৩.১ সিয়াম : অর্থ ও হুকুম - ১. সিয়ামের শাব্দিক অর্থ কী?

সিয়ামের শাব্দিক অর্থ বিরত থাকা। ফার্সি ভাষায় এটাকে রোযা বলা হয়।

এটা ফরয।

দ্বিতীয় হিজরীতে।

ক. আল্লাহ তাআলা বলেন,


یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۸۳﴾ۙ

১. “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের উপর। যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার।” (সূরা ২; বাকারা ১৮৩)

شَہۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡہِ الۡقُرۡاٰنُ ہُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡہُدٰی وَ الۡفُرۡقَانِ ۚ فَمَنۡ شَہِدَ مِنۡکُمُ الشَّہۡرَ فَلۡیَصُمۡہُ ؕ وَ مَنۡ کَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیۡدُ اللّٰہُ بِکُمُ الۡیُسۡرَ وَ لَا یُرِیۡدُ بِکُمُ الۡعُسۡرَ ۫ وَ لِتُکۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَ لِتُکَبِّرُوا اللّٰہَ عَلٰی مَا ہَدٰىکُمۡ وَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۱۸۵﴾

২. “রমযান হলো সেই মাস যে মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছিল। মানবজাতির জন্য হিদায়াত ও সুস্পষ্ট পথ নির্দেশক এবং হক ও বাতিলের পার্থক্য নির্ণয়কারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যারাই এ মাস পাবে তারা যেন অবশ্যই সিয়াম পালন করে।” (সূরা ২; বাকারা ১৮৫)
 
খ. ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি - (১) এ মর্মে সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর সত্যিকার কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল। (২) সালাত কায়েম করা, (৩) যাকাত দেওয়া, (৪) রমযান মাসের সিয়াম পালন করা এবং (৫) সক্ষম ব্যক্তির হাজ্জ আদায় করা। (বুখারী ও মুসলিম)

৩.২ রমযান মাসের ফযীলত প্র: ৫. রমযান মাসের ফযীলত ও মর্যাদা সম্পর্কে জানতে চাই

চন্দ্র মাসের মধ্যে এটা এক অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাসের ফযীলত অপরিসীম। নিচে ধারাবাহিকভাবে রমযান মাসের কিছু ফযীলত তুলে ধরা হলো:

১. ইসলামের পাঁচটি রুকনের একটি রুকন হলো সিয়াম। আর এ সিয়াম পালন করা হয় এ মাসেই। আল্লাহ তাআলা বলেন,

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۸۳﴾ۙ

অর্থাৎ “হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার।” (সূরা ২; বাকারা ১৮৩)

২. এ মাসের সিয়াম পালন জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

অর্থাৎ “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, যাকাত আদায় করল, রমযান মাসে সিয়াম পালন করল তার জন্য আল্লাহর উপর সে বান্দার অধিকার হলো তাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া।” (বুখারী: ২৭৯০)

৩. রমযান হলো কুরআন নাযিলের মাস।

شَہۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡہِ الۡقُرۡاٰنُ ہُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡہُدٰی وَ الۡفُرۡقَانِ ۚ فَمَنۡ شَہِدَ مِنۡکُمُ الشَّہۡرَ فَلۡیَصُمۡہُ ؕ وَ مَنۡ کَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیۡدُ اللّٰہُ بِکُمُ الۡیُسۡرَ وَ لَا یُرِیۡدُ بِکُمُ الۡعُسۡرَ ۫ وَ لِتُکۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَ لِتُکَبِّرُوا اللّٰہَ عَلٰی مَا ہَدٰىکُمۡ وَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۱۸۵﴾

অর্থাৎ “রমযান মাস- যার মধ্যে কুরআন নাযিল করা হয়েছে লোকেদের পথ প্রদর্শক এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট বর্ণনারূপে এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে।” (সূরা ২; বাকারা ১৮৫)।
সিয়াম যেমন এ মাসে, কুরআনও নাযিল হয়েছে এ মাসেই। ইতঃপূর্বেকার তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিলসহ যাবতীয় সকল আসমানি কিতাব এ মাহে রমযানেই নাযিল হয়েছিল। (সহীহ আল জামে'-১/৩১৩ হা. ১৪৯৭, আহমদ- ৪/১০৭)

