الأصل الثاني: الإيمان بالملائكة - দ্বিতীয় মূলনীতি: ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান

ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনয়ন করা ঈমানের ছয়টি রুকনের অন্তর্ভুক্ত। ঈমান সম্পর্কে জিবরীল আলাইহিস সালামের প্রশ্নের জবাবে নবী সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

(أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ)

‘‘তুমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করবে (১) আল্লাহ পাকের উপর (২) তার ফেরেস্তাদের উপর (৩) তার কিতাবসমূহের উপর (৪) তার রসূলদের উপর (৫) আখেরাত বা শেষ দিবসের উপর এবং (৬) তাক্বদীরের ভালো-মন্দের উপর’’।[1]

কুরআনের অনেক আয়াতে ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনয়নের বিষয়টি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়নের সাথে মিলিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ﴾

‘‘রসূল তার রবের পক্ষ হতে যে হিদায়াত নাযিল করা হয়েছে, তার প্রতি ঈমান এনেছেন। মুমিনগণ ঈমান এনেছেন। তারা সকলেই আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, কিতাবসমূহের প্রতি এবং রসূলদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছেন। তারা বলেন, আমরা রসূলদের একজনকে অন্যজন থেকে পার্থক্য করিনা। আর তারা বলেন, আমরা নির্দেশ শুনেছি এবং অনুগত হয়েছি। হে আমাদের প্রভু! আমরা গুনাহ মাফের জন্য তোমার কাছে প্রার্থনা করছি। আমরা তোমারই দিকে ফিরে যাবো’’। (সূরা আল বাকারা: ২৮৫)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿لَيْسَ الْبِرَّ أَنْ تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ﴾

‘‘তোমাদের মুখম-ল পূর্ব বা পশ্চিম দিকে ফিরনোর মধ্যে কোনো পূণ্য নেই; বরং পূণ্য তার, যে ব্যক্তি আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতাগণ, কিতাব ও নবীগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে’’। (সূরা আল বাকারা: ১৭৭)

ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনয়নের তাৎপর্য হলো, অন্তর দিয়ে তাদের অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাস করা। আরো বিশ্বাস করা যে, তারা আল্লাহর মর্যাদাশীল বান্দা। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে তার ইবাদতের জন্য এবং তার আদেশ বাস্তবায়নের জন্য সৃষ্টি করেছেন। সে সঙ্গে আরো বিশ্বাস করা আবশ্যক যে, বিভিন্ন প্রকার ফেরেশতা রয়েছে এবং তাদের বিভিন্ন গুণাবলীল রয়েছে। আল্লাহর কিতাব ও রসূলের সুন্নাতে বলা হয়েছে যে, ফেরেশতাগণ বিভিন্ন কাজ-কর্ম ও দায়-দায়িত্ব পালন করে। আল্লাহ তা‘আলার নিকট তাদের যে ফযীলত ও মর্যাদা রয়েছে, তার প্রতিও ঈমান আনয়ন করা আবশ্যক।[2]

সহীহ মুসলিমের হাদীছে এসেছে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে নূর দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। ফেরেশতাদের সম্মান ও মর্যাদার ব্যাপারে যেসব দলীল রয়েছে, তা থেকে নিম্নে কয়েকটি দলীল উল্লেখ করা হলো।

আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতাদের সম্মানার্থে তাদেরকে নিজের দিকে সম্বন্ধ করেছেন। যেমন তিনি বলেন,

﴿إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا﴾

‘‘নিশ্চয় আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরূদ পাঠান। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও তার প্রতি দুরূদ ও সালাম পাঠাও’’। (সূরা আহযাব: ৫৬)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ﴿كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ ﴾ ‘‘তারা সবাই আল্লাহর প্রতি ও তার ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا﴾

‘‘যারা কুফুরী করেছে, আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি এবং তার রসূলদের প্রতি এবং পরকালের প্রতি, তারা বহুদূরের গোমরাহীতে পতিত হয়েছে’’। (সূরা নিসা: ১৩৬) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿مَنْ كَانَ عَدُوًّا لِلَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَرُسُلِهِ وَجِبْرِيلَ وَمِيكَالَ فَإِنَّ اللَّهَ عَدُوٌّ لِلْكَافِرِينَ﴾

 ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তার ফেরেশতা, তার রসূলগণ, জিবরীল ও মীকাইলের শত্রু হবে স্বয়ং আল্লাহ সেই কাফেরদের শত্রু’’। (সূরা বাকারা: ৯৮)

আল্লাহ তা‘আলা তার সাক্ষ্যকে ফেরেশতাদের সাক্ষ্যের সাথে এবং নবীর প্রতি তার দুরূদ পাঠানোর সাথে ফেরেশতাদের দুরূদ পাঠানোকে একসাথে মিলিয়ে উল্লেখ করেছেন।  আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿شَهِدَ اللّهُ أَنَّهُ لاَ إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ وَالْمَلاَئِكَةُ﴾

‘‘আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া আর কোনো সত্য মাবুদ নেই এবং ফেরেশতাগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন’’। (সূরা আলে-ইমরান: ১৮)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ﴿إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ﴾ ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরূদ পাঠান’’। (সূরা আহযাব: ৫৬)

আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মর্যাদাবান বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন তিনি বলেন, كِرَامٍ بَرَرَةٍ﴾ ﴿بِأَيْدِي سَفَرَةٍ ‘‘এ উপদেশ লিপিকারদের হস্ত দ্বারা লিপিবদ্ধ। যারা সম্মানিত ও পূণ্যবাণ’’। (সূরা আবাসা: ১৫) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَإِنَّ عَلَيْكُمْ لَحَافِظِينَ كِرَامًا كَاتِبِينَ يَعْلَمُونَ مَا تَفْعَلُونَ﴾

