সুর্মা হল সুরমাদের প্রসাধন এবং নারী-পুরুষ সকলের জন্য কিছু চক্ষু-পীড়ার ওষুধ। বিশেষ করে ‘ইষমিদ’ নামক সুর্মা ব্যবহার করলে চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পাতার লোম গজায়।[1]

উল্লেখ্য যে, পুরুষের চোখে ব্যবহৃত কোন প্রসাধন নেই। সুর্মা কিন্তু কোন প্রসাধন নয়। বরং তা ওষুধ বলে ব্যবহার করা সুন্নাত।

সুর্মা দিনে লাগানো যায়। আল্লাহর রসূল (ﷺ) রোযা রেখে সুর্মা ব্যবহার করেছেন।[2] অবশ্য সুর্মা রাত্রে শোবার আগে লাগানোই উত্তম।[3] যেহেতু চোখ বন্ধ রাখলে তার প্রতিক্রিয়া হয় অধিক।

যেমন বেজোড় সংখ্যক (অর্থাৎ ৩ অথবা ৫ বার) সুর্মা লাগানো সুন্নাত।[4] তিনি বলেন, ‘‘যখন তোমাদের কেউ সুর্মা লাগায় তখন সে যেন বেজোড় সংখ্যক লাগায়--।’’[5]

বেজোড় সংখ্যক লাগাতে হলে ডান চোখে ৩ বার এবং বাম চোখে ৩ বার লাগাতে হবে অথবা ডান চোখে ২ বার এবং বাম চোখে ১ বার লাগাতে হবে অথবা ডান চোখে ১ বার এবং বাম চোখে ২ বার লাগাতে হবে। অবশ্য প্রয়োজনে তার চেয়ে বেশী ৫ বা ৭ বার অনুরূপ ব্যবহার করা যায়।

সতর্কতার বিষয় যে, পুরুষরা মহিলাদের মত চোখের সৌন্দর্যের জন্য সুর্মা ব্যবহার করতে পারে না। বরং শরীয়তে সুর্মা ব্যবহার করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা কেবল চোখের উপকারের জন্য; সৌন্দর্যের জন্য নয়। অতএব পুরুষ সুর্মা লাগাবে কেবল চোখের ভিতরে; চোখের পাতায় বা কোণে (রেখা টেনে) নয়।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, কোন পুরুষের পক্ষেও সৌন্দর্যের জন্য মাথায় নকল চুল লাগানো, হাত বা চেহারায় দেগে নকশা করা, ভ্রূ চাঁছা, দাঁতের মাঝগুলি ঘসে ফাঁক ফাঁক করা ইত্যাদি বৈধ নয়। এমন কাজের মহিলারা আল্লাহর নিকট অভিশপ্ত হলেও পুরুষরা সে অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারবে না।

[1]. মুসনাদে আহমাদ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/ ২০৪৮, আবূ দাঊদ হা/৩৮৭৮, তিরমিযী হা/১৭৫৭, ইবনে মাজাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/৩৪৯৭

[2]. ইবনে মাজাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/১৬৭৮

[3]. মুখতাসারুশ শামাইলিল মুহাম্মাদিয়্যাহ ৪৩

[4]. আহমাদ, সহীহুল জা’মে হা/৪৬৮০

[5]. আহমাদ, সহীহুল জা’মে হা/৩৭৫