এ মাসেই জিবরাঈল (আঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কুরআন শুনাতেন এবং তাঁর কাছ থেকে তিলাওয়াত শুনতেন। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের শেষ রমযানে পূর্ণ কুরআন দু’বার খতম করেছেন। (মুসলিম)

৪. রমযান মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।

“যখন রমযান আসে তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় আর জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের আবদ্ধ করা হয়।” (মুসলিম: ১০৭৯) আর এ জন্যই এ মাসে মানুষ ধর্ম-কর্ম ও নেক আমলের দিকে অধিক তৎপর হয় এবং মসজিদের মুসল্লীদের ভীড় অধিকতর হয়।

৫. এ মাসেই লাইলাতুল কদর। এক রাতের ইবাদত অপরাপর এক হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও বেশি। অর্থাৎ ৮৩ বছর ৪ মাসের ইবাদতের চেয়েও বেশি সাওয়াব হয় এ মাসের ঐ এক রজনীর ইবাদতে।

ক. আল্লাহ তাআলা বলেন,
অর্থাৎ “কদরের একরাতের ইবাদত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাতে ফেরেশতা আর রূহ [জিবরাঈল (আঃ)] তাদের রব্ব-এর অনুমতিক্রমে প্রত্যেক কাজে দুনিয়ায় অবতীর্ণ হয়।(এ রাতে বিরাজ করে) শান্তি আর শান্তি- তা ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত থাকে।” (সূরা ৯৭; ক্বদর ৩-৫)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“এ মাসে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলতঃ সকল কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হলো।” (নাসায়ী: ২১০৬)।

৬. এ পুরো মাস জুড়ে দুআ কবুল হয়।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“এ রমযান মাসে প্রত্যেক মুসলিম আল্লাহর সমীপে যে দু'আই করে থাকে- তা মঞ্জুর হয়ে যায়।” (আহমাদ- ২/২৫৪)

৭. এ মাসে মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

অর্থাৎ “মাহে রমযানে প্রতিরাত ও দিনের বেলায় বহু মানুষকে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে মুক্তির ঘোষণা দিয়ে থাকেন এবং প্রতিটি রাত ও দিনের বেলায় প্রত্যেক মুসলিমের দু'আ মুনাজাত কবুল করা হয়ে থাকে।” (আহমাদ- ২/২৫৪)।

৮. এ মাস জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের মাস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“এ মাসের প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে আহ্বান করতে থাকে যে, হে কল্যাণের অনুসন্ধানকারী তুমি আরো অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের পথিক, তোমরা অন্যায় পথ চলা বন্ধ কর। (তুমি কি জান?) এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তাআলা কত লোককে জাহান্নাম থেকে। মুক্তি দিয়ে থাকেন। (তিরমিযী: ৬৮২)

৯. এ মাস ক্ষমা লাভের মাস। এ মাস ক্ষমা লাভের মাস। এ মাস পাওয়ার পরও যারা তাদের আমলনামাকে পাপ-পঙ্কিলতা মুক্ত করতে পারল না রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে ধিক্কার দিয়ে বলেছেন,

“ঐ ব্যক্তির নাক ধূলায় ধুসরিত হোক যার কাছে রমযান মাস এসে চলে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করিয়ে নিতে পারল না।” (তিরমিযী: ৩৫৪৫)

১০. রমযান মাসে সৎ কর্মের প্রতিদান বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“যে ব্যক্তি রমযান মাসে কোন একটি নফল ইবাদত করল, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরয আদায় করল। আর রমযানে যে ব্যক্তি একটি ফরয আদায় করল, সে যেন অন্য মাসের ৭০টি ফরয আদায় করল।” (ইবনে খুযাইমা: ১৮৮৭, হাদীসটি দুর্বল)

১১. এ মাসে একটি উমরা করলে একটি হজ্জ আদায়ের সওয়াব হয় এবং তা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে হজ্জ আদায়ের মর্যাদা রাখে।

ক. হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“রমযান মাসে উমরা করা আমার সাথে হজ্জ আদায় করার সমতুল্য।” (বুখারী: ১৮৬৩)।

হাদীসে আছে,
খ. একজন মেয়েলোক এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করল,
“কোন ইবাদতে আপনার সাথী হয়ে হজ্জ করার সমতুল্য সাওয়াব পাওয়া যায়? তাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, রমযান মাসের ওমরা করা।” (আবু দাউদ: ১৯৯০)

৩.৩ সিয়াম পালনের ফযীলত - ৬. সিয়াম পালনকারীকে আল্লাহ কী কী পুরস্কার দেবেন?

