منهج الجهمية وتلاميذهم في أسماء الله وصفاته - আল্লাহ তা‘আলার অতি সুন্দর নাম ও তার সুউচ্চ গুণাবলীর ক্ষেত্রে জাহমীয়া ও তাদের শিষ্যদের নীতি-পদ্ধতি

আল্লাহ তা‘আলার কিতাব ও রসূলের সুন্নাতে আল্লাহ তা‘আলার অতি সুন্দর নাম ও সুমহান গুণাবলী যেভাবে এসেছে, মুসলিমদের উপর আবশ্যক হলো তার বড়ত্ব ও মর্যাদার জন্য শোভনীয় পদ্ধতিতে সেটা সাব্যস্ত করা। কেননা এটি আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমান আনয়নের অন্তর্ভুক্ত। এটিই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মাযহাব। তারা এ ব্যাপারে আল্লাহর কিতাব ও রসূলের সুন্নাতকে দলীল ও মূলনীতি হিসাবে গ্রহণ করেছেন। এ বিষয়ে তাদের মাযহাব জাহমীয়া এবং তাদের ছাত্র মু‘তাযিলা ও আশায়েরাদের মাযহাবের বিপরীত। আল্লাহ তা‘আলা তার নিজের সত্তার জন্য যেসব অতি সুন্দর নাম ও সুউচ্চ গুণাবলী সাব্যস্ত করেছেন তারা তা নাকোচ করে অথবা নিজেদের মনমত তা থেকে কতিপয় ছিফাত নাকোচ করে এবং কতিপয় ছিফাত সাব্যস্ত করে। তাদের সীমিত বিবেক-বুদ্ধি অথবা গোমরাহ ইমামদেরকে এ ব্যাপারে দলীল হিসাবে গ্রহণ করে তাদের মাযহাব রচনা করেছে। সুতরাং যারা কুরআন-সুন্নাহ থেকে দলীল নিয়েছে এবং যারা চিন্তার ফসল ও মস্তিস্কের আবর্জনাকে দলীল বানিয়ে নিয়েছে, তাদের মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। যেমন বিদআতীদের কোনো এক কবি বলেছেন,

وكُل نص أوهم التشبيها ... أَوَّله أو فوَّض وَرُم تَنزِيها

‘‘হে বন্ধু! কুরআন ও সুন্নাহর যেসব উক্তিতে আল্লাহর সাথে সৃষ্টির তাশবীহ (তুলনা) হওয়ার সন্দেহ রয়েছে, তার বাহ্যিক অর্থ পরিহার করে অন্য অর্থে ব্যাখ্যা করো অথবা কেবল উক্তির অর্থ বিহীন শব্দমালা সাব্যস্ত করো এবং সৃষ্টির সাথে আল্লাহ তা‘আলার সাদৃশ্য হওয়ার ধারণা থেকে তাকে পবিত্র করো’’।

আল্লাহ তা‘আলার অতি সুন্দর নাম ও সুউচ্চ ছিফাতসমূহের ব্যাপারে কুরআন ও সুন্নাহর দলীলের ক্ষেত্রে এ হলো তাদের আচরণ। কুরআন-সুন্নাহর উক্তিগুলো যে গুরুত্বপূর্ণ অর্থ প্রদান করে তা পরিহার করে তাদের অকেজো বিবেক-বুদ্ধি এবং বাতিল মতবাদ যা নির্ধারণ করে, তা গ্রহণ করাকে التأويل বলা হয়। আর তাদের বিবেক-বুদ্ধি যা বুঝতে ও গ্রহণ করতে অক্ষম তারা তা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করে কুরআন-সুন্নাহ এর বিপরীত আকীদা পোষণ করেছে।