‘‘নিশ্চয় তোমাদের উপর সংরক্ষকগণ নিযুক্ত রয়েছেন। সম্মানিত লেখকবৃন্দ। তোমরা যা করো তারা তা জানে’’। (সূরা ইনফিতার: ১০-১২)

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,  ﴿بَلْ عِبَادٌ مُّكْرَمُونَ لا يَسْبِقُونَهُ بِالْقَوْلِ وَهُمْ بِأَمْرِهِ يَعْمَلُونَ ﴾ ‘‘তারা তো মর্যাদাশালী বান্দা। তারা তার সামনে অগ্রবর্তী হয়ে কথা বলেন না এবং শুধু তার হুকুমে কাজ করেন’’। (সূরা আম্বীয়া: ২৬-২৭)

আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে উর্ধ্বজগতের বাসিন্দা এবং নৈকট্যশীল বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন তিনি বলেন,

﴿لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى الْمَلَإِ الْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٍ﴾

‘‘শয়তানরা উর্ধ্ব জগতের কিছু শ্রবণ করতে পারে না। এদের উপর সকল দিক থেকে উল্কা নিক্ষিপ্ত হয়’’। (সূরা সাফফাত: ৮) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ﴿يَشْهَدُهُ الْمُقَرَّبُونَ﴾ ‘‘নৈকট্য লাভকারী ফেরেশতারা এর দেখাশুনা করে’’। (সূরা মুতাফফিফীন: ২১) আল্লাহ তা‘আলা উল্লেখ করেছেন যে, ফেরেশতাগণ তার আরশ বহন করে এবং সেটাকে ঘিরে রাখে’’। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿الَّذِينَ يَحْمِلُونَ الْعَرْشَ وَمَنْ حَوْلَهُ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَيُؤْمِنُونَ بِهِ وَيَسْتَغْفِرُونَ لِلَّذِينَ آَمَنُوا رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَحْمَةً وَعِلْمًا فَاغْفِرْ لِلَّذِينَ تَابُوا وَاتَّبَعُوا سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ﴾

‘‘আল্লাহর আরশের ধারক ফেরেশতাগণ এবং যারা আরশের চারপাশে হাজির থাকে তারা সবাই প্রশংসাসহ তাদের রবের পবিত্রতা বর্ণনা করে। তার প্রতি ঈমান আনয়ন করে এবং ঈমানদারদের জন্য দু‘আ করে। তারা বলে, হে আমাদের রব! তুমি তোমার রহমত ও জ্ঞান দ্বারা সবকিছু পরিবেষ্টন করে আছো। তাই যারা তাওবা করেছে এবং তোমার পথ অনুসরণ করছে তাদেরকে মাফ করে দাও’’। (সূরা গাফের: ৭) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَتَرَى الْمَلَائِكَةَ حَافِّينَ مِنْ حَوْلِ الْعَرْشِ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَقُضِيَ بَيْنَهُمْ بِالْحَقِّ وَقِيلَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾

তুমি আরো দেখতে পাবে যে, ফেরেশতারা আরশের চারদিক বৃত্ত বানিয়ে তাদের রবের প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনা করছে। মানুষের মধ্যে ইনসাফের সাথে ফায়ছালা করে দেয়া হবে এবং ঘোষণা দেয়া হবে, সারা বিশ্ব-জাহানের রবের জন্যই সমস্ত প্রশংসা (সূরা যুমার: ৭৫)। আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতাদের সম্মান বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন যে, তারা তার নিকটবর্তী, তারা তার ইবাদত করে এবং তার পবিত্রতা বর্ণনা করে। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿إِنَّ الَّذِينَ عِنْدَ رَبِّكَ لَا يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِهِ وَيُسَبِّحُونَهُ وَلَهُ يَسْجُدُونَ﴾

‘‘তোমার রবের ঘনিষ্ট সান্নিধ্যে অবস্থানকারী ফেরেশতাগণ কখনো নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের অহংকারে তার এবাদতে বিরত হয় না: বরং তারা তারই মহিমা ঘোষণা করে এবং তার সামনে সিজদাবনত হয়’’। (সূরা আরাফ: ২০৬) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿فَإِنِ اسْتَكْبَرُوا فَالَّذِينَ عِنْدَ رَبِّكَ يُسَبِّحُونَ لَهُ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَهُمْ لَا يَسْأَمُونَ﴾

কিন্তু তারা যদি অহংকার করে, তাতে কিছু যায় আসে না। যেসব ফেরেশতা তোমার রবের সান্নিধ্য লাভ করেছে তারা রাতদিন তার তাসবীহ বর্ণনা করছে এবং কখনো ক্লান্ত হয় না। (সূরা ফুস্সিলাত: ৩৮)

কাজ-কর্ম ও দায়-দায়িত্ব পালনের দিক থেকে ও ফেরেশতাগণ বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত। তাদের মধ্য থেকে একদল ফেরেশতা আল্লাহর আরশ বহনকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿الَّذِينَ يَحْمِلُونَ الْعَرْشَ وَمَنْ حَوْلَهُ﴾ ‘‘আল্লাহর আরশের ধারক ফেরেশতাগণ এবং যারা আরশের চারপাশে হাজির থাকে’’। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ﴿وَيَحْمِلُ عَرْشَ رَبِّكَ فَوْقَهُمْ يَوْمَئِذٍ ثَمَانِيَةٌ﴾ ‘‘সেদিন আটজন ফেরেশতা তাদের উপরে তোমার রবের আরশ বহন করবে’’। (সূরা হাক্কাহ: ১৭) তাদের একদল আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্যশীল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿لَنْ يَسْتَنْكِفَ الْمَسِيحُ أَنْ يَكُونَ عَبْدًا لِلَّهِ وَلَا الْمَلَائِكَةُ الْمُقَرَّبُونَ وَمَنْ يَسْتَنْكِفْ عَنْ عِبَادَتِهِ وَيَسْتَكْبِرْ فَسَيَحْشُرُهُمْ إِلَيْهِ جَمِيعًا﴾