সিয়াম পালনকারীকে যেসব পুরস্কার ও প্রতিদান আল্লাহ তাআলা দেবেন তার অংশ বিশেষ এখানে উল্লেখ করা হলো:

১. আল্লাহ স্বয়ং নিজে সিয়ামের প্রতিদান দেবেন। হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ তাআলা বলেন,
“মানুষের প্রতিটি ভালো কাজ নিজের জন্য হয়ে থাকে, কিন্তু সিয়াম শুধুমাত্র আমার জন্য, অতএব আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।” (বুখারী: ১৯০৪)।

২. সিয়াম অতি উত্তম নেক আমল। আবু হোরায়রাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একটি হাদীসে তিনি বলেছিলেন,
“হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাকে একটি অতি উত্তম নেক আমলের নির্দেশ দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা এর সমমর্যাদাসম্পন্ন কোন আমল নেই।” (নাসাঈ: ২২২২)। অন্যান্য ইবাদত মানুষ দেখতে পায়। কিন্তু সিয়ামের মধ্যে তা নেই। লোক দেখানোর কোন আলামত সিয়াম পালনে থাকে না। শুধুই আল্লাহকে খুশি করার জন্য তা করা হয়। তাই এ ইবাদতের মধ্যে রয়েছে বিশুদ্ধ ইখলাস। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

‘সিয়াম পালনকারী শুধুমাত্র আমাকে খুশি করার জন্যই পানাহার ও যৌন উপভােগ পরিহার করে।

৩.
ক- জান্নাত লাভ সহজ হয়ে যাবে সহীহ ইবনে হিব্বান কিতাবে আছে আবু উমামা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন,

আবু উমামা রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন যার কারণে আমি জান্নাতে যেতে পারি। তিনি বললেন, তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা এর সমমর্যাদাসম্পন্ন কোন ইবাদাত নেই। (নাসাঈ) 

খ. সিয়াম পালনকারীকে বিনা হিসেবে প্রতিদান দেওয়া হয় অন্যান্য ইবাদতের প্রতিদান আল্লাহ তাআলা তার দয়ার বদৌলতে ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন। কিন্তু সিয়ামের প্রতিদান ও তার সাওয়াব এর চেয়েও বেহিসেবী সংখ্যা দিয়ে গুণ দিয়ে বাড়িয়ে দেওয়া হবে। হাদীসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন,

“মানব সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন, কিন্তু সিয়ামের বিষয়টি ভিন্ন। কেননা সিয়াম শুধুমাত্র আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেব।” (মুসলিম) অর্থাৎ কি পরিমাণ সংখ্যা দিয়ে গুণ করে এর প্রতিদান বাড়িয়ে দেওয়া হবে এর কোন হিসাব নেই, শুধুমাত্র আল্লাহই জানেন সিয়ামের পুণ্যের ভাণ্ডার কত সুবিশাল হবে।

৪. জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সিয়াম ঢাল স্বরূপ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“সিয়াম ঢালস্বরূপ। এ দ্বারা বান্দা তার নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করতে পারে।” (আহমাদ: ১৫২৯৯)।

৫. জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য সিয়াম একটি মযবুত দুর্গ হাদীসে আছে, “সিয়াম ঢালস্বরূপ এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার এক মযবুত দুর্গ।” .

৬. আল্লাহর পথে সিয়াম পালনকারীকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে দূরে রাখেন। এ বিষয়ে রাসূল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

ক. “যে কেউ আল্লাহর রাস্তায় (অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য) একদিন সিয়াম  পালন করবে, তদ্বারা আল্লাহ তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে সত্তর বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরবর্তীস্থানে রাখবেন।” (মুসলিম: ১১৫৩)

খ. “যে ব্যক্তি একদিন আল্লাহর পথে সিয়াম পালন করবে আল্লাহ তার কাছ থেকে জাহান্নামকে সত্তর বছরের রাস্তা দূরে সরিয়ে নেবেন।” (বুখারী: ২৮৪০)

গ. “আবু হোরায়রাহ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, “আমি আল্লাহর রাসূলকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি কাজের নির্দেশ দিন যার দ্বারা আমি লাভবান হতে পারি। তিনি বললেন, তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা এর সমকক্ষ (মর্যাদাসম্পন্ন) কোন ইবাদত নেই।” (নাসাঈ: ২২২১)
 
৭. ইফতারের সময় বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। হাদীসে আছে,

