নাজদের ‘আমের বিন ছা‘ছা‘আহ গোত্রের অন্যতম নেতা লাক্বীত্ব বিন ‘আমের তার সাথী নাহীক বিন ‘আছেম ইবনুল মুনতাফিক্ব-কে সাথে নিয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর দরবারে আগমন করেন। তখন তিনি ফজর ছালাতের পর লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছিলেন। লাক্বীত্ব বলেন, ভাষণ শেষে আমি ও আমার সাথী দাঁড়িয়ে গেলাম। যাতে আমরা তাঁর দৃষ্টিতে পড়ি। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি গায়েব জানেন? তিনি বললেন, অদৃশ্য পাঁচটি বিষয়ের চাবিকাঠি কেবলমাত্র আল্লাহর নিকটে। তিনি ব্যতীত কেউ তা জানেনা। (১) কোথায় তোমার মৃত্যু হবে। (২) তোমার স্ত্রীর জরায়ুতে কি সন্তান আছে। (৩) আগামীকাল তুমি কি খাবে। (৪) কোথায় বৃষ্টি বর্ষিত হবে এবং (৫) কখন ক্বিয়ামত হবে’। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার নিকট কিসের উপর বায়‘আত করব? তখন রাসূল (ছাঃ) হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ছালাত ও যাকাতের উপর এবং আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না ও মুশরিকদের সাথে শত্রুতা করবে, একথার উপর। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! পূর্ব ও পশ্চিমে সর্বত্র আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হৌক। তখন তিনি তাঁর হাত টেনে নিলেন। তিনি ধারণা করলেন যে, আমরা তাঁকে এমন শর্ত দিচ্ছি, যা তাঁর পক্ষে পূরণ করা সম্ভব নয়। তখন আমি বললাম, আমরা যেখানে খুশী বসবাস করতে চাই এবং একজন ব্যক্তি নিজের অপরাধেই কেবল দোষী সাব্যস্ত হবে। তখন তিনি হাত বাড়িয়ে দিলেন এবং বললেন, তোমরা এটা পাবে। অতঃপর আমরা বায়‘আত করে ফিরে এলাম।
এসময় তাঁকে বনু বকর বিন কিলাবের জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এরা কারা? তিনি বললেন, বনুল মুনতাফিক্ব গোত্রের। কথাটি তিনি তিনবার বললেন। অতঃপর আমরা ফিরে এসে তাঁকে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! জাহেলী হালতে যারা মারা গেছেন, অথচ তারা ভাবতেন যে, তারা সঠিক পথের উপরে আছেন, তাদের অবস্থা কি হবে? জবাবে একজন লোক বলে উঠল, আল্লাহর কসম! তোমার পিতা মুনতাফিক্ব অবশ্যই জাহান্নামের অধিবাসী। এতে আমার সমস্ত দেহমন জ্বলে উঠল। মনে হ’ল আমি জিজ্ঞেস করি, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার পিতার অবস্থা কি?... (যাদুল মা‘আদ ৩/৫৮৮-৯১ সনদ যঈফ)।
[শিক্ষণীয় : (১) আল্লাহ ব্যতীত গায়েবের খবর কেউ জানেনা। (২) মুশরিকদের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্ব রাখা যাবে না এবং কোন অবস্থায় আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা যাবে না। (৩) রাজনৈতিক ক্ষমতা বা দুনিয়াবী কোন কিছু পাওয়ার শর্তে আমীরের নিকট বায়‘আত করা যাবে না। (৪) সত্য হ’লেও কারু সামনে তার পিতা-মাতার বিষয়ে মন্দ কিছু বলা যাবে না।]