হে আমার রব! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। কতইনা উঁচু তোমার শান! বান্দাদের ব্যাপারে তুমি কতইনা সহনশীল! তুমি তোমার নিজের সত্তার জন্য যেসব পূর্ণতার গুণাবলী ও মহত্ত্বের বিশেষণ সাব্যস্ত করেছো, এরা তা অস্বীকার করেছে। তারা তোমার কিতাবের বিরোধিতা করেছে। তুমি তোমার কিতাবে যা অবতীর্ণ করেছো, তার উপর তারা নিজেদের বিবেক-বুদ্ধির সিদ্বান্তকে প্রাধান্য দিয়েছে। তারা তোমার অতি সুন্দর নাম ও সুউচ্চ গুণাবলীকে নাকোচ করে দিয়েছে এবং তোমার দলীল-প্রমাণ ও হিদায়াতকেও নাকোচ করেছে।

ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ জাহমীয়া, মু‘তাযিলা এবং তাদের শিষ্যদের ব্যাপারে বলেছেন, যে ব্যক্তি ধারণা করলো যে, আল্লাহ তা‘আলা নিজের সত্তা, ছিফাত ও কর্ম সম্পর্কে যে সংবাদ দিয়েছেন, তার বাহ্যিক অর্থ বাতিল, কারণ এতে সৃষ্টির সাথে তার তাশবীহ (সাদৃশ্য দেয়া) এবং তামছীল (তুলনা করা) হয়ে যায়, তাই এ বিষয়ে মূল সত্যটি এড়িয়ে চলা হয়েছে, সে সম্পর্কে সংবাদ প্রদান করা হয়নি; বরং সেদিকে দূর থেকে রহস্যময় ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে, ধাঁধায় ফেলা হয়েছে, সুস্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি, এ সম্পর্কে সবসময় সাদৃশ্য এবং বাতিল উপমা পেশ করা হয়েছে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের মেধা, বোধশক্তি, চিন্তা-ভাবনা ও বিবেক-বুদ্ধি খাঁটিয়ে তার কালামকে স্বীয় অর্থ থেকে সরানো এবং সেটার আসল ব্যাখ্যা বাদ দিয়ে অন্য ব্যাখ্যা করার আদেশ করেছেন, তাদেরকে আরো আদেশ করা হয়েছে, তারা যেন আল্লাহর কালামের তাবীল করার কঠিন কঠিন পদ্ধতি বের করে, যারা এ ধরণের কথা বলল, তারা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি মন্দ ধারণা পোষণ করলো।

এমনি যারা মনে করে, কুরআন মজীদে সর্বদা অর্থহীন শব্দ ও উপমা পেশ করা হয়েছে, আল্লাহর কালামের তাবীলগুলোর মাধ্যমে মানুষকে ধাঁধায় ফেলা হয়েছে এবং সেগুলো অনেকটা খোলাখুলি বর্ণনার মতোই তারাও আল্লাহর প্রতি মন্দ ধারণা পোষণ করলো।

এমনি যারা মনে করে আল্লাহ তা‘আলার অতি সুন্দর নাম ও সুউচ্চ গুণাবলীর পরিচয় জানার জন্য তিনি তাদেরকে বিবেকের উপর ছেড়ে দিয়েছেন; তার কিতাবের উপর নির্ভর করতে বলেননি, তারাও আল্লাহর ব্যাপারে খারাপ ধারণা পোষণ করল। যারা মনে করে, আল্লাহ তাদেরকে তার কালামের এমন অর্থ গ্রহণ করতে বলেছেন, যা তাদের ভাষা ও বক্তব্যে পরিচিত ছিল না। অথচ যেই সত্যটি খুলে বলা উচিত ছিল, আল্লাহ তা‘আলা খোলাখুলিভাবে তা প্রকাশ করতে সম্পূর্ণ সক্ষম এবং ঐ সমস্ত শব্দ দূর করতে সক্ষম, যেগুলো মানুষকে বাতিল আকীদার দিকে নিয়ে যায়, কিন্তু তিনি তা না করে হেদায়াতের সুস্পষ্ট পথের বিপরীত পথে তাদেরকে নিয়ে গেছেন। যারা এরূপ ধারণা করলো, তারাও আল্লাহর ব্যাপারে খারাপ ধারণা পোষণ করল।

