا أَهَلَّ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم

‘হে আল্লাহ, নিশ্চয় আমি এভাবে ইহরাম বাঁধছি যেভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম বেঁধেছেন’।

৪৭- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,

«فَإِنَّ مَعِىَ الْهَدْىَ فَلاَ تَحِلُّ، وَامْكُثْ حَرَامًا كَمَا أَنْتَ»

‘তাহলে আমার সাথে হাদী রয়েছে। সুতরাং তুমি হালাল হয়ো না। তুমি হারাম অবস্থায়ই থাকো যেমন আছ।’[7]

৪৭- জাবের রা. বলেন, ইয়ামান থেকে আলী রা. কর্তৃক আনিত হাদী এবং ‘মদীনা থেকে’[8] রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক আনিত হাদীর ‘মোট সংখ্যা ছিল একশত উট।’[9]

৪৮- জাবের রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং যাদের সাথে হাদী ছিল তাঁরা ছাড়া সব মানুষ হালাল হয়ে গেল এবং চুল ছোট করল।

[1]. মুসলিম, নাসাঈ।

[2]. ইবনুল-জারূদ।

[3]. আবূ দাউদ, বায়হাকী।

[4]. আবূ দাউদ, বায়হাকী।

[5]. নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ।

[6]. নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ।

[7]. নাসাঈ।

[8]. নাসাঈ, ইবন মাজাহ্‌।

[9]. দারমী।

৪৯- অতপর যখন তারবিয়া দিবস (যিলহজের আট তারিখ) হল, তাঁরা ‘তাদের আবাসস্থল বাতহা থেকে’[1] হজের ইহরাম বেঁধে মিনা অভিমুখে রওয়ানা হল।

৫০- জাবের রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়েশার কাছে গেলেন। তিনি দেখতে পেলেন, আয়েশা কাঁদছে। রাসূল বললেন,

مَا شَانُكِ ؟ قَالَتْ : شَانِى أَنِّى قَدْ حِضْتُ وَقَدْ حَلَّ النَّاسُ وَلَمْ أَحْلِلْ وَلَمْ أَطُفْ بِالْبَيْتِ وَالنَّاسُ يَذْهَبُونَ إِلَى الْحَجِّ الآنَ. فَقَالَ «إِنَّ هَذَا أَمْرٌ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَى بَنَاتِ آدَمَ فَاغْتَسِلِى ثُمَّ أَهِلِّى بِالْحَجِّ ثُمَّ حُجِّى وَاصْنَعِى مَا يَصْنَعُ الْحَاجُّ غَيْرَ أَنْ لاَ تَطُوفِى بِالْبَيْتِ وَلاَ تُصَلِّى»

‘তোমার কি হয়েছে? আয়েশা বললেন, আমার হায়েয এসে গেছে। লোকজন হালাল হয়ে গিয়েছে কিন্তু আমি হালাল হতে পারি না। বায়তুল্লাহর তাওয়াফও করি না। অথচ সব মানুষ এখন হজে যাচ্ছে। রাসূল বললেন, এটা এমন একটি বিষয় যা আল্লাহ আদমের মেয়ে সন্তানদের ওপর নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং তুমি গোসল করে নাও। অতপর হজের তালবিয়া পাঠ কর। ‘তারপর তুমি হজ কর এবং হজকারী যা করে তুমি তা কর। কিন্তু বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করো না এবং সালাত আদায় করো না[2][3] ‘অতপর তিনি তাই করলেন, কিন্তু বায়তুল্লাহ্‌র তাওয়াফ করলেন না।’[4]

৫১- আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উটের পিঠে আরোহন করলেন। তিনি ‘আমাদেরকে নিয়ে মিনাতে’[5] যোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও ফজরের সালাত আদায় করলেন।

৫২- অতপর তিনি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন। এমনকি সূর্য উদয় হলো।

৫৩- তিনি নামিরা নামক স্থানে ‘তাঁর জন্য’[6] একটি পশমের তাবু স্থাপন করার নির্দেশ দিলেন।

