দুই পদ্ধতির যেকোন একভাবে পরানো যায়।
পদ্ধতি নং-১ মাইয়্যেতকে সমান মাপের তিনটি কাপড়ে কাফন পরানো হবে। কাফনদাতা পরস্পর তিনটি কাপড়কে বিছিয়ে দেবে। এর উপর প্রয়োজনে (মলদ্বার হতে নাপাকী বের হতে থাকলে) ১০০০/২৫ সেঃ মিঃ কাপড়কে দুই মাথায় ফেড়ে নিয়ে লেঙ্গট বানিয়ে মাইয়্যেতের মলদ্বারের পিছনে রাখবে। তার উপর মিক, কর্পূর বা অন্য কোন সুগন্ধি মিশ্রিত তুলো রাখবে। ইহরামরত থাকলে সুগন্ধি লাগাবে না। অতঃপর লাশকে পর্দার সাথে এনে তার উপর ধীরভাবে রাখবে। এখানেও কালিমার যিকর নাই। মাইয়্যেতের সিজদার স্থানসমূহে, বগলে, দুইরানের মধ্যবর্তী ইত্যাদি স্থানে আতর লাগিয়ে দেবে। মাইয়্যেতের চোখে সুরমা লাগানোর ব্যাপারে কোন দলীল নাই। সুতরাং তা ব্যবহার না করাই উত্তম। মাইয়্যেতের হাত দুটিকে পাঁজরের পার্শ্বে লম্বালম্বি করে ফেলে রাখবে। (অতঃপর লেঙ্গটটিকে সুবিধামতো উভয় রানের সাথে বেঁধে দেবে।) এরপর ডান দিকের কাপড়ের অংশ ধরে ডান দিকে এবং বাম দিকের অংশ নিয়ে লাশের বাম দিক জড়িয়ে দেবে। এই অবসরে সতর্কতার সাথে লাশের লজ্জাস্থানের উপরে পর্দাটিকে টেনে বার করে নেবে ।
এইভাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় কাপড়টি প্রথমে ডান দিকে তারপর বাম দিকে জড়িয়ে দেবে। অতঃপর মাথার দিকে প্রথম গিট্ট দেবে। তারপর পায়ের দিকের গিটু দেবে। গিটুগুলো এবং দেহের মাঝে প্রয়োজন মতো ১ থেকে ৫টা গিটু দেবে। গিটুগুলো হবে লাশের বাম দিকে। এতে কবরে লাশ কেবলা মুখী রেখে বাঁধগুলি খুলতে সুবিধা হবে। হজ্জ বা উমরা পালনরত মুহরিমের চেহারা ও মাথা ঢাকা যাবে না। কারণ, প্রিয় নবী (সা.) মুহরিমের ব্যাপারে বলেছিলেন, ওর দেহে খোশবু লাগাবে না, ওর মাথা ও চেহারা ঢাকবে না। কারণ, কিয়ামতের দিন তালবিয়্যাহ পড়া অবস্থায় (মুহরিম হয়েই) সেই লোক পুনরুত্থিত হবে। তবে মুহরিম মহিলা হলে কাফনে মাথা অবশ্যই জড়াতে হবে। কিন্তু মুখ না জড়িয়ে সাধারণভাবে উপরে পর্দা করতে হবে।
পদ্ধতি নং- ২ তিন কাপড়ের একটি হবে লুঙ্গি, একটি কামীস (জামা) এবং অপরটি লেফাফা। প্রথমে লেফাফা, এর উপর কামীস, তার উপর লুঙ্গি বিছাতে হবে। ডবল ভঁজের কাপড় নিয়ে মাঝখানে গোল করে কেটে মাথা প্রবেশ করানোর মতো জায়গা করে কামীসের নিম্নাংশ লুঙ্গির নিচে বিছাবে এবং ঊর্ধ্বাংশ মাথার দিকে গুটিয়ে রেখে নেবে। কামীস ও লুঙ্গি পায়ের গাঁটের উপর পর্যন্ত লম্বা হবে।এর উপর ধীরভাবে লাশ শুইয়ে প্রথম পদ্ধতির মতো সবকিছু করবে। প্রথমে লুঙ্গি জড়াবে তারপর কামীসের ফাক দিয়ে মাথা ঢুকিয়ে কামীসের উপরের দিক লাশের বুক ও পায়ের উপর বিছিয়ে দেবে। অতঃপর লেফাফা জড়িয়ে এভাবে বাঁধ দেবে। এরূপ কাফনের কথা আব্দুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে প্রমাণিত।
তবে ১ম পদ্ধতির কাফন দেওয়াই উত্তম। কারণ, মহানবী (সা.)-কে এভাবেই কাফন পরানো হয়েছিল।