পায়ের দিক আগে নামাবে। এটাই রাসূলের সুন্নাত। (মুসান্নাফ- ৪/১৩০, ইবনে আবি শাইবা- ৪/১৩০) মক্কা ও মদীনায় এ হাদীসটিই আমল করে। লাশ সেখানে এভাবেই নামায়। অপরদিকে মাথা আগে নামানোর আরেকটি হাদীস আছে যেটি সহীহ নয়। (আল বানীর আহকামুল জানায়িয)
১. লাশ নামানোর দুআ পড়বে:
‘বিসমিল্লাহি ওয়া-আলা সুন্নাতি রাসূলিল্লাহ’
অথবা পড়বে,
‘বিসমিল্লাহি অ-আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ’
অর্থ: আল্লাহর নাম নিয়ে এবং তার রাসূলের মিল্লাতের তরীকা অনুসারে (লাশ রাখছি) (আবু দাউদ: ৩২১৩, ইবনে মাজাহ: ১৫৫০) আর এ দু‘আ তখন পড়বে যারা কবরে নেমে লাশ নামাবে শুধু তারা, সকলে নয়।
২. লাশ শোয়ানোর নিয়ম: (লাশের পিঠে ও মাথার নিচে কিছু মাটি রেখে) মাইয়্যেতকে ডান কাতে শোয়াবে। চেহারা ও পায়ের আঙ্গুল কিবলামুখী থাকবে। রাসূল (সা.)-এর যামানা থেকে আজ পর্যন্ত আরব দেশে এরূপই আমল করে আসছে। (আহকামুল জানাইয, মাসআলা নং ১০২)। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জীবিত ও মৃত উভয় অবস্থায় সকলের কিবলা হলো কাবা। (আবু দাউদ: ২৮৭৫) অথচ ভারতবর্ষের আমল হলো মাইয়্যেতকে চিৎ করে শুইয়ে মুখটা কিবলার দিকে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা।
৩. লাশ কবরে রাখার পর কাফনের বাঁধগুলো খুলে দেবে। তবে এ মর্মে নবীজি (সা.) থেকে সরাসরি কোন হাদীস পাওয়া না গেলেও কয়েকজন সাহাবীর আমল পাওয়া যায়। (ইবনে আবি শাইবা: ১১৬৬৯-১১৬৭৩)
৪. মাইয়্যেতের চেহারা খুলে রাখতে হবে কি না এ মর্মে কোন হাদীস-দলীল পাওয়া যায় না।
৫. মহিলার লাশ রাখার সময় পর্দা করা উচিত এবং সে সময় কবরের কাছে ভীড় করা অনুচিত।
৬. কবর খননের সময় প্রথম কোপের মাটি আলাদা করে রেখে দিয়ে সেটা লাশের বুকের উপর অথবা মাথা বা পায়ের কাছে রাখা বিদআত। অনুরূপভাবে কবরে মাটির বালিশ বানানো। বালির বিছানা করা, গোলাপজল ছিটানো, মাটিতে কোন সূরা বা দুআ পড়ে বা লিখে কবরের ভিতর রাখা, কাবার গেলাফের টুকরা বা কোন বুজুর্গের কাপড়ের অংশবিশেষ কবরের ভিতর ঢুকিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ কোন কোন এলাকায় আছে। এগুলো ভিত্তিহীন এবং বিদআত। এতে কবরের আযাব লাঘব হয় বলে বিশ্বাস করা আরো মারাত্মক।
৭. বর্ষা বা বন্যার কারণে কবরে পানি উঠলে কাঠ বা কলা গাছের ভেলার উপর লাশ রেখে দাফন করা যায়।
৮. সাগরের মাঝে জাহাজে মৃত্যু হলে এবং জাহাজ তীরে ভীড়তে বেশি দেরী হলে, ফ্রীজ না থাকলে এবং লাশের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকলে গোসল ও কাফন শেষে ভারী কিছু বেধে প্রয়োজনের তাগিদে সাগরে ফেলে দেওয়া যায়। (ইবনে আবি শাইবা: ১১৮৪৯-১১৮৫০)
৯. দাফনের সময় নির্দিষ্ট কোন দুআ নাই: কেউ কেউ তখন পড়ে ‘মিনহা খালাকনাকুম...' এ সময় এ দুআ পড়া বিদ'আত। কেননা, এ দু'আ তখন পড়তে নবীজি (সা.) বলেননি।