“ইফতারের মুহূর্ত আল্লাহ রাব্বল আলামীন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়াটি রমযানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে।” (আহমাদ- ৫/২৫৬)

৮. সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশকের চেয়েও উত্তম (সুগন্ধিতে পরিণত হয়)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“যার হাতে মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জীবন সে সত্তার শপথ করে বলছি, সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ তাআলার কাছে মিশকের ঘ্রাণের চেয়েও প্রিয় হয়ে যায়।” (বুখারী: ১৯০৪, মুসলিম: ১১৫১)

৯. সিয়াম পালনকারীর জন্য রয়েছে দুটি বিশেষ আনন্দ মুহূর্ত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“সিয়াম পালনকারীর জন্য দুটো বিশেষ আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে: একটি হলো ইফতারের সময়, আর দ্বিতীয়টি হলো তার রবের সাথে সাক্ষাতের সময়।” (বুখারী: ৭৪৯২, মুসলিম: ১১৫১)।

১০. সিয়াম কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে। হাদীসে আছে,

“সিয়াম ও কুরআন কিয়ামতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে আমার রব, আমি দিনের বেলায় তাকে (এ সিয়াম পালনকারীকে) পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। অনুরূপভাবে কুরআন বলবে, হে আমার রব, আমাকে অধ্যয়নরত থাকায় রাতের ঘুম থেকে আমি তাকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে।” (আহমাদ- ২/১৭৪)

১১. সিয়াম হলো গুনাহের কাফফারা
ক. আল্লাহ তাআলা বলেন,  নিশ্চয়ই নেক আমল পাপরাশি দূর করে দেয়। (সূরা ১১; হুদ ১১৪)
খ. নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

“পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ ও প্রতিবেশীদের নিয়ে জীবন চলার পথে যেসব গুনাহ মানুষের হয়ে যায় সালাত, সিয়াম ও দান-খয়রাত সেসব গুনাহ মুছে ফেলে দেয়।” (বুখারী: ৫২৫, মুসলিম: ১৪৪)
 
১২. এক রমযান থেকে পরবর্তী রমাযানের মধ্যবর্তী সময়ে সিয়াম পালনকারীর হয়ে যাওয়া সগীরা গুনাহগুলোকে মাফ করে দেওয়া হয়।

ক. আল্লাহ তাআলা বলেন,

“তোমরা যদি নিষিদ্ধ কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাক তাহলে তোমাদের সগীরা গুনাহগুলোকে মুছে দেব এবং (জান্নাতে) তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাব।” (সূরা ৪; নিসা ৩১)।

খ. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“পাঁচ ওয়াক্ত সালাত এর মধ্যবর্তী সময় ও এক জুমু'আ থেকে অপর জুমু'আ এবং এক রমযান থেকে অপর রমযান পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে হয়ে যাওয়া সগীরা গুনাহগুলোকে (উল্লেখিত ইবাদতের) কাফফারাস্বরূপ মুছে দেওয়া হয় সে যদি কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।” (মুসলিম: ২৩৩)

১৩. সিয়াম পালনকারীর পূর্বেকার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

“যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব হাসিলের আশায় রমযানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (বুখারী: ৩৮, মুসলিম: ৭৫৯)

১৪. সিয়াম যৌন প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে রাখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যে সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে। কেননা বিবাহ দৃষ্টি ও লজ্জাস্থানের হেফাযতকারী। আর যে ব্যক্তি বিবাহের সামর্থ্য রাখে না সে যেন সিয়াম পালন করে। কারণ এটা তার জন্য নিবৃত্তকারী। (অর্থাৎ সিয়াম পালন যৌন প্রবৃত্তি নিবৃত্ত করে রাখে)।” (বুখারী ও মুসলিম)।

১৫. সিয়াম পালনকারীরা রাইয়ান নামক মহিমান্বিত এক দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

“জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। যার নাম রাইয়্যান। কিয়ামতের দিন শুধু সিয়াম-পালনকারীরা ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। সেদিন ঘোষণা করা হবে, সিয়াম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য। তারা প্রবেশ করার পর ঐ দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।ফলে তারা ব্যতীত অন্য কেউ আর সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে ঢুকতে পারবে না।” (বুখারী ও মুসলিম)

৭. কী ধরনের শর্ত পূরণ সাপেক্ষে উপরে বর্ণিত অফুরন্ত ফযীলত ও সওয়াব হাসিল করা যাবে?