[1]. বুখারী, মুসলিম।

[2]. এই হাদীস প্রমাণ করে যে, ঋতুবতী মহিলার জন্য কুরআন তেলাওয়াত করা জায়েয। নিঃসন্দেহে হজের সফরে কুরআন তেলাওয়াত করা অন্যতম উত্তম আমল। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়েশা রা. কে তাওয়াফ ও সালাত আদায় ছাড়া সব আমল করার অনুমতি দিয়েছেন। যদি ঋতু অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত জায়েয না হত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবশ্যই তাকে তা নিষেধ করতেন। হাদীস বিশারদগণ ‘নাপাক ও ঋতুবতী মহিলা কুরআন পড়বে না।’ হাদীসটি দুর্বল বলেছেন, অনেকে এটাকে মাওযু তথা ভিত্তিহীন বলেছেন। (ইরওয়াউল গালীল : ১৯১)

[3]. মুসনাদে আহমদ, আবূ দাউদ।

[4]. মুসনাদে আহমদ।

[5]. আবূ দাউদ।

[6]. আবূ দাউদ, ইবন মাজাহ্‌।

৫৪- এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রওয়ানা হলেন। কুরাইশরা সন্দেহাতীতভাবে মনে করছিল যে, তিনি মাশ‘আরে হারাম (অর্থাৎ) ‘মুযদালিফাতেই’[1] অবস্থান করবেন এবং সেখানেই তাঁর অবস্থানস্থল হবে। কেননা, কুরাইশরা জাহেলী যুগে এরকম করত।[2] কিন্তু রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাশ‘আরে হারাম অতিক্রম করে আরাফার নিকট উপনীত হলেন এবং নামিরা নামক স্থানে তাঁর জন্য তাবু তৈরি করা অবস্থায় পেলেন। তিনি সেখানে অবতরণ করলেন।

৫৫- অতপর যখন সূর্য হেলে পড়ল, তিনি কসওয়া নামক উট আনতে বললেন এবং তাতে সওয়ার হয়ে উপত্যকার কোলে এসে থামলেন[3]

[1]. আবূ দাউদ, ইবন মাজাহ্‌।

[2]. হজ পালনকারী সাহাবীগণ নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফার ময়দানে অবস্থান করলেন এবং এ-ক্ষেত্রেও মুশরিকদের বিপরীত করলেন, কেননা মুশরিকরা মুযদালিফায় অবস্থান করতো এবং বলতো আমরা হারাম এলাকা ছাড়া অন্য জায়গায় যাব না এবং সেখান থেকে প্রস্থান করব না। উল্লেখ্য, আরাফা হারাম এলাকার বাইরে অবস্থিত।

[3]. এই উপত্যকার নাম হচ্ছে ‘উরনা’। এটা আরাফার এলাকার বাইরে অবস্থিত। রাসূল সা. এই উরনা উপত্যকা থেকে আরাফার ভাষণ দিয়েছেন।

৫৬- অতপর মানুষের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন এবং বললেন,

  • «إِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِى شَهْرِكُمْ هَذَا فِى بَلَدِكُمْ هَذَا».

‘নিশ্চয় তোমাদের রক্ত ও তোমাদের সম্পদ তোমাদের জন্য সম্মানিত। যেমন তোমাদের এই শহরে, তোমাদের এই মাসে, তোমাদের এই দিন সম্মানিত।’

  • أَلاَ إِنَّ كُلَّ شَىْءٍ مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ تَحْتَ قَدَمَىَّ هَاتَيْنِ مَوْضُوعٌ.

