যার কাছে দুঃখের কথা বলে মন হাল্কা হবে এমন একজন সুহৃদ সাথী না থাকলে জীবন একটি মরুময় প্রান্তরের মত। জীবনে চলার পথে সঙ্গী থাকলে চলার পথ সহজ হয়। দুনিয়া ও আখেরাতের কাজে, সংসার ও ইসলামী দাওয়াতের কাজে অনেক কষ্ট হাল্কা হয়। এ বিষয়ে একাধিক পুস্তকে আলোচনা করেছি বলে এখানে কেবল প্রধান প্রধান আদবের শিরোনাম উল্লেখ করে ক্ষান্ত হচ্ছি।

১। দ্বীনদার ও জ্ঞানী লোক দেখে তার সাথে ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন।

২। ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্ব করুন একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে। যাকে ভালোবাসবেন, তাকে কেবল আল্লাহর ওয়াস্তে বাসুন। আর যাকে ঘৃণা বাসবেন, তাকেও আল্লাহর ওয়াস্তে বাসুন। পরবর্তীতে খেয়াল রাখুন, যাতে ঐ ভালোবাসা কোন কামনা বা স্বার্থের ভালোবাসায় পরিণত না হয়ে যায়।

৩। ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বে বিনম্র ব্যবহার এবং হাসিমুখ সাক্ষাৎ প্রয়োগ করুন। তাতে প্রেম স্থায়ী হবে।

৪। যথাসাধ্য পরস্পর উপহার বিনিময় করুন। যেহেতু এটিও একটি প্রেমের বাহুবন্ধন।

৫। একে অপরকে উপদেশ প্রদান করুন, সৎ পরামর্শ দিন এবং বিপদে-আপদে সহযোগিতা করুন।

৬। দ্বীনী ভাই বা বন্ধুর সাথে কোন বিষয় নিয়ে কোন তর্ক করবেন না। তার সামনে কোন প্রকার গর্ব বা অহংকার প্রকাশ করবেন না। আপনি নিজেকে তার থেকে বড় ও ভালো মনে করবেন না।

৭। সুমহান চরিত্রের অধিকারী হন। অপরকে চরিত্রবত্তা শিক্ষা দিন। যেখানেই থাকুন সেখানেই বৃষ্টির মত সকলকে উপকৃত করুন।

৮। দ্বীনী ভাই বা বন্ধুর প্রতি কুধারণা রাখবেন না। তার কোন গোপন বিষয় অনুসন্ধান করার চেষ্টা করবেন না।

৯। সে কোন ভুল করলে ক্ষমা করে দিন, তার কোন কথায় রাগ হলে তা হজম করে নিন।

১০। আপনি তার নিকট কোন ভুল করে ফেললে, তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন এবং সে কোন ভুল করে আপনার কাছে ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমা করে দিন।

১১। ভাই-বন্ধুর ব্যাপারে আপনার মনের ভিতর কোন প্রকারের হিংসা, পরশ্রীকাতরতা ও সন্দেহকে স্থান দেবেন না।

১২। দ্বীনী ভাই বা বন্ধুকে উপহাস ছলেও কোন মন্দ খিতাব দিয়ে ডাকবেন না।

১৩। ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বে কোন প্রকার ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হলে তা সত্বর দূর করে নেবেন।

১৪। আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে আপনি যে তার উপকার করেছেন বা করছেন তা কারো কাছে বলবেন না। তার উপকার করে প্রশংসার বাসনা মনে গোপন রাখবেন না।

১৫। দ্বীনী ভাই বা বন্ধুর কোন রহস্য ও ভেদ অন্যের কাছে প্রকাশ করবেন না।

সর্বশেষে দ্বীনের ৩টি বিপরীতধর্মী নীতি মনেপ্রাণে বিশ্বাস রাখুনঃ (ক) দান করলে কমে না, বরং বাড়ে। (খ) লোকের কাছে নিজেকে ছোট জানলে, তাদের কাছে বড় হওয়া যায়। (ভুল স্বীকার করলে সম্মান বাড়ে।) এবং (গ) ক্ষমা প্রদর্শন করলে ইজ্জত বৃদ্ধি পায়।

এ বিষয়ে অধিক জানতে ‘যুব-সমস্যা ও তার শরয়ী সমাধান’ এবং ‘সুখের সন্ধান’ বই দুখানি পড়তে যুবক ভাইদের কাছে অনুরোধ রাখছি।