সিয়ামের বরকতময় সাওয়াব ও পুরস্কার হাসিলের জন্য নিমোক্ত শর্তাবলি পূরণ করা আবশ্যক।

১. শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য সিয়াম পালন করতে হবে।মনের মধ্যে লোক দেখানোর ইচ্ছা বা অপরকে শুনানোর কোন ক্ষুদ্র অনুভূতি থাকতে পারবে না।

২. সিয়াম পালন, সাহরী, ইফতার ও তারাবীহসহ সকল ইবাদত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত তরীকামতো পালন করতে হবে।

৩. খাওয়া-দাওয়া ও যৌনাচার ত্যাগের মতো মিথ্যা, প্রতারণা, সুদ, ঘুষ, অশ্লীলতা, ধোঁকাবাজি ও ঝগড়া-বিবাদসহ সকল অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। চোখ, কান, জিহ্বা ও হাত পা সকল ইন্দ্রিয়কে অন্যায় কাজ থেকে হেফাযতে রাখতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না, তার রোযা রেখে শুধুমাত্র পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।” (বুখারী: ১৯০৩)

“তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে সে যেন অশ্লীল আচরণ ও চেঁচামেচি করা থেকে বিরত থাকে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা তার দিকে মারমুখী হয়ে আসে তবে সে যেন তাকে বলে ‘আমি রোযাদার’। অর্থাৎ রোযা অবস্থায় আমি গালিগালাজ ও মারামারি করতে পারি না।” (মুসলিম: ১১৫১)

“এমন অনেক রোযা পালনকারী আছে যার রোযা থেকে প্রাপ্তি হচ্ছে শুধুমাত্র ক্ষুধা ও তৃষ্ণা। তেমনি কিছু সালাত আদায়কারী আছে যাদের সালাত কোন সালাতই হচ্ছে না। শুধু যেন রাত জাগছে।” (আহমাদ: ৮৮৪৩) (অর্থাৎ সালাত আদায় ও সিয়াম পালন সুন্নাত তরীকামতো না হওয়ার কারণে এবং মিথ্যা প্রতারণা ও পাপাচার ত্যাগ না করায় তাদের রোযা ও সালাত কোনটাই কবুল হচ্ছে না)।

৪. চতুর্থত: ঈমান ভঙ্গ হয়ে যায় বা ঈমান থেকে বহিস্কৃত হয়ে যায় এমন কোন পাপাচার থেকে বিরত থাকা।

৩.৪ সিয়ামের শিক্ষা ও উপকারিতা - ৮. সিয়ামের মধ্যে মানুষের জীবনে কী কী উপকার রয়েছে?

এর উপকারিতা বহুবিধ যার অংশবিশেষ নিম্নে তুলে ধরা হলো:

প্রথমত, মানসিক উপকারিতা

১. সিয়াম তাকওয়া অর্জন ও আল্লাহ ভীরু হতে সহায়তা করে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

অর্থাৎ, “হে ঈমানদাররা! পূর্ববর্তী উম্মতদের মতো তোমাদের উপরও সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।” (সূরা ২; বাকারা ১৮৩)

২. শয়তানি শক্তি ও কু-প্রবৃত্তির ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়। শরীরের যে শিরা-উপশিরা দিয়ে শয়তান চলাচল করে সিয়ামের ফলে সেগুলো নিস্তেজ ও কর্মহীন হয়ে পড়ে।

৩. সিয়াম হলো আল্লাহর নিকট পূর্ণ আত্মসমর্পণ ও ইবাদতের প্রশিক্ষণ।

৪. আল্লাহর আনুগত্যে ধৈর্যধারণ ও হারাম বস্তু থেকে দূরে থাকার সহনশীলতার প্রশিক্ষণ দেয় এ সিয়াম।

৫. ঈমান দৃঢ়করণ এবং বান্দার প্রতি আল্লাহর সার্বক্ষণিক নজরদারীর অনুভূতি সৃষ্টি করে  দেয়। এজন্য রোযাদার লোকচক্ষুর আড়ালে গোপনেও কোন কিছু খায় না।

৬. দুনিয়ার ভােগ-বিলাসের মোহ কমিয়ে সিয়াম পালনকারীকে আখিরাতমুখী হওয়ার দীক্ষা  দেয় এবং ইবাদতের প্রতি তার ক্ষেত্র প্রসারিত করে দেয়।