‘জেনে রাখো! নিশ্চয় জাহিলিয়্যাতের প্রত্যেকটি বিষয় আমার এই দুই পায়ের তলে রাখা হয়েছে।

  • وَدِمَاءُ الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعَةٌ وَأَوَّلُ دَمٍ أَضَعُهُ دِمَاؤُنَا دَمُ. دَمُ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ (كَانَ مُسْتَرْضَعًا فِى بَنِى سَعْدٍ فَقَتَلَتْهُ هُذَيْلٌ)

‘জাহিলী যুগের যাবতীয় রক্তের দাবী রহিত করা হল। আমাদের রক্তের দাবীসমূহের মধ্যে প্রথম রক্তের দাবী যা রহিত করা হল, তা ইবন রবী‘আ ইবনুল-হারিসের রক্তের দাবী। সে সা‘দ গোত্রে দুধ পানরত অবস্থায় ছিল। হুযাইল গোত্র তাকে হত্যা করেছিল।’্র

  • وَرِبَا الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعٌ وَأَوَّلُ رِبًا أَضَعُ رِبَانَا رِبَا عَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَإِنَّهُ مَوْضُوعٌ كُلُّهُ

‘জাহেলী যুগের সুদ রহিত করা হল। সর্বপ্রথম যে সুদের দাবী রহিত করছি তা হল আব্বাস ইবন আবদুল মুত্তালিবের সুদ। তা পরিপূর্ণরূপে রহিত করা হল।’

  • اتَّقُوا اللَّهَ فِى النِّسَاءِ فَإِنَّكُمْ أَخَذْتُمُوهُنَّ بِأَمَانَةِ اللَّهِ وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنَّ بِكَلِمَةِ اللَّهِ

‘আর তোমরা স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। কেননা, তোমরা তাদেরকে আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং তাদের লজ্জাস্থানসমূহকে আল্লাহর বাণী [1]দ্বারা হালাল করে নিয়েছ।’

  • وَإِنَّ لَكُمْ عَلَيْهِنَّ أَنْ لاَ يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ أَحَدًا تَكْرَهُونَهُ فَإِنْ فَعَلْنَ فَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ

‘নিশ্চয় তোমাদের ব্যাপারে তাদের ওপর দায়িত্ব হচ্ছে, তারা যেন তোমাদের বিছানাসমূহকে এমন কোন ব্যক্তি দ্বারা পদদলিত না করে যাকে তোমরা অপছন্দ কর (অর্থাৎ তারা যেন পরপুরুষদেরকে তাদের কাছে আসার অনুমতি না দেয়)। যদি তারা তা করে, তোমরা তাদেরকে মৃদুভাবে প্রহার কর।’

  • وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ

‘আর তাদের ব্যাপারে তোমাদের উপর দায়িত্ব হচ্ছে, উত্তম পন্থায় তাদের ভরণ-পোষণ ও পোশাক-পরিচ্ছেদের ব্যবস্থা করা।’

  • وَإِنِّى قَدْ تَرَكْتُ فِيكُمْ مَا لَنْ تَضِلُّوا بَعْدَهُ إِنِ اعْتَصَمْتُمْ بِهِ كِتَابَ اللَّهِ

‘আমি তোমাদের মধ্যে রেখে গেলাম আল্লাহর কিতাব। যদি তোমরা তা অাঁকড়ে ধর এরপরে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না।

  • وَأَنْتُمْ مَسْئُولُونَ عَنِّى فَمَا أَنْتُمْ قَائِلُونَ. قَالُوا نَشْهَدُ أَنَّكَ قَدْ بَلَّغْتَ وَأَدَّيْتَ وَنَصَحْتَ.

‘আমার ব্যাপারে তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে, তখন তোমরা কি বলবে ? তারা বলল, আমরা সাক্ষী দিচ্ছি, নিশ্চয় আপনি আপনার রবের বাণীসমূহ পৌঁছিয়ে দিয়েছেন, অর্পিত দায়িত্ব আদায় করেছেন, উম্মতকে উপদেশ দিয়েছেন।’

  • ثُمَّ قَالَ بِأُصْبُعِهِ السَّبَّابَةِ يَرْفَعُهَا إِلَى السَّمَاءِ وَيَنْكِبُهَا إِلَى النَّاسِ «اللَّهُمَّ اشْهَدِ اللَّهُمَّ اشْهَدِ اللَّهُمَّ اشْهَدْ».

