তারাবীহর জামাআতে মহিলাদের অংশগ্রহণ

যদি কোন ফিতনা সৃষ্টির আশঙ্কা না থাকে, তাহলে তারাবীহর জামাআতে মহিলাদের উপস্থিত হওয়া দোষাবহ নয়। অবশ্য শর্ত হল, তারা যেন সম্ভ্রমপূর্ণ লেবাস পরিধান করে, বেপর্দা হয়ে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে এবং কোন প্রকারের সুবাস ও সুগন্ধি ব্যবহার না করে মসজিদে যায়।[1] মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘যে মহিলা সুগন্ধি ব্যবহার করেছে, সে যেন আমাদের সাথে এশার নামাযে উপস্থিত না হয়।’’[2]

এতদ্সত্ত্বেও সবগৃহে নামায পড়াই তাদের জন্য উত্তম। প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘তোমরা তোমাদের মহিলাদেরকে মসজিদে যেতে বাধা দিও না। অবশ্য তাদের ঘরই তাদের জন্য উত্তম।’’[3]

মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) শেষ রাত্রে নামায পড়তে দাঁড়িয়ে তাঁর সাথে তাঁর পরিবার ও স্ত্রীগণকে এবং সেই সাথে সাহাবাবর্গকে নিয়ে জামাআত করে নামায পড়েছিলেন।[4]

বলা বাহুল্য, জ্ঞানী মহিলার উচিৎ, মসজিদে উপস্থিত হয়ে নামায পড়া তার জন্য উত্তম মনে করে, তাহলে সে যেন সেই আকার ও লেবাসে বের হয়, যে আকার ও লেবাস সলফদের মহিলারা মসজিদে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করতেন।

মহিলার জন্য জরুরী, মসজিদে যাওয়ার পথে সৎ-নিয়ত মনে উপস্থিত রাখা। তাকে মনে রাখতে হবে যে, সে মসজিদে নামায আদায় করতে এবং মহান আল্লাহর আয়াত শ্রবণ করতে যাচ্ছে। মনের মধ্যে এই খেয়াল থাকলে তার আকারে-চলনে শান্তভাব, শিষ্টতা ও গাম্ভীর্য প্রকাশ পাবে এবং তার প্রতি পুরুষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হবে না।

দুঃখের বিষয় যে, কতক মহিলা প্রাইভেট ড্রাইভারের সাথে একাকিনী মসজিদে যায়। আর এতে সে নফল আদায় করে সওয়াব কামাতে গিয়ে হারাম কাজ করে গোনাহ কামিয়ে আসে। অথচ তার এ কাজ যে বিরাট মুর্খামি এবং নিরেট বোকামি তা বলাই বাহুল্য।

মহিলাদের জন্য উচিৎ নয়, সে রকম কোন শিশু সঙ্গে নিয়ে মসজিদে আসা, যারা মায়ের নামায-ব্যস্ততায় ধৈর্য রাখতে পারবে না এবং কান্না, চিৎকার, চেঁচামেচি বা ছুটাছুটি করে, মসজিদের কুরআন, আসবাব-পত্র ইত্যাদি নিয়ে খেলা করে সকল নামাযীর ডিষ্টার্ব করবে।[5]

[1] (ফুসূলুন ফিস্-সিয়ামি অত্-তারাবীহি অয্-যাকাহ ১৯পৃঃ)

[2] (আহমাদ, মুসনাদ ২/৩০৪, মুসলিম ৪৪৪, আবূ দাঊদ ৪১৭৫নং, নাসাঈ)

[3] (আহমাদ, মুসনাদ ২/৭৬, ৭৭, সহীহ আবূ দাঊদ ৫৩০নং) (এ বিষয়ে বিস্তারিত দ্রষ্টব্য ‘স্বালাতি মুবাশ্শির’ ২/১৯৪-১৯৬)

[4] (আহমাদ, মুসনাদ, সহীহ আবূ দাঊদ ১২২৭, সহীহ তিরমিযী, আলবানী ৬৪৬, সহীহ নাসাঈ, আলবানী ১৫১৪, সহীহ ইবনে মাজাহ, আলবানী ১৩২৭নং)

[5] (আশরু অক্বাফাতিন লিন্নিসা ফী রামাযান ৭-৮পৃঃ)