এমন কতক কাজ আছে, যে সম্বন্ধে ধারণা হওয়া স্বাভাবিক যে, তা মসজিদে করা হয়তো বৈধ নয়। অথচ শরীয়তের দৃষ্টিতে তা বৈধ। যেমন;

১। দ্বীনী কথাবার্তা, বৈধ আলোচনা, প্রয়োজনীয় সাংসারিক কথা। জাবের বিন সামুরাহ্‌ (রাঃ) বলেন, ‘নবী (ﷺ) ফজরের নামায পড়ে সূর্য না ওঠা পর্যন্ত মুসাল্লা থেকে উঠতেন না। সূর্য উঠে গেলে তিনি উঠে যেতেন। ঐ অবসরে লোকেরা আপোসে কথা বলত। বলতে বলতে তারা ইসলাম-পূর্ব জাহেলিয়াতের কথা শুরু করে দিত। এতে তারা হাসত এবং তিনিও মুচকি হাসতেন।’ (মুসলিম, সহীহ ৬৭০নং)

অবশ্য নিছক দুনিয়াদারীর কথা বলা বৈধ নয়। মহানবী (ﷺ) বলেন, “আখেরী যামানায় এমন এক শ্রেণীর লোক হবে, যারা মসজিদে গোল-বৈঠক করে পার্থিব ও সাংসারিক গল্প-গুজব করবে। সুতরাং তোমরা তাদের সাথে বসো না। কারণ, এমন লোকেদের নিয়ে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।” (ত্বাব, বায়হাকী, মিশকাত ৭৪৩, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১১৬৩ নং)

২। খাওয়া-পান করা। আব্দুল্লাহ বিন হারেস (রাঃ) বলেন, ‘আমরা রসূল (ﷺ) এর আমলে মসজিদের ভিতর রুটী ও মাংস খেতাম।’ (ইবনে মাজাহ্‌, সুনান ৩৩০০ নং)

যে জিনিস খাওয়া হারাম, তা মসজিদে খাওয়া তথা সকল স্থানেই খাওয়া হারাম। মসজিদের সম্মান রক্ষার্থে সে সব হারাম জিনিস সঙ্গে নিয়ে বা পকেটে রেখে মসজিদে যাওয়া বা নামায পড়াও বৈধ নয়। যেমন গুল, জর্দা, বিড়ি, সিগারেট, তামাক প্রভৃতি খাওয়া বৈধ নয়, বিধায় তা মসজিদে খাওয়া বা নিয়ে যাওয়া অবৈধ। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ১৭/৫৮)

৩। শয়ন করা। একদা আব্বাদ বিন তামীমের চাচা (রাঃ) দেখলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) মসজিদে এক পা অপর পায়ের উপর রেখে চিৎ হয়ে শয়ন করে আছেন। সাঈদ বিন মুসাইয়িব বলেন, ‘উমার এবং উসমান (রাঃ)ও এরুপ করতেন।’ (বুখারী ৪৭৫ নং, মুসলিম, সহীহ)

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, ‘আমরা আল্লাহর রসূল (ﷺ) এর যুগে মসজিদে ঘুমাতাম। আর আমরা তখন ছিলাম অবিবাহিত যুবক।’ (বুখারী ৪৪০, তিরমিযী, সুনান ৩২১, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান ৭৫১নং, আবূদাঊদ, সুনান, নাসাঈ, সুনান, আহমাদ, মুসনাদ)

তবে ঘরে জায়গা থাকতে মসজিদকে অভ্যাসগতভাবে শয়নাগার ও বিশ্রামাগার বানানো উচিৎ নয়। কারণ, ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘কেউ যেন মসজিদকে শয়নাগার ও বিশ্রামাগার বানিয়ে না নেয়।’ (তিরমিযী, সুনান ১/১০৩)