‘অতপর তিনি তাঁর শাহাদাত আঙ্গুলী আকাশের দিকে তুলে মানুষের দিকে ইশারা করে বললেন, হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন, হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন, হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন।’

[1]. আল্লাহর বাণীটি হচ্ছে, فَانْكِحُوا مَا طَابَ لَكُمْ مِنَ النِّسَاءِ তাহলে তোমরা বিয়ে কর মহিলাদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে (নিসা : ৩ )
দুই ওয়াক্ত সালাত একসাথে আদায় ও আরাফায় অবস্থান

৫৬- ‘এরপর বিলাল রা. একবার আযান দিলেন।’[1]

৫৭- অতপর ইকামত দিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সবাইকে নিয়ে) যোহরের সালাত আদায় করলেন। বিলাল রা. পুনরায় ইকামত দিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের সালাতও আদায় করলেন।

৫৮- তিনি উভয় সালাতের মাঝখানে অন্য কোন সালাত আদায় করেননি।

৫৯- অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘কাসওয়া নামক উটের’[2] পিঠে আরোহন করলেন। এমনকি তিনি উকুফের স্থানে এলেন। তাঁর বাহন কসওয়ার পেট বড় বড় পাথরের দিকে ফিরিয়ে রাখলেন এবং যারা পায়ে হেঁটে তাঁর সাথে এসেছিলেন, তিনি তাঁদের সকলকে তাঁর সামনে রাখলেন। অতপর কিবলামুখী হলেন।[3]

৬০- তিনি সেখানেই উকূফ করতে থাকলেন, এমনকি সূর্য ডুবে গেলে। (পশ্চিম আকাশের) হলুদ আভা ফিকে হয়ে গেল এমনকি লালিমাও দূর হয়ে গেল[4]

৬১- আর তিনি বললেন,

«قَدْ وَقَفْتُ هَهُنَا وَعَرَفَةُ كُلُّهَا مَوْقِفٌ»

‘আমি এখানে উকুফ করলাম কিন্তু আরাফার পুরো এলাকা উকূফের স্থান।’[5]

৬২- এরপর তিনি উসামা ইবন যায়েদকে তাঁর উটের পেছনে বসালেন।

[1]. দারেমী।

[2]. ইবন মাজাহ্‌।

[3]. অন্য হাদীসে এসেছে, তিনি উকূফ করেছেন, উভয় হাত তুলে দু‘আ করেছেন। হাজ্জাতুন-নবী : ৭৩ পৃষ্ঠা।

[4]. সূর্যাস্তের পর আরাফাহ থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রস্থান মুশরিকদের আচারের সাথে ভিন্নতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই ছিল, কেননা মুশরিকরা সূর্যাস্তের আগেই আরাফা ত্যাগ করতো। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাদের আদর্শ তাদের থেকে ভিন্ন।

[5]. আবূ দাউদ, নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ।

৬৮- অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযদালিফার দিকে রওয়ানা হলেন। ‘আর তিনি ছিলেন শান্ত-সুস্থির।’[1] কাসওয়া নামক উটের লাগাম শক্তভাবে টেনে ধরলেন, এমনকি উটের মাথা তাঁর হাওদার[2] সাথে ছুঁয়ে যাচ্ছিল। আর তিনি তাঁর ডান হাত দিয়ে ইশারা করে বললেন,

«أَيُّهَا النَّاسُ السَّكِينَةَ السَّكِينَةَ»

‘হে লোক সকল ! শান্ত হও শান্ত হও, ধীর-স্থিরভাবে এগিয়ে চল’।

৬৭- যখনই তিনি কোন বালুর টিলায় পৌঁছতেন, তখনই তা অতিক্রম করার সুবিধার্তে উটের রশি ঢিলা করে দিতেন। এমনভিাবে এতে উঠে তা অতিক্রম করতেন।


[1] আবূ দাউদ, নাসাঈ।

[2]
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৯ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »