হাদীসের নামে জালিয়াতি বার চাঁদের সালাত ও ফযীলত ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
৮. শাবান মাস - (ক) সহীহ হাদীসের আলোকে শাবান মাস

(ক) সহীহ হাদীসের আলোকে শাবান মাস

পূর্ববর্তী আলোচনা থেকে আমরা দেখেছি যে, সফর থেকে রজব পর্যন্ত ৬ মাসের কোনো বিশেষ ফযীলত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। শা’বান মাস তদ্রূপ নয়। সহীহ হাদীসে শাবান মাসের নিম্নলিখিত ফযীলতগুলো প্রমাণিত:

১. এ মাসে রাসূলুল্লাহ () বেশি বেশি সিয়াম পালন করতে ভালবাসতেন। তিনি সাধারণত এ মাসের অধিকাংশ দিন একটানা সিয়াম পালন করতেন বলে বুখারী ও মুসলিম সংকলিত সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। এমনকি বুখারী ও মুসলিমের কোনো কোনো হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিনি শা’বান মাস পুরোটাই নফল সিয়ামে কাটাতেন। তিনি এ মাসে কিছু সিয়াম পালন করতে সাহাবীগণকে উৎসাহ প্রদান করতেন।[1]

২. আহমাদ, নাসাঈ প্রমুখ মুহাদ্দিস সংকলিত মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বা হাসান পর্যায়ের হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শা’বান মাসে বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়; এজন্য এই মাসে বেশি বেশি নফল সিয়াম পালন করা উচিত।[2]

৩. শা’বান মাসের মধ্যম রজনী বা ১৫ই শা’বানের রাতে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে ক্ষমা করেন বলে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।

এ সকল সহীহ ও হাসান হাদীসের পাশাপাশি এ মাসের ফযীলত ও ইবাদতের বিষয়ে অনেক জাল হাদীস প্রচলিত। এ জাল হাদীসগুলোকে আমরা দু ভাগে ভাগ করতে পারি: ১ সাধারণভাবে শাবান মাস বিষয়ক ও ২. শাবান মাসের মধ্যম রজনী বা ‘শবে বরাত’ বিষয়ক। আমাদের দেশে দ্বিতীয় বিষয়টিই প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। এজন্য প্রথম বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করে আমরা দ্বিতীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, ইনশা আল্লাহ।

[1] বুখারী, আস-সহীহ ২/৬৯৫, ৭০০; মুসলিম, আস-সহীহ ২/৮১০-৮১১, ৮২০।

[2] নাসাঈ, আস-সুনান ৪/২০১; আহমাদ, আল-মুসনাদ ৫/২০১।