এমনি যে ব্যক্তি ধারণা করলো, আল্লাহ তা‘আলা সুস্পষ্ট শব্দের মাধ্যমে সত্য প্রকাশ করতে সক্ষম নন; বরং তার উস্তাদরাই তা করতে সক্ষম, সে আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমতার মধ্যে অপারগতার ধারণা পোষণ করলো। কিন্তু যে বললো, তিনি তা করতে সক্ষম, কিন্তু করেননি; বরং সত্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা না দিয়ে অস্পষ্ট ধারণার দিকে নিয়ে গেছেন, শুধু তাই নয়; বরং অবাস্তব, বাতিল ও ভ্রান্ত আকীদার দিকে নিয়ে গেছেন, সেও আল্লাহ তা‘আলার হিকমত ও রহমত সম্পর্কে বাতিল ধারণা পোষণ করলো।  

যে ব্যক্তি বিশ্বাস করল, আল্লাহ এবং আল্লাহর রসূল ব্যতীত সে নিজে এবং তার উস্তাদরাই সত্য বলেছেন এবং তাদের কথাতেই রয়েছে সুস্পষ্ট হিদায়াত, সত্য, আল্লাহর কালামের বাহ্যিক অর্থের মধ্যে কেবল তাশবীহ, তামছীল এবং গোমরাহী ছাড়া অন্য কিছু নেই, তাদের ধারণা আল্লাহর প্রতি খুবই মন্দ। যারা মনে করে দিশেহারা কালাম শাস্ত্রবিদ ও যুক্তিবিদদের কথার মধ্যেই রয়েছে সত্য ও হিদায়াত আল্লাহর প্রতি তাদের ধারণা সর্বাধিক নিকৃষ্ট।

যারা বিশ্বাস করল, আল্লাহ শুনেন না, দেখেন না, জানেন না, তার কোনো ইচ্ছা নেই, তার সত্তার সাথে যুক্ত কালাম ছাড়া আর কোনো কালাম নেই, কোনো সৃষ্টির সাথে কথা বলেন না, কখনো বলবেন না, কোনো আদেশ বা নিষেধও করেন না, তারাও আল্লাহর প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করলো।  

এমনি যারা ধারণা করল যে, আল্লাহ তা‘আলা আসমানসমূহের উপর আরশে সমুন্নত হন না এবং সৃষ্টি থেকে আলাদা নন; বরং আরশের দিকে তার সত্তার সম্বন্ধ করা সর্বনিম্ন স্থানের প্রতি সেটার সম্বন্ধ করার মতোই, তারা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি অত্যন্ত নিকৃষ্ট ধারণা পোষণ করলো। ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহর কথা এখানেই শেষ।

অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তার নিজের সত্তার জন্য পূর্ণতার যেসব গুণাবলী সাব্যস্ত করেছেন, জাহমীয়া, মু‘তাযিলা ও আশআরী সম্প্রদায়ের লোকেরা তা নাকোচ করে থাকে। আর এ কথা বাস্তব যে, যারাই আল্লাহ তা‘আলার পবিত্র সত্তা থেকে পূর্ণতার গুণাবলী নাকোচ করেছে, তারাই তার জন্য সেটার বিপরীতে ত্রুটিযুক্ত বিশেষণ সাব্যস্ত করেছে। আল্লাহ তা‘আলা এসব যালেমের কথার বহু উর্ধ্বে।

উপরোক্ত কথা গ্রহণ করা হলে এটি আবশ্যক হয় যে, এ গোমরাহ লোকেরাই আল্লাহ সম্পর্কে অধিক জ্ঞানী এবং আল্লাহর জন্য যা শোভনীয় তা সাব্যস্ত করার জন্য তারাই তার চেয়ে বেশি হকদার। কেননা তিনি নিজের জন্য যা সাব্যস্ত করেছেন, তারা তা নাকোচ করেছে। তারা বলেছে, সেটা আল্লাহ তা‘আলার জন্য শোভনীয় নয়। এর চেয়ে অধিক গোমরাহী আর কী হতে পারে? আল্লাহ তা‘আলার সত্তা সম্পর্কে এত জঘন্য কথা বলার চেয়ে দুঃসাহসিকতা আর কী হতে পারে।