‘‘মসীহ কখনো নিজে আল্লাহর এক বান্দা হবার ব্যাপারে লজ্জা অনুভব করে না এবং ঘনিষ্ঠতর ফেরেশতারাও একে নিজেদের জন্য লজ্জাকর মনে করে না। যে কেউ আল্লাহর ইবাদত করতে লজ্জাবোধ করবে এবং অহংকার করবে তাদের সবাইকে নিজের সামনে হাযির করবেন’’। (সূরা আন নিসা: ১৭২)

আরেকদল ফেরেশতা রয়েছেন, যারা জান্নাতের সংরক্ষণ এবং তাতে বসবাসকারীদের জন্য বিভিন্ন প্রকার নিয়ামত প্রস্ত্তত করার দায়িত্বে নিয়োজিত। আরেক শ্রেণীর ফেরেশতা জাহান্নাম ও তার অধিবাসীদেরকে শাস্তি দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত। এরা হলো জাহান্নামের দারোগা। তাদের মধ্যে ১৯ ফেরেশতা হলেন নেতৃস্থানীয়।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿عَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ﴾ ‘‘সেখানে নিয়োজিত আছে উনিশজন কর্মচারী’’। (সূরা মুদ্দাছছির: ৩০)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ﴿وَنَادَوْا يَا مَالِكُ لِيَقْضِ عَلَيْنَا رَبُّكَ قَالَ إِنَّكُم مَّاكِثُونَ﴾ ‘‘তারা চিৎকার করে বলবে হে মালেক! তোমার রব আমাদেরকে চিরতরে নিঃশেষ করে দিন। সে বলবে, তোমাদের এভাবেই থাকতে হবে। (সূরা যুখরুফ: ৭৭) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَقَالَ الَّذِينَ فِي النَّارِ لِخَزَنَةِ جَهَنَّمَ ادْعُوا رَبَّكُمْ يُخَفِّفْ عَنَّا يَوْمًا مِّنَ الْعَذَابِ﴾

‘‘দোযখে নিক্ষিপ্ত এসব লোক জাহান্নামের প্রহরীদের বলবে, তোমাদের রবের কাছে দু‘আ করো তিনি যেন একদিনের জন্য আমাদের আযাব হালকা করেন’’। (সূরা গাফের: ৪৯) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَائِكَةٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ﴾

‘‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং নিজেদের পরিবার-পরিজনকে সেই আগুন থেকে রক্ষা করো যার জ্বালানী হবে মানুষ এবং পাথর। সেখানে নিয়োজিত আছে রুঢ় ও কঠোর স্বভাবের ফেরেশতারা। যারা কখনো আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে না এবং তাদেরকে যে নির্দেশ দেয়া হয় তাই করে’’। (সূরা তাহরীম: ৬)

আল্লাহ তা‘আলার কিছু ফেরেশতা রয়েছে, যারা দুনিয়াতে বনী আদমের হেফাযত করে। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿لَهُ مُعَقِّبَاتٌ مِّن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ يَحْفَظُونَهُ مِنْ أَمْرِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا مَا بِأَنفُسِهِمْ وَإِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِقَوْمٍ سُوءًا فَلَا مَرَدَّ لَهُ وَمَا لَهُم مِّن دُونِهِ مِن وَالٍ﴾

‘‘মানুষের জন্য তার সামনে ও পেছনে একের পর এক পাহারাদার নিযুক্ত রয়েছে, যারা আল্লাহর হুকুমে তার হেফাযত করছে। নিশ্চয় আল্লাহ ততোক্ষণ পর্যন্ত কোনো জাতির অবস্থা বদলান না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের স্বভাব-চরিত্র বদলে ফেলে। আর আল্লাহ যখন কোনো জাতির অকল্যাণ করার ফায়ছালা করেন তখন তা প্রতিহত করার কেউ নেই এবং তিনি ছাড়া তাদের কোনো সাহায্যকারী নেই’’। (সূরা আর রা’দ: ১১)

অর্থাৎ তার সাথে ফেরেশতা নিযুক্ত রয়েছে। তারা তাকে তার সামনে ও পেছনে রক্ষণাবেক্ষণ করে। কিন্তু যখন আল্লাহ তা‘আলার নির্ধারিত ফায়ছালা চলে আসে তখন তারা তাকে ছেড়ে চলে যায়। ফেরেশতাদের একদল বান্দাদের আমল সংরক্ষণ করা ও লেখার দায়িত্বে নিয়োজিত। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ مَّا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ﴾

‘‘দু’জন লেখক তার ডান ও বাম দিকে বসে সবকিছু লিপিবদ্ধ করছে। এমন কোনো শব্দ তার মুখ থেকে বের হয় না, যা সংরক্ষিত করার জন্য একজন রক্ষক সদা প্রস্ত্তত থাকে না’’। (সূরা কাফ: ১৭-১৮) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَإِنَّ عَلَيْكُمْ لَحَافِظِينَ كِرَامًا كَاتِبِينَ يَعْلَمُونَ مَا تَفْعَلُونَ﴾

‘‘অথচ তোমাদের উপর সংরক্ষকগণ নিযুক্ত রয়েছে। সম্মানিত লেখকবৃন্দ। তোমরা যা করো, তারা তা জানে’’। (সূরা ইনফিতার: ১০-১১)  নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

