ইসলামী জীবন-ধারা কথাবার্তার আদব আবদুল হামীদ ফাইযী ১ টি

৪৬। অপরের বাগদত্তাকে পয়গাম দেবেন না। অপরের কিছু ক্রয় করা দেখে তা নিজের জন্য চড়া দামে ক্রয় করবেন না। কারো ক্রেতা ভাঙ্গাবেন না।

৪৭। মহিলা হলে অকারণে স্বামীর কাছে তালাক প্রার্থনা করবেন না।

৪৮। নেতৃত্ব প্রার্থনা করবেন না।

৪৯। কাউকে অকারণে ভৎর্সনা করবেন না ও লজ্জা দেবেন না।

৫০। পরামর্শদানে হিতাকাঙক্ষী হন। কাউকে ভুল পরামর্শ দেবেন না।

৫১। নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে অভিসম্পাত করবেন না।

৫২। নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে জাহান্নামী বলবেন না।

৫৩। কোন মুসলিমকে খামাখা ‘কাফের’ বলবেন না।

৫৪। আল্লাহর উপর কসম খাবেন না।

৫৫। সবাই উৎসন্নে গেল বলে নিরাশ হবেন না।

৫৬। ‘আমি স্বাধীন’ বলবেন না। কারণ এ দুনিয়ায় কেউই স্বাধীন নয়। আর আপনি তো আল্লাহর দাস, স্বাধীন হবেন কোত্থেকে?

৫৭। কাফের, মুনাফেক ও মুশরেকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন না।

৫৮। মুনাফেককে ‘স্যার’ বা ‘মহাশয়’ বলবেন না।

৫৯। আপনার চাকর ও চাকরানীকে ‘আমার দাস ও আমার দাসী’ বলবেন না।

৬০। কোন বিপদের সময় ‘যদি, যদি না এই করতাম--’ বলবেন না।

৬১। কোন রাজাকে ‘রাজাধিরাজ’ বলবেন না। কারণ এ খেতাব আল্লাহর।

৬২। ‘অমুক নক্ষত্রের ফলে বৃষ্টি হল’ বলবেন না। কারণ বৃষ্টি আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়।

৬৩। কারো ক্রোধের সময় আল্লাহর স্মরণ দেবেন না।

৬৪। রঙধনুকে ‘রামধনু’, বড় দা-কে ‘রাম দা’, বড় ঝিঙেকে ‘রাম ঝিঙে’ বলবেন না।

৬৫। ভালো কাজে খরচ করে ‘অর্থ নষ্ট হল’ বলবেন না।

৬৬। কারো বংশে খোঁটা দেবেন না। নিজ বংশ নিয়ে গর্ব করবেন না।

৬৭। পরের বাপকে বাপ বলবেন না। নিজ বংশ গোপন বা অস্বীকার করবেন না।

৬৮। এতীম ও যাচ্ঞাকারীকে ধমক দেবেন না। বরং তাদের সাথে নম্র কথা বলবেন।

৬৯। পরকীয় কথায় থাকবেন না।

৭০। ধর্মীয় ব্যাপারে অপ্রয়োজনীয় খুঁটিনাটি জানতে অধিক প্রশ্ন করবেন না।

৭১। কারো প্রতি আপনার অনুগ্রহ প্রকাশ করবেন না।

৭২। দালালি করে জিনিসের দাম বাড়াবেন না।

৭৩। একান্ত নিরুপায় না হলে যাচ্ঞা করবেন না।

৭৪। ভঙ্গিপূর্ণ কথা বলবেন না। সরল-সহজভাবে কথা বলবেন।

৭৫। কাজে না থেকে কথায় থাকবেন না; অর্থাৎ অযথা ফুটানি করবেন না।

৭৬। নিজে যা করেন না, তা অপরকে করতে বলবেন না। নিজে আদর্শ হয়ে অপরকে উপদেশ দিন।

৭৭। আত্মশস্নাঘা বা আত্মপ্রশংসা করবেন না।

৭৮। কারো মুখোমুখি প্রশংসা করবেন না। বরং তার পিছনে প্রশংসা করুন।

৭৯। বিপদে মাতম করবেন না, অধৈর্য হবেন না। বিপদ ও অশান্তির সময় মৃত্যু প্রার্থনা করবেন না।

৮০। ক্রোধের সময় কথা বলবেন না। প্রকৃতিস্থ হয়ে কথা বলুন, কথার উত্তর দিন।

৮১। উপদেশ গ্রহণে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করবেন না। বড়-ছোট সকল উপদেষ্টার নিকট থেকে উপদেশ গ্রহণ করবেন।

৮২। কথায় কথায় কারো ভুল ধরবেন না।

৮৩। অন্যায় সুপারিশ করবেন না।

৮৪। মসজিদে সাংসারিক গল্প-গুজব করবেন না। আল্লাহর ঘরে আল্লাহরই কথা বলবেন।

৮৫। কাউকে অন্যায়ের পথ বলবেন না।

৮৬। নিজের বাধ্য মানুষকে (স্ত্রী ও সন্তানকে) অবৈধ কাজে অনুমতি দেবেন না।

৮৭। অন্যায় ও অসঙ্গত কথা বলবেন না।

৮৮। যখন কথা বলবেন, তখন লক্ষ্যহীনভাবে কথা বলবেন না। আপনার কথা বলার পশ্চাতে যেন উত্তম লক্ষ্য থাকে।

৮৯। আপনার কথায় যেন এমন ভাব ও ভাষা না থাকে, যা শুনে লোকের মনে হয় যে, আপনি নিজেকে শিক্ষক্ষত প্রমাণ করার জন্য দাঁতভাঙ্গা অবোধগম্য বাক্য বা শব্দ প্রয়োগ করছেন।

৯০। আপনার জবানে আল্লাহর জিকিরই বেশী করুন।

আল্লাহর দেওয়া জিভকে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে ব্যয় করুন। মহান আল্লাহ বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقُولُوا قَوْلًا سَدِيدًا

অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল। (সূরা আহযাব-৩৩:৭০) আর সাবধান! আপনার প্রত্যেক কথা কিন্তু ফিরিশ্তা নোট (টেপ) করে রাখছেন।