তাদের কথা থেকে আরো আবশ্যক হয় যে, তারা আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে রসূল সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকেও অধিক জানে। কেননা তিনিও আল্লাহ তা‘আলার জন্য এ ছিফাতগুলো সাব্যস্ত করেছেন। আর এসব জাহমীয়া ও মু‘তাযিলারা তা নাকোচ করেছে এবং বলেছে এগুলো তার জন্য শোভনীয় নয়। সুতরাং এদের চেয়ে অধিক গোমরাহ আর কে হতে পারে? আফসোস! যদি তারা বুঝতে পারতো!

আল্লাহ তা‘আলা তার নিজের সত্তা সম্পর্কে যত জ্ঞান রাখেন এ গোমরাহ মূর্খ লোকেরা কিভাবে তার চেয়ে অধিক জ্ঞান রাখার দাবি করতে পারে। তিনি তাদের কথার বহু উর্ধ্বে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِهِ عِلْمًا﴾

‘‘তিনি লোকদের সামনের ও পেছনের সব অবস্থা জানেন। তারা তাদের জ্ঞান দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পারবেনা’’। (সূরা ত্বহা: ১১০)

সুতরাং সৃষ্টির মধ্য থেকে আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে তিনি ছাড়া অন্য কেউ অধিক জানেনা। আল্লাহ তা‘আলা যা দ্বারা বিশেষিত হওয়ার উপযুক্ত এবং যা কিছু তার জন্য শোভনীয়, সে সম্পর্কে তিনি এবং তার রসূল ব্যতীত অন্য কেউ অধিক জানে না।

আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞতা ও জ্ঞান-বুদ্ধির ত্রুটির কারণেই জাহমীয়া এবং তাদের অনুসারীরা আল্লাহ তা‘আলার ছিফাত অস্বীকার করেছে। তারা মনে করেছে, এ ছিফাতগুলো আল্লাহ তা‘আলার জন্য সাব্যস্ত করা হলে তা থেকে তাশবীহ বা তার সদৃশ  সাব্যস্ত করা আবশ্যক হয়। কেননা তারা এ ছিফাতগুলো সৃষ্টির মধ্যে প্রত্যক্ষ করে থাকে। তারা স্রষ্টার ছিফাত এবং সৃষ্টির ছিফাতের মধ্যে পার্থক্য করে না এবং স্রষ্টার ছিফাত থেকে কেবল ঐ পরিমাণই বুঝে থাকে, যে পরিমাণ বুঝে থাকে সৃষ্টির ছিফাত থেকে। তারা জানে না যে, মহান স্রষ্টার জন্য রয়েছে খাস ও শোভনীয় ছিফাত এবং সৃষ্টির জন্য রয়েছে খাস ও শোভনীয় ছিফাত। স্রষ্টার সত্তা ও সৃষ্টির সত্তার মধ্যে যেমন কোনো সাদৃশ্য নেই ঠিক তেমনি স্রষ্টার ছিফাত ও সৃষ্টির ছিফাতের মধ্যে কোনো সাদৃশ্য নেই। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ﴾

‘‘তার সদৃশ কোনো কিছুই নেই। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’’ (সূরা শুরা:১১)।

এখানে আল্লাহ নিজের জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টি সাব্যস্ত করেছেন। একই সঙ্গে নিজের সত্তার সাথে কোনো কিছুর সাদৃশ্য হওয়াকেও নাকোচ করেছেন। এতে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, আল্লাহর জন্য ছিফাত সাব্যস্ত করলে স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে সাদৃশ্য থাকা আবশ্যক হয় না।