(يَتَعَاقَبُونَ فِيكُمْ مَلَائِكَةٌ بِاللَّيْلِ وَمَلَائِكَةٌ بِالنَّهَارِ وَيَجْتَمِعُونَ فِي صَلَاةِ الْفَجْرِ وَصَلَاةِ الْعَصْرِ ثُمَّ يَعْرُجُ الَّذِينَ بَاتُوا فِيكُمْ فَيَسْأَلُهُمْ وَهُوَ أَعْلَمُ بِهِمْ كَيْفَ تَرَكْتُمْ عِبَادِي فَيَقُولُونَ تَرَكْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ وَأَتَيْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ)

‘‘তোমাদের নিকট রাতে একদল ফেরেশতা এবং দিনে একদল ফেরেশতা পালাক্রমে আগমন করে। তারা ফজর ও আসরের নামাযের সময় একসাথে একত্রিত হয়। অতঃপর তোমাদের কাছে যে দলটি ছিল, তারা উপরে উঠে যায়। মহান আল্লাহ জানা সত্ত্বেও তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, আমার বান্দাদেরকে কি অবস্থায় ছেড়ে এসেছো? তারা বলেন, আমরা তাদেরকে সালাত  অবস্থায় ছেড়ে এসেছি এবং যখন তাদের কাছে গিয়েছিলাম, তখন তারা নামাযেই ছিল’’।

সুতরাং মানুষের সাথে এক শ্রেণীর ফেরেশতা রয়েছে, যারা তাকে কষ্টদায়ক জিনিস থেকে হেফাযত করে। আরেক শ্রেণীর ফেরেশতা রয়েছে, যারা তার আমলসমূহ সংরক্ষণ করে এবং তার মুখ থেকে যা কিছু প্রকাশিত হয়, তা সংরক্ষণ করে। আল্লাহ তা‘আলার ফেরেশতাদের মধ্যে এমন ফেরেশতা রয়েছে, যিনি গর্ভাশয় ও শুক্রকীটের দায়িত্বে নিয়োজিত। যেমন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদের হাদীছে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

إِنَّ أَحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ فِي بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا نطفة، ثُمَّ يَكُونُ عَلَقَةً مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ يَكُونُ مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ يرسل إليه الملك فينفخ فيه الروح وَيُؤْمَرُ بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ يكتب رزقه وَأَجَلَهُ وعَمَلَهُ وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ

‘‘তোমাদের কারো সৃষ্টির অবস্থা এ যে, সে তার মায়ের পেটে প্রথমে চল্লিশ দিন বীর্য আকারে সঞ্চিত থাকে। পরবর্তী চল্লিশ দিনে সেটা জমাট রক্তে পরিণত হয়। এরপর আরো চল্লিশ দিনে সেটা মাংশপিন্ডে রূপান্তরিত হয়। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন। তিনি তাতে রূহ ফুঁকে দেন। এসময় তাকে চারটি বিষয় লেখার নির্দেশ দেয়া হয়: ( ১) সে কী পরিমাণ রিযিক পাবে। (২) বয়স কত হবে। (৩) কর্ম কি হবে এবং (৪) সে সৌভাগ্যবান হবে না হতভাগা হবে’’।[3]

ফেরেশতাদের মধ্য থেকে একদল ফেরেশতা বনী আদমের রূহ কবযের দায়িত্বশীল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ وَيُرْسِلُ عَلَيْكُمْ حَفَظَةً حَتَّىٰ إِذَا جَاءَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَهُمْ لَا يُفَرِّطُونَ﴾

‘‘তিনি নিজের বান্দাদের উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান এবং তোমাদের উপর রক্ষক নিযুক্ত করে পাঠান। অবশেষে যখন তোমাদের কারোর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয় তখন তার প্রেরিত ফেরেশতারা তার প্রাণ বের করে নেয় এবং নিজেদের দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে তারা সামান্যতম শৈথিল্য দেখায়না’’। (সূরা আল আনআম: ৬১) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿قُلْ يَتَوَفَّاكُم مَّلَكُ الْمَوْتِ الَّذِي وُكِّلَ بِكُمْ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّكُمْ تُرْجَعُونَ﴾

‘‘বলে দাও, মৃত্যুর ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবে, যাকে তোমাদের জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে। অতঃপর তোমাদেরকে তোমাদের রবের কাছে ফিরিয়ে আনা হবে’’। (সূরা সাজদাহ: ১১)

সুতরাং মালাকুল মাওতের জন্য ফেরেশতাদের মধ্য থেকে সহযোগী রয়েছে। তারা বান্দার শরীর থেকে রূহ বের করে। তারা যখন রূহকে কণ্ঠনালী পর্যন্ত আনয়ন করে, তখন মালাকুল মাওত নিজের কবযায় নিয়ে নেয়। মোটকথা আল্লাহ তা‘আলা উর্ধ্বজগৎ ও নিম্নজগতে বহু ফেরেশতা নিযুক্ত করে রেখেছেন। তারা তার অনুমতি, আদেশ ও ইচ্ছায় উভয় জগতের সকল কাজ-কর্ম পরিচালনা করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

  ﴿بَلْ عِبَادٌ مُّكْرَمُونَ لَا يَسْبِقُونَهُ بِالْقَوْلِ وَهُم بِأَمْرِهِ يَعْمَلُونَ﴾ ‘‘তারা তো মর্যাদাশালী বান্দা। তারা তার সামনে অগ্রবর্তী হয়ে কথা বলেন না এবং শুধু তার হুকুমে কাজ করেন’’। (সূরা আন্বীয়া: ২৬) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿ لَّا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ﴾

