প্রশ্নোত্তরে হজ্জ ও উমরা ইহরাম অধ্যাপক মোঃ নূরুল ইসলাম ২৮ টি
৩২- ইহরামের কাপড় পরিধানের পূর্বে পরিচ্ছন্নতার জন্য কি কি কাজ করা মুস্তাহাব?

নখ কাটা, গোফ খাট করা, বোগল ও নাভির নীচের চুল কামানো ও তা পরিষ্কার করা। তবে ইহরামের পূর্বে পুরুষ ও মহিলাদের মাথার চুল কাটার বিষয়ে কোন বিধান পাওয়া যায় না। উল্লেখ্য যে, দাড়ি কোন অবস্থায়ই কাটা যাবে না। নখণ্ডচুল কাটার পর গোসল করাও মুস্তাহাব।

وُقِّتَ لَنَا فِي قَصِّ الشَّارِبِ وَتَقْلِيمِ الأَظْفَارِ وَنَتْفِ الإبِطِ وَحَلْقِ الْعَانَةِ أَنْ لاَ نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً

গোঁফ ছোট করা, নখ কাটা, বগল পরিষ্কার করা এবং নাভির নীচের লোম পরিষ্কার করার কাজগুলোকে ৪০ রাতের বেশি সময় অতিক্রম না করার জন্য আমাদেরকে সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। (মুসলিম ২৫৮)

৩৩- ইহরামের কাপড় পরিধানের পূর্বে সুগন্ধি মাখা মুস্তাহাব। কিন্তু এ সুগন্ধি কোথায় মাখতে হবে?

মাথায়, দাড়িতে ও সারা শরীরে মাখা যায়। ইহরাম পরিধানের পর যদি এর সুগন্ধ শরীরে থেকে যায় তাতে কোন অসুবিধা নেই। মনে রাখতে হবে, মেয়েরা সুগন্ধি লাগাবে না।

৩৪- পুরুষের ইহরামের কাপড় কেমন হতে হবে?

চাদরের মত দু’টুকরা কাপড় একটি নীচে পরবে। দ্বিতীয়টি গায়ে দিবে। কাপড়গুলো সেলাইবিহীন হতে হবে। পরিচ্ছন্ন ও সাদা রং হওয়া মুস্তাহাব। ৩য় আর কোন প্রকার কাপড় গায়ে রাখা যাবে না। যেমন টুপি, গেঞ্জি, জাইঙ্গা বা তাবীজ কিছুই না। তবে শীত নিবারণের জন্য চাদর ও কম্বল ব্যবহার করতে পারবে।

৩৫। মেয়েদের ইহরামের কাপড় কী ধরনের হওয়া চাই?

মেয়েদের ইহরামের জন্য বিশেষ কোন পোষাক নেই। মেয়েরা সাধারণতঃ যে কাপড় পরে থাকে সেটাই তাদের ইহরাম। তারা নিজ ইচ্ছা মোতাবেক ঢিলেঢালা ও শালীন পোষাক পরবে। তবে যেন পুরুষের পোষাকের মত না হয়। এটা কাল, সবুজ বা অন্য যে কোন রঙের হতে পারে।

৩টি যথাঃ

(১) মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা।
(২) সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করা।
(৩) তালবিয়াহ পাঠ করা। অর্থাৎ নিয়ত করার পর তালবিয়াহ পাঠ করা ওয়াজিব।

৩৭- ইহরাম অবস্থায় মেয়েরা কি মুখ ঢেকে রাখতে (নিকাব পরতে) ও হাত মোজা (কুফ্ফাযাইন) পরতে পারবে?

না। নিকাব ও হাতমোজা এ অবস্থায় পরবে না। তবে ভিন্ন পুরুষ সামনে এলে মুখ আড়াল করে রাখবে। অর্থাৎ নিকাব ছাড়া ওড়না বা অন্য কোন কাপড় দ্বারা মুখমণ্ডল ঢাকার অনুমতি আছে।

৩৮- ইহরামের সময় হায়েয-নেফাসওয়ালী মেয়েরা কি করবে?

তারা পরিচ্ছন্ন হবে, গোসল করবে, ইহরাম পরবে। কিন্তু হায়েয-নেফাস অবস্থায় নামায পড়বে না এবং কাবাঘর তাওয়াফ করবে না। বাকী অন্যসব কাজ করবে। এরপর যখন পবিত্র হবে তখন অজু-গোসল করে তাওয়াফ ও সাঈ করবে। যদি ইহরামের পর হায়েয শুরু হয় তখনো কাবা তাওয়াফ করবে না যতক্ষণ পবিত্র না হয়।

পায়ের গোড়ালী ঢেকে রাখে এমন কোন জুতা পরা যাবে না। কাপড়ের মোজাও পরবে না। তবে সেন্ডেল পরতে পারে।

৪০- বাংলাদেশ থেকে গমনকারী লোকেরা যদি নিজ বাড়ী বা ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে ইহরাম পরে তবে কি তা জায়েয?

হ্যাঁ, তা জায়েয আছে। ইহরামের কাপড় মীকাত থেকে পরা সুন্নাত হলেও বিমান বা যানবাহনে উঠার আগেই গোসল করে ইহরামের কাপড় পরে নিতে পারেন। তবে নিয়ত করা উচিৎ মীকাতে পৌঁছে বা এর পূর্বক্ষণে। কারণ, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মীকাতে পৌছার আগে নিয়ত করতেন না। কাজেই মীকাতে পৌছার আগে নিয়তও করবে না এবং তালবিয়াহ পাঠও শুরু করবে না।

বিভিন্ন এয়ারলাইনসে ট্রানজিট পেসেন্জার হিসেবে যারা আবুধাবী, দুবাই, কুয়েত, দুহা, বাহরাইন, মাসকাট ও সানআ এয়ারপোর্টে নামবেন তারা সেখানেও পরিচ্ছন্নতা ও অজু-গোসলের কাজ সেরে ইহরামের কাপড় পরে নিতে পারেন। এরপর বিমানে যখন মীকাতে পৌছার ঘোষণা দেবে তখনই নিয়ত করে নেবেন এবং তালবিয়াহ পাঠ শুরু করবেন। তবে ঘোষণা দেয়ার সঙ্গেই নিয়ত করে ফেলবেন। কারণ বিমান খুবই দ্রুত চলে। আপনার নিয়ত করা যেন মীকাতে পৌঁছার আগেই হয়ে যায়। তা না হলে দম দিতে হবে।

নামাযসহ অন্যান্য সকল ইবাদাতের নিয়ত করতে হয় মনে ইচ্ছা পোষণ করে। তবে ইহরামের সময় মুখে শুধু হজ্জ বা উমরা শব্দ উচ্চারণ করতে হয়।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২৮ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 3 পরের পাতা »