মাথা মুন্ডন অথবা চুল ছোট করার পদ্ধতি

মাথা মুন্ডন করা হোক বা চুল ছোট করা হোক সমস্ত মাথা ব্যাপ্ত করা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)সমস্ত মাথা ব্যাপ্ত করে মুন্ডন করেছিলেন। মাথার কিছু অংশ মুন্ডন করা অথবা ছোট করা, আর কিছু অংশ ছেড়ে দেয়া রাসূলুল্লাহর আদর্শের বিপরীত। হাদিসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। নাফে’ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করে বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কাজা’ قزع থেকে বারণ করেছেন। কাজা’ কি? এ ব্যাপারে নাফে’কে জিজ্ঞাসার করা হলে তিনি বললেন, শিশুর মাথার কিছু অংশ মুন্ডন করা ও কিছু অংশ রেখে দেয়া।[1]

কসর অর্থাৎ চুল ছোট করার অর্থ সমগ্র মাথা থেকে এক আঙুল পরিমাণ চুল কেটে ফেলা।[2] কারো টাক মাথা থাকলে মাথায় ব্লেড অথবা ক্ষুর চালিয়ে দিলে ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে।

নারীদের ক্ষেত্রে হাতের আঙুলের এক কড়া পরিমাণ চুল কেটে ফেললেই যথেষ্ট হবে। নারীদের জন্য হলক নেই।[3] সমগ্র মাথার চুল একত্রে ধরে এক আঙুল পরিমাণ কাটতে হবে। এতটুকু কাটার নামই কসর।

মাথা মুন্ডনের পর নখ কাটা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)নখ কেটেছিলেন।[4] ইবনে ওমর (রাঃ) হজ্জ অথবা উমরার পর দাড়ি ও গোঁফও সামান্য কাটতেন।[5] তবে দাঁড়ির ক্ষেত্রে এক মুষ্টির বেশি হলে ইবনে ওমর (রাঃ) এর মতো করা যেতে পারে, অন্যথায় নয়। বগল ও নাভির নীচ পরিষ্কার করাও বাঞ্ছনীয়। কেননা তা পবিত্র কুরআনের নির্দেশ (وليَقْضُوْا تَفَثَهُمْ - এবং তারা যেন তাদের ময়লা পরিষ্কার করে।) এর আওতায় পড়ে।

ক্ষৌর-কার্যের পর গোসল করে শরীরের ময়লা পরিষ্কার করে সেলাই করা কাপড় পরবেন। সুগন্ধি ব্যবহার করবেন।[6] এভাবে আপনি প্রাথমিকভাবে হালাল হয়ে যাবেন। এখন থেকে আপনি সেলাই করা কাপড় পরিধান, সুগন্ধি ব্যবহার ইত্যাদি করতে পারবেন। তবে স্বামী-স্ত্রীর চুম্বন মিলন ইত্যাদি এখনও বৈধ হবে না। তাওয়াফে যিয়ারার পরই কেবল এসব সম্ভব হবে, যখন সম্পূর্ণরূপে হালাল হয়ে যাবেন।

[1] -نافع عن ابن عمر أن النبي صلى الله عليه وسلم نهى عن القزع ، فقيل لنافع : ما القزع ؟ قال : أن يحلق بعض رأس الصبي ويترك بعضا (মুসলিম : হাদিস নং ৩৯৫৯ )

[2] - সাইয়িদ সাবিক : ফেকহুস্সুন্নাহ , খন্ড: ১, পৃ: ৭৪৩ ; ইবনে মুনযের বলেছেন, যতটুকু কাটলে কসর (চুল ছোট করা) বলা হবে ততটুকু কাটলেই যথেষ্ট হবে)

[3] - ليس على النساء الحلق وإنما على النساء التقصير (আবু দাউদ : হাদিস নং ১৯৮৫ ) অন্য এক হাদিসে এসেছে, ‘نهى المرأة أن تحلق رأسها - রাসলুল্লাহ (সাঃ)নারীকে মাথা মুন্ডন করতে নিষেধ করেছেন ।’ তিরমিযী : ৩/২৫৭)

[4] - সাইয়িদ সাবেক : ফেকহুস্সুন্নাহ , প্রাগুক্ত

[5] - كان ابن عمر إذا حلق في حج او عمرة أخذ من لحيته وشاربه (বায়হাক্কী : হাদিস নং ৯১৮৬)

[6] - আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণীত এক হাদিসে এসেছে,‘ كنت أطيب النبي صلى الله عليه وسلم لإحرامه قبل أن يحرم ولحله قبل أن يطوف البيت - আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)কে সুগন্ধযুক্ত করতাম তাঁর ইহরামের জন্য, ইহরাম বাঁধার পূর্বে, এবং তাঁর হালাল হওয়ার জন্য বায়তুল্লাহর তাওয়াফের পূর্বে । (মুসলিম : হাদিস নং ২০৪২)