‘‘তারা কখনো আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে না এবং তাদেরকে যে নির্দেশ দেয়া হয় তাই পালন করে’’। (সূরা তাহরীম: ৬) এ জন্যই আল্লাহ তা‘আলা কখনো কখনো ফেরেশতাদের দিকেই ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার সম্বন্ধ করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,  ﴿  فَالْمُدَبِّرَاتِ أَمْرًا ﴾ ‘‘অতঃপর তারা সকল বিষয়ের কাজ পরিচালনা করেন’’। (সূরা নাযিআত: ৫) আবার কখনো কখনো আল্লাহ তা‘আলা সেটাকে নিজের দিকে সম্বন্ধ করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الْأَرْضِ ثُمَّ يَعْرُجُ إِلَيْهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ أَلْفَ سَنَةٍ مِّمَّا تَعُدُّونَ﴾

‘‘তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত যাবতীয় বিষয় পরিচালনা করেন এবং এ পরিচালনার বৃত্তান্ত উপরে তার কাছে উঠানো হয় এমন একদিনে যার পরিমাণ তোমাদের গণনায় এক হাজার বছর’’। (সূরা সাজদাহ: ৫)

সুতরাং ফেরেশতা হলো আল্লাহ তা‘আলা ও তার সৃষ্টির মধ্যে দূত স্বরূপ। তারা তার আদেশ-নিষেধ সৃষ্টির নিকট পৌঁছে দেয়। আর الملك ফেরেশতা নামটির অর্থই হলো  দূত।[4] কেননা الملك শব্দটি ألوكة থেকে গৃহীত। ألوكة শব্দটি الرسالة অর্থে ব্যবহৃত হয়।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿الْحَمْدُ لِلَّهِ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ جَاعِلِ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا أُولِي أَجْنِحَةٍ مَّثْنَىٰ وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ يَزِيدُ فِي الْخَلْقِ مَا يَشَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর নির্মাতা এবং ফেরেশতাদেরকে বাণীবাহক নিয়োগকারী। যাদের দুই দুই তিন তিন ও চার চারটি ডানা[5] আছে। তিনি নিজের মধ্যে যা চান বৃদ্ধি করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব জিনিসের উপর শক্তিশালী’’। (সূরা ফাতির: ১)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,﴿وَالْمُرْسَلَاتِ عُرْفًا﴾  ‘‘শপথ ফেরেশতাদের, যারা একের পর এক প্রেরিত হয়’’। (সূরা মুরসালাত: ১)

সুতরাং এরা হলো আল্লাহ তা‘আলার ঐসব সৃষ্টিগত আদেশ বাস্তবায়নকারী ফেরেশতা, যা দ্বারা আসমান-যমীনের সবকিছুর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করা হয়। সেই সঙ্গে তারা আল্লাহ তা‘আলার শরী‘আত গত আদেশ নিয়েও মানব রসূলদের কাছে আগমন করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يُنَزِّلُ الْمَلَائِكَةَ بِالرُّوحِ مِنْ أَمْرِهِ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ أَنْ أَنذِرُوا أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنَا فَاتَّقُونِ﴾

‘‘তিনি তার বান্দাদের মধ্য থেকে যার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় নির্দেশে অহীসহ ফেরেশতাদের নাযিল করেন, এই মর্মে সতর্ক করার জন্য যে, আমি ছাড়া তোমাদের আর কোনো সত্য মাবুদ নেই। কাজেই তোমরা আমাকেই ভয় করো’’। (সূরা আন নাহাল: ২) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿اللَّهُ يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ﴾

‘‘আল্লাহ ফেরেশতাদের মধ্য থেকেও বাণীবাহক বাছাই করেন এবং মানুষদের মধ্য থেকেও। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’’। (সূরা আল হজ: ৭৫)

ফেরেশতাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলেন জিবরীল আলাইহিস সালাম। তিনি অহীর দায়িত্বশীল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَإِنَّهُ لَتَنزِيلُ رَبِّ الْعَالَمِينَ نَزَلَ بِهِ الرُّوحُ الْأَمِينُ عَلَىٰ قَلْبِكَ لِتَكُونَ مِنَ الْمُنذِرِينَ بِلِسَانٍ عَرَبِيٍّ مُّبِينٍ﴾

‘‘এটি রববুল আলামীনের নাযিল করা কিতাব। একে নিয়ে আমানতদার রূহ অবতরণ করেছে তোমার হৃদয়ে, যাতে তুমি সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত হও। পরিস্কার আরবী ভাষায়’’। (সূরা শুআরা: ১৯২-১৯৫) আল্লাহ তা‘আলা সূরা নাহালের ১০২ নং আয়াতে আরো বলেন,

  ﴿قُلْ نَزَّلَهُ رُوحُ الْقُدُسِ مِن رَّبِّكَ بِالْحَقِّ ﴾‘‘বলো, একে তো রূহুল কুদুছ সত্যসহকারে তোমার রবের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে নাযিল করেছে’’।

আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতাদেরকে বিভিন্ন আকার-আকৃতি ধারণ করার ক্ষমতা দিয়েছেন। তারা ইবরাহীম ও লুত আলাইহিস সালামের নিকট মেহমানের বেশে আগমন করেছিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট জিবরীল আসতেন বিভিন্ন আকৃতিতে। কখনো আসতেন দিহইয়া কালবীর আকৃতিতে, কখনো আসতেন গ্রাম্য লোকের আকৃতিতে আবার কখনো আসতেন তার আসল আকৃতিতে যেভাবে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সেভাবেই। দু’বার এমনটি হয়েছিল। জিবরীল অন্য আকৃতিতে আসার কারণ হলো, মানুষ ফেরেশতাদেরকে আসল আকৃতিতে দেখার ক্ষমতা রাখে না। মুশরিকরা যখন আবেদন করেছিল, আল্লাহ তা‘আলা যেন তাদের কাছে ফেরেশতা পাঠান, তখন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