৭. সিয়াম সাধনার ফলে বান্দা সৎ গুণাবলি ও সচ্চরিত্রের অধিকারী হয়ে থাকে।

৮. সিয়ামে ক্ষুধার অনুভূতিতে অভাবী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দূরবস্থা অনুধাবন করতে শিখায়। ফলে তাকে বঞ্চিত ও অনাহারী মানুষের প্রতি দয়াদ্র ও সহানুভুতিশীল করে তুলে।

৯. সৃষ্ট জীবের সেবা করার দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়।

১০. সিয়াম পালন আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সাহায্য করে।

১১. এ রমযান বান্দাকে নিয়ম-শৃঙ্খলা ও সময়ানুবর্তিতা শিক্ষা দেয়।

দ্বিতীয়ত, দৈহিক উপকারিতা

১. সিয়াম মানব দেহে নতুন সূক্ষ্ম কোষ  গঠন করে থাকে।
২. সিয়াম পাকস্থলী ও পরিপাকতন্ত্রকে বিশ্রাম দিয়ে থাকে। ফলে এগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং তা আবার সতেজ ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
৩. মোটা মানুষের স্থূলতা কমিয়ে আনতে সিয়াম সাহায্য করে।
৪. মাত্রাতিরিক্ত ওজন কমিয়ে এনে অনেক রোগবালাই থেকে হিফাযত করে। অনেক অভিজ্ঞ ডাক্তারের মতে ডায়াবেটিস ও গ্যাস্ট্রিক রোগ নিরাময়ে ফলদায়ক ও এক প্রকার সহজ চিকিৎসা।

৩.৫ সিয়াম ত্যাগকারীর শাস্তি - ৯. যারা বিনা উযরে সিয়াম ভঙ্গ করে তাদের শাস্তি কী হবে?

তারা ভীষণ শাস্তির সম্মুখীন হবে। এ বিষয়ে রাসূলে কারীম (সা.)-এর কয়েকটি হাদীস নিমে উল্লেখ করা হলো:

১. আবু উমামা (র.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, একদিন  আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, একটি সম্প্রদায় উল্টোভাবে ঝুলছে। তাদের গালটি ফাড়া। তা থেকে রক্ত ঝরছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম এরা কারা? বলা হলো, এরা ঐসব ব্যক্তি যারা বিনা উযরে রমযান মাসের সিয়াম ভঙ্গ করেছিল। (সহীহ ইবনে খুযাইমাহ)

২. যে ব্যক্তি (রমাযানের) এ মুবারক মাসেও আল্লাহকে রাজি করাতে পারল না, সে বড়ই দুর্ভাগা। (ইবনে হিব্বান)

৩. যে ব্যক্তি শরীআতী উযর ছাড়া এ (রমযান) মাসে একটি রোযাও ছেড়ে দেবে, সে যদি  এর বদলে সারা জীবনও সিয়াম পালন করে তবু তার পাপের খেসারত হবে না। (বুখারী)।

৩.৬ চাঁদ দেখা - ১০. কিসের ভিত্তিতে সিয়াম পালন শুরু করতে হয়?

চাঁদ দেখার ভিত্তিতে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখো এবং চাঁদ দেখেই তা ভঙ্গ করো (অর্থাৎ ঈদ কর)।” (বুখারী: ১৯০৯, মুসলিম: ১০৮১)

“ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, মানুষ দলে দলে চাঁদ দেখতে শুরু করল। এমনি সময় আমি চাঁদ দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জানালাম। আমার এ সংবাদের উপর ভিত্তি করে নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোযা রাখলেন এবং সবাইকে রোযা রাখার নির্দেশ দিলেন। (আবু দাউদ: ২৩৪)।

“এক গ্রাম্য ব্যক্তি এসে নাবী কারীম (সা.)-কে জানালেন, আমি তো চাঁদ দেখেছি অর্থাৎ রমাযানের চাঁদ। অতঃপর রাসূল বললেন, তুমি কি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ- (কালিমার) উপর ঈমান এনেছ? লোকটি উত্তর দিল: হ্যাঁ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ (অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল) এ কথার উপর ঈমান এনেছ? লোকটি উত্তর দিল: হ্যা। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবী বেলাল (রা.)-কে বললেন, হে বেলাল! মানুষকে জানিয়ে দাও, তারা যেন আগামী কাল থেকে রোযা রাখে।” (আবু দাউদ: ২৩৪০, হাদীসটি দুর্বল)

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৮৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 3 4 5 6 7 8 9 পরের পাতা »