আল্লাহ তা‘আলার জন্য অতি সুন্দর নাম ও সুউচ্চ গুণাবলী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে এটি হলো আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মূলনীতি। এর উপরই তারা রয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা তার নিজের সত্তার জন্য যা সাব্যস্ত করেছেন, উদাহরণ-উপমা পেশ করা ছাড়াই তারা তার জন্য সেটা সাব্যস্ত করেন এবং তিনি তার নিজের সত্তা থেকে যা নাকোচ করেছেন, তার মহান গুণাবলী বাতিল করা ব্যাতীত কেবল তাই নাকোচ করেন।

কিন্তু জাহমীয়া, আশায়েরা এবং তাদের শিষ্যরা একটি বাতিল মূলনীতির উপর তাদের মাযহাব নির্মাণ করেছে, যা নিজেরাই তৈরী করেছে। তাদের মতে আল্লাহর জন্য ছিফাত সাব্যস্ত করা হলে সৃষ্টির সাথে তাশবীহ বা সাদৃশ্য আবশ্যক হয়। তাই ছিফাত সংক্রান্ত বক্তব্যগুলোর ক্ষেত্রে তারা নিন্মোক্ত দু’টি বিষয়ের যে কোনো একটি আবশ্যক মনে করে।

(১) ছিফাত সংক্রান্ত বক্তব্যগুলোর বাহ্যিক অর্থ পরিহার করে অন্য অর্থে তাবীল করা। অথবা (২)  কেবল বক্তব্যগুলোর অর্থবিহীন শব্দমালা সাব্যস্ত করা। সেই সঙ্গে এ বিশ্বাস করা যে, তাতে বাহ্যিক অর্থ উদ্দেশ্য নয়। এ জন্যই তাদের আকীদায় বিশ্বাসী কোনো এক কবি বলেছেন

وكل نص أوهم التشبيها ... أوله أو فوض ورم تنزيها

‘‘হে বন্ধু! কুরআন ও সুন্নাহর যেসব বক্তব্যে আল্লাহর সাথে সৃষ্টির তাশবীহ হওয়ার সন্দেহ রয়েছে, তার বাহ্যিক অর্থ পরিহার করে অন্য অর্থে ব্যাখ্যা করো অথবা কেবল বক্তব্যগুলোর অর্থ বিহীন শব্দমালা সাব্যস্ত করো এবং সৃষ্টির সাথে আল্লাহ তা‘আলার সাদৃশ্য হওয়ার ধারণা থেকে তাকে পবিত্র করো’’।

হে আমার রব! এসব যালেম এবং নাস্তিক যা বলছে তা থেকে আমি তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। তুমি তাদের কথার বহু উর্ধ্বে।

উপরোক্ত কবির জবান থেকে আল্লাহ তা‘আলা সত্য বের করেছেন। তিনি বলেছেন,  "وكل نص أوهم التشبيها"  কুরআন ও সুন্নাহর যেসব বক্তব্যে আল্লাহর সাথে সৃষ্টির তাশবীহ হওয়ার সন্দেহ রয়েছে.....। এতে প্রমাণ মিলে যে, তাদের মাযহাবের ভিত্তি হচ্ছে সন্দেহের উপর, সুপ্রাণিত সত্যের উপর নয়। কেননা তারা ধারণা করেছে যে, এ বক্তব্যগুলোতে তাশবীহ বা সাদৃশ্যের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তারা এগুলোর তাবীল করেছে। হে আল্লাহর বান্দাগণ! সন্দেহের বশবতী হয়ে কি কখনো আল্লাহর কিতাব ও রসূলের সুন্নাতের বিরোধিতা করা বৈধ? সন্দেহের উপর কি আকীদা নির্মাণ করা জায়েয? আসলে সন্দেহের স্তর ধারণার চেয়ে নিম্নে। আল্লাহ তা‘আলা ধারণা সম্পর্কে বলেন,

﴿وَإِنَّ الظَّنَّ لا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئاً﴾

‘‘সত্যের মোকাবেলায় অনুমানের কোনো মূল্য নেই’’। (সূরা নাযম: ২৮)