  ﴿وَقَالُوا لَوْلَا أُنزِلَ عَلَيْهِ مَلَكٌ وَلَوْ أَنزَلْنَا مَلَكًا لَّقُضِيَ الْأَمْرُ ثُمَّ لَا يُنظَرُونَ وَلَوْ جَعَلْنَاهُ مَلَكًا لَّجَعَلْنَاهُ رَجُلًا وَلَلَبَسْنَا عَلَيْهِم مَّا يَلْبِسُونَ﴾

তারা বলে, তার কাছে ফেরেশতা পাঠানো হয় না কেন? যদি ফেরেশতা পাঠাতাম, তাহলে ফায়সালা হয়ে যেতো, তখন তাদেরকে আর কোনো অবকাশই দেয়া হতোনা। যদি ফেরেশতা পাঠাতাম তাহলেও তাকে মানুষের আকৃতিতেই পাঠাতাম এবং তাদেরকে ঠিক তেমনি সংশয়ে লিপ্ত করতাম যেমন তারা এখন লিপ্ত রয়েছে (সূরা আল আনআম: ৮-৯)

অর্থাৎ মানুষের কাছে যদি ফেরেশতা রসূল পাঠাতাম, তাহলে ফেরেশতা মানুষের আকৃতিতেই আসতেন। যাতে করে মানুষেরা তার সাথে কথা বলতে পারে এবং তার কাছ থেকে আল্লাহ তা‘আলার বাণী গ্রহণ করে উপকৃত হতে পারে। কেননা প্রত্যেক প্রকার সৃষ্টিই সমজাতীয় সৃষ্টির সাথে মিশতে পারে, ঘনিষ্টতা ও সখ্যতা তৈরী করতে অভ্যস্ত এবং অন্য প্রকৃতির সৃষ্টি থেকে দূরে সরে যায়। ফেরেশতা সম্পর্কে এতটুকু আলোচনাকেই যথেষ্ট মনে করছি। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে বুঝার তাওফীক দিন। আমীন।


[1]. ছহীহ মুসলিম ৮, অধ্যায়: কিতাবুল ঈমান।
[2]. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে ফেরেশতাদের আরো কিছু গুণাগুণ, কাজ-কর্ম ও দায়িত্ব-কর্তব্যের বর্ণনা নিম্নে পেশ করা হলো,

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿فَالْمُدَبِّرَاتِ أَمْرًا﴾ ‘‘এরপর আল্লাহর হুকুমে সকল বিষয়ের কাজ পরিচালনা করে’’। (সূরা নাযিআত, ৫) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ﴿فَالْمُقَسِّمَاتِ أَمْرًا﴾ ‘‘অতঃপর একটি বড় জিনিস বন্টনকারী’’। (সূরা যারিয়াত, ৪) ঈমানদার ও রাসূলদের অনুসারীদের নিকট এরা হচ্ছেন ফেরেশতা। যারা সৃষ্টিকর্তা ও নবী-রাসূলদেরকে অস্বীকার করে, তারা বলে থাকে যে, উক্ত আয়াত দু’টিতে তারকার কথা বলা হয়েছে।

কুরআন ও সুন্নাহয় বিভিন্ন প্রকার ফেরেশতার কথা বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদের উপর বিভিন্ন প্রকার মাখলুকের দায়িত্বও অর্পন করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা পাহাড়ের দায়িত্বে ফেরেশতা নিযুক্ত করেছেন। মেঘমালা ও বৃষ্টি পরিচালনার জন্য ফেরেশতা নিযুক্ত করেছেন। মাতৃগর্ভে শিশুর দায়িত্বে ফেরেশতা নিয়োগ করেছেন। সে শুক্রবিন্দু থেকে শুরু করে শিশুর গঠন পর্যন্ত যাবতীয় কাজ পরিচালনা করে। বান্দা যেই আমল করে, তা সংরক্ষণ করার জন্য এবং লিখে রাখার জন্য ফেরেশতা নিয়োগ করেছেন। মৃত্যুর জন্য ফেরেশতা নিয়োগ করেছেন। কবরে প্রশ্ন করার জন্য ফেরেশতা নিযুক্ত করেছেন। মহা শুণ্যের গ্রহ-নক্ষত্রের জন্য ফেরেশতা নিয়োগ করেছেন। তারা তা ঘুরান ও পরিচালনা করেন। চন্দ্র-সূর্যের নিয়ন্ত্রণের জন্য ফেরেশতা নিযুক্ত করেছেন। জাহান্নাম, জাহান্নামের আগুন জ্বালানো, জাহান্নামীদেরকে শাস্তি দেয়া এবং জাহান্নামের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য ফেরেশতা নিয়োগ করেছেন। জান্নাত, জান্নাতের পরিচালনা, তাতে বৃক্ষাদি লাগানো এবং তাতে বিভন্ন প্রকার নিয়ামত স্থাপন করার জন্য ফেরেশতা নিযুক্ত করেছেন। সুতরাং ফেরেশতারা আল্লাহর সর্বাধিক বড় সৈনিক। তাদের মধ্যে রয়েছে এমন সব ফেরেশতা, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,﴿وَالْمُرْسَلَاتِ عُرْفًا﴾  ‘‘শপথ ফেরেশতাদের, যারা একের পর এক প্রেরিত হয়। (সূরা মুরসালাত: ১) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ﴿وَالنَّاشِرَاتِ نَشْرًا (৩) فَالْفَارِقَاتِ فَرْقًا (৪) فَالْمُلْقِيَاتِ ذِكْرًا﴾ ‘‘শপথ ঐ সমস্ত ফেরেশতাগণের, যারা মেঘমালাকে বহন করে নিয়ে ছড়িয়ে দেয়। তারপর তাকে ফেঁড়ে বিচ্ছিন্ন করে। অতঃপর মানুষের মনে আল্লাহর স্মরণ জাগিয়ে দেয়’’। (সূরা মুরসালাত: ৩-৫) ফেরেশতাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,﴿وَالنَّازِعَاتِ غَرْقًا

