আর-রাহীকুল মাখতূম উহুদ যুদ্ধ (غَزْوَةُ أُحُدٍ) আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহঃ) ১ টি
ঘাঁটিতে স্থিতিশীলতার পর (بَعْدَ اِنْتِهَاءِ الرَّسُوْلِ ﷺ إِلٰى الشَّعْبِ) :

যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঘাঁটির মধ্যে স্বীয় অবস্থানস্থলে কিছুটা স্থিতিশীল হন তখন আলী ইবনু আবূ ত্বালিব (রাঃ) ‘মিহরাস’ হতে স্বীয় ঢালে করে পানি ভরে আনেন। সাধারণত বলা হয়ে থাকে যে, ‘মিহরাস’ পাথরের তৈরি ঐ গর্তকে বলা হয় যার মধ্যে বেশী পানি আসতে পারে। আবার এ কথাও বলা হয়ে থাকে যে, ‘মিহরাস’ উহুদের একটি ঝর্ণার নাম। যা হোক, আলী (রাঃ) ঐ পানি নাবী (ﷺ)-এর খিদমতে পান করার জন্য পেশ করেন। নাবী (ﷺ) কিছুটা অপছন্দনীয় গন্ধ অনুভব করেন। সুতরাং তিনি ঐ পানি পান করলেন না বটে, তবে তা দ্বারা চেহারার রক্ত ধুয়ে ফেললেন এবং মাথায়ও দিলেন। ঐ সময় তিনি বলছিলেন,

‏(‏اِشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ عَلٰى مَنْ دَمَّى وَجْهَ نَبِيِّهِ‏)‏

‘ঐ ব্যক্তির উপর আল্লাহর কঠিন গযব হোক, যে তার নাবী (ﷺ)-এর চেহারাকে রক্তাক্ত করেছে।’[1]

সাহল (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যখম কে ধুয়েছেন, পানি কে ঢেলে দিয়েছেন এবং প্রতিষেধকরূপে কোন্ জিনিস প্রয়োগ করা হয়েছে তা আমার বেশ জানা আছে। তাঁর কলিজার টুকরা ফাতিমাহ (রাঃ) তাঁর যখম ধুচ্ছিলেন, আলী (রাঃ) ঢাল হতে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন এবং ফাতিমাহ (রাঃ) যখন দেখেন যে, পানির কারণে রক্ত বন্ধ হচ্ছে না, তখন তিনি চাটাই এর অংশ নিয়ে জ্বালিয়ে দেন এবং ওর ভস্ম নিয়ে ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দেন। এর ফলে রক্ত বন্ধ হয়ে যায়।’[2]

এদিকে মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) মিষ্ট ও সুস্বাদু পানি নিয়ে আসেন। ঐ পানি নাবী (ﷺ) পান করেন এবং কল্যাণের দু’আ করেন।[3] যখমের ব্যথার কারণে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যুহরের সালাত বসে বসে আদায় করেন এবং সাহাবায়ে কিরামও (রাঃ) তাঁর পিছনে বসে বসে সালাত আদায় করেন।[4]

[1] ইবনু হিশাম, ২য় খন্ড ৮৫ পৃঃ।

[2] সহীহুল বুখারী, ২য় খন্ড ৫৮৪ পৃঃ।

[3] আস সীরাতুল হালবিয়্যাহ ২য় খন্ড ৩০ পৃঃ।

[4] ইবনু হিশাম, ২য় খন্ড ৮৭ পৃঃ।