(১) وَالنَّاشِطَاتِ نَشْطًا (২) وَالسَّابِحَاتِ سَبْحًا (৩) فَالسَّابِقَاتِ سَبْقًا﴾ ‘‘সেই ফেরেশতাদের কসম! যারা ডুব দিয়ে টানে এবং ঐ সমস্ত ফেরেশতার কসম, যারা খুব আস্তে আস্তে বের করে নিয়ে যায়। আর সেই ফেরেশতাদেরও শপথ! যারা বিশ্বলোকে দ্রুত গতিতে সাঁতরে চলে অতঃপর বারবার সবেগে এগিয়ে যায়’’। (সূরা নাযিআত: ১-৪) আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতাদের কাজ সম্পর্কে আরো বলেন, ﴿وَالصَّافَّاتِ صَفًّا (১) فَالزَّاجِرَاتِ زَجْرًا (২) فَالتَّالِيَاتِ ذِكْرًا﴾ ‘‘সারিবদ্ধভাবে দ-ায়মানদের কসম, তারপর যারা ধমক ও অভিশাপ দেয়। তারপর তাদের কসম যারা উপদেশবাণী শুনায়’’। (সূরা সাফফাত: ১-৩)

ফেরেশতাদের মধ্যে আরো রয়েছে একদল রহমতের ফেরেশতা। রয়েছে আযাবের ফেরেশতা। আরো এমন ফেরেশতা রয়েছে, যাদেরকে আরশ বহন করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আরো এমন ফেরেশতা রয়েছে, যাদেরকে সালাত কায়েম, তাসবীহ পাঠ এবং আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনার মাধ্যমে আসমানসমূহ আবাদ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে আরো অনেক ফেরেশতা, যাদের সংখ্যা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ জানেনা। الملَك শব্দটির লাম বর্ণে যবর দিয়ে পড়লে এমন অর্থ প্রদান করে যাতে বুঝা যায় যে, তারা সেই বার্তাবাহক অর্থে ব্যবহৃত, যারা বার্তা প্রেরকের বার্তা পৌঁছিয়ে দেয়। তাদের হাতে কিছু নেই। বরং সকল কিছুর চাবিকাঠি পরাক্রমশালী একক সত্তার হাতে। তারা শুধু তাঁর আদেশ বাস্তবায়ন করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿بَلْ عِبَادٌ مُّكْرَمُونَ لَا يَسْبِقُونَهُ بِالْقَوْلِ وَهُم بِأَمْرِهِ يَعْمَلُونَ﴾ ‘‘তারা তো মর্যাদাশালী বান্দা৷ তারা তাঁর সামনে অগ্রবর্তী হয়ে কথা বলেন না এবং শুধু তাঁর হুকুমে কাজ করেন’’। (সূরা আন্বীয়া: ২৬) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ﴿يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ﴾ ‘‘যা কিছু মানুষের সামনে আছে তা তিনি জানেন এবং যা কিছু তাদের অগোচরে আছে সে সম্পর্কেও তিনি অবগত’’। (সূরা বাকারা: ২৫৫) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ﴿وَلَا يَشْفَعُونَ إِلَّا لِمَنِ ارْتَضَى وَهُمْ مِنْ خَشْيَتِهِ مُشْفِقُونَ﴾ ‘‘যাদের পক্ষে সুপারিশ শুনতে আল্লাহ সম্মত তাদের পক্ষে ছাড়া আর কারো সুপারিশ তারা করে না এবং তারা তাঁর ভয়ে থাকে ভীত-সন্ত্রস্ত’’। (সূরা আন্বীয়া: ২৮) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,﴿يَخَافُونَ رَبَّهُمْ مِنْ فَوْقِهِمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ﴾  ‘‘তারা ভয় করে নিজেদের রবকে যিনি তাদের উপরে আছেন এবং যা কিছু হুকুম দেয়া হয় তারা তাই করে’’। (সূরা নাহাল: ৫০)

সুতরাং ফেরেশতারা হচ্ছেন আল্লাহর সম্মানিত বান্দা। তাদের মধ্যে কতক ফেরেশতা সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান। কেউবা তাসবীহ পাঠে মশগুল। তাদের প্রত্যেকের জন্যই রয়েছে সুনির্দিষ্ট দাড়াবার স্থান। তিনি তা অতিক্রম করতে পারেন না। তিনি আদিষ্ট কর্মে ব্যস্ত রয়েছেন। সেই কাজ করতে কোন প্রকার ত্রুটি করেন না এবং তাঁকে যেই কাজের আদেশ করা হয়েছে, তার সীমাও লংঘন করেন না। যারা আল্লাহর নিকটবর্তী, তাদের মর্যাদা সর্বোচ্চ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,﴿لَا يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِهِ وَلَا يَسْتَحْسِرُونَ  يُسَبِّحُونَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ لَا يَفْتُرُونَ﴾  ‘‘তারা নিজেদেরকে বড় মনে করে তাঁর এবাদত থেকে বিমুখ হয় না এবং না ক্লান্ত হয়। দিনরাত তাঁর প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণা করতে থাকেন, বিরাম বা বিশ্রাম নেন না’’। (সূরা আম্বীয়া: ১৯-২০)

ফেরেশতাদের প্রধান ও নেতা হলেন তিনজন। জিবরীল, মীকাঈল এবং ইসরাফীল। তারা সকল মানুষ, প্রাণী, জীব ও উদ্ভিদের হায়াতের দায়িত্বপ্রাপ্ত। জিবরীল (আঃ) অহীর দায়িত্বপ্রাপ্ত। অহীর মাধ্যমেই রূহ এবং অন্তর জীবিত হয়। মিকাঈল বৃষ্টির দায়িত্বপ্রাপ্ত। বৃষ্টির মাধ্যমে যমীন, উদ্ভিদ এবং প্রাণী জগৎ জীবিত হয়। ইসরাফীল শিঙ্গায় ফুৎকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত। এর মাধ্যমে সৃষ্টি মৃত্যুর পর পুনঃজীবন ফেরত পাবে। সুতরাং ফেরেশতারা হচ্ছে আল্লাহর সৃষ্টি ও আদেশের ক্ষেত্রে আল্লাহর দূত। তারা তাঁর মাঝে এবং তাঁর বান্দাদের মাঝে দূত স্বরূপ। তারা আল্লাহর নিকট থেকে সৃষ্টি জগতের সকল প্রামেত্ম তাঁর আদেশ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে অবতরণ করে এবং তাঁর নিকট উন্নীত হয়। ফেরেশতাদের ভারে আসমানসমূহ কড়কড় আওয়াজ করে। আওয়াজ করাই এগুলোর জন্য সমীচিন। আসমানে চার আঙ্গুল পরিমাণ জায়গাও খালী নেই, যাতে কোনো না কোনো ফেরেশতা দাঁড়িয়ে, কিংবা রুকু অবস্থায় অথবা সিজদারত অবস্থায় আল্লাহর এবাদতে মশগুল নয়। প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা বাইতুল মা’মুরে প্রবেশ করে। তাদের কেউ সেটাতে দ্বিতীয়বার প্রবেশের সুযোগ পাবে না। কুরআন মজীদ বিভিন্ন প্রকার ফেরেশতা এবং তাদের বিভিন্ন পদ মর্যাদার আলোচনায় ভরপূর। কোথাও কোথাও আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নামের সাথে ফেরেশতার নাম যুক্ত করে উল্লেখ করেছেন এবং আল্লাহর সালাতকে ফেরেশতাদের সালাতের সাথে মিলিয়ে উল্লেখ করেছেন। আবার কখনো কখনো সম্মান জনক স্থানের দিকে তাদেরকে সম্বোধিত করেছেন। আবার কখনো উল্লেখ করেছেন যে, ফেরেশতারা আরশকে ঘিরে আছে এবং তারা আরশ বহন করে আছে। আবার কখনো উল্লেখ করা হয়েছে যে, তারা পাপ কাজ করা হতে মুক্ত। কখনো বলা হয়েছে যে, তারা সম্মানিত, নৈকট্যশীল, তারা উপরে উঠে, তারা পবিত্র, শক্তিধর এবং একনিষ্ঠ। (আল্লাহ তা‘আলাই সর্বাধিক অবগত রয়েছেন)

[3]. সহীহ মুসলিম, হা/২৬৪৩, তিরমিযী, হা/২১৩৭, সহীহ।

[4] . এর অর্থ এও হতে পারে যে ফেরেশতারা মহান আল্লাহ তা‘আলা ও নবী-রাসূলদের মধ্যে বার্তা পৌঁছাবার কাজ করেন। সে হিসাবে তারা আল্লাহর দূত। আবার এ অর্থও হতে পারে যে, সমগ্র বিশ্ব-জাহানে মহাশক্তির অধিকারী আল্লাহর বিধান নিয়ে যাওয়া এবং সেগুলো প্রবর্তন করা ফেরেশতাদেরই কাজ। এ কথা উল্লেখ করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে  ফেরেশতাদেরকে মুশরিকরা দেব-দেবীতে পরিণত করেছিল অথচ এদের মর্যাদা এক আল্লাহর একান্ত অনুগত খাদেমের চেয়ে মোটেই বেশি নয়। বাদশাহর খাদেমরা যেমন তার হুকুম তামিল করার জন্য দৌড়াদৌড়ি করে থাকে ঠিক তেমনি এ ফেরেশতারাও বিশ্ব-জাহানের প্রকৃত শাসনকর্তার হুকুম পালন করার জন্য উড়ে চলতে থাকেন। এ খাদেমদের কোনো ক্ষমতা নেই। সমস্ত ক্ষমতা রয়েছে আসল শাসনকর্তার হাতে। আল্লাহ তা‘আলাই সর্বাধিক অবগত রয়েছেন।

[5]. ফেরেশতাদের হাত ও ডানার অবস্থা ও ধরণ জানার কোনো মাধ্যম আমাদের কাছে নেই। কিন্তু এর অবস্থা ও ধরণ বর্ণনা করার জন্য আল্লাহ যখন এমন শব্দ ব্যবহার করেছেন যা মানুষের ভাষায় পাখিদের হাত ও ডানার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে তখন অবশ্যই আমাদের ভাষার এ শব্দকেই আসল অবস্থা ও ধরণ বর্ণনার নিকটতর বলে ধারণা করা যেতে পারে। দুই দুই, তিন তিন ও চার চার ডানার কথা বলা থেকে বুঝা যায় যে, বিভিন্ন ফেরেশতাকে আল্লাহ বিভিন্ন রকম শক্তি দান করেছেন এবং যাকে দিয়ে যে কাজ করতে চান তাকে সেরকম দ্রুতগতি ও কর্মশক্তি দান করেছেন।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে